আপনি কি কখনো পাশের বাড়ির মলিকে দেখার জন্য বৃষ্টিতে পুড়ে, রোদে ভিজে ছাদের ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন? কখনো কি বেইলী রোডে গিয়ে কাক ডাকা দুপুরে সূর্যের আলোয় নিজের বাদামী চামড়া রং বিসর্জন দিয়ে সাবিহাকে একবার ‘আই লাভ ইউ’ বলার সুযোগ খোঁজার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন? কিংবা কবে সে ‘আই লাভ ইউ টু’ বলবে– সেই তিনটি জাদুকরী শব্দ শোনার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছিলেন? যদি এই প্রশ্নগুলার কোনোটার উত্তর ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে মাস্টার্স কিংবা পিএইচডির ফান্ডিংয়ের জন্য প্রফেসরকে মেইল মারফত পটানোর দুনিয়ায় আপনাকে সুস্বাগতম! আর যদি ‘না’ হয়, তাহলেও সমস্যা নেই- আপনার ধৈর্য পরীক্ষার খেলা শুরু হবে এখান থেকেই।
প্রফেসরদেরকে মেইল দেয়া আর সঙ্গীকে প্রেম নিবেদন করা– এই দুইয়ের প্রস্তুতির মাঝে এক অদ্ভুত মিল আছে। আপনি যেমন কোনো মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়ার আগে তাকে দিনের পর দিন পর্যবেক্ষণ করেন, সে কী করে, কী পছন্দ-অপছন্দ করে, কী করতে বেশি ভালোবাসে ইত্যাদি সম্পর্কে যেমন ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে থাকেন, ঠিক তেমনই কোনো প্রফেসরকে মেইল দেয়ার সময় তিনি কী ধরনের কাজ করেন, তার বর্তমান গবেষণার কাজ কী কী, তার কী কী গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, তার ল্যাব ফ্যাসিলিটি কেমন, প্রেমিকার মনের দরজা খোলা থাকার মতো তার রিসার্চ গ্রুপের দরজা খোলা আছে কিনা, আর খোলা থাকলেও কেউ আগে লাইন দাঁড়িয়ে আছে কিনা ইত্যাদি সব সম্পর্কে আপনাকে জানার চেষ্টা করতে হবে। এরপর দিন আর সময় বুঝে আপনি যেমন মলিকে চিঠি লিখে কিংবা এসএমএস-এ প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ঠিক একইভাবে প্রফেসরকে ইমেইল করে জানাবেন আপনি তার সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।
খুঁজে বের করুন একাডেমিয়ার ফান্ডওয়ালা প্রফেসরকে
কোনো প্রফেসরের কাছে ফান্ডিং আছে কিংবা কোনো প্রফেসর স্টুডেন্ট খুঁজছেন তা জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো তার রিসার্চ গ্রুপের পেইজে গিয়ে ‘ওপেনিং’ সেকশনে গিয়ে দেখা যে তিনি সামনের সেশনে কোনো স্টুডেন্ট নিতে চান কিনা। সাধারণত যেসব প্রফেসর নিজেদের ওয়েব পেইজ নিয়মিত আপডেট করেন সেখানে ওপেনিংয়ের সংবাদগুলো সাধারণত আপ টু ডেট হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ওপেনিংয়ের পোস্টগুলো বেশ পুরনো কিংবা কোনো সংবাদই নেই। সেক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে তার রিসার্চ গ্রুপ থেকে সম্প্রতি কেও গ্রাজুয়েশন করেছে কিনা। তার মানে ফান্ডিং থাকা সাপেক্ষে তার গ্রুপে অবশ্যই ওপেনিং আছে। আর সেই সাথে তার কারেন্ট প্রজেক্ট আছে কিনা তা-ও দেখুন। সাধারণত যেকোনো রিসার্চ গ্রুপের এই পেইজটি নিয়মিত আপডেট করা হয়ে থাকে, প্রফেসররা নিজেদের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্যই তা করে থাকেন।
এরপরে আপনি দেখবেন তিনি নিয়মিত পাবলিশ করেন কিনা, যদি তার পাবলিকেশন বিগত বছরগুলাতে হয়ে থাকে, তার মানে তিনি নিয়মিত গবেষণা করেন এবং সেই কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য তার স্টুডেন্ট দরকার হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্টাল নিউজের পেজে গিয়ে দেখতে পারেন কোনো এক প্রফেসর সম্প্রতি ফান্ডিং পেয়েছেন এমন কোনো সংবাদ দেয়া আছে কিনা। সাধারণত প্রফেসররা ভাল কোনো প্রজেক্ট পেলে তার সংবাদ নিউজ সেকশনে দেয়া থাকে। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন প্রজেক্টের অধীনে এক বা একাধিক স্টুডেন্ট নেয়া হয়। আর এছাড়া আপনি যে ডিপার্টমেন্টে আবেদন করতে চান সেখানে যদি আপনার পরিচিত কোনো বাংলাদেশি স্টুডেন্ট থাকে, তাহলে তার কাছ থেকেও আপনি সংবাদ পাবেন এবং এই তথ্য সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য। কারণ গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টরা ডিপার্টমেন্টের গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টদের কনফারেন্স কিংবা মিটিংয়ে একে অন্যের সাথে কার প্রফেসর কোন নতুন প্রজেক্ট পেয়েছে, কে নতুন গ্র্যান্ট প্রপোজাল লিখছে, কে নতুন স্টুডেন্ট খুঁজছে এসব সম্পর্কে জানে।
কাজেই যদি কোনো বাংলাদেশিকে পেয়ে যান, তাহলে তার কাছ থেকে জেনে নিন কোন প্রফেসর স্টুডেন্ট নিতে চায়। এছাড়া ডিপার্টমেন্টে নতুন কোনো অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জয়েন করলে তার কাছে অবশ্যই ফান্ডিং থাকে। কারণ তাকে তার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার কাজ শুরু করার জন্য সীড গ্র্যান্ট দেয়া হয়, যার মাধ্যমে তিনি এক থেকে দুজন স্টুডেন্ট নিতে পারেন। কাজেই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হতে পারে আপনার ফান্ডিংয়ের সেই ত্রাণকর্তা।
কখন প্রফেসরদের মেইল দেবেন?
ফল (আগস্ট-সেপ্টেম্বর) এবং স্প্রিং (জানুয়ারি) এই দুই সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী নেয়া হয়। কাজেই পুরো বছর জুড়েই আসলে আপনার প্রফেসরদের মেইল করার সুযোগ থাকে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যে সেশনের জন্য আবেদন করবেন, সেই সেশনের আবেদন করার শেষ সময়ের তিন-চার মাস আগে মেইল দেয়া শুরু করা। সোম-শুক্র, সপ্তাহের এই পাঁচদিনের যেকোনো দিন সকাল আটটা থেকে বিকাল পাঁচটা, এর মাঝে যেকোনো সময়ে আপনি প্রফেসরকে ইমেইল দিতে পারেন।
অনেকে বলেন, সকাল আটটা থেকে নয়টার মাঝে, কিংবা দুপুরে লাঞ্চের সময়ে কিংবা দিনের শেষ ভাগে যখন প্রফেসররা একটু কম ব্যস্ত থাকেন, তখন মেইল দিতে। আসলে এরকম কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই, আর সব প্রফেসর যে উল্লেখ্য সময়ে অবসর থাকবেন এরকম কোনো কথা নেই। তবে লক্ষ্য রাখবেন, কোনোভাবেই যেন উইক-এন্ড কিংবা আন-অফিসিয়াল টাইমে আপনার ইমেইল না যায় তার কাছে।
প্রফেসর: অ্যাসোসিয়েট বনাম অ্যাসিস্ট্যান্ট
হিসাবটা খুব সহজ। ধরা যাক, আপনাকে একটি অফিসে চাকরির সুযোগ দিয়ে বলা হলো, আপনি কার সাথে কাজ করতে চান? আপনার অফিসের জিএম, ম্যানেজার কিংবা সিনিয়র কোনো এক্সিকিউটিভের সাথে- তাহলে আপনি কার সাথে কাজ করবেন? জিএম এর সাথে কাজ করলে দেখা যাবে তিনি আপনাকে কোনো কাজ করার অনুরোধ জানিয়ে কী করতে হবে না করতে হবে আপনাকে বলেই ছেড়ে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে দেখা যাবে, পুরো কাজ আপনাকে নিজে নিজে শিখেই করে নিতে হচ্ছে, কোনো ভুল হলো কিনা কিংবা কোনো কিছু জানার জন্য দেখা যাবে আপনাকে হয়ত তিনি কোন সময়ে ফ্রি আছেন তার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কিন্তু অন্যদিকে আপনার লাভ হচ্ছে এই যে, আপনি বাইরের মানুষের কাছে বেশি এক্সপোজার পাচ্ছেন, সবাই মনে করছে আপনি খুব দক্ষ বিধায় আপনি হয়তো তার অধীনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন এবং পরবর্তীতে এই পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে আপনি আরো ভালো কোনো জায়গায় চলে গিয়েছেন।
অপরদিকে ম্যানেজারের সাথে কাজ করলেও আপনি হয়তো একটু কম এক্সপোজার পাবেন, কিন্তু সিনিয়র এক্সিকিউটিভের সাথে কাজ করলে আপনার সেই সম্ভাবনা নেহায়েত প্রায় শূন্যের দ্বারপ্রান্তে। তিনি সর্বক্ষণ আপনাকে কাজ শিখিয়ে দিয়ে কাজ করিয়ে নিবেন ঠিকই, কিন্তু দিন শেষে আপনার ব্র্যান্ডিংয়ের সম্ভাবনা একদমই ক্ষীণ। ব্যাপারটা হলো অনেকটা সেই লোকের মতো, যে অনেক যত্ন করে গাছ লাগায়, গাছে সার, পানি সবই দেয়, কিন্তু ফল খাওয়ার সময় হলে তাকে চলে যেতে হয়।
অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের সাথে কাজ করার ব্যাপারটি ঠিক সেই রকম। আপনি শূন্য থেকে একদম শুরু করবেন– ল্যাবে যন্ত্রপাতি বসানো থেকে শুরু করে রিসার্চের কাজ সব আপনাকে করতে হবে ঠিকই, আপনার প্রফেসর আপনাকে হাতে ধরে কাজও শেখাবেন, কিন্তু যখন আপনার প্রফেসরের ল্যাবের কাজের সুনাম ধীরে ধীরে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে, ততদিনে আপনি সেই সুনামের ভাগীদার হওয়ার জন্য আর থাকবেন না। অন্যথায়, ফুল প্রফেসর কিংবা অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরদের সাথে কাজ করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ইন্ডাস্ট্রিতে কিংবা বড় ধরনের কোনো রিসার্চ অর্গানাইজেশনে ভাল এক্সপোজার পাওয়া যায়। তাদের শক্তিশালী অ্যালাম্নাই নেটওয়ার্ক থাকে এবং যা আপনাকে পাশ করার পর সহজে চাকরি পেতে খুব ভালভাবে সহায়তা করে।
মেইল দেয়ার নিয়ম কানুন
১) আপনার ই-মেইল আইডিটি যথেষ্ট প্রফেশনাল হতে হবে। সাধারণত প্রফেশনাল আইডি বলতে first name.last name/last name.first name/last name.11 এরকম বোঝায়। ভুলেও angel.priya কিংবা cooldude.sakib এ ধরনের ইমেইল আইডি ব্যবহার করবেন না। বাংলাদেশে যেহেতু সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা ইন্সটিটিউশনাল ইমেইল আইডি পায় না, তাই জিমেইল কিংবা আউটলুকের সার্ভিস ব্যবহার করা যেতে পারে। ইয়াহুর সার্ভিস ব্যবহার না করাই ভাল, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইয়াহুর মেইলে কোনো কিছু এটাচ থাকলে অনেক ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার সেটাকে স্প্যাম হিসেবে ধরে নিয়ে সোজা বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়।
২) ইমেইলের সাবজেক্টে বলে দিন আপনি কোন সেমিস্টার থেকে মাস্টার্স কিংবা পিএইচডির জন্য পজিশন খুঁজছেন- “Looking for a PhD position from Spring 2019”/Prospective PhD Student: Fall 2019″ এভাবে।
৩) বাংলাদেশে Dear Sir কিংবা Madam বলার যে রীতি আছে, এ রীতি এখানে নেই। হয় Dear Professor Dexter, নইলে Professor Dexter- লাস্ট নেম ধরে সম্বোধন করার রীতিই এখানে প্রচলিত।
৪) মেইল বেশি বড় করে যাবে না, অনেকে মেইল করতে গেলে ইতিহাস লেখা শুরু করেন। এত বড় মেইল আসলে কারো পড়ার ধৈর্য কিংবা সময় নেই। একজন প্রফেসর আপনার ইমেইল থেকে কী জানতে চাবেন– আপনার একাডেমিক রেজাল্ট, টেস্ট স্কোর (যদি থেকে থাকে), কোনো পেপার কিংবা পাবলিকেশন আছে কিনা তার তথ্য– এসব। এগুলো খুব সংক্ষেপে বুলেট পয়েন্ট করে লিখতে পারেন কিংবা মেইন বডিতে বোল্ড করে দিলে ভাল হয়; যাতে আপনার ইমেইল এর উপর চোখ বুলানোর সময় সহজে তথ্যগুলো চোখে পড়ে। আর সেই সাথে অ্যাটাচ করা একাডেমিক সিভি তো আছেই। সেখানে সব বিস্তারিত তথ্য দিয়ে দেবেন।
৫) মেইল দেয়ার আগে ঠিক করুন, আপনি কোন ধরনের প্রফেসরের সাথে কাজ করতে চান। আপনি কোন ধরনের কাজে আগ্রহী, আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা সায়েন্স ডিসিপ্লিনের কোন ধরনের ট্র্যাকে কাজ করতে চান। আপনি একইসাথে ফ্লুইড ফ্লো কিংবা কন্ট্রোল সিস্টেম থিওরিতে কাজ করার জন্য আগামী ২-৫ বছরের জন্য প্রস্তুত এটা কেউ বিশ্বাস করতে চাইবে না। গবেষণার কাজ দিনের পর দিন চালিয়ে যেতে লাগে প্রচুর আত্মনিবেদন এবং কাজের প্রতি ভালোবাসা, এবং এটা তখনই আসবে যখন আপনি আপনার পছন্দমতো ট্র্যাকে কাজ করতে পারবেন।
কাজেই বুঝে শুনে মেইল দিন। একই ট্র্যাকে অনেক প্রফেসর থাকলে, একজন প্রফেসরকে মেইল দেয়ার পর দুই থেকে তিন দিনের মতো অপেক্ষা করুন। তিনি আপনার মেইলের রিপ্লাই না দিলে তারপর অন্য প্রফেসরের কাছে ইমেইল দিন। কিন্তু ভুলেও ক্যনাভাসিং এর মতো করে একসাথে সবার কাছে মেইল দিতে যাবেন না।
৬) অনেকে মেইল ট্র্যাকার ব্যবহার করেন যে প্রফেসর আপনার ইমেইলটি পড়ছেন কিনা তা জানার জন্য। এই কাজটি আসলে মোটেও পছন্দনীয় নয়। আপনার ইমেইলটি যদি রিপ্লাই দেয়ার মতো হয়, তাহলে আপনি অবশ্যই রিপ্লাই পাবেন। যদি কোনো প্রফেসরের কাজ খুব পছন্দ হয়, কিন্তু কোনো কারণে আপনি তার কাছ থেকে রিপ্লাই পাননি, তাহলে ইমেইলের সাবজেক্ট এর শুরুতে ‘Follow up’ কথাটি লিখে পুনরায় আবার ইমেইল পাঠাতে পারেন।
মোটামুটি এই ক’টি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখলেই চলবে। তবে প্রফেসরকে ইমেইল করার আগে তার কাজ নিয়ে ভালোভাবে পড়াশোনা করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি অনেকভাবেই তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে পারেন- আপনি বলতে পারেন তার অমুক কাজটি আপনার ভাল লেগেছে, এবং এ ধরনের কাজে আপনার অমুক অমুক অভিজ্ঞতা আছে এবং আপনি মনে করেন আপনার স্কিল তার রিসার্চের কাজে লাগবে ইত্যাদি সংক্ষেপে বলতে চান।
মোদ্দা কথা, আপনাকে নিলে তার রিসার্চের গ্রুপে মান বাড়বে, এ কথা তাকে আপনার বোঝাতে হবে। তবে বাস্তবিক দিক থেকে সব প্রফেসরের রিসার্চ প্রোফাইল নিয়ে গবেষণা করে তারপর ইমেইল দেয়ার সময়টা আসলে থাকে না। সেক্ষেত্রে আপনি ইমেইলের একটি কমন ফরম্যাট দাঁড়া করাতে পারেন। যেখানে শুরুতে আপনি লিখবেন আপনি তার অধীনে কোন টপিকের উপর কাজ করতে চান, তারপর আপনার প্রোফাইল এবং গবেষণার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখে দিয়ে জানিয়ে দিন। সঙ্গত কারণে, কোনো স্যাম্পল ইমেইল এর ফরম্যাট দেয়া হলো না; আপনি কোন ফরম্যাটে ইমেইল লিখবেন সেটি আপনাকেই ঠিক করতে হবে।
কীভাবে বুঝবেন প্রফেসর আপনাকে আসলেই নিতে চান কিনা
প্রফেসরের মন বোঝা নারীর মন বোঝার মতো এত জটিল না। যদি আপনার পূর্বের গবেষণার অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, এবং প্রফেসর আপনার সিভি দেখে যদি মনে করে আপনাকে তার পিএইচডি স্টুডেন্ট হিসেবে নেয়া যায়, তাহলে তিনি আপনার সাথে স্কাইপে কথা বলতে পারেন। মূলত শর্টলিস্টেড ক্যান্ডিডেটদের সাথেই প্রফেসররা স্কাইপে কথা বলতে চান। অনেকে সরাসরি কথা না বললেও ইমেইল করে জানিয়ে দেন যে, আপনার প্রোফাইল তার ভাল লেগেছে, আপনি পরবর্তী সেমিস্টার এর জন্য আবেদন করুন। এবং সেই সাথে তিনি বলে দেবেন, স্টেটম্যান্ট অফ পারপাসে তার নাম আপনি উল্লেখ করুন।
তবে একটা জিনিস বলা প্রয়োজনীয়, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনকারীদের যাচাই বাছাই করার প্রক্রিয়াটি সবার আগে এডমিশন কমিটি দ্বারা সম্পাদিত হয়। এডমিশন কমিটি সব আবেদনকারীর প্রোফাইল দেখে যাদের তারা ভর্তির জন্য মনোনীত করবেন তাদেরকে রিকমেন্ড করা হয়। এবং প্রফেসররা এই রিকমন্ডেশনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়য়ে এডমিশন কমিটির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত সর্বাগ্রে প্রাধান্য পায়। সেক্ষেত্রে এডমিশন পাওয়ার পর, প্রফেসর আপনাকে ফান্ডিংয়ের জন্য বিবেচনা করবে।
তবে নিয়মের যে ব্যতিক্রম হয় না এমন না। প্রফেসর যদি আপনাকে নিতে চান এবং আপনার প্রোফাইল যদি আসলেই ভাল থাকে, তাহলে আসলে কেউ তা ঠেকাতে পারবে না। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রফেসররা তাদের পিএইচডি স্টুডেন্টের ফান্ড তাদের নিজেদের গবেষণার অনুদান থেকে দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে নিতে চাইলে, অন্যদের মতামতের খুব একটা গুরুত্ব নেই।
দিনশেষে, প্রফেসরদের মেইল করাটা অনেক সময়সাপেক্ষ এবং ধৈর্যের কাজ। আপনি সবার কাছ থেকে ইমেইলের রিপ্লাই পাবেন এমন কোনো কথা নেই, খুব অল্প কজনই আপনাকে রিপ্লাই দেবে এবং রিপ্লাইয়ের ধরন দেখে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি সেই বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করবেন কিনা।
Featured Image: Mittum