
মনে করুন, আপনার বাম হাতের উপর একটি মশা রক্ত খেয়ে একেবারে ঢোল হয়ে গেছে। এখনই উড়াল দিবে এমন অবস্থা। আর তখনই তাকে দেখে ফেললেন আপনি। তাহলে কী করবেন? এটা খুব অবান্তর এক প্রশ্ন। কারণ অবধারিতভাবেই আপনি মশাকে মেরে ফেলবেন। কিন্তু আমি যদি আপনাকে বলি, “ভাইয়া/আপু, মশাটা মারবেন না প্লিজ। এর চেয়ে আস্তে করে বেটিকে এই বয়ামে ভরার ব্যবস্থা করেন। তারপর চলেন আদালতে যাই। সেইখানে আদালতেই এর ন্যায্য বিচার হবে!”, তাহলে কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই আমার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন আপনি।
তবে তুচ্ছ বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে প্রাণীদের আদালতে ধরে নিয়ে বিচার চাওয়ার ঘটনা ইতিহাসে আছে বেশ কিছু। এর অধিকাংশই ঘটেছিলো ইউরোপে। প্রাণীদের বিচারের অদ্ভুত, হাস্যকর কিছু ঘটনা নিয়েই সাজানো হয়েছে আজকের লেখাটি।
শূকরের পালের বিচার
প্রায় সাড়ে ছয়শ বছর আগেকার কথা। ১৩৭৯ সালে ফ্রান্সের এক আশ্রমে থাকা দুই পাল শূকর হঠাৎ করেই একদিন কেন জানি বেশ ক্ষেপে গিয়েছিলো। আর তখন ক্ষেপা এ শূকরের পালের আক্রমণে মারা যান পেরিনট মুয়েট নামক এক লোক।
একজন মানুষকে আরেকজন মানুষ খুন করলে নাহয় আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যায়, কিন্তু সেই মৃত্যু যদি শূকরের মতো কোনো প্রাণীর হাতে হয়, তবে কি আদালতে যাওয়ার কথা চিন্তা করবেন আপনি? সম্ভবত না।
তবে তখনকার রীতি অনুযায়ী মুয়েটের স্বজনেরা এমন অদ্ভুত কাজটিই করেছিলো। তারা আদালতে গিয়ে এ শূকরগুলোর বিচার দাবি করে। যেহেতু আলাদা করে বলা সম্ভব নয় যে, ঠিক কোন শূকরটির আঘাতে মুয়েটের মৃত্যু ঘটেছে, তাই আদালত সবগুলো শূকরকেই মেরে ফেলার নির্দেশ দেয়!

শিল্পীর তুলিতে শূকরের বিচার
এতগুলো শূকরের একবারে মৃত্যূকে যেন মেনে নিতে পারলেন না আশ্রমের প্রধান ফ্রায়ার হাম্বার্ট ডি পুটিয়ার্স। এখানে অবশ্য আবেগের চেয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতিটিই ছিলো মূল কারণ! তাই তিনি বার্গান্ডির ডিউকের কাছে চিঠি লিখলেন যেন অন্তত তিনটি শূকরকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে হলেও বাকিগুলোকে ছেড়ে দেয়া হয়।
পুটিয়ার্সের এমন আবেগপূর্ণ চিঠিতে মন গলে যায় ডিউকের। তাই তিনি তার আবেদনকে মঞ্জুর করে নেন। সেই তিন দুর্ভাগা শূকর কীভাবে মারা গিয়েছিলো তা অবশ্য জানা যায় নি। অবশ্য তখনকার দিনে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কিংবা আগুনে পুড়িয়ে অপরাধী প্রাণীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হতো!
হামলার অভিযোগে অভিযুক্ত বানর
অদ্ভুত এ ঘটনাটির কথা জানা গিয়েছিলো নিউ ইয়র্ক টাইমসের ১৮৭৭ সালের ২৯ নভেম্বর প্রকাশিত সংখ্যায়।
বোট্ল-অ্যালি নামক জায়গাটিতে তখন ছিলো ক্যাসিও ডিল্লিও নামক এক চারণকবির বসবাস। তার সাথে আরো থাকতো তারই পোষা এক বানর, নাম জিমি। একদিন ক্যাসিও গান গাচ্ছিলেন, আর তারই সাথে তাল মিলিয়ে নাচছিলো জিমি। ম্যারি শিয়া নামক এক মহিলা এ ঘটনাটি দেখে বেশ আনন্দ পেলেন এবং জিমিকে উৎসাহ দিতে একটি চকলেট উপহার দিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তার একটু মজা করতে ইচ্ছা হলো। তাই তিনি জিমির হাত থেকে চকলেটটি কেড়ে নিতে চাইলেন। মানুষের এমন মজা তো আর বেচারা বানরটি বুঝতে পারে নি। তাই ক্ষেপে গিয়ে সে শিয়ার আঙুলে বসিয়ে দিলো এক কামড়! কামড় খেয়ে শিয়াও রেগে গিয়ে তাদের দুজনকে পুলিশের হাতে দিয়ে দিলেন। এরপর ব্যাপারটি একেবারে আদালত পর্যন্ত গড়ালো!

জিমি
শিয়ার সব রাগ ছিলো জিমির উপরেই। তাই তিনি চাইছিলেন জিমির যেন শাস্তি হয়। এমন অদ্ভুত কেস পেয়ে বিচারকও সেদিন বেশ মজা পেয়েছিলেন। তাই কৌতুক করে তিনি বলেছিলেন যে, ডারউইন বেঁচে থাকলে হয়তো বানরটিকে শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে তাঁকে রাজি করাতে পারতেন। কিন্তু তিনি অন্তত এমনটা করতে পারবেন না। বিচারের রায় নিজের বিপক্ষে যাওয়ায় শিয়া রেগে গেলেও কিছুই করার ছিলো না তার। বরং শিয়াকে উপহাস করতেই কিনা কে জানে, জিমি এরপরই লাফিয়ে বিচারকের টেবিলে উঠে করমর্দনের জন্য তার হাতটি বাড়িয়ে দিয়েছিলো বলে জানা যায়!
জোঁক যখন আদালতে
১৪৫১ সালের কথা। সুইজারল্যান্ডের লাউজেনের এক পুকুরে ছিলো বেশ কিছু জোঁকের বসবাস। হঠাৎ করে কারো যেন মনে হলো এ পুকুরে জোঁকের সংখ্যাটা একটু বেশি। এটা শুনে স্থানীয় বিশপ সেই পুকুরের কিছু জোঁক নিয়ে চলে গেলেন একেবারে আদালতে! তার অভিযোগও ছিলো জোঁকের এ সংখ্যাধিক্যকে ঘিরেই।

জোঁক
তার এমন অদ্ভুত বিচারের আবেদন শুনে বিচারকও হয়তো বেশ মজা পেয়েছিলেন। তাই তিনি সেই বিশপকে জানালেন যে, তিনি যেন সেই পুকুরের সবগুলো জোঁককেই ধরে আনেন যাতে করে তারা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং এ সংক্রান্ত রায় শুনতে পায়!
এরপরের কাহিনী ছিলো আরো মজার। আদালতে সেই পুকুরের জোঁকগুলোকে হাজির করার পর বিচারক রায় দিলেন যে, তাদেরকে তিনদিনের মাঝে সেই পুকুর ছেড়ে চলে যেতে হবে! কিন্তু জোঁক কি আর মানুষের ভাষা বোঝে? তাই তারা পুকুরটি ছাড়ে নি। এরপর? এরপর অবধারিতভাবেই তাদের কপালে নেমে এসেছিলো মৃত্যুর কালো ছায়া।
উদোর পিণ্ডী বুধোর ঘাড়ে
সতের শতকের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যে পটার নামে এক লোক থাকতেন। যখনকার কথা বলছি, তখন তার বয়স চলছে ষাটের মতো। পটারের সমস্যা ছিলো একটাই। স্বামী-স্ত্রীর প্রাকৃতিক ভালোবাসার চেয়ে কোনো প্রাণীর সাথে মিলিত হতেই বেশি আনন্দ পেতেন তিনি। আর অত্যন্ত নিন্দনীয় এ কাজটি তিনি শুরু করেছিলেন সেই দশ বছর বয়স থেকেই।
পটারের স্ত্রী যে এ ব্যাপারে জানতেন না, তা কিন্তু না। একবার এক স্ত্রী কুকুরের সাথে থাকা অবস্থায় তিনি তার স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে গিয়েছিলেন। সেইবার কোনো রকমে মাফ চেয়ে পার পান তিনি। সেই সাথে ব্যাপারটি গোপন রাখার জন্যও স্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। এরপর সেই স্ত্রী কুকুরটিকেই ফাঁসি দিয়ে মেরে ফেলেছিলেন পটার! দোষ কার, আর মরলো কে?
ব্যাপারটি এখানে থেমে গেলেও হতো। কিন্তু এমন অপমানের পরও শৈশবের এ বদভ্যাস ছাড়া সম্ভব হয় নি পটারের পক্ষে। এর কিছুদিন পর এক শূকরীর সাথে থাকা অবস্থায় তিনি আবারও ধরা পড়ে যান, এবার ছেলের কাছে। এরপর আর মুক্তি মেলে নি পটারের। আস্তে আস্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তার এমন কুকীর্তির কথা। কর্তৃপক্ষ তখন তাকে ও সেই শূকরীটিকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। দুজনকেই ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছিলো। তবে দুজনই কি এ ব্যাপারে অপরাধী ছিলো? নিজেই ভেবে নিন।
সৌভাগ্যবতী গাধা
প্যারিসের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপশহরীয় এলাকায় অবস্থিত এক কমিউনের নাম ভান্ভেস। আঠারো শতকে এখানেই থাকতেন জ্যাকুইস ফেরন নামে এক লোক। ১৭৫০ সালে তিনি এক স্ত্রী গাধার সাথে মিলিত হতে থাকা অবস্থায় ধরা পড়ে যান। ফলে ফেরন আর সেই স্ত্রী গাধাকে তখন আদালতের হাতে তুলে দেয়া হয়।
তখনকার দিনে ফ্রান্সের পশু আইনে বলা ছিলো যে, যদি কোনো মানুষ এবং প্রাণীকে সঙ্গমরত অবস্থায় পাওয়া যায়, তবে যদিও প্রাণীটি নির্দোষ হয়, তবুও তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে! আর এখানেই ছিলো এ ঘটনার সবচেয়ে মোড় ঘুরিয়ে দেয়া দিক।

গাধা
ভান্ভেসের জনগণ দেখলো যে, দোষ কেবল ফেরনের, কিন্তু বিনা দোষে মরতে হচ্ছে সেই গাধাটিকেও। তারা এর বিরুদ্ধে একত্রিত হলো। ভান্ভেসের সবাই, এমনকি সেখানকার এক পুরোহিতও, স্বাক্ষর করলো এক আবেদনে। সেখানে তারা মূলত গাধাটির চারিত্রিক নির্মলতার কথাটিই তুলে ধরেছিলো। সেই সাথে সে যে স্বেচ্ছায় এমনটি করবে না সেই কথাও লেখা ছিলো সেই আবেদনে। ফলে শেষ পর্যন্ত ফেরনকে মরতে হলেও বেঁচে গিয়েছিলো সেই গাধাটি।
মোরগের ডিম
এ ঘটনাটি ঘটেছিলো ১৪৭৪ সালে, রাইন নদীর তীরে অবস্থিত সুইজারল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর বাসেলে।

মোরগ
হঠাৎ করেই তখন শহর জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিলো। কারণ বাসেলে নাকি এমন এক মোরগ পাওয়া গেছে (মুরগী না কিন্তু) যেটি কিনা একটি ডিম পেড়েছে! সেই ডিমটিতেও আবার নেই কোনো কুসুম। এমন গুঁজবে শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত যেতে হয়েছিলো সেই মোরগটিকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো ‘প্রকৃতির ইচ্ছার বিরুদ্ধের ডিম পাড়ার মতো জঘন্য অপরাধ সাধন!’ লোকে ভয় পাচ্ছিলো যে, এটি হয়তো মানবজাতির বিরুদ্ধে শয়তানেরই কোনো এক চাল। এ ডিমটি যদি ফুটে যায়, তাহলেই বেরিয়ে আসবে বাসিলিস্ক নামক রুপকথার এক প্রাণী যার চোখে এক নজর চোখ রাখাই মৃত্যুর নামান্তর!

শিল্পীর তুলিতে বাসিলিস্ক (ডানে)
সেই মোরগের পক্ষে একজন আইনজীবীও নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। তবে ভাগ্য খারাপ ছিলো বেচারার, তার আইনজীবী আদালতে তাকে নির্দোষ প্রমাণে ব্যর্থ হন। ফলে পুড়িয়ে মারা হয় দুর্ভাগা সেই মোরগকে, সেই সাথে নষ্ট করা হয় ‘তার’ ডিমও।
ছুঁচো আর উইপোকাদের কাহিনী
১৫১৯ সালে ইতালির উত্তরাঞ্চলের স্টেল্ভিও কমিউনের লোকজন একদিন দেখতে পেলো যে, কারা যেন তাদের ফসলগুলো নষ্ট করে রেখে গেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো, এর পেছনে দায়ী সেই এলাকারই একদল ছুঁচো। এমন পরিস্থিতিতে আমরা স্বাভাবিকভাবেই চাইবো এদের মেরে ফেলতে। তবে স্টেল্ভিও লোকেরা কিন্তু তা করলো না। তারা বেশ কিছু ছুঁচো ধরে নিয়ে গেলো আদালতে যাতে করে ছুঁচোগুলো তাদের এমন কাজের স্বপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করতে পারে! এমনকি হ্যান্স গ্রাইনেব্নার নামে এক আইনজীবীকে এ ছুঁচোদের পক্ষে নিয়োগও দেয়া হয়েছিলো।

ছুঁচো
অবশ্য এলাকাবাসী সবাই ছুঁচোদের বিরুদ্ধেই কথা বলেছিলো। তাই মামলায় ছুঁচোরা হেরে যায়! বিচারক তখন রায় দেন যে, আগামী ১৪ দিনের মাঝেই ছুঁচোদেরকে ঐ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। এরপরেও যদি কোনো ছুঁচো না যায়, তাহলে তাকে সমাজচ্যুত করা হবে!
১৭৩৪ সালে ঠিক এমনই আরেকটি ঘটনা ঘটেছিলো একদল উইপোকাকে নিয়ে। ব্রাজিলের বেশ কয়েকজন খ্রিষ্টান সেবক একবার আদালতে বেশ কিছু উইপোকা নিয়ে অভিযোগ জানালেন যে, উইপোকাগুলো তাদের উপাসনালয়ের দেয়ালের ক্ষতি করছে। সেই উইপোকাদের ভাগ্যও ছিলো ঠিক ছুঁচোদের মতোই। তাদেরও সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই সেবকেরা। আর সেই সিদ্ধান্ত জোরে জোরে পড়া হয়েছিলো এক উইয়ের ঢিবির সামনেই!
ইঁদুর-বাহিনীর আলসেমী
আজ প্রাণীদের বিচারের যতগুলো ঘটনা জানালাম, তার মাঝে সবচেয়ে চমৎকার সম্ভবত এটিই। হাসির ঘটনা দিয়ে শেষ করাই তো ভালো, তাই না? কারণ কথায় আছে- “শেষ ভালো যার, সব ভালো তার”।
১৫১০ সালের কথা। ফ্রান্সের বার্গান্ডির একদল কৃষক স্থানীয় আদালতে সেখানকার ইঁদুরদের দ্বারা ফসল নষ্টের অভিযোগ তুলে মামলা করে বসলেন! সেই মামলায় ইঁদুরদের পক্ষে লড়েছিলেন এক তরুণ আইনজীবী, নাম তার বার্থোলোম চ্যাসিনী।

ইঁদুর
প্রথম একদিন ধার্য করা হলো যেদিন বাদী-বিবাদী দু’পক্ষের উপস্থিতিতেই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। যথাসময়ে কৃষকেরা আসলেও ইঁদুরেরা আসে নি। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে চ্যাসিনী জানালেন যে, তার মক্কেলদের কাছে আদালতের আদেশই পৌঁছে নি। কারণ তার মক্কেলদের কোনো নির্দিষ্ট বাসস্থানই নেই! সবাই জীবিকার তাগিদে এদিক-সেদিক ছুটে বেড়ায়। চ্যাসিনীর এমন কথা মেনে নিতে বাধ্য হলেন বিচারক। তাই বিচারকার্য সেদিনের মতো স্থগিত ঘোষণা করে নতুন দিন ধার্য করা হলো।
দ্বিতীয় দিনও ইঁদুরেরা আসলো না। এবার কারণ হিসেবে চ্যাসিনী বললেন, খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে দুর্বল, বয়স্ক ও অপেক্ষাকৃত তরুণ ইঁদুরদের আসতে বেশি সময় লাগবে! এবারও বিচারক আর অপেক্ষা করতে পারলেন না। তাই নতুন আরেকটি দিন ঠিক করা হলো বিচারের জন্য।
বলা বাহুল্য, তৃতীয় দিনও আদালতে কোনো ইঁদুরকেই আসতে দেখা গেলো না। কিন্তু চ্যাসিনীর এতে কোনোই ভাবান্তর হয় নি। বরং তিনি মুখে গাম্ভীর্যের ভাব ফুটিয়ে জানিয়েছিলেন যে, রাস্তায় ঘোরাঘুরি করা অসংখ্য বিড়ালের জন্য জীবনের ভয়ে তার মক্কেলরা আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে! তিনি বললেন, তার মক্কেল অর্থাৎ ইঁদুরদের যদি কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে এর দায় নিতে হবে শহরের বিড়ালের মালিকদের! আর এজন্য তিনি প্রস্তাব করলেন যে, বাদীপক্ষ যেন আদালতে যাওয়া-আসার লক্ষ্যে ইঁদুরদের জন্য নিরাপদ পরিবহনের ব্যবস্থা করে দেয়! চ্যাসিনীর এমন উদ্ভট প্রস্তাবে ক্ষেপে যায় কৃষকেরা। বিচারকও শেষ পর্যন্ত এ মামলাটি পাকাপাকিভাবে স্থগিত করে দিতে বাধ্য হন। ফলে শেষ পর্যন্ত জয় হলো চ্যাসিনীরই, সেই সাথে তার মক্কেল তথা ইঁদুর সমাজের!