বাইরের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির ইচ্ছা জানিয়ে আবেদন করার সময় এক থেকে দুই পাতার একটি রচনা লিখতে হয়। একে বলা হয় স্টেইটমেন্ট অব পারপাস বা SOP। স্টেইটমেন্ট অব পারপাস মূলত নিজের ঢোল নিজে পেটানোর মতো। বলা যায় আপনাকে কেন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় তাদের মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি প্রোগ্রামের অধীনে নেবে তার জন্য বিজ্ঞাপনমূলক রচনা।
স্টেইটমেন্ট অব পারপাস গ্রাজুয়েট স্কুলে আবেদনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং একইসাথে সবচেয়ে কম গুরুত্ব পাওয়া (আবেদনকারীদের পক্ষ হতে) অংশ। একজন শিক্ষার্থী যে রকম গুরুত্বের সাথে প্রফেসরদের কাছে মেইল দেন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় যাচাই-বাছাই করেন, সে রকম গুরুত্ব দিয়ে স্টেইটমেন্ট অব পারপাস লিখেন না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এদিক সেদিক থেকে ধার করে অনেকটা জগাখিচুড়ী বানিয়ে শুধু নিজের সম্পর্কে যে সকল তথ্য না দিলেই নয়, তা দিয়ে একদমই সাধারণ মানের এক থেকে দুই পাতার একটি রচনা লিখেন। যে রচনা আপনার আবেদনকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে আপনাকে নিতান্তই একজন দুর্বল আবেদনকারী হিসেবে তুলে ধরে। অথচ, এডমিশন কমিটি আপনার এই ব্যক্তিগত রচনাকে বেশ গুরুত্ব সহকারে নিয়ে থাকে। তাই আপনার স্টেইটমেন্ট অব পারপাস যদি খুব ভালো না হয়, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনার আবেদনটি বাতিলের খাতায় চলে যেতে পারে। তাই গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে থাকছে বিস্তারিত আলোচনা ও পরামর্শ।
মুখবন্ধ বা ভূমিকা
অন্য যেকোনো আর্টিকেল কিংবা রচনার মতো স্টেইটমেন্ট অব পারপাসের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ধরে নিচ্ছি, অন্য আট দশটা সাধারণ মানের স্টেইটমেন্ট অব পারপাসের প্রথম অনুচ্ছেদের মতো আপনার শুরুটাও ঠিক এভাবে হলো-
I am applying for the Master of Science program in “X” Engineering Department at the University of “Y” because I believe that this program will help me to develop my scientific and technical knowledge.
কিংবা এভাবে,
I am extremely excited to apply for the Master of Science program in “X” Engineering Department at the University of “Y” because for as long as I can remember, I have had a true passion with science. Since I was a kid in school, I have known I wanted to be a scientist.
এই ছিল আপনার মুখবন্ধ। অনেকের মতো আপনিও চিন্তা করলেন- ব্যাকরণগত ভুল ঠিক করা, আর কিছু জিআরই শব্দভাণ্ডার ঢুকিয়ে আর খানিকটা এদিক সেদিক করে আপনি দিব্যি এই মুখবন্ধ চালিয়ে দেবেন। আপনার চিন্তাভাবনা যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনার লেখার শুরুটা কি গতানুগতিক লেখার বাইরে কিছু হয়েছে? লেখার প্রথম ভাগ পড়ে কেউ পরে কী লিখেছেন তা আর পড়তে আগ্রহী হবে? নিজের জায়গায় অন্যকে বসিয়ে এবার আপনি নিজেই তা যাচাই করুন।
এডমিশন কমিটি কী দেখে থাকে?
এডমিশন কমিটি আগে থেকেই জানে, আপনি তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ডিপার্টমেন্টে মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করেছেন। তাদেরকে আর নতুন করে শেখাতে হবে না যে, আপনি যে প্রোগ্রামে আবেদন করেছেন তা খুবই ভালো, পুরো পৃথিবী জুড়ে তার সুনাম ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্যাপারটা হয়ে গেল এমন- আপনি গিয়েছেন কোনো চাকরির ইন্টারভিউ দিতে। আপনাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কেন এই চাকরি করতে চান? আপনি উত্তর দিলেন– যাতে আমি অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারি।
আপনিই একমাত্র আবেদনকারী নন
এডমিশন কমিটির কোনো এক সদস্য যখন আপনার স্টেইটমেন্ট অব পারপাসটি পড়ছে, তার আগে তিনি হয়তো প্রায় একশো আবেদনকারীর লেখা রচনা পড়ে ফেলেছেন, এবং আপনার গতানুগতিকভাবে লেখা মুখবন্ধটি তাদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়নি। আপনি যদি চান হাজারটা স্টেইটমেন্ট অব পারপাস পড়ার পরও এডমিশন কমিটির সদস্যরা আপনার স্টেইটমেন্ট অব পারপাস মনে রাখবে, তাহলে আপনাকে অবশ্যই এমন কিছু লিখতে হবে যা শুধু আপনারই প্রতিচ্ছবি হবে, এবং একইসাথে সেটা হবে বিশেষ কিছু।
দরকার একটি হুক
When I was eleven, my big brother went abroad and left me something that changed my life: a home grown laboratory full of scientific equipment, a desktop computer and thousand of books. Some of my best days were spent cleaning the laboratory, gazing through his books and toying with his instruments. Since then, I have wanted to have my own lab like him.
প্রতিটা মানুষের জীবনের একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে এবং তার পেছনে অনুপ্রেরণামূলক একটি গল্প থাকে, আর এই লেখায় সেই গল্পকেই তুলে ধরা হয়েছে। যিনি এই লেখা পড়বেন তিনি অবশ্যই জানবেন আপনার জীবনের গবেষক হওয়ার লক্ষ্যের পেছনের অনুপ্রেরণার কথা, এবং এই অনুপ্রেরণামূলক তথ্য কিংবা গল্পগুলো আপনাকে অন্যান্য আবেদনকারী থেকে আলাদা করে ফেলে।
গল্প লিখুন, বিবৃতি নয়
ধরুন কেউ একজন দেশের বাইরে ঘুরতে গিয়েছেন। এখন তার সাথে দেখা হলে আপনি তার কাছে কোন ধরনের গল্প শুনতে চাইবেন? সেখানকার হোটেলের ভাড়া কত, খাবারের দাম কেমন, গাড়ি ভাড়া কত ছিল ইত্যাদি তথ্য জানতে চাইবেন নাকি সেসব জায়গায় ঘুরাঘুরির গল্প শুনতে চাইবেন? অবশ্যই কারো ভ্রমণের গল্প। কারণ এইটিই সবচেয়ে উপভোগ্য। মানুষ গল্পটাই মনে রাখে, তথ্য নয়। কারণ গল্প আমাদেরকে মানসিকভাবে যিনি গল্প বলেন তার সাথে যুক্ত করে ফেলে।
শ্রোতা কিংবা পাঠক কখনোই চাইবে না যে আপনার গল্প ঠিক একইরকম হতে হবে, কিংবা আপনি এইরকম গল্পের অনুকরণে আর একটি গল্প লিখুন। আপনাকে নিজের জীবনের অনুপ্রেরণার গল্প খুঁজে বের করতে হবে। আর সেটি নিয়েই আপনাকে লিখতে হবে। তাই স্টেইটমেন্ট অব পারপাস লেখার শুরুতে নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার স্টেইটমেন্ট মানুষ কীভাবে পড়বে? গল্পের মতো করে, না সংবাদপত্রের মতো করে? আপনার উত্তরই আপনার লেখা রচনার মান নির্ধারণ করে দেবে।
তবে স্টেইটমেন্ট অব পারপাসের শুরুটা যেভাবেই করুন না কেন, সেখানে কিছু প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই থাকতে হবে। যেমন-
- আপনি কেন উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চান?
- আপনি কেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান?
- আপনি কেন প্রফেসর “এক্স” এর ল্যাবে কাজ করতে চান?
- আপনি যে ফিল্ডে কাজ করতে চান, সে ফিল্ড সংশ্লিষ্ট গবেষণামূলক কাজে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
- আপনি যে ল্যাবে যোগদান করতে চান সেই ল্যাবে আপনি কীভাবে অবদান রাখবেন?
- আপনার ক্যারিয়ার লক্ষ্য কী এবং আপনি যেই প্রোগ্রামের অধীনে মাস্টার্স কিংবা পি এইচ ডি করতে চান তা কীভাবে আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে?
- এবং সবশেষে, আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রোগ্রামে আবেদন করছেন– তারা কেন আপনাকে স্কলারশিপের জন্য মনোনীত করবে?
আপনার লেখা স্টেইটমেন্ট অব পারপাসে এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই থাকতে হবে, কিন্তু তা হতে হবে গল্পের মতো করে।
কেন এটি এত গুরুত্বপূর্ণ
ধরুন, আপনি একটি কোম্পানির হায়ারিং ম্যানেজার। কোম্পানীর নতুন প্রজেক্টের জন্য দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে চান। আপনি বিজ্ঞাপনে বললেন যে অমুক অমুক যোগ্যতা যাদের আছে তারা যেন আবেদন করে। আবেদন প্রক্রিয়া শেষে আপনি আবেদনকারীদের মধ্য থেকে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে শর্টলিস্ট করলেন। কোনো একটি দিন তাদের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎতের জন্য ডাকলেন।
আপনি জানেন যারা শর্টলিস্টেড হয়েছেন তারা সবাই কমবেশি যোগ্য, কিন্তু আপনি চাইবেন আপনার কোম্পানির জন্য সবচেয়ে যোগ্য ক্যান্ডিডেট যিনি তাকেই নিতে। যেহেতু গ্র্যাড স্কুলের আবেদন প্রক্রিয়ার যাচাই বাছাইয়ের সময় সরাসরি আপনার ইন্টারভিউ নেওয়া সম্ভব নয়, তাই এই স্টেইটমেন্ট অব পারপাসকে অনেকটা লিখিত ইন্টারভিউ হিসেবে ধরা যায়। যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রফেসররা নিজ উদ্দ্যোগে আবেদনকারীদের স্কাইপ-এ ইন্টারভিউ নিয়ে থাকেন। তবে এডমিশন কমিটির সদস্যরা স্টেইটমেন্ট অব পারপাসকেই আবেদনকারীর লিখিত ইন্টারভিউ হিসেবে গণ্য করে থাকেন।
নিজের ঢোল নিজে পেটান
একটি পণ্য যত ভালোই হোক না কেন, তার বিজ্ঞাপন যদি ভালো না হয় তা যেমন মানুষ কিনবে না, ঠিক তেমনি আপনার স্টেইটমেন্ট অব পারপাস যদি ভালো না হয়– যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এডমিশন পাওয়ার সম্ভাবনা ততই কমে যায়।
তবে আপনি যা-ই লিখুন না কেন, তা অবশ্যই সঠিক হতে হবে। যেমন, আপনি যদি লিখেন আপনি প্রফেসর “এক্স” এর সাথে কাজ করতে চান তাহলে লিখুন কেন তার সাথে কাজ করতে চান? তার কোন ধরনের কাজ আপনার পছন্দ, আপনি কীভাবে আপনার দক্ষতা দিয়ে তার গ্রুপে অবদান রাখতে পারবেন। তাই এডমিশন কমিটির সামনে নিজের ঢোল নিজে পিটিয়ে বলুন আপনাকে হায়ার করতে। কারণ,
- আপনি যে ফিল্ড পছন্দ করেছেন তা নিয়ে আপনি খুবই প্যাশনেট।
- আপনি উচ্চ শিক্ষার জন্য নিজেকে খুব ভালোভাবে প্রস্তুত করেছেন এবং আপনি সবসময়ই নতুন কিছু শিখতে প্রস্তুত।
- আপনি একাডেমিক এবং রিসার্চের চাপ সামলাতে পারবেন
- সংশ্লিষ্ট ফিল্ডে আপনার ভালো অভিজ্ঞতা আছে এবং রিসার্চের কাজ ভালোভাবে করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা আপনার আছে।
- আপনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গ্র্যাজুয়েশন করতে পারবেন।
সংখ্যার খেলা
After finishing my final year project, I worked as a mentor in my lab, where I helped some undergrad students to finish their project.
যদিও আপনার এই লেখা থেকে বোঝা যায় আপনার ইন্সট্রাকটর হিসেবে অভিজ্ঞতা আছে, কিন্তু আপনার কতদিনের অভিজ্ঞতা আছে, আপনি কয়জন ছাত্রকে গাইড করেছিলেন সেসব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না। কিন্তু আপনি যদি একই লেখাটা একটু ভিন্নভাবে লিখেন,
After finishing my undergraduate project, I had a chance to mentor 2 senior year students from my lab for 6 months. I, initially, worked with them to develop their idea for the senior year project and taught them the required programming skills in Python so that they can write code for instrument control for their project.
এই লেখা থেকে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়, আপনি কয়জন ছাত্রকে কতদিন গাইড করেছিলেন, আপনি তাদের কী শিখিয়েছিলেন এবং আপনি কীভাবে তাদের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করেছিলেন। এভাবে আপনার অভিজ্ঞতাগুলাকে সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করুন। যেমন, আপনি যদি কোনো রিসার্চ গ্রুপের কাউকে সাহায্য করে থাকেন তাহলে তাদের সাথে কতদিন কাজ করেছিলেন, কী কী কাজ করেছিলেন এসব বিস্তারিত লিখুন।
আপনি আপনার ক্লাসে প্রথম সারির দিকে ছিলেন, এভাবে না লিখে লিখুন আপনি কত জনের মাঝে কত তম ছিলেন। ম্যাটল্যাব কিংবা পাইথনের কোডিং এক্সপেরিয়েন্স সম্পর্কে লিখতে হলে লিখুন আপনার কত ঘন্টা কোডিং এক্সপেরিয়েন্স আছে, কোন ক্যাড সফটওয়ারে আপনার কত ঘন্টা মডেলিংয়ের অভিজ্ঞতা আছে এভাবে বিশদ আকারে সংখ্যা দিয়ে আপনার অভিজ্ঞতাকে প্রকাশ করুন।
রচনাকে কাস্টমাইজ করুন
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আবেদনকারী খুবই সাধারণ একটি ফরম্যাটে তার স্টেইটমেন্ট অব পারপাসটি লিখে থাকে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার সময় শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এবং নির্দিষ্ট কোনো প্রফেসরের নাম পরিবর্তন করে দিয়েই খালাস। যারা ভাল পাঠক, তারা খুব সহজেই এই ফাঁকিটা ধরে ফেলে। যদিও আপনার মূল লক্ষ্য উচ্চ শিক্ষা নেওয়া কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফিলোসফি, রিসার্চ কালচার, একাডেমিক এবং রিসার্চের পরিবেশ, ফ্যাকাল্টিদের বিশেষত্ব ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। কাজেই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনার স্টেইটমেন্ট অব পারপাসটি সেভাবেই পরিবর্তন করুন।
অহেতুক জিআরই শব্দের ব্যবহার ত্যাগ করুন
Some entrants have the penchant to vaunt GRE words while they scribble their disquisition.
আপনি হয়তো ইতোমধ্যে মনে মনে ডিকশনারি খুঁজছেন উপরের বাক্যের শব্দের অর্থ দেখার জন্য। যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন বেশ কিছু শব্দ বাক্যের মূল বিষয়ের সাথে যায় না। আর এই ভূলটিই অনেক আবেদনকারী করে থাকেন। নিজেদের ইংরেজিতে পারদর্শীতা দেখাতে গিয়ে কনটেক্সটের বাইরে গিয়ে জিআরই শব্দের অহেতুক ব্যবহার করে থাকেন এবং যা কিনা কোনো বাক্যকে শ্রুতিমধুর করার পরিবর্তে দুর্বোধ্য করে তোলে।
এডমিশন কমিটিকে বলুন কেন তারা আপনাকে ফান্ডিং দেবে
ধরুন আপনার একাডেমিক রেজাল্ট খুব একটা ভালো না, কিন্তু আন্ডারগ্র্যাডে আপনি অনেক ভালো ভালো প্রজেক্ট করেছিলেন, বিভিন্ন কনটেস্টে পার্টিসিপেট করেছিলেন এবং তাতে পুরষ্কার জিতেছিলেন। তাহলে সেগুলো নিয়ে লেখুন। ধরুন, আপনি কম্পিউটেশনাল ফিল্ডে রিসার্চ করতে চান তাহলে আপনি লিখুন কীভাবে আপনি আপনার কম্পিউটিং দক্ষতার উন্নয়ন করেছেন, এর সাথে সম্পর্কিত কোর্সে কেমন গ্রেড ছিল আপনার, এ সম্পর্কিত আর কী কাজ করেছিলেন ইত্যাদি।
তবে এ ধরনের কথা লিখতে গিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়ার মানে নাই। যেমন আপনি কোনো এক বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কোন ডিপার্টমেন্টে দেখলেন তাদের কোনো এক ফ্যাকাল্টির কাছে মিলিয়ন ডলার ফান্ডিং আছে কম্পিউটেশনাল রিসার্চে, তাই আপনি ফান্ড পাওয়ার আশায় সেই প্রফেসর বরাবর আবেদন করে দিলেন। কিন্তু আপনার স্টেইটমেন্ট অব পারপাস পড়ে এডমিশন কমিটি কোনো ধারণাই পেলো না আপনার আদৌ কম্পিউটেশনাল ফিল্ডে কোনো অভিজ্ঞতা আছে কিনা। আপনি কেমন কোডিং জানেন কিংবা আপনার প্যাশন এই ফিল্ডে কীভাবে জন্মালো ইত্যাদি সম্পর্কে যদি তারা সুস্পষ্ট ধারণা না পায় তাহলে আপনার যোগ্যতা যত বেশিই হোক না কেন, আপনার আবেদন বাতিলের খাতায় ফেলে দেবে।
কেন আপনি প্রফেসর “এক্স” এর সাথে কাজ করতে চান?
এই পয়েন্ট টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ প্রফেসরই চান প্রো-একটিভ শিক্ষার্থী গবেষক আনতে। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তারা আপনাকে গাইড করবেন ঠিকই কিন্তু এরপর রিসার্চের মূল দায়িত্বটা আপনাকে নিতে হবে। তাই প্রফেসররা সবসময় চান তাদের ফিল্ড নিয়ে প্যাশনেট এমন কাউকে হায়ার করতে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আবেদনকারীরা এডমিশন কমিটিকে বোঝাতে ব্যর্থ হয় যে তারা কেন প্রফেসর “এক্স” এর সাথে কাজ করতে চায়।
কাজেই ভালো রিসার্চ ল্যাবে ঢুকতে হলে আপনাকে অবশ্যই বলতে হবে আপনি কেন তার সাথে কাজ করতে চান। প্রফেসরের আগের এবং বর্তমানের রিসার্চ প্রজেক্ট নিয়ে ঘাটাঘাটি করুন, কোন ধরনের প্রজেক্টের জন্য আপনি নিজেকে উপযুক্ত মনে করেন, আপনার কী কী স্কিল আছে এবং আপনি কীভাবে রিসার্চ গ্রুপে ভ্যালু এড করবেন তা গুছিয়ে লিখুন।
পড়ুন, ভাবুন, আবার পড়ুন এবং নতুনভাবে লিখুন এবং সাবমিট করুন
প্রথম ড্রাফট লেখা শেষ হলে তা কম করে হলেও দশবার পড়ুন। তারপর অভিজ্ঞ কাউকে পড়তে দিন। আপনার প্রতিটা বক্তব্য যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে কিনা এবং তা সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা ভালো করে বিচার করুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় আবেদনকারীরা এই স্টেইটমেন্ট অব পারপাসের লেখাকে শেষ মিনিটের টাস্ক হিসেবে রেখে দেয়। যার জন্য প্রথম ড্রাফটের কেবল ব্যাকরণগত এবং শব্দচয়ন ঘটিত ভূল বাদে, আর কোনোকিছুই ঠিক করার সময় তাদের হয়ে উঠে না।
কাজেই যথেষ্ট সময় হাতে নিয়ে স্টেইটমেন্ট অব পারপাস লিখে ফেলুন। নইলে দেখা যাবে, আপনার স্টেইটমেন্ট অব পারপাসটি খুবই সাধারণ মানের হয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে আপনি শুধু দূর্বলভাবে লেখা স্টেইটমেন্টের জন্যই বাদ পড়ে যাবেন। তাই ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সাথে নিন।