Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

গ্রিন বুক: অভিনব এক ভ্রমণকাহিনী

সময়টা ১৯৬২ সাল। ডন শার্লি নামের একজন আফ্রিকান- আমেরিকান ক্লাসিক ও জ্যাজ পিয়ানিস্ট পেশাগত কারণে লম্বা এক সফরে বের হচ্ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিড ওয়েস্ট ও ডিপ সাউথ বিভিন্ন স্টেটকে ঘিরে আয়োজিত আট সপ্তাহব্যাপী একটি কনসার্ট ট্যুরে পিয়ানো বাজানোর জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। প্রায় দু’মাসব্যাপী আমেরিকার রাস্তায় এভাবে গাড়ি দিয়ে ভ্রমণের জন্য একজন দায়িত্ববান ও বিশ্বাসভাজন গাড়িচালকের সন্ধান করতে শুরু করেন তিনি।

অন্যদিকে, নিউ ইয়র্কের একটি নাইট ক্লাবে ফ্রাঙ্ক ভালেলঙ্গা নামের এক ইতিলিয়ান-আমেরিকান লোক কাজ করতেন, যদিও তিনি টনি লিপ নামেই সকলের কাছে বেশি পরিচিত ছিলেন। পুনঃসংস্কারের জন্য নাইট ক্লাবটি বন্ধ হয়ে যাওয়াতে নতুন চাকরির খোঁজে ছিলেন তিনি। আর এভাবেই একদিন শার্লির বাসায় ড্রাইভার হিসেবে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে চলে যান ভালেলঙ্গা। পরিচয় পর্ব ও ভালেলঙ্গার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে টুকটাক জানার পর শার্লি যখন বলেন, তার আসলে শুধু একজন ড্রাইভারই নয়, গাড়ি চালানোর পাশাপাশি বাটলারের কাজগুলোও করতে হবে, তখন শার্লির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে দরজার দিকে হাঁটা শুরু করেন তিনি। ভালেলঙ্গা মানুষ হিসেবে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৎ তো ছিলেনই, সেই সাথে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো সাহস ও বুদ্ধিমত্তাও যে তার ছিল, সে কথা কানে এসেছিল শার্লির। তাই ভালেলঙ্গার ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ কাজ করছিল তার। অন্যদিকে ভালেলঙ্গা জানতেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাংশের অঞ্চলগুলোতে ভ্রমণ করাটা কতটা ঝামেলাপূর্ণ ও পরিশ্রমের কাজ। তাই তিনি নির্ধারিত পারিশ্রমিক থেকে বেশি দাবি করে বসেন ও শার্লি তাতে রাজি না হলে চুপচাপ বেরিয়ে যান।

এভাবেই হয়তো শার্লির মতো একজন উচ্চবিত্ত ও স্বনামধন্য পিয়ানো বাদক ও ভালেলঙ্গার মতো একজন নিম্ন-মধ্যবিত্ত খেটে খাওয়া লোকের গল্প শেষ হয়ে যেত। এমনো হতে পারত, শার্লি অন্য কাউকে নিয়োগ করে তার ট্যুর সম্পন্ন করে ও ভালেলঙ্গা অন্য কোনো চাকরিতে ঢুকে জীবন নির্বাহ করে নিতেন। কিন্তু না, গল্পটা আসলে সবেই শুরু হচ্ছিল। তাই তো, মধ্যরাতে ভালেলঙ্গার বাড়িতে কল করে তার স্ত্রীর সাথে কথা বলে, শেষমেশ তাকেই সফরসঙ্গী হিসেবে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন ডন শার্লি। আর এভাবেই তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার গায়ে বড় বড় হরফে লেখা বর্ণবাদ ও পৃথকীকরণের মতো নির্মম বাস্তবতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা নির্মল বন্ধুত্বের ও দৃষ্টান্তমূলক মানবতাবাদের রূপরেখা ফুটিয়ে তোলার মধ্যদিয়ে নতুন এক বাঁক নিল গল্পটা।

তাদের প্রথম সাক্ষাৎ; Source: The New York Times

উপরের অনুদেচ্ছের মাধ্যমে ২০১৮ সালের অন্যতম সেরা সিনেমা ‘গ্রিন বুক’ এর প্রথমাংশের দৃশ্যপটকে খানিকটা ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস করা হয়েছে। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এ সিনেমাটির চিত্রনাট্য মূলত বাস্তবের ডন শার্লি ও ভালেলঙ্গা সাক্ষাতকার ও সে সময়ে ভালেলঙ্গার নিজের স্ত্রীর কাছে পাঠানো কিছু চিঠির ভিত্তিতে সাজানো হয়েছে। সিনেমার তিনজন চিত্রনাট্যকারের মধ্যে একজন তো ছিলেন খোদ ফ্রাঙ্ক ভালেলঙ্গার ছেলে নিক ভালেলঙ্গা। বাকি দুই চিত্রনাট্যকার হলেন পিটার ফ্যারেলি ও ব্রায়ান হেইস কারি। তাদের মধ্যে পিটার ফ্যারেলি সিনেমাটি পরিচালনার দায়িত্বেও ছিলেন।

সিনেমার প্লট নিয়ে যদি কথা বলতে হয়, তাহলে প্রথমেই বলে নিচ্ছি, সিনেমাটিকে কারো কারো কাছে একদম সাদামাটা গল্পের সিনেমা বলে মনে হতে পারে। আবার কেউ এ সিনেমার গল্পের সঠিক মর্মার্থ উপলব্ধি করার পর একে অসামান্য সিনেমা বলেও দাবি করতে পারেন। তবে দু’পক্ষের মধ্যে কারো মতামতই উপেক্ষা করার মতো নয় কিন্তু। স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, ‘গ্রিন বুক’ সিনেমাটিকে সরল অংকের সাথে তুলনা করা যায়। সরল অংক কথাটা শুনতে যতটা সরল মনে হয় অথবা অংকের শুরুর দিকে যতটা সহজ মনে হয়, ততটা কিন্তু সত্যিকার অর্থে থাকে না। গণনায় সামান্য একটু গড়মিল হলেই পুরো অংক ভেস্তে যাবার সম্ভাবনা থাকে। ঠিক একই নীতি সিনেমার কাহিনীর ক্ষেত্রেও বিদ্যমান। কীভাবে? তাহলে চলুন, এবার সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়ে যাক।

শার্লি- সিনেমা বনাম বাস্তব; Source: Page Six

ইতিমধ্যে বলা হয়েছে, সিনেমার প্লট একজন পিয়ানিস্টের একটি কনসার্ট ট্যুরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। সিনেমাতে মূলত ডন শার্লি নামের সে পিয়ানো বাদক ও তার সহচর ভালেলঙ্গার সড়কপথের দীর্ঘকালীন ভ্রমণ ও ভ্রমণের সময় ঘটে যাওয়া নানা ছোট-বড় ঘটনার উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এতে দেখানো ভ্রমণকাহিনীটি যদি হয়ে থাকে সরল অংক, তাহলে সে সময়ে শার্লি ও ভালেলঙ্গা একসাথে যে সব বাধা-বিপত্তি, অতর্কিত ঝামেলা ও বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন সেগুলো ছিল সরল অংকের মতোই সিনেমার কাহিনীর গড়মিল। তবে অল্প একটু সাবধানতার সাথে মগজকে খাটিয়ে যেমন সরল অংকের ভুলগুলো ধরে ফেলে এর শুদ্ধ সমাধান বের করা যায়, ঠিক তেমনি নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি ও কৌশলের প্রয়োগ করে শার্লি ও ভালেলঙ্গা তাদের ভ্রমণের সুন্দর একটা পরিসমাপ্তিই টানেন। তবে যে উপাদানগুলো তাদের গল্পকে একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরার মতো পূর্ণতা দিয়েছিল, সেগুলো ছিল তাদের পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধাবোধ ও দায়িত্বশীলতা। সবথেকে বড় ব্যাপার হলো, তাদের দুজনের ব্যক্তিত্বে জেগে ওঠা মনুষ্যত্বের আহবান। তাই তো ভিন্ন শ্রেণী, পেশা, বর্ণ, জাতীয়তা ও রুচির দুজন মানুষ একে অপরের জুতোতে পা রেখে পরিস্থিতি নিজেদের আয়ত্তে আনতে চেষ্টা করেছিল।

 ভালেলঙ্গা- বাস্তব বনাম সিনেমা; Source: New York Post

পাঠকদের হয়তো এখনো সিনেমার গল্পটা পুরোপুরিভাবে বোধগম্য হয়ে ওঠেনি। সিনেমার গল্পটাকে আরও সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করতে হলে, প্রথমে সিনেমার নাম অর্থাৎ ‘গ্রিন বুক’ দ্বারা আসলে কী বোঝানো হয়েছে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন। উনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে থেকে বিংশ শতাব্দীতে মধ্যভাগ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে ‘জিম ক্রো’ নামে একধরনের পৃথকীকরণ আইন প্রচলিত ছিল। সে আইন মোতাবেক সে অঞ্চলে বসবাসরত অথবা অতিথি হিসেবে আসা কালো বর্ণের মানুষদের কিছু নির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলতে হতো। মূলত, সাদা বর্ণের মানুষদের সাথে কালোদের বৈষম্য সৃষ্টিকারী আইন ছিল এটি। আর এ আইন দন্ডায়মান থাকাকালীন নিউ ইয়র্ক সিটির মেইল ম্যান ভিক্টর হুগো গ্রিন কালো বর্ণের লোকদের দক্ষিণাঞ্চলে চলাচলের সুবিধার্থে একটি বার্ষিক গাইডবুক প্রকাশ করেন।

১৯৩৬ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকা এ গাইডবুকটিতে আফ্রিকান-আমেরিকান ভ্রমণকারীদের সড়কপথে যাতায়াতের সময় মোটেল ও রেস্টুরেন্ট বেছে নিতে সুবিধা প্রদান করে থাকত। বলে রাখা ভালো, সে যুগে সব রেস্টুরেন্ট অথবা মোটেল কালোদের থাকা-খাওয়ার জন্য উন্মুক্ত ছিল না। তাই কালোদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা আছে এমন কিছু নির্দিষ্ট জায়গার নাম ও ঠিকানাই ‘দ্য নিগ্রো মোটোরিস্ট গ্রিন বুক’ নামের সে গাইডবুকে উল্লেখ করা থাকত। ডন শার্লি যেহেতু একজন আফ্রিকান-আমেরিকান ছিলেন, তাই তাকে নিয়ে ট্যুরে বের হওয়ার সময় ভালেলঙ্গার হাতে তুলে দেওয়া হয় গ্রিন বুকের একটি কপি। আর সেখান থেকে সিনেমার টাইটেল রাখা হয়েছে, ‘গ্রিন বুক’।

১৯৬২ সালের ‘গ্রিন বুক’ এর একটি সংস্করণ ;Source: PolitiFact

শার্লি ও ভালেলঙ্গা যাত্রা শুরু করার পর সিনেমার গল্পটি যেন ভিন্ন এক ছন্দে প্রবাহিত হতে থাকে। একইসাথে অনেকটা পথ চলতে হলে দুজন মানুষের মধ্যে যে মতের মিল-অমিল, পরস্পরের আচরণের প্রতি সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি ও পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর আলাদা আলাদা উপায় আছে, সেসব একে একে সিনেমার কাহিনীতে চিত্রায়িত করা হয়েছে। শার্লি নিপাট ভদ্রলোক ছিলেন, কখনো কোনো ঝগড়া-বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়াতে পছন্দ করতেন না। আবার তিনি ছিলেন একজন সচেতন নাগরিক। অন্যদিকে ভালেলঙ্গা ছিলেন কথাবার্তায় পটু ও যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশকে মাথা ঠান্ডা রেখে হালকা করার ক্ষেত্রে পারদর্শী ব্যক্তি। তবে শার্লির মতো তার আচার-ব্যবহারে তেমন একটা নম্রভাব ছিল না। তাই প্রথমদিকে একে অপরের সাথে নানা ছোটখাট বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা বেঁধে যেত। পরে অবশ্য ধীরে ধীরে পথ চলতে চলতে তাদের মধ্যে বেশ ভালো একটা বোঝাপড়া গড়ে ওঠে।

শার্লি যেমন ভালেলঙ্গা থেকে জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করতে শিখেছিলেন, ঠিক তেমনি ভালেলঙ্গাও শার্লি থেকে অনেক নতুন গুণ রপ্ত করেছিলেন। ভালেলঙ্গা থেকে শার্লি বাইরের দুনিয়ার নিষ্ঠুরতার কথা জানতে পারেন, আর শার্লি থেকে ভালেলঙ্গা গুছিয়ে নিজের মনের কথা প্রকাশের ভাষা। তবে এ যাত্রাপথে শার্লি ও ভালেলঙ্গা একটি ব্যাপার খুব কাছ থেকে আবিষ্কার করেন। সেটা হচ্ছে, সমাজ ব্যবস্থার গোড়ামি। শার্লির মতো বিত্তশালী ও গুণী ব্যক্তিও শুধু কালো চামড়াধারী হওয়াতে সমাজের উচ্চপদস্থ মানুষের সাথে বসে খেতে পারবে না, আবার সাদা চামড়ার লোকজন দ্বারা প্রতি পদে পদে অপদস্থ হবার সম্ভাবনা তো আছেই। অনেক শিক্ষিত লোকও যেখানে বর্ণবাদী আচরণ করে থাকেন, সেখানে ভালেলঙ্গার মতো অল্প শিক্ষিত খেটে খাওয়া লোকের অন্তরে বর্ণবাদের ছিটেফোঁটাও ছিল না। সমাজের এত উঁচু স্তরের সাথে মেলামেশা করেও শার্লি যেমন ভালেলঙ্গার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, ভালেলঙ্গাও নিজের ছোট দুনিয়ার সাথে শার্লির পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।

সিনেমার কাহিনী শুনে যদি গুরুগম্ভীর ধারার কোনো ড্রামা জনরার সিনেমা ভেবে থাকেন, তাহলে ভুল করবেন। এর সবথেকে চমকপ্রদ দিক হচ্ছে, সিনেমাটিতে অনেক হাস্যরস ও মজাদার ঘটনার মধ্য দিয়ে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ কথা তুলে ধরা হয়েছে। সমকামিতা থেকে শুরু করে বর্ণবাদ, পৃথকীকরণের মতো বড় বড় উপাদান নিয়ে রচিত সিনেমার গল্প সাধারণত কিছুটা হলেও গাম্ভীর্য ভাব বজায় রাখবে, এটাই স্বাভাবিক কথা। কিন্তু এ সিনেমার ক্ষেত্রে এমন কিছুই হয়নি। সিনেমা দেখার পর দর্শকের মন একরাশ ভালো লাগায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। দুজন ভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষের স্বার্থহীন বন্ধুত্বের সম্পর্ক যেভাবে আপনার হৃদয়কে ছুঁয়ে যাবে, তেমনি সিনেমা শেষের বার্তাটি। দিনশেষে, সবাই আমরা মানব সন্তান। এটাই কি আমাদের একমাত্র পরিচয় নয়?

যাত্রাপথের একটি সুখময় মুহূর্ত; Source: Gossip Entertainment

যুগ যুগ ধরে সারা বিশ্বজুড়ে বর্ণবাদ বড়সড় একটা সামাজিক ব্যাধি হিসেবে সমাজে বিচরণ করে চলেছে। গত বছরের ‘ব্ল্যাকক্লেনস ম্যান’ সিনেমাতেও কালো ও সাদাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তুলে ধরা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটা গত শতাব্দীর একটা সময় পর্যন্ত ভয়াবহ মাত্রায় ছিল। এরপর আস্তে আস্তে শিথিল হয়ে আসে। ‘গ্রিন বুক’ সিনেমায় হয়তো ‘ব্ল্যাকক্লেনস ম্যান’ এর মতো এত বিরাট আকারে সে সময়ের চিত্র আঁকা হয়নি, তবে সে সময়ের একটি বাস্তব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যতটা মেলে ধরা সম্ভব হয়েছে, ততটা ঠিকই দারুণ নিপুণতার সাথেই পর্দার সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে।

সিনেমাটির ব্যাপারে আরও প্রশংসা করার পূর্বে সিনেমার দুই মূল অভিনেতার কথা একটু বলে নেওয়া যাক। ডন শার্লি চরিত্রটিকে অভিনয় করেছেন প্রথম মুসলিম অভিনেতা হিসেবে অস্কারজয়ী অভিনেতা মাহারশালা আলি। ২০১৬ সালের ‘মুনলাইট’ সিনেমার জন্য ৮৯ অস্কারে সেরা পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেন তিনি। এ বছরও ৯১ তম অস্কারে ‘গ্রিন বুক’ এর ডন শার্লি চরিত্রে প্রশংসনীয় অভিনয়ের জন্য পার্শ্ব অভিনেতার ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন। তার অভিনয় দক্ষতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তিনি তার সেরাটাই দিয়েছিলেন। তবে ভালেলঙ্গার চরিত্রে ভিগো মর্টেনসনের তুলনাই হয় না। তার অমায়িক অভিনয় তাকে ৯১ তম অস্কারে সেরা অভিনেতার ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন এনে দিয়েছে। এর আগে ৮৯ তম অস্কারেও তিনি ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক’ এর জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে মনোনয়ন পান। কিন্তু ভাগ্য সেবার সহায় হয়নি। দেখা যাক, এবার কী হয়!

পরিচালক ফ্যারেলি সাথে সিনেমার তিন প্রধান চরিত্র; Source: Flipboard

সিনেমাটির চিত্রনাট্য, অভিনয় ও নির্মাণশৈলীর পাশাপাশি যে বিষয়টি মনোমুগ্ধকর ছিল সেটি হলো পিয়ানোতে বাজারো সুরের মূর্ছনা। সিনেমাতে দেখানো ডন শার্লির প্রতিটি পারফরম্যান্স অত্যন্ত শ্রুতিমধুর ছিল। সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরগুলোও ছিল প্রেক্ষাপটের সাথে একদম মানানসই।

গত বছরের ১১ই সেপ্টেম্বরে টরেন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রথমবারের মতো সিনেমাটির প্রদর্শনী হয়। সেখানে সিনেমাটি পিপল’স চয়েজ অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়। এরপর ১৬ই নভেম্বর সিনেমাটিকে থিয়েটারে মুক্তি দেওয়া হয়। ন্যাশনাল বোর্ড অব রিভিউ কর্তৃক ২০১৮ সালের সেরা সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে ‘গ্রিন বুক’। তাছাড়া আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট দ্বারা গত বছরের সেরা দশটি সিনেমার একটি বলে ঘোষিত হয়েছে। ৭৬ তম গোল্ডেন গ্লোবের আসরে পাঁচটি শাখায় মনোনীত হয়ে ‘বেস্ট মোশন পিকচার – মিউজিক্যাল অর কমেডি’তে পুরস্কার জিতে নিয়েছে সিনেমাটি। এখনো ৯১তম অস্কারের আসর থেকে পুরস্কার ঝুলিতে ভরা বাকি। এবার শুধু অপেক্ষার পালা।

This bengali article is a review of a biographical- drama flim. It is considered one of the best flims of 2018. 

Feature Image: clevescene.com

Related Articles