অক্টোবর মাস হলো স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতার মাস। বিশ্বব্যাপী অক্টোবর মাসকে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসেবে পালন করা হয়। স্তন ক্যান্সার কে নারীদের নিরব ঘাতক বলা হয়ে থাকে। এটিকে মরণব্যাধি বা ঘাতকব্যাধি বললেও ভুল বলা হবে না। পৃথিবীর সব ঘাতক ব্যাধির মধ্যে স্তন ক্যান্সার বেশি মারাত্মক। ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর কারণ হিসেবে সারাবিশ্বে স্তন ক্যান্সারের স্থান দ্বিতীয়, শীর্ষে রয়েছে ফুসফুসের ক্যান্সার। প্রতি ৮ জন মহিলার মধ্যে একজনের স্তন ক্যান্সার হতে পারে এবং আক্রান্ত প্রতি৩৬ জন নারীর মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা একজনের। আমাদের দেশে ক্যান্সারে যত নারীর মৃত্যু হয়, তার অন্যতম কারণ ব্রেস্ট ক্যান্সার। প্রতি ৬ মিনিটে একজন নারী এতে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ১১ মিনিটে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন নারী মারা যায়।
পরিসংখ্যান টা খুবই ভয়াবহ। কিন্তু এখনো কেন যেন এই রোগকে অনেকে গোপন রোগ হিসেবে দেখেন। সামাজিক ট্যাবু হয়ে উঠার কারণে আমাদের অনেক নারীই সচেতন নন স্তন ক্যান্সার নিয়ে। এমনকি এই বিষয়ে আলোচনাও করতে আগ্রহী নন অনেকে। আমি নিজে ব্লাড ক্যান্সার এর সাথে লড়াই করবার সুবাদে ক্যান্সার হসপিটালে অনেক স্তন ক্যান্সার এর সাথে লড়াই করা যোদ্ধাদের সাথে পরিচয় হয়। খুব কম নারীকেই দেখেছি যারা এই রোগটার কথা মুখ ফুটে অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পেরেছেন। আমাদের দেশের নারীদের সচেতনতার অভাবে অনেকের একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ছে স্তন ক্যান্সার। যখন মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না ক্যান্সারের সাথে লড়াই করবার।
নারীদের স্তন ক্যান্সার নিয়ে সচেতন করবার জন্যই প্রতি বছর অক্টোবর মাসকে পুরো বিশ্বব্যাপী স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসেবে উদযাপন করা হয়। “জেগে উঠুন, জেনে নিন” প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশে ১০ অক্টোবরকে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। প্রতি বছর অক্টবর মাস নারীদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায় যে, নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের যত্ন নিন। নিজের শরীর নিয়ে ভাবুন। নিজেকে নিয়ে সচেতন হোন। রোগমাত্রই চিকিৎসার দাবি রাখে, নারীর রোগ, গোপন রোগ এসব বলে কিছু নেই। শরীরটা আপনার, এই জীবনও আপনার। তাই নিজের জন্য যেটা সবচেয়ে সম্ভাব্য ভালো, তা গ্রহণ করতে দ্বিধা করবেন না কখনো।