Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

জীবন বাঁচাতে প্রাথমিক চিকিৎসা (১ম পর্ব): ফার্স্ট এইড কিট বক্স পরিচিতি

বিপদ ও দুর্ঘটনা- এ দুটো জিনিস কখনও বলে-কয়ে আসে না। তবে যেকোনো প্রকার দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব যদি খানিকটা হলেও পূর্বপ্রস্তুতি থাকে। দুর্ঘটনা বা আকস্মিক কোনো অসুখ-বিসুখের ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা একজন ব্যক্তির জীবন পর্যন্ত বাঁচাতে পারে।

কোনো ব্যক্তি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা আহত হলে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না হলে সে ব্যক্তির জীবন বাঁচানোর জন্য প্রাথমিকভাবে তাকে যে ক্ষণস্থায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়, সেটাকেই আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা বলে থাকি। উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়ার আগপর্যন্ত রোগীর শারীরিক অবস্থার যেন বেশি অবনতি না হয়, সেজন্য দীর্ঘ সময় ধরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।

প্রাথমিক চিকিৎসার পূর্বশর্ত

আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই খুব একটা স্বাস্থ্য সচেতন নয়। আমরা ধরেই নিই, যেকোনো প্রকার রোগ সারানোর দায়ভার এককভাবে চিকিৎসকদের, এবং এসব বিষয়ে আমাদের কিছুই ভাবার বা করার দরকার নেই। প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাপারেও অধিকাংশ সাধারণ মানুষের ধারণা খুব কম এবং এ সম্পর্কে তাদের জানার আগ্রহ বা প্রচেষ্টাও কদাচিৎই দেখা যায়। কিন্তু নিজ গৃহে বা কর্মস্থলেই হোক, অথবা ভ্রমণকালীন কোনো সময়েই হোক, শারীরিক দুর্ঘটনা বা অসুস্থ হয়ে পড়াটা অসম্ভব ব্যাপার নয়, বরং প্রায়শই এমনটা ঘটে থাকে। তাই প্রাথমিক চিকিৎসার প্রস্তুতি ও এ ব্যাপারে ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি।

ফার্স্ট এইডের সরঞ্জামগুলো রাখার জন্য আলাদা করে ব্যাগ অথবা বক্স না কিনে গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বক্স ব্যবহার করা যায়; Image source: MG Worldwide

প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন বিশেষভাবে তৈরি কিছু জিনিসপত্র এবং সেগুলোর ব্যবহারবিধি অল্প হলেও জানা আবশ্যক। আজ আমরা জানবো কিছু বহুল ব্যবহৃত প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম তথা ‘ফার্স্ট এইড কিট’ সম্পর্কে।

উল্লেখ্য, বর্তমানকালে ‘ফার্স্ট এইড কিট’ এর একটি পূর্ণাঙ্গ সেট বা বক্স খুব সহজেই কিনতে পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত ব্যয় এড়াতে এবং নিজের প্রয়োজন ও চাহিদামাফিক ‘ফার্স্ট এইড কিট বক্স’ তৈরি করে নিতেই অনেকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। সেই বক্সটিতে সকল উপকরণই থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। শুধুমাত্র যে উপকরণগুলোর ব্যবহার জানা আছে, যেগুলো সহজে কিনতে পাওয়া যায় এবং যেগুলো কাজে লাগার সম্ভাবনা আছে শুধুমাত্র সেসব উপাদান বাছাই করা যেতে পারে।

বিভিন্ন প্রকার এডহেসিভ ব্যান্ডেজ; Image © Noa Olshevsky / Pinterest

ব্যান্ডেজ

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ব্যান্ডেজ অন্যতম প্রধান উপকরণ। ক্ষেত্রবিশেষে ব্যান্ডেজ ব্যতীত প্রাথমিক চিকিৎসার কথা ভাবা যায় না। শরীরের কোনো অংশে কেটে বা ছিলে গেলে, মচকে গেলে বা হাড় ভেঙে গেলে অথবা অন্যান্য আরো বহুবিধ কাজে বিভিন্ন প্রকার ব্যান্ডেজ ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে।

কয়েক প্রকারের ব্যান্ডেজের মধ্যে আমাদের সবচেয়ে পরিচিত ধরনটি হলো আঁঠাযুক্ত (Adhesive) ছোট ব্যান্ডেজ, যেটি আমাদের দেশে অনেকেই ‘ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ’ হিসেবে বেশি চেনেন। এ ধরনের ব্যান্ডেজ ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির হয়। ত্বকের কোথাও ছোটখাট কেটে বা ছিলে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ সমাধান হিসেবে সেই স্থানটিতে আঁঠাযুক্ত ব্যান্ডেজ জুড়ে দেওয়া হয় সাধারণত।

বিভিন্ন ধরনের ক্রেপ ব্যান্ডেজ; Image source: Zibo Eastmed Healthcare Products

এছাড়াও রয়েছে ক্রেপ ব্যান্ডেজ ও ত্রিকোণাকার ব্যান্ডেজ। যেকোনো ব্যান্ডেজ বা ড্রেসিংয়ের স্থানটিকে বেঁধে রাখতে অথবা কোথাও মচকে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার কাজে এই ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেশ সহায়ক হতে পারে।এগুলো স্থিতিস্থাপক বা ইলাস্টিক হয়ে থাকে।

তুলা, ট্রান্সপোর

ক্ষতস্থান মুছে নেওয়া বা পরিষ্কার করার জন্য তুলা অতি প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ। তাই ফার্স্ট এইড কিট বাক্সে একটি তুলার প্যাকেট রাখা অত্যাবশ্যক। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে কটন সোয়াব বা কটন বাড রাখা যেতে পারে।

ট্রান্সপোরকে মেডিক্যাল টেপও বলা হয়। এটি অনেকটা স্কচটেপের মতো। এর সাহায্যে ব্যান্ডেজ বা গজকে কোনো স্থানে আটকে দেওয়া যায়।

এই টেপকে মেডিক্যাল টেপ, সার্জিক্যাল টেপ ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়; Image source: Amazon

গজ প্যাড ও গজ রুল

দেহের কোনো অংশ কেটে গেলে যদি বেশি রক্তক্ষরণ হয়, তবে সেই রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য গজ প্যাড প্রয়োজন হয়। ফার্স্ট এইড কিট বাক্সে বিভিন্ন আকৃতির গজ প্যাড এবং সাথে গজ রুলও রাখা যেতে পারে। আঁঠাযুক্ত ব্যান্ডেজের বিকল্প হিসেবে গজ রুল থেকে পরিমাণমতো গজ কেটে নিয়ে সেটিকে ট্রান্সপোরের সাহায্যে ক্ষতস্থানের উপর লাগিয়ে দেওয়া যায়।

এছাড়াও চোখের সম্ভাব্য ক্ষত বা আঘাতের কথা চিন্তা করে কয়েকটি আই প্যাড (iPad নয়, Eye-pad!) রাখা ভালো।

গজ রুল; Image source: AliExpress

জীবাণুনাশক ও জীবাণুপ্রতিরোধী উপকরণ

বিভিন্ন প্রকার ক্ষত পরিষ্কার করার জন্য প্রাথমিকভাবে জীবাণুনাশক বা অ্যান্টিসেপটিক দ্রবণ ব্যবহার করা হয়। যেমন: আমাদের দেশে স্যাভলন বা ডেটলের দ্রবণ অধিক প্রচলিত। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড বা আয়োডিন-ভিত্তিক দ্রবণও ব্যবহার করা হয়। ক্ষতস্থানের আশেপাশের অঞ্চল পরিষ্কার করার জন্য অ্যান্টিসেপটিক সাবান ব্যবহার করা যায়।

অ্যান্টিবায়োটিক লোশন বা ক্রিম ক্ষতস্থান দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং পঁচন রোধ করতে ভূমিকা রাখে। সাধারণত এসব ক্রিমের উপাদান হিসেবে থাকে নিওমাইসিন, পলিমাইজিন ও ব্যাসিট্রাসিন। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অনেক অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের দোকানগুলোতে কিনতে পাওয়া যায়। তবে অ্যান্টিবায়োটিক বাছাই করার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক, কেননা অ্যান্টিবায়োটিকের নির্দিষ্ট উপাদানের প্রতি কারো এলার্জি বা অন্যান্য শারীরিক প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে, যা শুধুমাত্র একজন চিকিৎসকই সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারবেন।

ডেটলের এন্টিসেপটিক দ্রবণ আমাদের দেশে বহুল ব্যবহৃত একটি এন্টিসেপ্টিক উপকরণ; Image source: evaly.com

বিভিন্ন প্রকার ক্রিম ও মলম

ফার্স্ট এইড কিট বাক্সে রাখা যেতে পারে কয়েক প্রকারের ক্রিম। যেমন- কোথাও পুড়ে গেলে সে স্থানটিতে লাগানোর জন্য প্রয়োজন হবে বার্ন রিলিফ ক্রিম বা অ্যালোভেরা জেল। মশাসহ অন্যান্য ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গরোধী ক্রিমও (ইনসেক্ট রিপেল্যান্ট) কিনতে পাওয়া যায় সহজেই।

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, যেমন- চুলকানি, এলার্জি, র‍্যাশ ইত্যাদির জন্য চিকিৎসকেরা সাধারণত হাইড্রোকর্টিসল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও এন্টি-ফাঙ্গাল ক্রিম এবং যাদের তীব্র রোদে ত্বকের সমস্যা হয় তাদের জন্য সানস্ক্রিন রাখা যেতে পারে।

কাঁচি, টুইজার ও চাকু

কাঁচি ফার্স্ট এইড কিট বাক্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। সম্ভব হলে গজ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কাটার জন্য বিশেষ উপযোগী কাঁচি, যাকে ‘ট্রমা শিয়ার’ বলা হয় সেটি সংগ্রহে রাখা উচিত।

এছাড়াও প্রয়োজন হবে টুইজার ও চাকু। কোনো পোকামাকড় ত্বকে হুল ফুটালে বা কোনো কেটে যাওয়া স্থানে ছোট ময়লার টুকরা থাকলে সেটিকে সহজে বের করে আনার জন্য টুইজার খুব প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ।

‘ট্রমা শিয়ার’ ও টুইজার; Image source: Chempak

অন্যান্য সরঞ্জাম

উপরে উল্লিখিত অত্যাবশ্যকীয় সরঞ্জামগুলো ছাড়াও আরো কিছু উপকরণ রয়েছে, যেগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম হিসেবে রাখা উচিত। যেমন-

  • জ্বর পরিমাপ করার জন্য একটি থার্মোমিটার।
  • ল্যাটেক্স গ্লাভস (সার্জিক্যাল গ্লাভস হিসেবে অধিক পরিচিত)।
  • ড্রেসিং বা ব্যান্ডেজ আটকানোর জন্য সেফটি পিন।
  • অন্ধকারে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের সুবিধার্থে ছোট পেন্সিল টর্চ।
  • সিগারেটের লাইটার, তবে তা সিগারেট ধরানোর উদ্দেশ্যে নয়, বিভিন্ন ধাতব সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করার জন্য।

এছাড়া খাবার স্যালাইন, সরু মাথার সিরিঞ্জ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, পেট্রোলিয়াম জেলি, ইনহেলার ইত্যাদি ফার্স্ট এইড কিট বক্সে রাখা যেতে পারে।

জরুরি ওষুধপত্র ও সতর্কতা

যেকোনো পরিস্থিতিতেই হাতের কাছে কিছু সাধারণ ওষুধপত্র রাখা দরকার, যেগুলো সচরাচর ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে ওষুধপত্র বাছাই করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পরামর্শ বলতে ব্যবহারবিধি ও সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝানো হচ্ছে। কিছু সাধারণ অসুস্থতা, যেগুলোতে ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে- জ্বর, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমিভাব, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, এলার্জি, কফ-কাশি, আঘাতজনিত ব্যথা, ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি। এসব সমস্যার জন্য সাধারণত যেসব ওষুধপত্র ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ভাসা ভাসা জ্ঞান আছে। যেমন- উপরিউক্ত সমস্যাগুলোর প্রতিকার হিসেবে অনেকেই প্যারাসিটামল, অ্যাসপিরিন, আইবোপ্রুফেন, বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টি-হিস্টামিন, ইমোডিয়াম, লোপেরামাইড ইত্যাদি শ্রেণীর ওষুধ সাথে রাখেন।

কিন্তু এ কথা মনে রাখতে হবে, কোনো রোগ/অসুখ এবং সেটির জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সম্পর্কে শুধুমাত্র একজন পেশাদার চিকিৎসকই পরিপূর্ণ ধারণা রাখেন। তাই এ ব্যাপারে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয় এবং নিজে নিজে ওষুধ বাছাই করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এছাড়াও শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ওষুধ ও তার ব্যবহারবিধি ভিন্ন হতে পারে, এ ব্যাপারেও চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।

বিভিন্ন মৌসুমী রোগ, বিশেষত মশাবাহিত রোগগুলো প্রাণঘাতী হতে পারে, তাই সতর্কতা অবলম্বন করে এগুলো প্রতিরোধ করতে হবে; Image source: Getty Image via Wired.com

বছরের বিভিন্ন সময়ে এবং ভৌগোলিক অবস্থানভেদে কখনো কখনো কিছু রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। যেমন, সাম্প্রতিককালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশসহ বাংলাদেশে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য জেলাগুলোতে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। তাই সেই অঞ্চলগুলোতে ভ্রমণে গেলে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন ও প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া বাঞ্ছনীয়। আবার জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে। এ সময় নিজগৃহে অবস্থান করলেও যেকোনো মুহূর্তে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি রাখা দরকার।

তাছাড়া কেউ নিয়মিত কোনো ওষুধ সেবন করে থাকলে ভ্রমণে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে সামান্য বেশি পরিমাণ ওষুধ সাথে করে নিয়ে যাওয়াটা নিরাপদ।

সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা

প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো যেকোনো ব্যাগ অথবা বাক্সে সংরক্ষণ ও বহন করা যায়। এজন্য সাধারণত আলাদাভাবে কোনো ব্যাগ বা বাক্স কেনার প্রয়োজন পড়ে না। তবে শক্ত বহিরাবরণযুক্ত ব্যাগ বা প্লাস্টিকের যেকোনো বাক্সে এই সরঞ্জামগুলো রাখা উচিত, যেন বাহ্যিক চাপের ফলে সরঞ্জামগুলো ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। এছাড়া মোটামুটি আঁটসাটভাবে প্যাকিং করতে হবে যেন বাক্সটি হাত থেকে পড়ে গেলে বা ঝাঁকি লাগলেও ভেতরের উপকরণগুলো অক্ষত থাকে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্লাস্টিক বা ধাতব সরঞ্জাম, বিভিন্ন প্রকার ক্রিম, দ্রবণ ও খাওয়ার ওষুধগুলো আলাদাভাবে ছোট ছোট প্যাকিং করে তারপর সবগুলো একসাথে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্লাস্টিক/পলিথিনের জিপলক ব্যাগগুলো খুব সহায়ক, যা খুব সহজেই কিনতে পাওয়া যায়।

জিপলক ব্যাগে রাখা কোনো উপকরণ নষ্ট হয়ে গেলেও সেটির সাথে অন্যান্য দ্রব্যগুলো সহজে রাসায়নিক সংস্পর্শে আসতে পারে না; Image source: Lazada

যেসব উপকরণ একবার ব্যবহার করার পর উপযোগিতা হারায়, সেগুলো বাক্স থেকে সরিয়ে নতুন করে ক্রয় করতে হবে এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ওষুধসহ অন্যান্য উপকরণগুলো বদলে নিতে হবে।

পরিবার, অফিস বা ভ্রমণকারী কোনো দলের একাধিক সদস্য বা সহকর্মীকে প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা পুরো পরিবার বা দলের কেবলমাত্র একজন এ বিষয়ে জানলে, তিনি নিজে দুর্ঘটনায় পড়লে কেউ তাকে সাহায্য করতে পারবে না।

প্রাথমিক চিকিৎসার যেসব সরঞ্জামের কথা উল্লেখ করা হলো সেগুলো খুব একটা ব্যয়বহুল নয়, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোর ব্যবহারবিধি একজন সাধারণ মানুষ সহজেই শিখে নিতে পারেন। পরিবার, অফিস বা কোনো একটি ভ্রমণকারী দলের সদস্য সংখ্যার উপর ভিত্তি করে উপকরণের পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে। ফার্স্ট এইড কিট বা প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো এমন জায়গায় রাখা উচিত যেন তা খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই বাচ্চাদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।

পরবর্তী পর্বে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের কিছু সাধারণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।

(চলবে)

This article is in Bengali language. In this article it's explained why someone needs a 'first aid kit box' prepared and how they can make their own, customized version of it. Necessary sources of information have been hyperlinked inside the article. More references:

1. First Aid Kits - WebMD

2. Essential First Aid Kit Items for Your Car - VeryWell Family

3. Make a First Aid Kit - RedCross

4. What should I keep in my first aid kit? - National Health Service, UK

5. First-aid kits: Stock supplies that can save lives - MayoClinic

6. First aid kits - Health Direct

7. What do I need in my first aid kit? - Family Doctors

8. What Should Be in a Home First Aid Kit? - UC San Diego Health

9. What First-Aid Items You Need to Pack When You Travel? - Cleveland Clinic

10. First aid kit - Medline Plus

11. 7 First Aid Kit Must Haves For Your Medicine Cabinet - Drugs.com

12. 8 First Aid Essentials for Car or Purse - WebMD

Featured Image © iStock/bernie_photo via Trainingzone.co.uk

Background Image © photka(iStock) via Colorado Home & Garden

Related Articles