রেস্তোরাঁর নানাধর্মী খাবারের স্বাদ নিতে আমরা কমবেশি সকলেই ভালবাসি। নানান বর্ণ গন্ধের খাবারের মধ্যে ইতালীয় ঘরানার খাবারও জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে নেই। ইতালীয় খাবারের নাম উঠলে প্রথমেই মাথায় আসে পিজ্জা কিংবা পাস্তার কথা। এগুলোর যেমন নানান ধরণ রয়েছে রয়েছে বাহারি স্বাদও। নানান আকৃতি ও ঢঙে তৈরি পাস্তার যেমন একটি অপরটি থেকে দেখতে ভিন্ন তেমনি ভিন্নতা আছে এদের উপযোগিতা আর ব্যবহারে। এই লেখনীর কেন্দ্রীয় চরিত্র ইতালীয় খাবার পাস্তা যেখানে আমরা ঘুরে বেড়াব পাস্তাজগতের অলিতে গলিতে জানতে পাস্তার ইতিহাস, বর্তমান, পাস্তা-সসের যুগলবন্দীসহ আরো নানাবিধ গল্প।
পাস্তা ইতালীয় খাদ্যজগতের এক অন্যতম মুখ্য ঐতিহ্যবাহী খাবার। পাস্তার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১১৫৪ সালের সিসিলিতে।পাস্তা সাধারণ অর্থে দুরুম গমের (Triticum durum বা Triticum turgidum subsp. durum) আটা, পানি অথবা ডিম মিশিয়ে তৈরি খামির থেকে নানান আকৃতিতে তৈরি নুডুলস বিশেষ যা পরবর্তীতে ফুটিয়ে কিংবা বেক করে রান্না করা হয়। পাস্তা মূলত দুই প্রকারের হয়ে থাকে- টাটকা পাস্তা (pasta fresca) এবং শুষ্ক পাস্তা (pasta secca)। মার্কো পোলো চীন থেকে পাস্তা নিয়ে ইতালি এসেছিলেন জনশ্রুতি থাকলেও এটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, পাস্তা ইতালীয়দেরই উদ্ভাবন এবং এর প্রতি তাদের একাগ্র নিবেদনই রন্ধনশিল্পে একে তাদের নৈপুণ্য ও গর্বের প্রতীক হিসেবে স্থান করে দিয়েছে।
পাস্তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
টাটকা পাস্তার আঁতুড়ঘর হিসেবে চিহ্নিত করা হয় প্রাচীন রোমকে, সেখানে সুজিতে পানি যোগ করে তা থেকে পাস্তা বানানো হতো। বর্তমানে বাজারে সহজলভ্য শুষ্ক পাস্তার সাথে সে পাস্তার একটি তফাত্ এই ছিল যে, টাটকা পাস্তা বানিয়ে ফেলার পরপরই তা রান্না করে খেয়ে ফেলা হতো। ৮ম শতাব্দীতে আরবদের সিসিলি আক্রমণের সময়কেই শুষ্ক পাস্তার উদ্ভবকাল বলে মনে করা হয়। নতুন ধরনের পাস্তা হিসেবে আগত এই শুষ্ক পাস্তার বিপুল উত্পাদন শুরু হয় ইতালির দক্ষিণের শহর পালের্মোতে। এখনো পাস্তার কিছু কিছু রেসিপিতে আরবদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়, যার মধ্যে কিসমিস ও দারচিনির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য।
১৩০০ সনের দিকে শুষ্ক পাস্তা এর দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ করার সুবিধা এবং পুষ্টিগুণের জন্য লম্বা সমুদ্রযাত্রায় ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বলাবাহুল্য, এই সকল সমুদ্রযাত্রা দেশ-বিদেশে পাস্তার পরিচিতি ও আবেদনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয় এবং পাস্তার গঠন ও এটি তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিতে অগ্রসরমান প্রভাব আনতে সমর্থ হয়। এদিকে ইতালিতে পাস্তা তখন তার অগ্রযাত্রা বজায় রেখে ধীরে ধীরে উত্তরে নেপলসের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। সপ্তদশ শতকে এটি নেপলসে জেঁকে বসতে সক্ষম হয়।
কিছু রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ পাস্তাকে একপ্রকার জাতীয় আইকনে পরিণত করে। ১৮৬০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইতালীয় একীভবন বা Risorgimento এর সময় এটি মুখ্য খাবারের একটিতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে ইতালীয় সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জিউসেপ গ্যারিবল্ডি ১৮৯১ সালে পেল্লেগ্রিনো আরটুসির লেখা ‘La Scienza in cucina e l’Arte I Mangiar bene’ নামক বইটির সাথে দেশের মানুষকে পরিচিত করান, বইটি লেখা হয়েছিল পাস্তাকে কেন্দ্র করেই। উনবিংশ শতাব্দীতে ইতালিতে আগত টমেটো সসকে ইতালীয়রা শুরুতে স্বাগত জানায়নি। নাইটশেড গণের অন্তর্ভুক্ত টমেটোকে অনেক এলাকায় খাবার হিসেবে গ্রহণের অযোগ্য বিবেচনা করা হতো, তবে ধীরে ধীরে এই ভুল ধারণা কেটে যায়। পাস্তায় এর ব্যবহার হতে বাধা থাকে না। পাস্তার আদি ইতিহাসের শেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ইতালীয় জনগণের গণদেশত্যাগের সাথে জড়িত। ইতালীয় একীভবন ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে অনেক ইতালীয় নাগরিক ইতালি ছেড়ে অন্য দেশে চলে যায়। এই সময়কার ভোগান্তি ও কষ্টগুলোই যেন ইতালীয়দের রান্নাবান্নায় নিজের নৈপুণ্য ও পারদর্শিতা ফুটিয়ে তোলার জ্বালানি হিসেবে কাজ করেছিল যা তাদের গর্বেরও খোরাক বটে!
পাস্তার রকমফের
পাস্তা মূলত দু’প্রকার: pasta fresca (টাটকা, যা কিনা বানাবার পরপরই রেঁধে খেয়ে ফেলা হয়) ও pasta secca (শুষ্ক)। এই দুই রকম পাস্তাকে চারশ’রও বেশি প্রকারে ভাগ করা সম্ভব, যার প্রত্যেকটিই অন্যটি থেকে কোনো না কোনোভাবে আলাদা ও অনন্য। পাতলা পাত, ফলা কিংবা লম্বা সুতোর ন্যায়, সিলিন্ডার আকৃতির, নানা আকারের ও স্বাদের এবং নানা আঞ্চলিক ধরনের পাস্তার অস্তিত্ব এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে বিদ্যমান। এত রকমের পাস্তার ছড়াছড়ি এই সমগ্র পৃথিবীতে আছে যে সেগুলোর সবকটির নামও একসাথে মনে রাখা সম্ভব নয়, যদিও ইতালীয় নিয়ম মেনে সকল পাস্তাই মোটামুটিভাবে প্রায় একই মূল উপাদানে তৈরি- দুরুম গমের আটা, পানি এবং বিশেষ পরিমাণে আদ্রর্তা ও অম্লতা। মূল উপাদানগুলোর সীমারেখার বাইরে নানা উপাদান, নির্যাস ও রং সহযোগে ভিন্ন ভিন্ন পাস্তা বানানো সম্ভব। ডিমের কুসুম, পালং শাক, টমেটোর ক্বাথ, চকোলেট এমনকি স্কুইড ইঙ্ক দিয়েও পাস্তা বানানোর নজির আছে এবং এই পাস্তাগুলো সঠিকভাবে তৈরি ও পরিবেশন করা হলে এদের প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজস্ব স্বাদের জেল্লা।
পাস্তার স্বাদু জগতে ডুব দেবার ক্ষেত্রে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পাস্তার সাথে যে সসটি খাওয়া হবে। পাস্তা ও সসের যথার্থ যুগলবন্দীই পারে পাস্তাকে তার নিজ যোগ্যতায় অনন্যসাধারণ করে তুলতে। পাস্তার স্বাদ ও আবরণই অনেকটা বলে দিতে পারে যে কোন সসের সাথে এর যুগলবন্দী জমে যাবে। এক্ষেত্রে খুবই সাধারণ একটি নিয়ম মেনে চলা হয়- মোটা ভারী পাস্তার জন্য বেশি ঘন সস এবং হালকা পাস্তার জন্য পাতলা বা কম ঘনত্বের সস।
কীভাবে বানানো হয় পাস্তা?
টাটকা পাস্তাই সবরকম পাস্তার মূল উত্সবিন্দু। সাধারণত উচ্চ আর্দ্রতায় এগুলোর অনেকগুলোই তৈরি হলেও আঞ্চলিকতার সাপেক্ষে এগুলোর নানান প্রকরণ পাওয়া যায়। উত্তর ইতালিতে পাস্তার খামির বানাতে ময়দা ও ডিম ব্যবহৃত হয় আবার দক্ষিণ ইতালিতে ব্যবহৃত হয় উত্কৃষ্ট মানের সুজি ও পানির মিশ্রণ। ইতালির সবচেয়ে ভাল মানের টাটকা পাস্তা তৈরি হয় এমিলিয়া রোম্যাগনা (Emilia-Romagna) অঞ্চলে, সেখানে সদ্য তৈরি পাস্তা রান্না করে পরিবেশন করা হয় ক্রিম সসের সাথে। এদিকে পাস্তার আরেকটি আঞ্চলিক প্রকরণ পাওয়া যায় পিরমণ্টে (Piedmont), যেখানে মাখন এবং ব্ল্যাক ট্রুফল (কালচে মাটির নিচে জন্মানো কন্দজাতীয় ছত্রাকবিশেষ) এর ব্যবহার প্রচলিত। এছাড়া আঞ্চলিক পরিবর্তনের সাথে সাথে পাস্তায় ব্যবহৃত উপাদানসমূহের তালিকাটাও পরিবর্তিত হতে থাকে- পাস্তায় আলু কিংবা রিকোট্টা চিজের ব্যবহারও এরই বাস্তবিক প্রভাব।
টাটকা পাস্তা বানানোর পরে পছন্দসই আকারে কেটে নেয়া হয় এবং তারপর তা খোলা বাতাসে আংশিক শুকিয়ে নেয়া হয় কিছুক্ষণ। এরপরই তা সেদ্ধ করে রান্না করা হয়।
এদিকে শুষ্ক পাস্তা তথা pasta secca তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় বিশেষ যন্ত্র। প্রথমে, পাস্তার খামিরকে ডাই মেশিনের (একপ্রকার কাটার যন্ত্র) ছিদ্রযুক্ত প্লেটের মধ্য দিয়ে চালনা করা হয় এবং তারপর এগুলোকে কাটার জন্য সমতলে রাখা হয়। পছন্দসই আকৃতিতে কাটার পর একে শুকানোর জন্য নেয়া হয়। Pasta seccaগকে খাঁটি পাস্তা হিসেবে তখনই আখ্যা দেয়া যাবে যখন তা একদম পুরো ইতালীয় নিয়ম মেনে তৈরি হয়। সে অনুসারে, পাস্তাকে প্রথমে তামার পাত্রে ১৫ ঘণ্টার কিছু বেশি সময় একে আস্তে আস্তে শুকোতে দেয়া হয় এবং তারপর সেটিকে খোলা বাতাসে শুকোনো হয়। যদিও পৃথিবীর বাকী অংশগুলোতে সময় বাঁচাতে স্টিলের পাত্রে অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় পাস্তা শুকোনো হয়, কিন্তু এতে সময় বাঁচলেও যে উত্পাদিত পণ্য পাওয়া যায় তা অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের। ইতালীয়রা তাদের পাস্তা বানানোর ধরণ ও স্বাদ নিয়ে গর্বিত, তাদের পাস্তার দ্রুত রান্না হবার গুণ এবং সসের সাথে এর চমত্কার রসায়নে তারা গর্বিত হতেই পারে।
নানান ঢঙের পাস্তাগুলি
অনন্য আকৃতির বিচারে
ক্যাম্পানেলি (Campanelle)
এগুলো বেশ চ্যাপ্টা খামিরে বানানো এবং ঘণ্টার মতোন দেখতে। ছোট ছোট ঘন্টার মতোন দেখতে এই পাস্তার একদিকে ঝলরের মতো অংশ রয়েছে।ক্রিমি কিংবা মাংসযুক্ত সসের পাশাপাশি চিজবোলেও এর ব্যবহার রয়েছে।
কাপুন্তি (Capunti)
ছোট উত্তল আবরণবিশিষ্ট ডিম্বাকৃতির পাস্তাগুলি দেখতে অনেকটাই ফাঁকা মটরশুঁটির খোসার মতো।
ক্যাজারেচ্চে (Casarecce)
ইতালীয় Casereccio অর্থ ঘরে তৈরি। ক্যাজারেচ্চে খাটো ধরনের পাস্তা যা ইংরেজি S আকৃতিতে বানানো হয়।
ক্যাভাতেল্লি (Cavatelli)
ক্যাভারে অর্থ ফাঁপা। ক্যাভাতেল্লি খাটো তবে লম্বাটে।
সেনসিওনি (Cencioni)
এগুলো পাপড়ির মতো দেখতে, হালকা বাঁকানো অমসৃণ অবতল অংশযুক্ত পাস্তা।
কনচিগ্লি (Conchiglie)
সামুদ্রিক শামুকের খোলের মতো দেখতে এই পাস্তা।
কনচিগ্লিওনি (Conchiglioni)
বড় আকৃতির শামুকের ন্যায় পাস্তা যার ভেতরে পুর দেয়া যায়।
করজেট্টি (Corzetti)/ ক্রক্সেট্টি (Croxetti)
চ্যাপ্টা আকৃতির গোলাকার ধাতব মুদ্রা বা চাকতির মতো দেখতে এই পাস্তাগুলোর ওপর নানা নকশা করা থেকে যার মধ্যে আট বাহুবিশিষ্ট তারকা কিংবা ছোট ছোট ক্রস উল্লেখযোগ্য।
ক্রেস্টে ডি গ্যাল্লো (Creste di Gallo)
বাঁকানো ছোট এই পাস্তাগুলোর একপাশে ঢেউখেলানো।
ফ্যান্টোলিওনি (Fantolioni)
পান্ডা আকৃতির বো-টাইয়ের মতো দেখতে এই পাস্তাগুলিকে সাধারণত সেদ্ধ জলপাইয়ের সাথে পরিবেশন করা হয়।
ফারফ্যাল্লে (Farfalle)
বো-টাই অথবা প্রজাপতির মতো দেখতে এই পাস্তাটি।
ফিওরেন্টিন (Fiorentine)
বাঁকা করে কাটা লম্বাটে ফাঁপা পাস্তা হলো ফিওরেন্টিন।
ফিওরি (Fiori)
ছোট ছোট ফুলের মতো দেখতে পাস্তাগুলোকে ফিওরি বলে।
ফগলি ডু’লিভো (Foglie d’ulivo)
এই পাস্তাটি দেখতে জলপাই এর পাতার মতো।
ফুসিলি (Fusilli)
সর্পিলাকার বাঁকানো এই পাস্তা অনেকটা স্ক্রু এর প্যাঁচযুক্ত অংশের মতো দেখতে।
ফুসিলি বুকাটি (Fusilli Bucati)
স্প্রিং এর মতো দেখতে মাঝে গর্তযুক্ত হয়ে থাকে এ পাস্তাটি।
জিমেল্লি (Gemelli)
একটি ইংরেজি বর্ণ ‘S’ আকৃতির লম্বা পাস্তাকে পেঁচিয়ে সর্পিলাকার করে তোলা হয় যা দেখলে মনে হয় যেন দুটি পাস্তা পরস্পর প্যাঁচ খেয়ে জড়িয়ে আছে।
জিগলি (Gigli)
ফুল কিংবা কোণাকৃতির হয় এ পাস্তাগুলি।
নিওক্কি (Gnocchi)
গোলাকৃতির এই পাস্তাগুলোকে সাধারণত ময়দা ও আলু সহযোগে বানানো হয়।
গ্র্যামিগনা (Gramigna)
ছোট বাঁকানো পাস্তা। রান্না করাবস্থায় একসাথে একটি আগাছার স্তুপের মতো মনে হয়।
ল্যান্টার্নে (Lanterne)
বাঁকানো চূড়াবিশিষ্ট এ পাস্তাটি অনেকটা প্রদীপ রাখার জন্য ব্যবহৃত বস্তুর মতো দেখতে।
লুমাচে (Lumache)
Lumaca অর্থ শামুক। পাস্তাগুলো শামুক আকৃতির।
লুমাকনি (Lumaconi)
বড় আকৃতির শামুক তথা এই শামুকাকৃতির পাস্তাগুলো আকারে সাধারণ লুমাচের চেয়ে বড়।
মালটাগ্লিয়াতি (Maltagliati)
চ্যাপ্টা এবড়োথেবড়োভাবে কাটা ত্রিভুজাকৃতির পাস্তা এগুলি।
মান্দালা (Mandala)
ফরাসি পাস্তা প্রস্তুতকারক পানজানির জন্য ১৯৮৭ সালে ফিলিপে স্টার্ক এই পাস্তার নকশা করেন। এটির নকশা এমনভাবে করা হয় যেন তা প্রয়োজনের থেকে বেশিমাত্রায় রান্না না হয়ে যায়।
ম্যারিল্লে (Marille)
১৯৮৩ সালে জিওরেত্তো গুইজিয়ারো এর নকশা করেন। বাঁকা হয়ে খেলানো সামুদ্রিক ঢেউ এর ওপর কোঁচকানো গোল অংশ বসানো আছে এমন দেখতে পাস্তাটি এখন আর তেমন তৈরি হয় না।
ওরেকিয়েট্টে (Orecchiette)
মানুষের কানের মতো অথবা ছোট ছোট বাটির মতো দেখতে এই পাস্তাটি।
পাইপ (Pipe)
বড় ধরনের ম্যাকারনি।
কোয়াদ্রেফিওরে (Quadrefiore)
লম্বাটে আপাত বর্গাকার এই পাস্তার চারদিকে ঢেউখেলানো অংশ একে দেখতে লম্বাটে ফুলের মতো করেছে।
রেডিয়েটর (Radiatore)
তাপ বিকিরণকারী যন্ত্র বা রেডিয়েটরের মতো দেখতে বলে এটির এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।
রিচ্চিওলিনি (Ricciolini)
কোঁকড়ানো এই পাস্তাটি খাটো ও চওড়া এবং এতে ৯০° কোণের বাঁক রয়েছে। Riccio অর্থ কোঁকড়ানো।
রিচিউতেল্লি (Ricciutelle)
এটিও খাটো সর্পিলাকারে বাঁকানো পাস্তা।
রোতেল্লি (Rotelle)
গাড়ির চাকার মতো দেখতে এই পাস্তাটি। Ruota-wheel (ছোট চাকা) থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে।
রোটিনি (Rotini)
দ্বিপার্শিকভাবে সর্পিলাকার প্যাঁচ দেয়া এই পাস্তা বেশ ভালভাবে পেঁচানো থাকে। এটির ত্রিপার্শিক প্রকরণও বাজারে বিদ্যমান। রোটিনিকে প্রায়ই ফুসিলির সাথে গুলিয়ে ফেলেন অনেকে। কিন্তু এ দুটো দেখতে প্রায় কাছাকাছি হলেও ফুসিলি যেখানে তন্তুর মতো কাটা পাস্তাকে পেঁচিয়ে বানানো হয় সেখানে রোটিনি বানানো হয় চ্যাপ্টা চিকন করে কাটা পাস্তাকে প্যাঁচ খেলিয়ে।
স্পিরালি (Spirali)
প্যাঁচযুক্ত টিউবের মতো দেখতে এই পাস্তা।
স্পিরালিনি (Spiralini):
খুব কষে প্যাঁচানো ফুসিলিই স্পিরালিনি।
স্ট্র্যাংগোলাপ্রেতি (Strangolapreti)
প্রস্থ বরাবর প্যাঁচানো।
টর্চিও (Torchio)
এই পাস্তাটি দেখতে অনেকটা টর্চলাইটের মতো।
ট্রফি (Trofie)
পাতলা প্যাঁচানো পাস্তা।
টিউবের মতো পাস্তা
বুকাটিনি (Bucatini)
দেখতে স্প্যাগেটির মতোই, কিন্তু ফাঁপা।
ক্যালামারাতা (Calamarata)
প্রশস্ত আংটির মতো দেখতে এই পাস্তাটি রিং রিং করে কাটা বেবি স্কুইড বা calamari থেকে নামকরণ করা হয়েছে।
ক্যালামারেত্তি (Calamaretti)
ছোট আকৃতির ক্যালামারেত্তি।
ক্যান্নেলনি (Cannelloni)
বড়সড় ফাঁপা টিউব যেগুলোতে পুর ভরা যায়।
কাভাটাপ্পি (Cavatappi)
কর্কস্ক্রুর মতো দেখতে একপ্রকার ম্যাকারনি, একে সেলেনটানি (Cellentani) এবং স্পিরালি (Spirali) নামেও ডাকা হয়।
চিফেরি (Chifferi)
খাটো এবং প্রশস্ত ম্যাকারনি।
ডিটালিনি (Ditalini)
ছোট টিউব অনেকটা এলবো ম্যাকারনির মতো দেখতে, কিন্তু সেটি অপেক্ষা খাটো এবং এতে এলবো ম্যাকারনির বাঁক অনুপস্থিত।
ফিডেউয়া (Fideua)
ছোট পাতলা টিউব।
গোমিতো ম্যাচেরনি (Gomito Maccheroni)
বাঁকবিশিষ্ট টিউব, এলবো ম্যাকারনি নামেও পরিচিত।
এলিকইডালি (Elicoidali)
খাঁজকাটা টিউব আকৃতির পাস্তা। খাঁজগুলো Rigatoni পাস্তার খাঁজের বিপরীতভাবে কাটা হয়।
ফ্যাজিওলনি (Fagioloni)
খাটো, সরু টিউব।
গারগানেল্লি (Garganelli)
বর্গাকৃতির এগ নুডুলকে পেঁচিয়ে টিউবের আকৃতি দিয়ে এই পাস্তা বানানো হয়।
ম্যাচেরনি (Maccheroni)
কনে আঙ্গুলের মতো লম্বা এবং ডোরাকাটা দাগবিশিষ্ট পাস্তা।
ম্যাচেরনসেল্লি (Maccheroncelli)
ফাঁপা পেনসিলের আকৃতির পাস্তা।
মালটাগ্লিয়াতি (Maltagliati)খাটো চওড়া পাস্তা, যার দু’পাশ অমসৃণ, আড়াআড়িভাবে কাটা।
ম্যানিকট্টি (Manicotti)
ইতালিয়ান Manica অর্থ জামার হাত। অনেকটা পোশাকের হাতের মতো দেখতে এই খাঁজযুক্ত বড়সড় টিউব আকৃতির পাস্তায় পুর দেয়া যায়।
মেজ্জানি (Mezzani)
Mezzo অর্থ অর্ধাকৃতি। ছোট বাঁকানো টিউব এই পাস্তাগুলো।
মেজ্জে পেনে (Mezze Penne)
আভিধানিক অর্থে পেনের অর্ধেক। পেনে পাস্তার ক্ষুদ্র রূপ এ পাস্তাটি।
মেজ্জে বোমবার্ডোনি (Mezze Bombardoni)
বোমবার্ড পাস্তার ক্ষুদ্রতর রূপ, আকারে ছোট ও প্রশস্ত হয়ে থাকে।
মোস্টাচ্চিওলি (Mostaccioli)
মাঝে মাঝে একে পেনের সাথে মিলিয়ে ফেলা হয়, যদিও আদতে এটি পেনে নয়। পেনে পাস্তার সাথে এর তফাতটা এখানে যে, এর পেনের মতো উঁচুনিচু খাঁজকাটা নেই। মোস্টাচ্চিওলিকে ‘Penne Lisce’ বা মসৃণ পেনেও বলা হয়। Mustaches (গোঁফ) অনুসারে এই নামকরণ করা হয়েছে।
প্যাচেরি (Paccheri)
বড় টিউব।
পাস্তা আল ক্রেপ্পো (Pasta al Ceppo)
দারুচিনির স্টিকের মতো দেখতে এই পাস্তাটি।
পেনে (Penne)
মাঝারি আকৃতির খাঁজকাটা টিউব যার দু’পাশ আড়াআড়িভাবে কাটা। এর আড়াআড়িভাবে কাটা দু’পাশ ফাউন্টেন পেনের অগ্রভাগের মতো দেখতে বিধায় একে পেনে নামকরণ করা হয়েছে। খাঁজযুক্ত পেনেকে পেনে রিগাটে (penne rigate) এবং খাঁজবিহীন মসৃণ পেনেকে পেনে লিসচে/মোস্টাচ্চিওলি (Penne Lisce/Mostaccioli) বলে। একইভাবে নানা রকম চওড়া পেনে (Pennoni / Penne Zita), খাটো পাতলা পেনে (Pennette) এর অস্তিত্বও বিদ্যমান।
পার্সিয়াতেল্লি (Perciatelli)
মোটা বুকাটিনি। Perciare অর্থ ভেতর থেকে ফাঁপা, যা অনুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে।
রিগাটনচিনি (Rigatoncini)
রিগাটনির ক্ষুদ্রতম প্রকরণ।
রিগাটনি (Rigatoni)
Riga অর্থ সারি। বড় এবং হালকা বাঁকানো টিউব এই রিগাটনি পাস্তা। বড় বড় দাগ সারিবদ্ধভাবে কাটা থাকে এতে, তাই এর নাম রিগাটনি। রিগাটো (Rigato), রিগাটে (rigate) কোনো পাস্তার নামের সাথে থাকলেই বুঝে নিতে হবে হয় এতে দাগ দেয়া আছে কিংবা খাঁজ কাটা আছে, যেমন- Spaghetti rigati।
স্যাগনে এনক্যান্যুলেট (Sagne ncannulate)
লম্বা ফিতের মতো পাস্তা পেঁচিয়ে তৈরি করা হয় একে। অনেকটা আমাদের দেশীয় মিস্টার টুইস্টের মতো দেখতে এটি।
ট্রেনে (Trenne)
এটি একপ্রকার পেনে পাস্তা, তবে এটি ত্রিভুজাকৃতির।
ট্রেনেটে (Trennette)
ট্রেনে পাস্তার ক্ষুদ্র রূপ।
টর্টিগ্লিওনি (Tortiglioni)
সরু আকৃতির রিগাটনি, তবে এটি বাঁকানো হয়ে থাকে।
তুফোলি (Tuffoli)
খাঁজযুক্ত রিগাটনি।
জিটি (Ziti)
লম্বা, সরু হোসপাইপের মতো টিউব এটি।
জিটোনি (Zitoni)
জিটির চওড়া প্রকরণ।
সূত্রাকার পাস্তা
স্প্যাগেটনি (Spaghettoni)
স্থূলকায় স্প্যাগেটি, কিছুটা পাকানো।
স্প্যাগেটি (Spaghetti)
Spago অর্থ পাকানো, spaghetto অর্থ হালকা পাকানো, spaghetti হলো spaghetto এর বহুবচন। এটি খুব প্রচলিত লম্বা, গোল-রড আকৃতির পাস্তা।
স্প্যাগেটিনি (Spaghettini)
পাতলা স্প্যাগেটি।
ফেডেলিনি (Fedelini)
এই পাস্তার গড়ন স্প্যাগেটি ও ভার্মিচেলির মাঝামাঝি।
ভার্মিচেলোনি (Vermicelloni)
মোটা আকৃতির ভার্মিচেলি পাস্তা।
ভার্মিচেলি (Vermicelli)
ভার্মিচেলি পাস্তাটি ক্যাপেলিনির চেয়ে মোটা, কিন্তু ফেডেলিনির চেয়ে কম পুরুত্বের অধিকারী।
ক্যাপেলিনি (Capellini)
ভার্মিচেলির চেয়ে পাতলা কিন্তু এঞ্জেল হেয়ারের চেয়ে বেশি পুরুত্বের পাস্তা এটি।
ক্যাপেলিনি ড্যানজেলো (Capellini d’angelo)
একে এঞ্জেল হেয়ারও বলা হয়। এটি সবচেয়ে পাতলা পুরুত্বের গোল-রড আকৃতির পাস্তা। খুব সূক্ষ্ম এই পাস্তা চোখের পলকেই রান্না হয়ে যায় এবং খুব দ্রুত সস শোষণ করে। এক ইঞ্চির ১৫ ভাগের একভাগ পুরু এই পাস্তা পাতলা ব্রথ এবং ক্রিমসসের সাথে দারুণ মানানসই।
পুরুত্বের বিচারে
বারবিনা (Barbina)
চিকন চিকন সূত্রাকার পাস্তাকে পরস্পর পেঁচিয়ে পাখির বাসার মতো বানানো হয় এবং এভাবেই পাস্তাটি তৈরি হয়।
স্প্যাগেটি এলা চিতারা (Spaghetti alla Chitarra)
স্প্যাগেটির মতো এই পাস্তাটি গোলাকার রড আকৃতির বদলে বর্গাকার এবং ময়দার সাথে ডিম মিশিয়ে এটি বানানো হয়।
চিরিওল (Ciriole)
চিতারার পুরু প্রকরণ এটি।
ফুসিল্লি লুংগি (Fusilli Lunghi)
বেশ লম্বা রড আকৃতির পাস্তা। অনেকটা টেলিফোনের তারের মতো পেঁচিয়ে তৈরি করা হয় এটি।
পিচি (Pici)
খুব মোটা, লম্বা এবং হাতে বানানো পাস্তা।
রিবন বা ফিতের আকৃতির পাস্তা
বাভেট্টে (Bavette)
টাগলিয়াতেল্লির সরু প্রকরণ এটি।
বাভেট্টিনে (Bavettine)
বাভেট্টের সরু প্রকরণ এই পাস্তা।
ফেটুস (Fettuce)
ফেটুচ্চিনে পাস্তার প্রশস্ত প্রকরণ এটি।
ফেটুচ্চিনে (Fettuccine)
প্রায় ৬.৫ মিলিমিটার চওড়া ফিতে আকৃতির পাস্তা।
ফেটুচেল্লি (Fettucelle)
ফেটুচ্চিনের সরু প্রকরণ এটি।
লাগানে (Lagane)
চওড়া নুডুলস।
লাসাগনা / লাসাগনে (Lasagne)
বেশ প্রশস্ত এ পাস্তাগুলোর খাঁজকাটা অগ্রভাগ রয়েছে।
লাসাগনেট (Lasagnette)
লাসাগনার সরু প্রকরণ।
লাসাগনোট (Lasagnotte)
লাসাগনার লম্বাটে প্রকার এটি।
মাইক্রো বা ক্ষুদ্রাকৃতির পাস্তা
একিনি ডি পেপে (Acini di Pepe)
মুক্তোদানার মতো দেখতে এই পাস্তাটি।
এনেলি (Anelli )
ছোট রিং আকৃতির পাস্তা।
এনেলিনি (Anellini)
এনেলির ক্ষুদ্রতর প্রকারের পাস্তা।
কনচিগ্লিয়েট্টে (Conchigliette)
ছোট আকৃতির ঝিনুকের মতো দেখতে পাস্তা।
কোরাল্লিনি (Corallini)
ছোটখাট পাস্তার টিউব।
ডিটালি (Ditali)
ছোটখাটো টিউব। ডিটালিনির চেয়ে আকারে বড়।
ফারফেলিন (Farfalline)
ছোট বো-টাই বা প্রজাপতির মতো দেখতে এই পাস্তা।
ফিডেওস (Fideos)
খাটো, পাতলা পাস্তা।
ফিলিনি (Filini )
Filo অর্থ সুতা। এটি ফিডেওসের ক্ষুদ্র প্রকরণ।
ফ্রেগুলা (Fregula)
সার্ডিনিয়ার মুক্তোদানার ন্যায় পাস্তা।
ফুঙ্গিনি (Funghini)
ছোট ব্যাঙের ছাতার ন্যায় দেখতে পাস্তা।
ওচি ডি পারনিসে (Ochi di Pernice)
খুবই ছোট রিং আকৃতির পাস্তা।
ওরজো (Orzo)
চাল আকৃতির পাস্তা।
পাস্তিনা (Pastina)
ছোট গোলকাকৃতির পাস্তা, যার আকার একিনি ডি পেপে পাস্তার অনুরূপ কিংবা তার চেয়ে ছোট।
পার্ল পাস্তা (Pearl Pasta)
একিনি ডি পেপের চেয়ে কিঞ্চিৎ বৃহদাকৃতির গোলক।
কোয়াড্রেট্টিনি (Quadrettini)
বর্গাকৃতির পাতলা ছোট পাস্তা।
রিসি (Risi)
ওরজো এর ক্ষুদ্রতর প্রকরণ।
সেমে ডি মেলনে (Seme di Melone)
ছোট তরমুজের বীজ আকৃতির পাস্তা।
স্টেলে (Stelle)
ছোট তারকা আকৃতির পাস্তা।
স্টেলিন (Stelline)
স্টেলের ক্ষুদ্রতর প্রকরণ।
স্টরটিনি (Stortini)
এলবো ম্যাকারনির ক্ষুদ্রতর প্রকরণ।
ট্রাচানা (Trachana)
দানাদার অনিয়মিত আকৃতির পাস্তা যার আদি বীজ নিহিত আছে গ্রীসে।
পুর দেয়া পাস্তা
এগনোলত্তি (Agnolotti)
অর্ধবৃত্তাকার হয়ে থাকে যার ভেতরে রিকোট্টা চিজ অথবা মাংস ও নানাবিধ চিজের মিশ্রণ কিংবা সবজির ক্বাথের পুর দেয়া হয়ে থাকে।
ক্যানেলনি (Cannelloni)
বড় বড় টিউব আকৃতির এই পাস্তাগুলো পুর দিয়ে ওভেনে রান্না করা হয়।
ক্যাসনচেল্লি (Casoncelli)
অর্ধবৃত্তাকার পুরযুক্ত পাস্তা, যাতে ব্রেড ক্রাম্ব, ডিম, চিজ, মিহি করে কুচোনো গরুর মাংস, সালামি, কিসমিস, আমারেত্তি বিস্কুট, নাশপাতি এবং রসুনের মিশ্রণযুক্ত পুর দেয়া হয়।
ফ্যাগোট্টিনি (Fagottini)
পাস্তার খামির গোল করে নিয়ে তাতে পুর দিয়ে সেটিকে চারদিক থেকে চেপে বন্ধ করে বলের মতো পাস্তা বানানো হয়। পুর হিসেবে রিকোট্টা চিজ এবং টাটকা নাশপাতি ব্যবহার করা হয়।
মেজ্জেলুনে (Mezzelune)
অর্ধবৃত্তাকার প্রায় ২.৫ ইঞ্চি ব্যাসের পাস্তা যাতে পুর দেয়া হয়।
অকি ডি লুপো (Occhi di Lupo)
বড়সড় পেনে আকৃতির পাস্তা যাতে পুর দেয়া হয়।
প্যানজেরোট্টি (Panzerotti)
ডিম, চিজ ও ময়দা দিয়ে বানানো এক ধরনের পাস্তা।
পেলমেনি (Pelmeni)
মাংসের পুর দেয়া এই পাস্তাগুলোকে ব্রথে ডুবিয়ে পরিবেশন করা হয়।
পিয়েরগি (Pierogi)
মাংস, সবজি, চিজ কিংবা ফলের পুর দিয়ে বানানো হয় এই পাস্তাটি।
র্যাভিওলি (Ravioli)
বর্গাকার ৩X৩ সে.মি. এই পাস্তায় পুর হিসেবে চিজ, মিহি করে কুচোনো মাংস, সবজির পিউরি কিংবা এগুলোর মিশ্রণ দেয়া হয়।
স্যাচেট্টিনি (Sacchettini)
ছোট বস্তার আকৃতির হয় এই পাস্তা।
টরটেলিনি (Tortellini)
রিং আকৃতির এই পাস্তায় মাংস এবং চিজের পুর দেয়া হয়।
টরটেলনি (Tortelloni)
টরটেলিনির বৃহত্তর প্রকরণ এটি।
পাস্তা ও সসের যুগলবন্দী
পাস্তার সাথে সসের মেলবন্ধনটা যুত্সই না হলে ব্যাপারটা ঠিক জনে না। পাস্তার গড়নই আপনাকে বলে দেবে এর সাথে কেমন সস আপনার চাই! চলুন দেখে নেয়া যাক।
পাতলা, চিকন ও লম্বা পাস্তা, যেমন স্প্যাগেটি, এঞ্জেল হেয়ার, ক্যাপেলিনি এবং স্প্যাগেটিনি প্রভৃতির জন্য
এই ধরনের তন্তুর ন্যায় পাস্তার জন্য মানানসই হলো হালকা চালের সসগুলো, যেমন- টমেটো কিংবা রসুন আর অলিভ অয়েল, যা কিনা সমভাবে সব নুডুলসগুলোকে আবৃত করবে এবং কাঁটাচামচ ব্যবহার করে খাবার সময় প্লেট থেকে তুলতে গেলে তা নিচে চুইয়ে পড়বে না।ছোট হালকা উপাদান, যেমন- টাটকা সবজি, ডুমো করে কাটা টমেটো কিংবা গুঁড়ো করা মচমচে প্যানচেট্টা এতে যোগ করে একে করে তোলা যেতে পারে সুস্বাদু।
লম্বা, সমতল, চ্যাপ্টা ধরণের ফিতার ন্যায় পাস্তা, যেমন- ফেটুচ্চিনে, লিঙ্গুইনে, টাগ্লিয়াতেল্লি এবং প্যাপারডেল্লির মতো পাস্তার জন্য
ফিতের মতো চ্যাপ্টা পাস্তার আদর্শ সঙ্গী হলো ঘন ক্রিমি সস এবং এই পাস্তাগুলোর চ্যাপ্টাকৃতি সহজেই ঘন ক্রিমি সসের সাথে পাল্লা দিয়ে যুঝে উঠতে পারে। খুব সাধারণ নিয়মে বলতে গেলে ঘন সসের সাথে প্রশস্ত নুডলসই যথার্থ যুগলবন্দী তৈরি করে। চওড়া ফিতার ন্যায় প্যাপারডেলের সাথে ঘন মাংসের সস এবং অপেক্ষাকৃত কম প্রশস্ত ফিতের ন্যায় ফেটুচ্চিনে এবং লিঙ্গুইনের সাথে সাধারণ ক্রিম সস, যেমন- আলফ্রেডো কিংবা সামুদ্রিক খাবারই মানানসই সঙ্গী।
লম্বা টিউবের মতো নুডলস, যেমন- পারসিয়াতেল্লি এবং বুকাটিনি প্রভৃতির জন্য
এগুলো স্প্যাগেটির মতো হলেও এদের মধ্যভাগের ছিদ্রের জন্য এর যথার্থ সঙ্গী হালকা ঘনত্বের সস এবং এই তরল সস পাস্তাগুলোর ভেতরে ভেতরে গিয়ে এর স্বাদের পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে। টক প্যানচেট্টা কিংবা লাল মরিচের টুকরো এতে চমত্কার স্বাদ এনে দিতে পারে।
খাটো টিউবের মতো পাস্তা, যেমন- পেনে, রিগাটনি, জিটি, ক্যাভাটাপ্পি, ক্যাম্পানেল্লি প্রভৃতির জন্য
খাটো টিউবের ন্যায় পাস্তাগুলোর মধ্যে বৈচিত্র্য বিদ্যমান। এগুলোকে স্যুপ, সালাদ, ক্যাসেরোল এবং ক্রিমি কিংবা ভারী ধাঁচের সস সহযোগে পাস্তা রেসিপিতে ব্যবহার করা হয়। টিউব যতো বড় হবে ততই অল্প মাংস বা সবজিযুক্ত ক্রিমি সসের সাথে এর হৃদ্যতা বাড়বে। পাস্তার নামের সাথে ‘রিগাটে’ (rigate) থাকলেই বুঝে নিতে হবে এতে খাঁজকাটা রয়েছে অর্থাৎ এতে পেস্তো এর মতো সসগুলো সহজেই লেগে থাকবে।
পাস্তা ইতালীয় ঘরানার এক অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার যা সময়ের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে এক বৈচিত্র্যময় যাত্রায়। এর শেকড় ইতালির হলেও এর জনপ্রিয়তা ডালপালা মেলে ছড়িয়ে গিয়েছে সমগ্র বিশ্বে। গরম ধোঁয়া ওঠা ওভেন বেকড কিংবা প্যান ফ্রাইড পাস্তা খাবার সময় ইতালীয়দের একটা ধন্যবাদ আমরা দিতেই পারি।
ফিচার ছবিসূত্র- food.ndtv.com এবং অনন্যা আজাদ রিশা