১৯৪৮ সালের ১৪ই মে ইহুদীদের নেতা ডেভিড বেন গুরিয়ন ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন এবং ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আর তার পরদিন থেকেই শুরু হয় প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। ১৯৪৭ সালের ২৯শে নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে ভাগ করে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় আরবদের সাথে ইহুদীদের সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাতে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিল স্থানীয় ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা। ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে যখন ইহুদীরা সত্যি সত্যিই ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে বসে, তখনই কেবল প্রতিবেশী মিসর, সিরিয়া ও জর্ডান একযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। আরব-ইহুদী গৃহযুদ্ধ রূপ নেয় বহুজাতিক আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে।
ডেভিড বেন গুরিয়ন আগে থেকেই জানতেন, প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলো নতুন একটি ইহুদী রাষ্ট্রের উত্থান মেনে নেবে না। আগে হোক, পরে হোক, আরব রাষ্ট্রগুলো তাদের উপর আক্রমণ করবেই। আর একাধিক আরব রাষ্ট্রের আক্রমণের মুখে ক্ষুদ্র আয়তন ও জনসংখ্যার ইহুদী রাষ্ট্রটিকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রথাগত যুদ্ধের পাশাপাশি তাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে গোয়েন্দাগিরির উপরও, যেন আরবদের বিভিন্ন গোপন তথ্য ও পরিকল্পনা সম্পর্কে আগেই অবহিত হয়ে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করা যায়। ফলে কয়েক বছর আগেই বেন গুরিয়ন ইহুদীদের গোয়েন্দা বিভাগ ‘দ্য পলিটিক্যাল ডিপার্টমেন্ট’কে একটি অত্যন্ত গোপন গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন, যার কাজ ছিল বিভিন্ন আরবদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ইহুদীদের হেডকোয়ার্টারে প্রেরণ করা।
বেন গুরিয়নের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়নি। ১৪ই মে ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণার মাত্র তিন দিন আগেই পলিটিক্যাল ডিপার্টমেন্টের পরিচালক রুভেন শিলোয়া (Reuven Shiloah) বেন গুরিয়নকে জানান, আরব লিগের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ইসরায়েলের উপর আক্রমণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। ইসরায়েলের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারিত হওয়ার পরপরই ১৫ই মে গভীর রাতে তারা একযোগে ইসরায়েলের উপর আক্রমণ করবে। রুভেন শিলোয়ার গোয়েন্দারা আরব লিগের ইসরায়েল আক্রমণের বিস্তারিত পরিকল্পনাও সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। ফলে সেদিন মাঝরাতে যখন সাতটি আরব সেনাবাহিনী সদ্য স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া ইহুদী রাষ্ট্রটির উপর আক্রমণ করে, তখন এর নেতারা এবং সামরিক কর্মকর্তারা অনেকটাই প্রস্তুত ছিল।
যুদ্ধের প্রথম দিকে আরবদের সংখ্যা এবং অস্ত্রশস্ত্র ইহুদীদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। ফলে ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনীগুলোর প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধের প্রথমদিকে আরবরা বেশ সাফল্য অর্জন করে। তারা বেশ কিছু স্থাপনা নিয়ন্ত্রণে নিতে এবং ইহুদীদের ব্যাপাক ক্ষয়ক্ষতি করতে সক্ষম হয়। তাদের মধ্যে একটি ভ্রান্ত আত্মবিশ্বাস ছিল যে, স্বল্পসংখ্যক ইহুদীদেরকে পরাজিত করে উচ্ছেদ করা তাদের জন্য কঠিন কোনো ব্যাপার হবে না। এমনকি আরব লিগের মহাসচিব আব্দুর রহমান আজ্জাম পাশা ইসরায়েল রাষ্ট্রটিকে ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেছিলেন, এটি হতে যাচ্ছে এমন এক ধ্বংসযজ্ঞ এবং হত্যাকান্ড, যা মানুষ মোঙ্গল এবং ক্রুসেডারদের গণহত্যার মতোই স্মরণ রাখবে।
কিন্তু বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। একেবারে প্রথম দিকে আরবরা কিছুটা সাফল্য অর্জন করলেও ইহুদীরা খুব শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়ায়। সংখ্যায় কম হলেও ইহুদীরা দীর্ঘদিন ধরেই এরকম একটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। তাদের কমান্ডারদের অনেকেরই রাশিয়ার জার শাসনের বিরুদ্ধে এবং পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা ছিল। এছাড়াও তাদের বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী, যারা ইতোপূর্বেই সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিল, তারাও এ সময় সরাসরি যুদ্ধে যোগ দিতে শুরু করে। তাদের নবগঠিত সেনাবাহিনী ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং একক নেতৃত্বের অধীনে একই লক্ষ্যে জীবন-মরণ সংগ্রামে রত। তাদের দৃষ্টিতে এ যুদ্ধ ছিল তাদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম, যেখানে পরাজিত হলে তারা মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো দ্বিতীয় আরেকটি হলোকাস্ট বা ইহুদী গণহত্যার।
অন্যদিকে আশেপাশের আরব রাষ্ট্রগুলোর সেনাবাহিনী সংখ্যা এবং অস্ত্রশস্ত্রের দিক থেকে ইসরায়েলের সশস্ত্রবাহিনীর তুলনায় বড় হলেও অধিকাংশ আরব রাষ্ট্রই ফিলিস্তিন রক্ষার জন্য তাদের সম্পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করেনি। এছাড়াও একাধিক রাষ্ট্রের সম্মিলিত বাহিনী হওয়ায় তাদের মধ্যে তেমন কোনো সমঝোতাও ছিল না। এমনকি তাদের সবার উদ্দেশ্যও এক ছিল না। সম্পূর্ণ ফিলিস্তিন স্বাধীন করার পরিবর্তে তাদের কারো কারো উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করে নিজেদের ভূমির সাথে একীভূত করে নেওয়া। আবার তখনও পর্যন্ত তাদের অনেকের, যেমন জর্ডানিয়ান সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশ পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ব্রিটিশ কমাণ্ডাররাই। এসব কারণে আরবদের পক্ষে যুদ্ধে জয়লাভ করার সম্ভাবনা দিনে দিনে ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকে।
যুদ্ধে উভয় পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে থাকলে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি কাউন্ট ফোক বার্নাডট (Count Folke Bernadotte) যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। ইসরায়েলের তখন অস্ত্রশস্ত্র ফুরিয়ে আসছিল, অন্যদিকে ইসরায়েল থেকে জোরপূর্বক বহিষ্কৃত লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুর ভার সামাল দিতে গিয়ে আরব রাষ্ট্রগুলোও হিমশিম খাচ্ছিল। ফলে মাত্র একমাসের যুদ্ধের পরেই বার্নাডটের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে একমত হয়। কিন্তু এ যুদ্ধবিরতি বেশিদিন কার্যকর ছিল না। কিছুদিন পরেই যখন পুনরায় যুদ্ধ আরম্ভ হয়, তখন ইসরায়েল অদম্য শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং যুদ্ধের গতি প্রকৃতি পুরোপুরি পাল্টে যায়।
ততদিনে হলোকাস্ট থেকে রক্ষা পাওয়া আরো কয়েক হাজার ইহুদী ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো থেকে ইসরায়েলে এসে যুদ্ধে যোগ দেয়। এছাড়াও ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স ইউরোপ থেকে জাহাজ বোঝাই করে অস্ত্র আমদানি করে নিজেদেরকে একটি শক্তিশালী নিয়মিত সেনাবাহিনীতে পরিণত করে। সেই সাথে তাদের গোয়েন্দা বাহিনীগুলোর তৎপরতা এবং বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর সহায়তা তো ছিলই। ফলে ইসরায়েল যুদ্ধে খুব দ্রুত অগ্রগতি লাভ করতে থাকে। ১৯৪৯ সালের মার্চে যখন আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে, ততদিনে ইসরায়েল শুধু যে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী তাদেরকে দেওয়া ভূমির উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তা-ই না, তারা একইসাথে ফিলিস্তিনেরকে বরাদ্দ দেওয়া ভূমির প্রায় ৭০ ভাগও দখল করে নেয়। পৃথিবীর মানচিত্রে বাস্তবিক অর্থেই ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রটি নিজেদের আসন তৈরি করে নেয়।
একাধিক আরব রাষ্ট্রকে হারিয়ে যুদ্ধে জয়লাভ করতে সক্ষম হলেও ডেভিড বেন গুরিয়ন তা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এটিই আরবদের সাথে তাদের শেষ যুদ্ধ হতে যাচ্ছে না। প্রথম যুদ্ধে আরবরা হেরেছে ঠিকই, কিন্তু তাদের কেউ তখনও ইসরায়েলের বৈধতা স্বীকার করে নেয়নি। বরং তাদের অনেকেই সুযোগ পাওয়ামাত্রই ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিশ্চিহ্ন করে ইহুদীদেরকে ইউরোপে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। ফলে বেন গুরিয়ন সিদ্ধান্ত নেন, শত্রু রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে তৎপরতা চালানোর জন্য তাদের সেনাবাহিনীর পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও গড়ে তুলতে হবে।
১৯৪৮ সালের ৭ জুন বেনগুরিয়ন তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদেরকে তার অফিসে ডেকে পাঠান, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন পলিটিক্যাল ডিপার্টমেন্টের পরিচালক রুভেন শিলোয়া। শিলোয়াও বেন গুরিয়নের উদ্দেশ্যের সাথে সম্পূর্ণ একমত ছিলেন। তিনি নিজেই বেন গুরিয়নের কাছে পাঠানো একটি মেমোতে উল্লেখ করেছিলেন, এই যুদ্ধে জয়লাভ করার জন্য জন্য তাদেরকে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বিভাগ সৃষ্টি করতে হবে, যেটি হবে তাদের অন্যতম প্রধান সামরিক এবং রাজনৈতিক হাতিয়ার। এটি হবে একটি স্থায়ী সংগঠন, যা যুদ্ধ শেষে শান্তিকালীন সময়েও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে।
সেদিন সেই সংক্ষিপ্ত অধিবেশনেই তাৎক্ষণিকভাবে বেন গুরিয়ন তিনটি পৃথক গোয়েন্দা সংগঠন সৃষ্টির নির্দেশ দেন। এই তিনটি বাহিনীই গড়ে ওঠে মূলত প্রতিষ্ঠা-পূর্ব গোয়েন্দা সংস্থা শাই (Shai) এর উপর ভিত্তি করে। প্রথম বাহিনীটি ছিল ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা, যার পূর্ণ নাম ইন্টালিজেন্স ডিপার্টমেন্ট অফ দ্য ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস জেনারেল স্টাফ (Intelligence Department of the Israeli Defense Forces General Staff)। তবে এটি এর হিব্রু নামের সংক্ষিপ্ত রূপ আমান (AMAN) নামেই অধিক পরিচিত। এর দায়িত্ব দেওয়া হয় ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগে ইহুদীদের সশস্ত্র বাহিনী হাগানার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসের বেরিকে (Isser Be’eri)।
দ্বিতীয় বাহিনীটি ছিল ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার উদ্দেশ্যে সৃষ্ট জেনারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (General Security Service), যার ভূমিকা অনেকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই (FBI) এবং ব্রিটেনের এমআইফাইভের (MI5) সমতুল্য। পরবর্তীতে সংস্থাটি সংস্থাটি ইসরায়েলি সিকিউরিটি সার্ভিস (Israeli Security Service) নামধারণ করে। তবে এটি এর হিব্রু নামের সংক্ষিপ্ত রূপ শিন বেত (Shin Bet) বা শাবাক (Shabak) নামেই বেশি পরিচিত। এর দায়িত্ব দেওয়া হয় শাই এর পরিচালক ইসের হারেল (Isser Harel) এর উপর।
আর তৃতীয় সংস্থাটি ছিল রুভেন শিলোয়ার অধীনে থাকা পলিটিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (The Political Department), যেটিকে জিউইশ এজেন্সির পরিবর্তে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। এর উপর দায়িত্ব দেওয়া হয় ইসরায়েলের সীমানার বাইরে অন্যান্য রাষ্ট্রে গিয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানোর। এই সংস্থাটিই পরবর্তীতে বিবর্তিত হয়ে মোসাদ (Mossad) নাম ধারণ করে এবং এর প্রধান রুভেন শিলোয়া হন মোসাদের প্রথম পরিচালক। আমান, শিন বেত এবং মোসাদ- তিনটি বাহিনীরই হেডকোয়ার্টার স্থাপন করা হয় সারোনা শহরের বহিষ্কৃত জার্মান টেম্পলার সম্প্রদায়ের ফেলে যাওয়া বাড়িঘরগুলোতে, যার কেন্দ্রে ছিল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়নের কার্যালয়।
#নাৎসি-দের সাথে সম্পর্কের অভিযোগে ফিলিস্তিনের #জার্মান #টেম্পলার সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ এবং তাদের নেতা গটহিফ ওয়াগনারকে হত্যা করেছিল #ইহুদী-রা। এই গুপ্তঘাতকদের নেতৃত্বে ছিল রাফি এইতান, যে পরবর্তীতে #মোসাদ এর ১ম টার্গেটেড কিলিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেছিল। https://t.co/ue7X0iBSYN
— Toha (@toha_mht) June 9, 2018
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে একটি রাষ্ট্রের এরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে ওঠার কথা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার উপর ভিত্তি করে, যেখানে প্রতিটি বাহিনীর গঠনতন্ত্র, তাদের ভূমিকা, দায়িত্ব, ক্ষমতা সবকিছু পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত থাকবে। কিন্তু ইসরায়েলের ক্ষেত্রে তার কিছুই হয়নি। চলমান একটি যুদ্ধের মধ্য দিয়েই তাড়াহুড়া করে, যোগ্য ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ না করেই, অনেকটা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে, অত্যন্ত গোপনে সৃষ্টি হয় এর গোয়েন্দা বাহিনীগুলো। প্রথমদিকে তাদের যাত্রাপথ খুব একটা সহজও ছিল না। একাধিক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়হীনতা, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব, কিছু কিছু বাহিনীর বিদ্রোহ এবং সেই বিদ্রোহ দমনের মধ্য দিয়েই তাদেরকে এগিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু কালক্রমে সেই বাহিনীগুলোই ধীরে বিশ্বের সেরা গোয়েন্দাসংস্থা হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, যাদের সফল তৎপরতার ফলেই আজও এতগুলো শত্রু রাষ্ট্রের মধ্যেও সফলভাবে টিকে আছে অন্যায়ভাবে সৃষ্টি হওয়া ইহুদী রাষ্ট্রটি।
তথ্যসূত্র: Rise and Kill First: The Secret History of Israel’s Targeted Assassinations
এই সিরিজের অন্যান্য পর্বগুলো
(১) সন্ত্রাসী সংগঠন লেহি’র গুপ্তহত্যা (২) উগ্র জায়নবাদের উত্থান (৩) ইহুদীদের নৈশ প্রহরী হাশোমারের ইতিহাস (৪) আইডিএফের পূর্বসূরি হাগানার উত্থান (৫) নাৎসিদের উপর ইহুদী ব্রিগেডের প্রতিশোধ (৬) ফিলিস্তিন থেকে জার্মানদের উচ্ছেদ (৭) যে সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মাধ্যমে ইসরায়েলের সৃষ্টি (৮) হাসান সালামা হত্যাপ্রচেষ্টা (৯) পালায়াম এবং ছদ্মবেশী আরব ইউনিটের নাশকতা (১১) ইসরায়েলের প্রথম আন্তঃবাহিনী খণ্ডযুদ্ধ
ফিচার ইমেজ: Wikimedia Commons (বেন গুরিয়নের সাথে রুভেন শিলোয়া ও অন্যান্যদের বৈঠক)