আর কিছুসময় বাদেই উঠতে যাচ্ছে ৯২তম অস্কারের পর্দা। বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় সম্মাননাটি কারা পেতে যাচ্ছেন, তা জানার জন্য মুখিয়ে আছেন অনেকে। এবারের অস্কারকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ যেন একটু বেশিই। কেননা সেরা চলচ্চিত্র, সেরা অভিনেতা, সেরা পরিচালকের মনোনয়নের তালিকায় আছেন সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতিভাদের কয়েকজন। বিজয়ী হয়তো একজনই হবেন, তবে এইবারের অস্কার মনোনীত ছবিগুলোর প্রত্যেকটিই যে মাস্ট ওয়াচ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তারপরেও আরাধ্য অস্কারটি কার হাতে উঠবে, তা আগেভাগেই কিছুটা আন্দাজ করা যায়। সেই কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে শুরু করে ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ড, বাফটা অ্যাওয়ার্ড কিংবা গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের তালিকা থেকে ধারণা নিয়ে এই প্রেডিকশন করা হয়েছে। অবশ্য এবারের অ্যাওয়ার্ডের মৌসুম মোটামুটি একটা ধারা বজায় রেখেছে। ওয়াকিন ফিনিক্স, রেনি জেলওয়েগার, ব্র্যাড পিট, লরা ডার্ন, বং জুন হু রা হয়তো নিজেদের অস্কার স্পিচ প্রস্তুত করে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। মোট চব্বিশটি বিভাগের মাঝে প্রধান কয়েকটি বিভাগে কাদের জেতার সম্ভাবনা বেশি, তা নিয়েই রোর বাংলার আজকের এই আয়োজন।
সেরা চলচ্চিত্র
এবারে সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে ফোর্ড ভার্সাস ফেরারি, ১৯১৭, ম্যারেজ স্টোরি, প্যারাসাইট, জোকার, ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন হলিউড, দ্য আইরিশম্যান, জোজো র্যাবিট, লিটল ওমেন। গেল কয়েক বছরের তুলনায় এবছরের ফ্রন্টরানার মুভিগুলো অনেক বেশিই দুর্ধর্ষ। তবে যে মুভিটি একদমই ঠিক পর্যায়ে ক্লিক করে গেছে, তা হলো স্যাম মেন্ডেসের ‘১৯১৭’।
প্রথম বিশ্ব-যুদ্ধভিত্তিক এই এপিক ওয়ার ড্রামা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে মুক্তির পর থেকেই। আরেক অস্কারজয়ী ‘বার্ডম্যান’ এর মতোই এক শটের এই চলচ্চিত্র অসামান্য নির্মাণের কারণে টেকনিকাল বিভাগগুলোতেও মনোনয়ন কুড়িয়ে নিয়েছে। সেই সাথে কাহিনীর গাঁথুনি আর অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তব্য আর মনোমুগ্ধকর সিনেমাটোগ্রাফি মিলিয়ে মুভিটিকে প্রায় নিখুঁত বলা যায়। ‘সেভিং প্রাইভেট রায়ান’ কিংবা ‘ডানকার্ক’ এর ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি বটে, তবে অ্যাকাডেমি কিন্তু বরাবরেই যুদ্ধভিত্তিক পিরিয়ড ড্রামাগুলোর প্রতি সদয়। তবে ‘১৯১৭’ এর ঘাড়ে শ্বাস ফেলছে দক্ষিণ কোরিয়ান ‘প্যারাসাইট’। এর আগে কখনোই বিদেশী ভাষার কোনো চলচ্চিত্রকে এই বিভাগে জিততে দেখা না গেলেও এবছরের সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়া ‘প্যারাসাইট’।
সম্ভাব্য বিজয়ী: ১৯১৭
ডার্ক হর্স: প্যারাসাইট
সেরা পরিচালক
সেরা পরিচালক বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন মার্টিন স্করসেজি, বং জুন হুন, স্যাম মেন্ডেস, কুয়েনটিন ট্যারেন্টিনো এবং টড ফিলিপস। বাস্তব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত মাফিয়া ড্রামা ‘দ্য আইরিশম্যান’ দিয়ে স্করসেজি দাগ কেটেছেন সবার মনে। কেবল অপরাধীদের নিষ্ঠুর জীবন নয়, তাদের অনুশোচনা কিংবা পরিণতিগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ আবেগতাড়িত করেছে দর্শককে। হলিউডে নিজের কাটানো কৈশোরের অনুভূতিকে ঘিরে ভায়োলেন্স মাস্টার টারান্টিনো নিজের গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে এসেছেন কিছুটা। এদিকে ‘জোকার’ এর মনস্তাত্ত্বিক গোলকধাঁধায় দর্শককে অনায়াসে শামিল করেছেন টড ফিলিপস।
তবে সেরা চলচ্চিত্র বিভাগের মতোই রেসে বেশি আগিয়ে আছেন স্যাম মেন্ডেস এবং বং জুন হু। ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ডে তো টাইই হয়ে গেছে দুইজনের। নিজের ডেব্যু চলচ্চিত্র ‘আমেরিকান বিউটি’ দিয়েই অস্কারে বাজিমাত করেছিলেন মেন্ডেস। তবে গতবছরে যেমন ‘রোমা’ দিয়ে আলফনসো কুয়ারন জিতে নিয়েছিলেন, এবারেও সেরকম বং জুন হুর জিতে নেবার ভালো সম্ভাবনা আছে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: বং জুন হু
ডার্ক হর্স: স্যাম মেন্ডেস
সেরা অভিনেতা
সেরা অভিনেতা বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন ওয়াকিন ফিনিক্স, অ্যাডাম ড্রাইভার, লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও, অ্যান্টনিও ব্যান্ডেরাস এবং জোনাথন প্রাইস। বিশ বছরের ক্যারিয়ার জুড়ে বর্ণিল অনেক চরিত্রই উপহার দিয়েছেন ফিনিক্স, তবে আর্থার ফ্লেকের প্রভাব ছিল অন্যমাত্রার। মেথড অ্যাক্টিং দিয়ে তিনি চরিত্রের সাথে এমনভাবে মিশে গেছেন যে আতঙ্কিত হয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন দর্শকেরা।
ব্যাটম্যানের আর্চনেমেসিস হিসেবে নয়, ঘুণে ধরা সমাজের ঘাত-প্রতিঘাতে অধঃপতিত একজন মানুষের চরিত্র হিসেবেই ওয়াকিনের জোকারকে মনে রাখবেন সবাই। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডাম ড্রাইভার আর অ্যান্টনিও ব্যান্ডেরাসকে এ পর্যন্ত বড় কোনো অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিততে দেখা যায়নি। সেটা তাদের দুর্ভাগ্যই বলা যায়, কেননা তারা দুইজনেই নিজেদের ক্যারিয়ারের স্মরণীয় পারফরম্যান্স দিয়েছেন। তাই বড় কোনো অঘটন না ঘটলে চারবার অস্কারের মনোনয়ন পাওয়া ওয়াকিন অবশেষে পেয়ে যাচ্ছেন তার প্রথম অস্কারটি।
সম্ভাব্য বিজয়ী: ওয়াকিন ফিনিক্স
ডার্ক হর্স: অ্যাডাম ড্রাইভার
সেরা অভিনেত্রী
সের অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন রেনে জেলওয়েগার, স্কারলেট জোহানসন, সার্শা রোনান, চার্লিজ থেরন এবং সিনথিয়া এরিভো। আর ঠিক ওয়াকিনের মতোই রেনে জেলওয়েগারও হলিউডের প্রধান সবগুলো অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছেন এই মৌসুমে।
এর আগে ‘কোল্ড মাউন্টেন’ এর জন্য সেরা সহ-অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতা রেনে এবছর দর্শক-সমালোচকের অকুণ্ঠ প্রশংসা অর্জন করেছেন ‘জুডি’ মুভিটির জন্য। ‘দ্য উইজার্ড অফ অজ’, ‘অ্যা স্টার ইজ বর্ন (১৯৬)’ খ্যাত হলিউড আইকন জুডি গারল্যান্ডের বাস্তব জীবনটা ছিল মর্মন্তুদ। তার ঘন ঘন মুড সুইং আর দ্বৈত সত্ত্বার দ্বন্দ্ব ফুটিয়ে তোলার জন্য ক্যারিয়ারে কিছুটা বাজে সময় পার করা রেনি হয়ত নিজের অভিজ্ঞতাকেই ফুটিয়ে তুলেছেন। অস্কারজয়ী মিউজিকাল ‘শিকাগো’তে কাজ করাটাও ভালো প্রভাব ফেলেছে তার পারফরম্যান্সে। তার বাকি চারজন প্রতিদ্বন্দ্বী অবশ্য কেউই কারো থেকে কম যান না। ডিভোর্স নেয়া মায়ের চরিত্রে ওতপ্রোতভাবে মিশে গিয়েছেন স্কারলেট জোহানসন, এদিকে এযুগের ‘মেরিল স্ট্রিপ’, সার্শা রোনান পেয়ে গেছেন জীবনের চতুর্থ অস্কার মনোনয়ন। তারপরেও অস্কারটা সম্ভবত রেনের শোকেসেই যাচ্ছে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: রেনে জেলওয়েগার
ডার্ক হর্স: স্কারলেট জোহানসন
সেরা সহ-অভিনেতা
সেরা সহ-অভিনেতা বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন টম হ্যাঙ্কস, ব্র্যাড পিট, আল পাচিনো, জো পেশি এবং অ্যান্থনি হপকিন্স। বলা যায়, হেভিওয়েট অভিনেতাদের সমারোহ হয়ে গেছে এবছর এ বিভাগে। তারমধ্যে ব্র্যাড পিট বাদে বাকি চারজন ইতিমধ্যেই অস্কার জিতে নিয়েছেন।
আর আগের দুই বিভাগের মতো এই বিভাগেও বছরের বড় বড় সব অ্যাওয়ার্ড একতরফাভাবে জিতে নিয়েছেন ব্র্যাড পিট। হলিউডের পুরনো দিনের এক স্টান্টম্যানের ভূমিকায় স্বভাবসুলভ কারিশমায় স্ক্রিন মাতিয়েছেন পিট। বিশেষ করে মুভির কিছু ক্লাইম্যাটিক মুহূর্তে ভিন্ন স্বাদ যুগিয়েছেন তিনি, যেটা হয়তো আর কারো পক্ষেই সম্ভব ছিল না। এটা তার ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ পারফরম্যান্স নয়, তবে মাফিয়াদের টপকিয়ে হয়তো এটাই তাকে অভিনয় বিভাগে আরাধ্য সোনালী মূর্তিটি জিতিয়ে দেবে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: ব্র্যাড পিট
ডার্ক হর্স: আল পাচিনো
সেরা সহ-অভিনেত্রী
সেরা সহ-অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন স্কারলেট জোহাসনসন, লরা ডার্ন, মার্গো রবি, ফ্লোরেন্স পাফ এবং ক্যাথি বেটস। ‘ম্যারেজ স্টোরি’ মুভিতে নির্দয় আইনজীবীর ভূমিকায় এতোটাই সাবলীল অভিনয় করেছেন লরা ডার্ন, যে তার প্রতি দর্শকের ঘৃণা জেগে উঠতে বাধ্য। ভদ্র আচরণের খোলসে ধারালো সংলাপ দিয়ে স্ক্রিন শাসন করেছেন তিনি।
এছাড়া, নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রীদের মাঝে দারুণ সম্ভাবনাময় ফ্লোরেন্স পাফের অভিনয় ছিল মনে দাগ কাটার মতো, তবে তার জেতার সম্ভাবনা কম। কে জানে, ডার্ন হয়তো তিনি অস্কারটি হারাতে পারেন স্কারলেট জোহানসনের কাছে। একই সাথে সেরা অভিনেত্রী এবং সেরা সহ-অভিনেত্রীর ভূমিকায় অস্কার মনোনয়ন পাওয়া স্কারলেটকে হয়তো ‘জোজো র্যাবিট’ এর উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের জন্য বিবেচনা করে দেখতে পারে অ্যাকাডেমি। ব্যবসাসফল এবং সমালোচক-প্রিয় তিনটি মুভি দিয়ে দারুণ এক বছর কাটানো স্কারলেটের জন্য ‘চেরি অন টপ’ হবে সেটা।
সম্ভাব্য বিজয়ী: লরা ডার্ন
ডার্ক হর্স: স্কারলেট জোহানসন
বিদেশী ভাষায় সেরা চলচ্চিত্র
বিদেশী ভাষায় সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে কর্পাস ক্রিস্টি, লা মিজারেবল, প্যারাসাইট, পেইন অ্যান্ড গ্লোরি এবং হানিল্যান্ড। এ বিভাগে মোটামুটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুরস্কারটি চলে যেতে পারে ‘প্যারাসাইট’ এর কাছে।
সেই কান চলচ্চিত্র উৎসব পাম ডি অর থেকে শুরু করে ইতিমধ্যেই অনেক পুরস্কার ঘরে গেছে প্যারাসাইট এর প্রযোজকদের। বং জুন হুর এই মাস্টারপিসটি বিভিন্ন জনরার মধ্যেকার পার্থক্য মিশিয়ে দিয়ে অনন্যসাধারণ এক কাহিনী উপস্থাপন করেছে। বাকি চারটি মুভি নিঃসন্দেহে মনোনয়ন পাবার যোগ্য, কিন্তু ‘প্যারাসাইট’ কে পিছে ফেলার মতো নয়।
সম্ভাব্য বিজয়ী: প্যারাসাইট
সেরা অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র
সেরা অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন: দ্য হিডেন ওয়ার্ল্ড, ক্লস, আই লস্ট মাই বডি, টয় স্টোরি ফোর, মিসিং লিঙ্ক। দর্শকপ্রিয় দুই ফ্র্যাঞ্চাইজ ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’ আর ‘টয় স্টোরি’ এ বছর ফিরে এসেছে স্ব-মহিমায়। তবে অ্যাওয়ার্ড মৌসুম মাতিয়ে চলেছে নেটফ্লিক্সের ‘ক্লস‘।
নাম শুনেই বোঝা যায়, ক্রিস্টমাস আইকন সান্টা ক্লসকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এর কাহিনী। অনেককে অবাক করে হিউ জ্যাকম্যানের ‘মিসিং লিঙ্ক’ মনোনয়ন কুড়িয়ে নিলেও এর জেতার সম্ভাবনা কম। অঘটন ঘটাতে পারে আরেক নেটফ্লিক্স মুভি ‘আই লস্ট মাই বডি’, কিছুটা রাডারের আড়ালে থাকা এই মনোমুগ্ধকর ফ্রেঞ্চ অ্যানিমেশনটি নিঃসন্দেহে অস্কারের দাবি রাখে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: ক্লস
ডার্ক হর্স: আই লস্ট মাই বডি
সেরা চিত্রনাট্য (অরিজিনাল)
এই বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন কোয়েন্টিন টারান্টিনো (ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন হলিউড), নোয়া বমব্যাখ (ম্যারেজ স্টোরি), রিয়ান জনসন (নাইভস আউট), স্যাম মেন্ডেজ, ক্রিস্টি উইলসন-কার্নস (১৯১৭) এবং বং জুন হু এবং হা জি ওন (প্যারাসাইট)। এই বিভাগে আসলে বিজয়ীকে বেছে নেয়া কিছুটা মুশকিলই। ম্যানসন মার্ডার, হিপ্পি কালচারের পাশাপাশি ষাটের দশকের হলিউড স্টুডিওগুলোর ভেতরকার পরিবেশ নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য টারান্টিনো অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এদিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধভিত্তিক এপিক ‘১৯১৭’ মুভিতে দুই সৈন্যের দুঃসাহসিক অভিযানে দর্শককে সঙ্গী করেছেন স্যাম মেন্ডেস, কেননা এক শটের মুভির ঘটনাগুলো ঘটেছে বাস্তব সময় অনুযায়ী।
তবে হাড্ডাহাড্ডি এই লড়াইয়ে কিছুটা আগিয়ে আছেন কোরিয়ানরাই। এমনিতেই টুইস্ট ধর্মী মুভির জন্য খ্যাতি আছে তাদের, কিন্তু সমসাময়িক বিশ্বকে ঘিরে বানানো ড্রামা যে এরকম সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে রূপ নেবে, সেটা বলতে গেলে কেউই ঠাহর করতে পারেননি শুরুতে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: বং জুন হু এবং হা জি ওন (প্যারাসাইট)
ডার্ক হর্স: কোয়েন্টিন টারান্টিনো (ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন হলিউড)
সেরা চিত্রনাট্য (অ্যাডাপ্টেড)
এই বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন গ্রেটা গারউইগ (লিটল উইমেন), টড ফিলিপস, স্কট সিলভার (জোকার) তাইকা ওয়াইতিতি (জোজো র্যাবিট), অ্যান্থনি ম্যাককার্টেন (দ্য টু পোপস) এবং স্টিভেন জাইলিয়ান (দ্য আইরিশম্যান)। সত্যি ঘটনাকে মুভির স্বল্প পরিসরে ফুটিয়ে আনা হয়েছে ‘দ্য টু পোপস’ এবং ‘দ্য আইরিশম্যান’ মুভি দুইটায়। ‘লিটল উইমেন’ উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে আরো একবার সেলুলয়েডের পর্দায় জীবন্ত করেছেন গ্রেটা গারউইগ। কমিক বইয়ের সুপার ভিলেনের চরিত্রে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন টড ফিলিপস এবং স্কট সিলভার।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ঘটনার মধ্যে ভিন্ন আঙ্গিকে কমেডি নিয়ে আসা তাইকা ওয়াইতিতি হয়তো অন্যদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছেন তার ফিল গুড মুভি ‘জোজো র্যাবিট’ দিয়ে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: তাইকা ওয়াইতিতি (জোজো র্যাবিট)
ডার্ক হর্স: গ্রেটা গারউইগ (লিটল উইমেন)
সেরা চিত্রগ্রহণ
সেরা চিত্রগ্রহণ বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন রডরিগো প্রিটো(দ্য আইরিশম্যান), রজার ডিকিন্স (১৯১৭), জারিন ব্লাশকে (দ্য লাইটহাউজ), রবার্ট রিচার্ডসন (ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন হলিউড), লরেন্স শের (জোকার)। ভেটেরান রজার ডিকিন্সের মাস্টারমাইন্ড চিত্রগ্রহণ ছাড়া হয়তো এরকম উচ্চাভিলাষী একটা প্রজেক্টকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হত না। ১৪ মনোনয়নের পর তাকে প্রথম অস্কার এনে দিয়েছিল ‘ব্লেড রানার ২০৪৯’। তবে দুই ব্রিটিশ সৈন্যের অসম্ভব এক মিশনকে ঘিরে ক্যামেরা চালানো কিন্তু কোনো ফ্যান্টাসির চেয়ে কম দুরূহ নয়।
এছাড়াও চমক দেখিয়েছেন ‘দ্য লাইটহাউজ’ এর জারিন ব্লাশকে। কেবল সাদা-কালোর মাঝে যে কত ধরনের বৈচিত্র্যপূর্ণ অবয়ব ফুটিয়ে তোলা সম্ভব, তা এই মুভিটি না দেখলে কল্পনা করাও দুষ্কর ছিল। অন্যান্য বিভাগে অবহেলার স্বীকার হওয়া মুভিটি চমক দেখাতে পারে এ বিভাগে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: রজার ডিকিন্স
ডার্ক হর্স: জারিন ব্লাশকে
সেরা মিউজিকাল স্কোর
এ বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন হিলডুর গুরনাডোটির (জোকার), থমাস নিউম্যান (১৯১৭), অ্যালেক্সান্ডার ডেসপ্লা (লিটল উইমেন), ম্যারেজ স্টোরি (র্যান্ডি নিউম্যান), জন উইলিয়ামস (স্টার ওয়ার্স: দ্য রাইজ অব স্কাইওয়াকার)। টিভি সিরিজ ‘চেরনোবিল’ দিয়ে সাড়া ফেলা হিলডুর বড় পর্দায়ও ছক্কা হাঁকিয়েছেন ‘জোকার’ এর শিহরণ জাগানিয়া সাউন্ডট্র্যাক দিয়ে।
নিঃসন্দেহে অস্কারের সবচেয়ে বড় দাবিদারও তিনি। জোকারের মোট ১১ টি মনোনয়নের মধ্যে সেরা অভিনেতা আর সেরা মিউজিকাল স্কোর বিভাগ দুইটির জয় প্রায় নিশ্চিত বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।
সম্ভাব্য বিজয়ী: হিলডুর গুরনাডোটির (জোকার)