Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট: যার অন্তর্ধান অমীমাংসিত রয়ে গেছে আজও

১৯৩৭ সালে লকহিড ইলেক্ট্রা টেন ই বিমান নিয়ে পৃথিবী ভ্রমণে বের হন মার্কিন নারী বৈমানিক অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট। তার সাথে ছিলেন নাবিক ফ্রেড নুনান। অ্যামেলিয়া অবশ্য এর আগেই বিশ্বখ্যাতি পেয়েছিলেন প্রথম নারী বৈমানিক হিসেবে একাকী আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে।

এরপরই তিনি পৃথিবীর চারপাশে চক্কর দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। বিষুবরেখা বরাবর পূর্বদিকগামী তার যাত্রাপথের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ২৯,০০০ মাইল। ১৯৩৭ সালে মার্চে বিমানে সমস্যার কারণে অ্যামেলিয়ার প্রথমবারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিমান ঠিক করে একই বছরের ২১ মে নাবিক নুনানকে সাথে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করেন তিনি।

বিখ্যাত নারী বৈমানিক অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট; Image Source: Alamy

৪০ দিনে মোট ২০ জায়গায় যাত্রা বিরতি দিয়ে অ্যামেলিয়া ও নুনান ২২,০০০ মাইল পাড়ি দিয়ে পাপুয়া নিউগিনির পূর্ব উপকূলের লায়ে নামক এক স্থানে এসে পৌঁছান। এরপর ২ জুলাই সকালে তারা দুজন সফরের সবচেয়ে কঠিনতম পথে যাত্রা শুরু করেন। তাদের গন্তব্য ছিল লায়ের মূল ভূখণ্ড থেকে ২,৫০০ মাইল দূরে মধ্য প্রশান্ত সাগরে ১.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রবালদ্বীপ হাউল্যান্ড।

এই দ্বীপে যাত্রাবিরতি করে পুনরায় বিমানের জ্বালানি ভর্তি করার কথা ছিল ইয়ারহার্ট ও নুনানের। সেই লক্ষ্যে তারা দুজন এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এবং তাদের পথ দেখাতে সাহায্য করছিল ইটাসকা নামের এক জাহাজ। ইয়ারহার্ট ও জাহাজের নাবিক রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখে উভয়ে হাউল্যান্ড দ্বীপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

ফ্রেড নুনানের সাথে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট; Image Source: Bettmann Archive/Getty Images

কয়েক ঘণ্টার যাত্রা শেষে ইয়ারহার্ট ও নুনান যখন দ্বীপের নিকটবর্তী হন তখন নিয়মিত জাহাজের নাবিককে রেডিও সিগনাল পাঠাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে সিগনাল অনেক জোরালো হয়ে আসলে জাহাজের রেডিও সিগনাল অপারেটর দৌড়ে ডেকে আসেন। এরপর তিনি আকাশের চতুর্দিকে ইয়ারহার্টের বিমান খুঁজতে থাকেন। কোনো কিছু দেখতে না পেয়ে তিনি বিমানে একের পর এক সিগনাল পাঠাতে থাকেন। কিন্তু তার কোনোটাই আর ইয়ারহার্ট ও নুনান পর্যন্ত পৌঁছায়নি।

এমনকি ইয়ারহার্টের লকহিড ইলেক্ট্রাও হাউল্যান্ড দ্বীপে পৌঁছায়নি। ব্যাপক অনুসন্ধানের পরও ইয়ারহার্ট, নুনান কিংবা বিমানের কোনো একটি অংশও খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুই সপ্তাহের অনুসন্ধান শেষে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট এবং ফ্রেড নুনান বিমানসহ সাগরে বিধ্বস্ত হয়ে হারিয়ে গেছেন। তাদের ধারণামতে, ইয়ারহার্ট জাহাজের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে ব্যর্থ হন। ফলে দিক ভুলে তারা অন্যদিকে চলে যান। এবং একপর্যায়ে বিমানের তেল শেষ হয়ে যাওয়ায় তা প্রশান্ত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের বিখ্যাত ইলেক্ট্রা লকহিড টেন ই © F.X O’Grady

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণায় কেউ আস্থা রাখতে পারেননি। আবার কেউ ইয়ারহার্ট ও নুনানের অন্তর্ধান রহস্যও ভেদ করতে পারেননি। তাদের দুজনের ভাগ্যে আসলে কী ঘটেছিল তা নিয়ে আজও অনুসন্ধান চলছে। বিভিন্নজন বিভিন্ন তত্ত্ব দিয়েছেন। ইয়ারহার্টকে নিয়ে লেখা হয়েছে বিভিন্ন বই। তৈরি হয়েছে একাধিক সিনেমা।

কে এই অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট?

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের পুরো নাম অ্যামেলিয়া মেরি ইয়ারহার্ট। ১৮৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসের আচিসনে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন রেলপথ বিষয়ক আইনজীবী এবং মা ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের মেয়ে। শৈশব থেকে ইয়ারহার্ট ছিলেন দুঃসাহসী এবং স্বাধীনচেতা, যা পরবর্তীতে তিনি পুরো বিশ্বকে দেখিয়েছেন।

শৈশবের অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট; Image Source: Amelia Earhart Family

১৯১৫ সালে শিকাগোর হাইড পার্ক হাই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন ইয়ারহার্ট। এরপর তার মা পৈতৃক সম্পত্তি লাভ করলে পেনসিলভেনিয়ায় ওগনজ স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষের মাঝামাঝি সময়ে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে কানাডার একটি সামরিক হাসপাতালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহতদের সেবায় নিয়োজিত হন। পরবর্তীতে তিনি নার্সিংয়ের উপর পড়াশোনা করেন।

কানাডা থেকে ফিরে বোস্টনের ডেনিসন হাউস নামে একটি সেটেলমেন্ট হাউসের সাথে জড়িয়ে পড়েন। এটি মূলত গত শতকের বিশের দশকে ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় শুরু হওয়া সেটেলমেন্ট মুভমেন্টের অংশ ছিল।

ইয়ারহার্টের বয়স যখন ১০ বছর ছিল, তখন তিনি এক মেলায় প্রথম বিমান দেখেছিলেন। প্রথম দেখায় বিমানকে তার কাঠ ও তারের জঞ্জাল মনে হয়েছিল। সেদিন বিমানকে তার একটুও পছন্দ হয়নি। কিন্তু এর এক দশক পর সেই ইয়ারহার্টই বিমানের প্রেমে পড়ে যান। যা তাকে পরবর্তীতে পৃথিবী বিখ্যাত বৈমানিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।

বিমানের ককপিটে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট; Image Source: AFP/Getty Images

১৯২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর, অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট প্রথম বিমানে ভ্রমণ করেন। পাইলট ফ্রাঙ্ক হকসের সেই ফ্লাইট ইয়ারহার্টের জীবন বদলে দিয়েছিল। সেদিন থেকেই তার মধ্যে বিমান চালানোর আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পরের বছর ৩ জানুয়ারি, তিনি বিমান চালানোর প্রথম প্রশিক্ষণ নেন।

পরবর্তী ছয় মাস তিনি টাকা জমিয়ে নিজের প্রথম বিমান কেনেন, যেটি ছিল কিনার এয়ারস্টারের দুই আসনের একটি পুরাতন বিমান। ইয়ারহার্ট হলুদ রঙের সেই বিমানের নাম দিয়েছিলেন ‘দ্য ক্যানারি’। এই বিমান দিয়ে তিনি প্রথম নারী বৈমানিক হিসেবে ১,৪০,০০ ফুট উপর দিয়ে বিমান চালানোর রেকর্ড করেন।

১৯৩৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ডেন গেট ব্রিজের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছেন ইয়ারহার্ট ও নুনান; Image Source: Keystone/Hulton Archive/Getty Images

এরপর ১৯২৮ সালের এপ্রিলের এক বিকেলে ইয়ারহার্ট একজন ফোন করে বলেন, আপনি কি প্রথম নারী বৈমানিক হিসেবে আটলান্টিক পাড়ি দিতে চান? তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন কেউ হয়তো তার সাথে মজা করছেন। এ কারণে প্রথমে তিনি বলেছিলেন, আমি খুব ব্যস্ত আছি। এখন উত্তর দিতে পারছি না। কিন্তু ফোনের অপর প্রান্তে থাকা লেখক ও প্রকাশক জর্জ পালমার পুটনাম যখন নিজের পরিচয় দিলেন, তখন ইয়ারহার্ট বুঝতে পারলেন এটি নিছক কোনো মজা নয়।

পরবর্তীতে তিনি পুটনামের প্রস্তাবে রাজি হন। এবং নিউ ইয়র্কে তার সাথে দেখা করেন। তখন ইয়ারহার্টকে আরেক বৈমানিক উইলমার ‘বিল’ স্টালজ এবং মেকানিক লুইস গর্ডনের সাথে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। এরপর ১৯২৮ সালের ১৭ জুন, নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের ট্রিপ্যাসি হার্বার থেকে ফকার এফ-৭ মডেলের ফ্রেন্ডশিপ নামের বিমান নিয়ে তিন জনের দলটি তাদের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু করেন।

২১ ঘণ্টার যাত্রা শেষে তারা ওয়েলসের বুরি পোর্টে অবতরণ করেন। তাদের এই বিমানযাত্রা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রধান শিরোনামে ঠাই করে নেয়। কারণ একই বছর আটলান্টিক পাড়ি দেওয়া প্রথম নারী বৈমানিক হতে গিয়ে তিনজনের একটি দল মৃত্যুবরণ করেন।

একাকী আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার পর ইয়ারহার্টকে সাধারণ মানুষের অভিবাদন © Gamma-Rapho/Keystone

তারা যখন ওয়েলস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন, তখন তাদের টিকিট কেটে সাধারণ মানুষ দেখতে আসেন। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেলভিন কুলিজ তাদের হোয়াইট হাউসে অভ্যর্থনা জানান। এরপর থেকে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের জীবন কেটেছে একের পর এক ফ্লাইটের শুরু থেকে শেষ। এবং নতুন রেকর্ড সৃষ্টির মাধ্যমে।

এর মধ্যে জর্জ পুটনামের সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ইয়ারহার্ট। আটলান্টিক পাড়ি দিতে গিয়ে তৈরি হওয়া সম্পর্ক তাদের বিয়ের আসরে নিয়ে যায়। ১৯৩১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি, ইয়ারহার্ট ও পুটনাম বিয়ে করেন। তবে তার কাছে বিয়ে ছিল একটি অংশীদারিত্বের বিষয়, যেখানে দুজনেরই নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

প্যারিসের কোনো এক হোটেলের ব্যালকনিতে স্বামী জর্জ পুটনামের সাথে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট; Image Source: Bettmann/Getty Images

এরপর দুজন একসাথে গোপন এক অভিযানের পরিকল্পনা করেন। যে অভিযানে সম্পূর্ণ একা আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করেন ইয়ারহার্ট। ১৯৩২ সালের ২০ মে, নিউ ফাউন্ডল্যান্ড থেকে প্যারিসের পথে একাকী যাত্রা শুরু করেন তিনি।

কিন্তু উত্তরের ঝড়ো বাতাস, হিমশীতল আবহাওয়া এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আয়ারল্যান্ডের লন্ডনডেরির এক চারণভূমিতে অবতরণ করেন তিনি। তার এই দুঃসাহসিক অভিযানের জন্য প্রেসিডেন্ট হার্বার্ট হুভার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির পক্ষ থেকে স্বর্ণপদক প্রদান করেন। কংগ্রেস থেকেও তাকে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

১৯৩২ সালে নিউ ইয়র্কে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট; Image Source: New York Daily News Archive/Getty Images

পরের বছর ১৮,৪১৫ ফুট উপর দিয়ে বিমান চালিয়ে তিনি নিজেকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যান। এরপর ১৯৩৫ সালের ১১ জানুয়ারি, ইয়ারহার্ট প্রথম একক কোনো ব্যক্তি হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেন। তার এই যাত্রা শুরু হয়েছিল হনলুলু থেকে। আর শেষ হয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ডে। এভাবেই তিনি একের পর এক রেকর্ড গড়ে যাচ্ছিলেন। সেই থেকে তিনি বিষুবরেখা বরাবর পৃথিবীর চারপাশে চক্কর দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই অভিযানের সমাপ্তির খবর পৃথিবীর কেউই জানতে পারেনি। অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের ভাগ্যে কী ঘটেছিল সেটাও আজও অজানা।

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের অন্তর্ধান নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব

১৯৩৭ সালের ২ জুলাই, অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট ও ফ্রেড নুনানের বিমান নিখোঁজ হওয়ার পর তাদের অনুসন্ধানে বড় অভিযান পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তাদের অনুসন্ধানে হওয়া সেই অভিযানটি সেই সময়ে আকাশ ও সমুদ্রপথে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছিল। পরবর্তীতে ১৯ জুলাই ৪ মিলিয়ন ডলার খরচ করে প্রশান্ত মহাসাগরে আড়াই লাখ বর্গ মাইল জায়গা জুড়ে অনুসন্ধান করার পর যুক্তরাষ্ট্র এর সমাপ্তি ঘোষণা করে।

পরবর্তীতে ১৯৩৮ সালে হাউল্যান্ড দ্বীপে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের স্মরণে একটি লাইট হাউস তৈরি করা হয়। সেই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরের স্কুল, কলেজ ও রাস্তা তার নামে করা হয়। কিন্তু অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের ভাগ্যে কী ঘটেছিল সেই প্রশ্নের উত্তর আজও লাখ লাখ মানুষ জানতে চান। তার অন্তর্ধান নিয়ে অনেকে বিভিন্ন ধরনের তত্ত্ব দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনটি বিখ্যাত তত্ত্ব তুলে ধরা হলো।

তত্ত্ব-১: গন্তব্যের কাছাকাছি এসে সমুদ্রে বিমান বিধ্বস্ত

সরকারিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতি ছিল প্রশান্তে মহাসাগরে বিমান বিধ্বস্তের পক্ষে। তাদের মতে, ইয়ারহার্ট ও নুনানের বিমানের জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। ফলে তাদের বিমান প্রশান্ত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়। ইউএস কোস্টগার্ডের কাটার ইটাসকা ইয়ারহার্টকে হাউল্যান্ডের পথ খুঁজে দিতে সাহায্য করেছিল। এ কাজে তারা রেডিও তরঙ্গ এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী ব্যবহার করেছিল।

কিন্তু রেডিও তরঙ্গের সমস্যার কারণে তাদের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল বিক্ষিপ্ত এবং একসময় তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে ইটাসকার রেডিও লগ থেকে জানা যায়, ইয়ারহার্ট তাদের জানিয়েছিলেন যে তিনি হাউল্যান্ড দ্বীপের কাছাকাছি এসেছেন। কিন্তু তিনি দ্বীপটি দেখতে পাচ্ছেন না। এবং তার জ্বালানি শেষ হওয়ার দিকে। পরে আর ইয়ারহার্টের ইলেক্ট্রাকে হাউল্যান্ড দ্বীপে দেখা যায়নি।

হাউল্যান্ড দ্বীপে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের স্মরণে তৈরি লাইট হাইস © Joann94024

২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ‘নটিকস’ নামের একটি কোম্পানি হাউল্যান্ড দ্বীপের কাছাকাছি গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান চালায়, যেখানে ইয়ারহার্টের বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তারা ইয়ারহার্টের রেডিও তরঙ্গ এবং ইলেক্ট্রার জ্বালানীর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে একটি আনুমানিক জায়গা নির্ধারণ করেন। যেখানে সম্ভবত ইয়ারহার্টের ইলেক্ট্রার কবর রচিত হয়েছিল।

তারা তখন সোনার সিস্টেমের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে প্রায় ১,৬৩০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে অনুসন্ধান করেছিল। কিন্তু তারা বিমানের কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি। এরপর ২০০৬ সালে তারা আবারো অনুসন্ধান চালায়। কিন্তু তাদের কোনো লাভ হয়নি।

২০০৯ সালে ওয়েট ইনস্টিটিউট ফর ডিসকভারি নামে একটি প্রতিষ্ঠান হাউল্যান্ড দ্বীপের পশ্চিম উপকূলে যুক্তরাষ্ট্রের ডেলওয়ার রাজ্যের সমান এলাকা রোবটের সাহায্যে অনুসন্ধান চালায়। ভবিষ্যত অনুসন্ধানে জায়গার পরিমাণ কমানো ছাড়া, আর কোনো চিহ্নই তারা খুঁজে পায়নি।

তত্ত্ব-২: নিকুমারোরো দ্বীপ তত্ত্ব

দ্য ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ ফর হিস্টোরিক এয়ারক্রাফট রিকোভারি (টাইঘার) এর হাইপোথিসিস মতে, হাউল্যান্ড দ্বীপ খুঁজে না পেয়ে সেখান থেকে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে নিকুমারোরো দ্বীপে অবতরণ করেছিলেন ইয়ারহার্ট ও নুনান। টাইঘারের গবেষকরা তাদের এই যুক্তি তুলে ধরেছেন ইয়ারহার্টের বিমানের শেষ রেডিও তরঙ্গের উপর নির্ভর করে।

ঘটনার দিন সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটে ইয়ারহার্টের বিমান থেকে সর্বশেষ যে বার্তা পাঠানো হয় সেখানে বলা হয়েছিল, আমরা ১৫৭ ৩৩৭ লাইন বরাবর আছি। এই লাইনের অর্থ হলো তারা উত্তর পশ্চিম থেকে দক্ষিণ পশ্চিমের দিকে যাচ্ছিলেন। এবং এই রেখা হাউল্যান্ড দ্বীপের মাঝ বরাবর দিয়ে গেছে।

নিজের বিমানের সামনে অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট; Image Source: smithsonianmag.com

কিন্তু তারা যদি কোনোভাবে হাউল্যান্ড দ্বীপ দেখতে না পান, তাহলে তারা হয় উত্তর পশ্চিম দিকে যাবেন অথবা দক্ষিণ পশ্চিম দিকে যাবেন। তবে উত্তর পশ্চিম দিকে হাজার হাজার মাইল জুড়ে সমুদ্র। অন্যদিকে দক্ষিণ পশ্চিমেই নিকুমারোরো দ্বীপ। তাই তারা সেখানে অবতরণ করতেও পারেন।

তবে লাইন উল্লেখ করে পাঠানো রেডিও বার্তাটি ছিল সর্বশেষ ইয়ারহার্টের পাঠানো বার্তা। কিন্তু এর পরবর্তী ১০ দিন ইটাসকা আরো ১২১টি বার্তা পেয়েছিল। যার মধ্যে ৫৭টি ইলেক্ট্রা থেকে পাঠানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে ৬টি বার্তা কোনদিক থেকে এসেছে তা নির্ণয় করতে সক্ষম হন ওয়ারলেস স্টেশনের বিশেষজ্ঞ দল। তার মধ্যে ৪টি ফোনিক্স দ্বীপের দিক থেকে এসেছিল। এবং অধিকাংশ বার্তাই এসেছিল রাতে। যখন সমুদ্র শান্ত থাকে।

গবেষণা অনুসারে ইয়ারহার্ট যখন হারিয়ে যান, তখন নিকুমারোরো দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রের স্রোত অনেক নিচে ছিল। এবং বিমান অবতরণ করার জন্য পর্যাপ্ত সমতল জায়গা ছিল। যদি ইটাসকায় পাঠানো ৫৭টির কোনো একটি ইয়ারহার্টের হয়, তাহলে তারা দুজন এই দ্বীপেই অবতরণ করেছিলেন।

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের অস্থায়ী বাসস্থান; Image Source: AP

টাইঘারের বিশেষজ্ঞ দলের মতে তারা রাতে রেডিও সিগনাল পাঠিয়েছিলেন, তার কারণ হলো দিনের আলোর তাপে অনেক সময় এই তরঙ্গ ঠিকমতো পৌঁছায় না। কিন্তু একসময় নিকুমারোরো দ্বীপের জলের স্তর সম্ভবত বৃদ্ধি পেয়েছিল। যার কারণে তাদের বিমান ডুবে গিয়েছিল। অথবা জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছিল। সেই কারণেই ১৩ জুলাইয়ের পর আর কোনো তরঙ্গ আসেনি।

তবে এই তত্ত্বের পক্ষে আরো কিছু যুক্তি ও প্রমাণ দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ১৯৩৭ সালে ইয়ারহার্টের নিখোঁজের পর একদল ব্রিটিশ নিকুমারোরো দ্বীপে উপনিবেশ স্থাপন করার জন্য গিয়েছিলেন। তাদের নেতা ছিলেন এরিক বেনিংটন। তিনি তাঁবু ছাড়া একটি রাত যাপনের মতো ছাউনী পেয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি উপকূলের একটি ছবিও নিয়েছিলেন। যেখানে তিনি একটি জিনিস দেখেছিলেন, যা তার পক্ষে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হয়, সেটা ছিল বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার।

নিকুমারোরো দ্বীপে এরিক বেনিংটনের তোলা ছবি; Image Source: AP 

১৯৩৮ সালে নিকুমারোরো দ্বীপটি ফোনিক্স আইল্যান্ডস সেটেলমেন্ট স্কিমের আওতাভুক্ত হয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়, যা ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শেষদিকের সম্প্রসারিত একটি অংশ। সেখানে বসবাসকারী উপনিবেশিকদের অনেকের দাবি তারা বিমানের বিভিন্ন অংশ খুঁজে পেয়েছিলেন। যার কিছু সম্ভবত ইয়ারহার্টের ইলেক্ট্রা লকহিডের ছিল।

১৯৪০ সালে নিকুমারোরো দ্বীপের উপনিবেশিক শাসক জেরাল্ড গ্যালাগার একটি ক্যাম্পফায়ারের পাশে ১৩টি হাড় খুঁজে পান। এছাড়াও তিনি দুটি জুতার অবশিষ্টাংশ পান, এর মধ্যে একটি ছিল ছেলেদের এবং অন্যটি মেয়েদের। সেই সাথে তিনি সেক্সট্যান্টও খুঁজে পেয়েছিলেন, যার মাধ্যমে দিক নির্ণয় করা হয়।

পরবর্তীতে হাড়গুলো জাহাজে করে ফিজিতে পাঠানো হয়। সেখানে সেগুলোর মাপ নেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সেগুলো হারিয়ে যায়। টাইঘারের গবেষকরা সেই মাপজোখ থেকে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে এমন একজনের দেহের গঠন তৈরি করেছিলেন, যার সাথে ইয়ারহার্টের উচ্চতার মিল পাওয়া যায়।

১৯৮৯ সাল থেকে টাইঘার নিকুমারোরো দ্বীপে মোট ১২টি অভিযান চালিয়েছে। এর মধ্যে তারা একটি জায়গার সন্ধান পান যা জেরাল্ড গ্যারাহার উল্লেখ করেছিলেন। সেখানে তারা অনেকগুলো ক্যাম্পফায়ারের প্রমাণ পান। সেই সাথে পাখি, মাছ ও কচ্ছপের হাড় পেয়েছেন। এর থেকে বোঝা যায় এগুলো কেউ সেখানে খেয়েছেন। কিন্তু মাছ খেলেও, মাছের মাথা তারা খাননি, যা প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলো বসবাসরত মানুষদের বৈশিষ্ট্য নয়।

নিকুমারোরো দ্বীপে পাওয়া অ্যান্টি-ফ্রেকল ক্রিম; Image Source: TIGHAR

সেখানে ১৯৩০ সালের দিকের অনেকগুলো কাচের বোতল খুঁজে পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি কৌটায়  অ্যান্টি-ফ্রেকল ক্রিম ছিল, যা ইয়ারহার্টের পছন্দের কসমেটিক ছিল। এখনও সেখানে টাইঘারের অভিযান চলমান। এ কাজে তারা এখন ৪টি প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করছে। যে কুকুরগুলো ন’ফুট নিচ পর্যন্ত এবং ১,৫০০ বছরের পুরোনো মানবদেহ খুঁজে বের করতে সক্ষম।

তত্ত্ব-৩: মার্শাল আইল্যান্ড কন্সপিরেসি

তৃতীয় তত্ত্ব মতে, অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট ও ফ্রেড নুনান সম্ভবত হাউল্যান্ড দ্বীপ খুঁজে না পেয়ে মার্শাল দ্বীপের দিকে গিয়েছিলেন। যে দ্বীপটি তখন জাপানের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেখানে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মনে করে জিম্মি করা হয়েছিল। অনেকের বিশ্বাস সেখানে তাদের দুজনকে জাপানিরা হত্যা করেছিল।

১৯৯১ সালে প্লেনের এই অংশটি পাওয়া যায়, যা ইয়ারহার্টেরর বিমানের অংশ বলে দাবি করা হচ্ছে; Image Source: history.com

কিন্তু আবার অনেকে বিশ্বাস করেন ইয়ারহার্ট ও নুনান সেখান থেকে ভিন্ন কোনো নামে দেশে ফিরেছিলেন। এক তত্ত্ব মতে, তিনি দেশে ফিরে আইরিন ক্রেইগমাইল নামে পরিচয় দিতেন। পরবর্তীতে গাই বোলামকে বিয়ে করলে তার নাম আইরিন বোলাম হয়। সেই তত্ত্ব মতে, আইরিন বোলাম ১৯৮২ সালে নিউ জার্সিতে মৃত্যুবরণ করেন।

ইউএস এয়ার ফোর্সের অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল রোলিন সি রেইনেক ‘অ্যামেলিয়া ইয়ারফোর্ট সারভাইভড’ নামে একটি বই লিখেছেন। সেই বইতে তিনি লিখেছেন,

যদি তিনি হাউল্যান্ড দ্বীপ খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন, তাহলে তার প্লান বি অনুযায়ী প্রথমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে মার্শাল দ্বীপের দিকে গিয়েছিলেন। এরপর তার বিমানটি ধ্বংস করে দিয়ে পুনরায় ভিন্ন নামে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছিলেন। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি তার আসল পরিচয় লুকিয়েছিলেন।

রেইনিকের মতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্ভবত তাদের মার্শাল দ্বীপে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। তাদের সেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে জাপানের উপর নজরদারি করার জন্যও পাঠানো হতে পারে। রেইনেকের মতে, ইয়ারহার্ট উত্তর দিকে যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বার্তাটি লুকানো হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের জাপানিরা মার্শাল দ্বীপে আটক করেছিল।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানের শিক্ষক এবং ইয়ারহার্ট এনথুজিয়াস্ট ডিক স্পিঙ্ক, রেইনেকের বইয়ের তথ্যটি গ্রহণ করে মার্শাল দ্বীপ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন। তার মতে, ইয়ারহার্ট ও নুনান মিলি নামের একটি ছোট প্রবালদ্বীপে অবতরণ করেছিলেন।

২০১৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে স্পিঙ্ক বলেন,

সবার এই তথ্যটি জানা প্রয়োজন। আমি ইয়ারহার্টের মার্শালদ্বীপের তথ্যটি মন থেকে দূর করার জন্য সেখানকার অনেকের কাছে ধারাবাহিকভাবে গল্প শুনেছি। কিন্তু তারা বলেছেন, ইয়ারহার্ট মিলি দ্বীপে অবতরণ করেছিলেন। তারা সেই গল্প তাদের মা-বাবা, চাচা-চাচী ও দাদা-দাদীর কাছে শুনেছেন।

ইয়ারহার্ট কোথায় অবতরণ করেছিলেন সেই বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করার জন্য নিজের পকেট থেকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করেছেন। কিন্তু তার পক্ষে তা জানা সম্ভব হয়নি। একইসাথে তিনি স্বীকার করেছেন, দ্বীপের লোকজন যে গল্প বলেছেন তার বৈজ্ঞানিক কোনো যুক্তি নেই।

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের সম্ভাব্য গন্তব্য; Image Source: Telegraph

কয়েক বছর আগে হিস্ট্রি চ্যানেল ‘অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট: দ্য লস্ট এভিডেন্স’ নামে একটি ডকুমেন্টারি প্রচার করেছিল। সেখানে তারা ইয়ারহার্টের অন্তর্ধানের সাথে মার্শাল দ্বীপের যোগসূত্র দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে মার্শাল দ্বীপের ক্ষুদ্র জালুইট প্রবালদ্বীপে থাকা একটি ডকের ছবি তোলার জন্য পাঠানো হয়। এর নির্মাতাদের মতে, জাপানের নৌবাহিনী তাদের যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ভেবেছিলেন। তারা তাদের দুজনকে আটক করে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে সাইপান দ্বীপে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

কিন্তু এই ডকুমেন্টারির তথ্যকে অনেক ইয়ারহার্ট এনথুজিয়াস্ট মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাদের একজন অবসরপ্রাপ্ত বৈমানিক এলগেন লং, যিনি এক দশকের বেশি সময় ইয়ারহার্টের মৃত্যুরহস্যের অনুসন্ধান করেছেন। তার মতে, মার্শাল দ্বীপে পৌঁছাতে হলে তাদের আরো দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে। সেই মুহূর্তে যা সম্ভব ছিল না।

ওয়ার্ল্ড এয়ারওয়েজের ২৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বৈমানিক ফ্রেড প্যাটারসনও লংয়ের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তিনি নিজেও দুটি ইলেক্ট্রা বিমানের মালিক। তিনি বলেন,

তিনি কোনোভাবেই মার্শাল দ্বীপে যেতে পারবেন না। আমি নিজে একই বিমানে কয়েকবার দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়েছি৷ আমি জানি এই বিমানের প্রতি ঘণ্টায় কেমন জ্বালানি লাগে।

প্যাটারসন ও লং সহ আরো অনেকেই বিশ্বাস করেন ইয়ারহার্ট ও নুনান মার্শাল দ্বীপে যাননি। এছাড়া তারা রেডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন তার জ্বালানি শেষ হওয়ার পথে। অথচ হাউল্যান্ড থেকে মার্শাল দ্বীপের দূরত্ব ৮০০ মাইল, যা ইলেক্ট্রার সর্বোচ্চ গতিবেগে সাড়ে চার ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়া সম্ভব। কিন্তু সাড়ে চার ঘণ্টার পথ পাড়ি দেওয়ার জ্বালানি তার বিমানে থাকলে তিনি কখনোই সেই সিগনাল পাঠাতেন না।

এভাবেই অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট ও ফ্রেড নুনানের অন্তর্ধান নিয়ে একের পর এক তত্ত্ব এসেছে। কিন্তু কোনো তত্ত্বই প্রতিষ্ঠিত সত্য হতে পারেনি। যতদিন না ইয়ারেহার্টের বিমানের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন এমন হাজারো তত্ত্ব আসতেই থাকবেই৷

This article is in Bangla language. It is about world famous female pilot Amelia Earhart's disappearance & top 3 theories about this.

Necessary references have been hyperlinked.

Featured Image Source: Smithsonian   

Related Articles