Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মেরুপ্রভা: আকাশ যখন স্বর্গীয় রঙিন ক্যানভাস

অন্তত ইন্টারনেটের কল্যাণে হলেও বিষুবীয় অঞ্চলের বাংলাদেশে মেরু ঘেঁষা অঞ্চলের অনন্য-প্রাকৃতিক ঘটনাটি অনেক চেনা। শুধু চেনাই নয়, জীবনে একবার হলেও মেরুপ্রভা চর্মচক্ষে উপভোগ করবার পরিকল্পনা থাকে অনেকের ‘বাকেট লিস্ট’-এর শুরুর দিকেই। কারণ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জিনিস কোনটি, এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আকাশের সুন্দরতম জিনিস কোনটি, এ প্রশ্নে ‘মেরুপ্রভা’ ব্যতীত কোনো উত্তর আসা অষ্টমাশ্চর্য।

রাতের শেষভাগে উত্তর গোলার্ধ বা দক্ষিণ গোলার্ধের প্রান্তছোয়াঁ দেশগুলোর আকাশে প্রায়ই দেখা যায় এই স্বর্গীয় হোলি। মেরুপ্রভা শুরুতে আকাশে আবির্ভূত হয় কয়েকটি রঙের বর্ণালীতে, যেগুলো ধনুকের মতো বাঁকা। হাতে বানানো বায়োস্কোপে কাগজের নকশাগুলো যেমন বারবার পরিবর্তিত হতে থাকে; তেমনি আবির্ভাবের পর মেরুপ্রভাতেও রঙগুলো এক থাকে, কিন্তু সেকেন্ডে সেকেন্ডে পাল্টাতে থাকে নকশা। রঙগুলো তখন একটা আরেকটার সাথে যেভাবে মেশে, তাতে আপনার মনেই হতে পারে কোনো আকাশের প্যালেটে এক নিপুণ শিল্পী  তুলিতে নানা রঙ মাখিয়ে জলেতে গুলছেন। মেরুপ্রভার নড়নচড়ন কখনো ঢেউয়ের মতো তরঙ্গাকারে কম্পমান, আবার কখনো সাইক্লোনের বায়ুকুণ্ডলীর মতো ঘূর্ণায়মান। কখনো মেরুপ্রভার রঙগুলো একত্রে পাক খায়, কখনো পুরো আকাশে লালিমার মতো ছড়িয়ে যায়, আবার কখনো বা দ্রুতগামী স্প্রে-রঙের মতো বিক্ষিপ্তভাবে ছিটিয়ে যায়।

উইন্ডোজ ভিস্তার ওয়ালপেপার, যেখান থেকেই অনেকের মেরুপ্রভার সাথে প্রথম পরিচয়; source: i.pinimg.com

মেরুপ্রভার বাহারি ধরন ও নাম

একটি ব্যাপার লক্ষণীয়। মেরুপ্রভার রঙের বৈচিত্র্যের মতো এর নামকরণ ও ধরনেও রয়েছে বিচিত্র মোহময়তা। মেরুপ্রভার কার্যকারণ ১৯ শতকের শেষ দশকে ক্রিস্টিয়ান বার্কেল্যান্ড আবিষ্কার করলেও এর নামকরণ হয় অনেককাল আগে। ইতালিয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলি মেরুপ্রভার নামকরণ করেন ‘অরোরা’ বা ‘ভোরের দেবী’। ইংরেজির ব্যবহারে অনেক সময় আমরা মেরুপ্রভাকে ‘অরোরা’ না বলে বলি ‘নর্দার্ন লাইটস’। আসলে নর্দার্ন লাইটস হচ্ছে মেরুপ্রভার কেবল একটা প্রকরণ। মেরুপ্রভা দেখা যায় দুই মেরুতেই, আর দুই মেরুর জন্য এর আছে ভিন্ন ভিন্ন নাম। উত্তর বা সুমেরুরটাকে বলে ‘অরোরা বোরেয়ালিস’ বা ‘নর্দার্ন লাইটস’ এবং দক্ষিণের বা কুমেরুরটাকে বলে ‘অরোরা অস্ট্রালিস’ বা ‘সাউদার্ন লাইটস’। বাংলা অভিধানে এগুলোর রয়েছে চমৎকার বাংলা প্রতিশব্দ, উদীচী ঊষা ও অবাচী ঊষা। একেক রঙের মেরুপ্রভার আবার রয়েছে অঞ্চলভেদে একেক রকম নাম, যদিও সেসব নামকরণ স্বীকৃত কিছু নয়।

মেরুপ্রভা সৃষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

সূর্যের অভ্যন্তরে তাপ এতোটাই যে সেখানে পদার্থের চারটি অবস্থা দেখা যায়- কঠিন, তরল, বায়বীয় ও প্লাজমা। প্লাজমার ভেতর চার্জিত ইলেক্ট্রন ও প্রোটন মুক্তভাবে বিচরণ করে। প্লাজমার সেই আয়নে এতোই বেশি পরিমাণ শক্তি থাকে, যে তা সূর্যের প্রবল মহাকর্ষিক ক্ষেত্র অতিক্রম করে বেরিয়ে যেতে পারে এবং ভীষণ বেগে ধাবিত হয় পৃথিবীর দিকে। এটিই সৌরবায়ু। এই সৌরবায়ু আবার স্বয়ং এক চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করে, যা পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের কাছে এলে বাধাপ্রাপ্ত হয়। মোটের তুলনায় সৌরবায়ুর অল্প সংখ্যক চার্জিত ইলেক্ট্রন, যাদের চৌম্বকক্ষেত্র পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের প্রতিসমান্তরাল অবস্থানে আসে, তারাই বাধা অতিক্রম করে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে; আর এক্ষেত্রে সব থেকে সুবিধাজনক স্থান হচ্ছে পৃথিবীর দুই মেরু।

মেরুপ্রভা তৈরির কলাকৌশল;source:aurora-service.eu

এ প্রবেশের সময় ইলেক্ট্রনের স্রোত স্প্রিংয়ের মতো পাক খায়। প্রবেশের পর বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের সাথে সংঘর্ষ ঘটে চার্জিত ইলেক্ট্রনের। নীলস বোরের তত্ত্ব অনুযায়ী, সংঘর্ষের ফলে শক্তির গ্রহণ-নির্গমনে ইলেক্ট্রনের গতিশক্তি আলোকশক্তিতে পরিণত হয়। কোটি কোটি ইলেক্ট্রন দ্বারা এভাবে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মিই আমরা মেরুপ্রভারূপে দেখতে পাই। বিকিরিত রশ্মির রঙ কী হবে, তা নির্ভর করে দু’টি প্রশ্নের ওপর –

(১) কোন পরমাণুর সাথে সংঘর্ষ হচ্ছে এবং

(২) কত উচ্চতায় সংঘর্ষ হচ্ছে।

যেমন ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫০ মাইলের ভেতর অক্সিজেনের সাথে সংঘর্ষ হলে সেটির রং হবে হলুদ ও সবুজ; আর ১৫০ মাইলের ওপরে হলে হবে লাল। আবার ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬০ মাইল অবধি উচ্চতায় নাইট্রোজেনের সাথে সংঘর্ষে বেগুনি, গোলাপি রঙের মেরুপ্রভা দেখা যায়; আর এর উর্ধ্বে হলে নীল। মেরুপ্রভা সৃষ্টির জন্য চৌম্বকক্ষেত্র ও বায়ুমণ্ডল থাকা বাঞ্ছনীয়। সুতরাং চাঁদে যেহেতু বায়ুমণ্ডল নেই, তাই সেখানে মেরুপ্রভা দেখা যাবে না। তবে পৃথিবীর মতো বৃহস্পতি ও শুক্রগ্রহেও মেরুপ্রভা দেখা যাবে।

মেরুপ্রভা নিয়ে যত উপকথা

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা না জানায় মেরুপ্রভাকে স্বাভাবিকভাবেই অতিপ্রাকৃতিক ভেবে যুগে যুগে জন্ম নিয়েছে অজস্র মিথ বা উপকথার

  • প্রাচীন গ্রিক ও রোমানরা ভোরের দেবী মনে করতো অরোরা বা মেরুপ্রভাকে। গ্রিকরা বিশ্বাস করতো, অরোরা হলো সূর্যদেবতা হেলিওস ও চন্দ্রদেবতা সেলাইনের বোন। শেষ রাতে বাহারি রঙের দীপ্তি নিয়ে সে তার ভাই সূর্যকে জাগাতে আসে।

ভোরের দেবী অরোরা; source:greekmythology.com

  • দক্ষিণ ইউরোপে সচরাচর মেরুপ্রভা দেখা যেতো না, অল্পবিস্তর যা দেখা যেতো, সেটা নিয়েও ভয়ে ভয়ে থাকতো মানুষ। কেননা সে অঞ্চলের লোকেরা একে ভাবতেন মহামারী/প্লেগ, দুর্ভিক্ষ বা যুদ্ধের আলামত। মিথ প্রচলিত আছে, ফরাসী বিপ্লবের কিছু আগে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে রক্তিম মেরুপ্রভা দেখা গিয়েছিলো, ফরাসী বিপ্লবের পর ব্রিটিশরা সেই মেরুপ্রভাকে ভেবেছিলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে নতুন শত্রুতা তৈরির আগাম সংকেত।
  • চীনের পুরাকথা অনুযায়ী, স্বর্গে দুষ্ট ও শিষ্ট ড্রাগনের আগুনে যুদ্ধের ফলাফলেই আকাশে দেখা যায় রঙিন এই আভা। জাপানের আদি সংস্কৃতিতে আজও মনে করা হয়, মেরুপ্রভার উদিত হবার রাতে যেসব শিশু গর্ভলাভ করে, তারা ঈশ্বরের বিশেষ আশীর্বাদপুষ্ট।
  • আদি অস্ট্রেলীয় বিশ্বাসমতে মেরুপ্রভা হলো দেবতা-নৃত্যের প্রতিরূপ। যুক্তরাষ্ট্রের আদিবাসিন্দা ক্রি ইন্ডিয়ানরা মনে করে, মেরুপ্রভা হলো মৃত আত্মাদের এক বিরাট জমায়েত; আকাশে আলোর রূপে ওভাবে তারা স্বজনদের দেখা দেন, কথা বলতে চান। এলগোনকুইন আদিবাসীরা ভাবেন, জগতস্রষ্টা নানাবোঝো আগুন জ্বালিয়ে তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছেন, মনে করিয়ে দিতে চাইছেন যে তিনি তাদের ভুলে যাননি। আলাস্কা না নুনাভিক দ্বীপের মানুষ ভাবতো মৃত আত্মারা বুঝি সিন্ধুঘোটকের খুলি দিয়ে খেলা করছে।
  • সূর্যগ্রহণ-চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভাবস্থা-জন্মদান নিয়ে যেমন নানা সংস্কার-কুসংস্কার আছে, তেমনি আছে মেরুপ্রভার মূল জায়গা স্ক্যান্ডিনেভিয়াতে মেরুপ্রভাকে নিয়ে। আইসল্যান্ডে ভাবা হতো, মেরুপ্রভার দিকে তাকালে জন্মদানের সময় মায়ের কষ্ট কমে, কিন্তু সন্তান হয় ট্যারা। ফিনল্যান্ডে ভাবা হতো কোনো এক অগ্নিশেয়াল ছুটে যায় আকাশে, যার লেজ থেকে বেরোনো আলোকচ্ছটাই মেরুপ্রভা। বাল্টিক অঞ্চলে ভাবা হতো, কোনো পঙ্ক্ষীরাজ স্বর্গীয় অতিথিদের কোনো স্বর্গীয় জলসায় পৌঁছে দিচ্ছে।

কোথায় দেখবেন মেরুপ্রভা

সুমেরুর মেরুপ্রভা বিশ্বজুড়ে বেশি জনপ্রিয় কুমেরুর মেরুপ্রভা থেকে। কেননা অস্ট্রেলিয়ান অঞ্চলের কিছু কিছু দ্বীপ (তাও কদাচিৎ) ছাড়া কুমেরুর মেরুপ্রভা বা সাউদার্ন লাইটস কেবল এন্টার্কটিকাতেই দেখা যায়, যেখানে জনবসতি শূন্য হওয়ায় সচরাচর কেউ যায় না। অন্যদিকে পুরো উত্তর আমেরিকা, গ্রিনল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া, উত্তর ও পূর্ব ইউরোপে নর্দার্ন লাইটস দেখা যায়, যেখানে পর্যটনব্যবস্থা বেশ উন্নত। এজন্য মেরুপ্রভার অনেকটা সমার্থকই হয়ে গেছে ‘নর্দার্ন লাইটস’। নর্দার্ন লাইটস বা অরোরা বোরেয়ালিসের জন্য কিছু বিখ্যাত জায়গা হচ্ছে –

  • জোকুলসার্লন, আইসল্যান্ড
  • ফেয়ারব্যাঙ্কস, আলাস্কা, যুক্তরাষ্ট্র
  • আন্সতাদ, লফোতেন, নরওয়ে
  • কেয়ার্নগর্মস ন্যাশনাল পার্ক, স্কটল্যান্ড
  • ইয়েলোনাইফ, কানাডা
  • আবিস্কো, সুইডেন ইত্যাদি।

বিশ্বজুড়ে অন্যান্য অভিযাত্রীদের পাশাপাশি প্রেমী-যুগল ও নব বিবাহিত দম্পতিদের কাছে সেরা পর্যটক গন্তব্যের একটি হচ্ছে এই মেরুপ্রভা বা অরোরা। আকাশে রঙের মূর্চ্ছনা দেখতে দেখতে আপনাতে বিলীন হতে কে না চাইবে! ঠিক এ কারণেই শুধুমাত্র মেরুপ্রভার পর্যটনকে অবলম্বন করেই গড়ে উঠেছে শত শত পর্যটন কেন্দ্র।

এবার দেখে নিন মেরুপ্রভার চমৎকার কিছু ছবি।

কানাডার ইয়েলোনাইফে নীল মেরুপ্রভা; source: news.nationalgeographic.com

মাইক টেলরের তোলা বেগুনি মেরুপ্রভা; source: en.es-static.us

সবুজ কুণ্ডলিত মেরুপ্রভা; source: en.es-static.us

দুর্লভ রক্তলাল মেরুপ্রভা; source: i.guim.co.uk

মেরুপ্রভা, পুরো ব্যাপারটার সাথেই শৈল্পিকতা যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে। ঐশ্বরিক এই বিমূর্ত কবিতাটি তাই প্রায়ই হয় মনুষ্য কবির শব্দের অনুপ্রেরণা। মেরুপ্রভা নিয়ে ভারতের মিস রূপালীর লেখা একটি কবিতার ভাবানুবাদ পড়তে পারেন –

“নামটা শোনায় খানিক অপার্থিব

কিন্তু তবু কোথাও জানি আপন

এ জল, মাটির পৃথিবীরই কোথাও।

এরচে ভুবন ভোলানো আর আছে কিছু?

এই যে উত্তরী আলোকছটা;

একটু সবুজ আবার গোলাপী আভা,

মহাকাশের শতসহস্র পর্দার মতো,

যেকোনো মুহূর্তে উন্মোচিত হবে যেনো,

কোনো অন্তিম সৌন্দর্যের ঘোমটা তুলে।

 

দর্শক তো আর অগুনতি নয়,

(হবে হয়তো কোটিখানেক)

কিন্তু নাটকের মহড়া আনন্তিক,

আলোর দ্যুতির মতো নৃত্যরত,

স্পষ্টভাবে,

কিছু নিঃশব্দ,

অশ্রুত লয়ের কাছে।

 

মনে হয় আমার এ চোখ দুটোও আত্মস্থ করে নিলো যেনো,

তাই তো ওর ওপর থেকে নজরই সরে না।

আমি তো জানিই, এ মুগ্ধতা চিরকালিক,

আমার জীবন সায়াহ্নে, বা তারও পরে।

 

সবুজ সখ্যতা কোথাও গিয়ে মলিন হয়,

থরেবিথরে গোলাপি মেশে ওতে,

একদিন গোলাপীই শাসন করে ওঠে।

যেনো আত্মভোলা শিশুর আঁকা জলছবি,

ভাবতে গিয়ে মূর্ছা যাই, কোন রঙ কে যে আপন করি,

রঙের আবিরখেলা যে কেবল পাল্টায়।

 

বরফ সেখানে অন্ধকারের মতো করুণ,

মরীচিকার মতো যত মিথ্যে প্রতিফলন,

তবু দেখতে অকৃত্রিম,

শান্ত, শুদ্ধ, পবিত্র,

এবং হিমায়িত,

ঠিক যেমনটা হওয়া চাই।

এবং তবুও,

যেমনটা ঠিক হতে পারতো।”

ব্যাকপ্যাকে শীতের সরঞ্জাম ভরে বা প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে উপভোগ করে আসতে পারেন মেরুর এ স্বর্গীয় জলসা। মেরুপ্রভা দেখবার সময় ফোনের বা ডিএসএলআর ক্যামেরার থেকে চোখকে বেশি সক্রিয় রাখুন। ৫৭৬ মেগাপিক্সেলের চোখে বাঁধিয়ে রাখুন সম্মোহনী সে দৃশ্য, যাতে চোখ চিরতরে বোজার আগেই এ তৃপ্তিটা নিয়ে যেতে পারেন যে, এই চোখ পৃথিবীতে বসেই স্বর্গের আলো দেখেছিলো, আকাশের সর্বোচ্চ সৌন্দর্য দেখেছিলো।

ফিচার ইমেজ-twistedsifter.com

Related Articles