Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

About

Brand Partnerships

Content Policy

Contact

English

EN

Sinhala

SIN

Tamil

TA

Bangla

BAN

কামিকাযে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আত্মঘাতী জাপানি পাইলট | পর্ব-১

Abdullah Al Masud ইতিহাস এপ্রিল 28, 2022
article

১৯৪৪ সালের অক্টোবর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। মিত্রবাহিনীর নাবিকরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করলেন যে হার না মানা মানসিকতার জাপানিরা এবার বিমান নিয়ে সরাসরি যুদ্ধজাহাজগুলোতে আছড়ে পড়ে নিজেদের শেষ করে দিচ্ছে! পরবর্তীতে জানা গেল- এই পাগলাটে পাইলটরা জাপানের সদ্য গঠিত স্পেশাল অ্যাটাক ইউনিটের সদস্য যারা ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যুকে বরণ করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এতে যোগ দিয়েছে। এই হামলার নাম দেয়া হলো ‘কামিকাযে’। পরবর্তী কয়েক মাসে পঙ্গপালের মতো উড়ে এসে আত্মঘাতী হামলা করতে লাগলো জাপানিরা। কিন্তু কি এই কামিকাযে? কেনই বা তারা নিজের জীবনকে শেষ করে দেয়ার এই পথ গ্রহণ করেছে? সেসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আজকের লেখাটি সাজানো হয়েছে।

কামিকাযের ইতিহাস

১২৭৪ সাল। কোরিয়া দখলের পর জাপানের দিকে নজর পড়েছে দুর্ধর্ষ মোঙ্গল সম্রাট কুবলাই খানের। সাড়ে তিন হাজার যুদ্ধজাহাজ ও ত্রিশ হাজার নৌসেনার বিরাট এই বহরকে ঠেকানোর সামর্থ ছিল না জাপানিদের। সৃষ্টিকর্তা যেন তাদের প্রার্থনায় সাড়া দিলেন। প্রশান্ত মহাসাগরের শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলে খ্যাত টাইফুনে ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ফিরে যায় মঙ্গোল বাহিনী। তবে মারা গিয়েছে সাড়ে তেরো হাজার সেনা। কিন্তু সম্রাট কুবলাই খান দমে যাওয়ার পাত্র নন। ১২৮১ সালে আবারো জাপানে অভিযান পরিচালনা করেন। এবারের বহরে এক লাখ চল্লিশ হাজার সেনার পাশাপাশি নয়শো জাহাজ ছিল। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে আবারও একই পুনরাবৃত্তি। আরেকটি শক্তিশালী টাইফুনে বিপর্যস্ত মোঙ্গল বাহিনী এবারও ফিরে যেতে বাধ্য হয়। প্রায় ২০-৩০ হাজার সেনা ধরা পড়ে। জাপানিরা এই টাইফুনকে নাম দেয় Kamikaze-神風 (বাংলা উচ্চারণ: কামিকাযে) যার অর্থ Divine Wind বা স্বর্গীয় বাতাস। তাদের ধারণা ছিল ঈশ্বর এই শক্তিশালী বাতাস দিয়ে তাদেরকে সাহায্য করেছেন।

ম্যাপে মঙ্গোল হামলার গতিপথ এবং এ ঘটনা নিয়ে আঁকা বিখ্যাত ছবি; Image Source : Qiushufang & Kikuchi Yoosai

পরবর্তীতে ১৯৩৭ সালে একটি মিতসুবিসি কেআই-১৫ মনোপ্লেন দিয়ে টোকিও থেকে লন্ডনে একটি বেসামরিক ফ্লাইট পরিচালনা করা হয় যা ছিল তৎকালে দীর্ঘ ফ্লাইটের রেকর্ড। একে সংবাদপত্রে ‘কামিকাযে’ নাম দেয়া হয়। এরপর শব্দটি নতুন করে আলোচিত হয়।

এবার আসুন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে। একের পর এক পরাজয়ে জাপানের পিঠ তখন দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। এতদিনের যুদ্ধে মারা পড়েছিল বেশিরভাগ অভিজ্ঞ ভেটেরান পাইলট। আবার নবীন পাইলট ট্রেনিং প্রোগ্রামের দুর্বলতার কারণে পর্যাপ্ত সংখ্যক নতুন দক্ষ পাইলট উঠে আসছিল না। অন্যদিকে অনভিজ্ঞ পাইলটদের কারণে নেভাল টার্গেটগুলোতে নিখুঁতভাবে হামলার শতকরা হার কমে যাচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধ তো করতে হবে, নাকি?
এসব কারণে জাপানিরা ১৯৪৪ সালের অক্টোবর নাগাদ প্রতিষ্ঠা করে kamikaze Tokubetsu Kōgekitai (神風特別攻撃隊) ইউনিট। এর ইংরেজি অর্থ ‘Divine Wind Special Attack Unit’ – এদেরকেই সংক্ষেপে বলা হতো কামিকাযে। এই ইউনিটের তুলনামূলক অনভিজ্ঞ নবীন পাইলটদের কাজ ছিল বিমান নিয়ে সরাসরি শত্রুজাহাজের উপর আছড়ে পড়ে নিজেদের শেষ করে দেয়ার বিনিময়ে হলেও শত্রুর ক্ষতি করা।

কামিকাযে বিমানগুলো বোমা নিয়ে টার্গেটের উপর সরাসরি আছড়ে পড়তো; Image Source : nationalww2museum.org

কেন এই আত্মঘাতী হামলা?

তৎকালীন জাপানি মিলিটারি কালচারে শত্রুর হাতে গ্রেফতার/পরাজিত হওয়ার চেয়ে মৃত্যুকে উত্তম বলে বিবেচনা করা হতো। আর এটি এসেছে প্রাচীন সামুরাই যোদ্ধাদের ‘বুসিদো কোড’ অর্থাৎ ‘মৃত্যুর আগপর্যন্ত নিজের আনুগত্য ও সম্মান ধরে রাখা’ থেকে। এই প্রথা পালন করতে জাপানি সেনারা যুদ্ধবন্দী হওয়ার আগমুহূর্তে নিজের গুলি/গ্রেনেডে আত্মহত্যা করত। অথবা শত্রুর উপর এমনভাবে হামলা করতযেখানে তার মৃত্যুই হবে শেষ পরিণতি। এটি Banzai Attack নামে পরিচিত ছিল।

অন্যদিকে অফিসারদের প্রথা ছিল একটু ভিন্ন। তৎকালীন জাপানের সামরিক বাহিনীর অফিসাররা অন্যান্য অস্ত্রের পাশাপাশি তাদের পদমর্যাদা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের ‘কাতানা’ তলোয়ার সঙ্গে রাখতেন। বিষয়টি অনেকটা আজকের যুগের পদস্থ সামরিক অফিসারদের সঙ্গে ব্যাটন (বিশেষ ধরনের ছোট লাঠি) রাখার মতোই। জানেন নিশ্চয়ই যে, আগের যুগের জাপানের সামুরাই যোদ্ধাদের স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নেয়ার জন্য Seppuku (切腹) নামে বিশেষ প্রথা ছিল। এর ভিন্ন পদ্ধতি ‘হারা-কিরি’ নামেও পরিচিত। এটি ছিল পরাজিত বা গুরুতর অপরাধ করা সামুরাই যোদ্ধাদের নিজের সামাজিক সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার একটি পদ্ধতি যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জাপানি অফিসাররাও পালন করতেন। এজন্য তারা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে ট্যান্টো নামক ছোট ছুরি দিয়ে প্রথমে নিজের পেটে আঘাত করে কেটে ফেলতেন। তারপর ‘কাইশাকুনিন’ পদধারী একজন ব্যক্তি (উক্ত অফিসার কতৃক নির্বাচিত) তার ব্যবহৃত সেই তলোয়ার দিয়ে এক আঘাতে ঘাড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে মৃত্যু নিশ্চিত করত। মূলত জাপানিদের দৃষ্টিতে সম্মানজনক এই আত্মহত্যার এই প্রথাগুলোকে নতুনভাবে গ্রহণ করে কামিকাযে ইউনিটের নবীন পাইলটরা।

জাপানিদের দৃষ্টিতে এসব আত্মহত্যার প্রথা সম্মানজনক ছিল; Image Source : mai-ko.com

যেভাবে জন্ম কামিকাযে ইউনিটের

১৯৪১ সালে পার্ল হারবার আক্রমণের আগে ফুসাতা লিডা নামের একজন জাপানি লেফটেন্যান্ট তার সহকর্মীদের বলেছিলেন, যদি তার বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে তিনি বড় কোনো শত্রু টার্গেটের উপর ইচ্ছাকৃতভাবে ক্র্যাশ করে নিজেকে শেষ করে দিবেন। যুদ্ধে তেমনটিই ঘটে যাওয়ায় তিনি পার্ল হারবারের একটি মার্কিন নেভাল এয়ার স্টেশন ভবনের উপর বিমান নিয়ে বিধ্বস্ত হন। জাপানি হাইকমান্ড এমনটি করতে নির্দেশ না দিলেও অনেক জাপানি পাইলট পরবর্তীতে তাদের গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিমান দিয়ে এ ধরনের আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা করেছেন। এমনকি মিডওয়ে যুদ্ধের সময় এটি ভূপাতিত হওয়া মার্কিন বোমারু বিমানও জাপানি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে আছড়ে পড়ার চেষ্টা করেছিল বলে শোনা যায়। উক্ত যুদ্ধসহ ব্যাটল অফ কোরাল সি, ইস্টার্ন সলোমনের নৌযুদ্ধ ও সান্তা ক্রুজ আইল্যান্ডের যুদ্ধে এত বেশি অভিজ্ঞ জাপানি পাইলট মারা গিয়েছে যে, জাপানিরা নতুন পাইলট দিয়ে তাদের অভাব পূরণ করার যথেষ্ট সময় পাচ্ছিলো না। যেখানে আগের পাইলটগণ ৫০০ ঘন্টা বিমান চালানোর পর কমব্যাট স্ট্যাটাস পেতেন, সেখানে ৪০/৫০ ঘন্টার অভিজ্ঞতা নিয়ে তরুণ পাইলটদের যুদ্ধে যেতে হচ্ছে। ফলে এরা আকাশযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর অভিজ্ঞ পাইলটদের কাছে সহজ টার্গেট হয়ে যাচ্ছে। আকাশযুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেকটাই একতরফা। শুধুমাত্র ‘ব্যাটল অফ ফিলিপাইন সি’ এর সাগরের যুদ্ধে ৬৪৫টি বিমান হারায় জাপান। মার্কিন পাইলটরা সহজেই অনভিজ্ঞ শত্রুদের ধ্বংস করে এই যুদ্ধের নাম দিয়েছিল Great Marianas Turkey Shoot!

ততদিনে মিত্রবাহিনীর বোমারু বিমানের হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে বেশিরভাগ বিমান নির্মাণ কারখানা। যেগুলো টিকে আছে সেগুলো উন্নতমানের যুদ্ধবিমান বানাতে পারছিল না। অন্যদিকে বিদ্যমান বিমানগুলোর স্পেয়ার পার্টস, ফুয়েলের অভাব তো ছিলই। আবার দীর্ঘদিন যুদ্ধ চলায় বিদ্যমান মডেলের জাপানি বিমানগুলো প্রযুক্তির দিক শত্রুর তুলনায় অনেক বেশ পুরনো হয়ে গেছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র F6F Hellcat এবং F4U Corsair এর মতো আধুনিক বিমান সার্ভিসে এনেছে। ফলে সব দিক থেকেই পিছিয়ে পড়েছে জাপানিরা। এজন্য মরিয়া হয়ে আত্মঘাতী হামলা শুরু করে তারা।
ক্যাপ্টেন মোতোহারু ওকামুরার মাথায় এই আইডিয়া প্রথম এসেছিল। তিনি ১৫ জুন, ১৯৪৪ সালের তাদের সাইপান ঘাঁটির পতনের তদন্ত রিপোর্ট করতে গিয়ে দুটো সফল আত্মঘাতী হামলার ঘটনার কথা হাইকমান্ডকে অবহিত করেন। পরের মাসে জাপানের পত্রিকাগুলোতে খবর বের হয় ‘তাকেও তাগাতা’ নামের একজন ভেটেরানকে জাপান অধিকৃত তাইওয়ানে সুইসাইড পাইলট ট্রেনিং এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য জাপানি যুবকদের ভলান্টিয়ার হতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। তবে প্রথমদিকে নবীন পাইলট ক্যাডেট ছাড়া বেসামরিক যুবকদের থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে কামিকাযে ইউনিট তখন আর সক্রিয় হয়নি। জাপানি নথিপত্র অনুযায়ী, ১৯৪৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম অফিসিয়ালি কামিকাযে হামলা চালানো হয়। কিন্তু মার্কিন নথিপত্রে এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। ধারণা করা হয়, ঐ মিশনের বিমানগুলো খারাপ আবহাওয়ায় সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছিল।

উড্ডয়ন প্রস্তুতি নিচ্ছে কামিকাযে স্কোয়াড্রনের বিমান; Image Source : www.history.com
১৭ বছর বয়সী কামিকাযে পাইলট ইউকিও আরাকি (কুকুরছানা হাতে) ওকিনওয়া যুদ্ধে নিহত হন; Image Source : warhistoryonline.com

কামিকাযে ট্রেনিং

ক্যাপ্টেন ওকামুরার প্রস্তাবের কয়েক মাস পর পরীক্ষামূলকভাবে কামিকাযে ইউনিট গঠিত হয়। তার মনে হয়েছিল, ৩০০ বিমান এবং সমসংখ্যক পাইলট হলেই যুদ্ধের গতি দ্রুতই জাপানিদের অনুকূলে আনা সম্ভব হবে। তবে বাস্তবে দেখা গেলো প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভলান্টিয়ার এই ইউনিটে যোগদানের জন্য নাম লিখিয়েছে। এদের বেশিরভাগের বয়স ছিল ১৭-২৩ বছর। জাপানি যুবকদের প্রবল দেশপ্রেম, আত্মসম্মান ও গৌরবকে কাজে লাগিয়ে তাদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। ক্যাপ্টেন ওকামুরা এত বেশি স্বেচ্ছাসেবক দেখে এদেরকে একঝাঁক মৌমাছির সাথে তুলনা করেন। তার হাতে থাকা বিমানের দ্বিগুণ আত্মঘাতী ক্যাডেট তার ইউনিটে ছিল। এদেরকে কোনো রকমে পাইলট বানানোর কঠোর ট্রেনিং শুরু হয়। বিষয়টি অনেকটা আজকের যুগের কমান্ডো প্রশিক্ষণের মতো। প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করানো হতো কামিকাযে ক্যাডেটদের। তাদের আয়ু আর কয়েক মাস হলেও নির্যাতন করে তাদেরকে কষ্টসহিষ্ণু ও মানসিকভাবে শক্ত করা হতো। যারা সহ্য করতে না পেরে ঝরে পড়তো, তাদেরকে কামিকাযে বিমানের মেইন্টেনেন্স ক্রু হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতো। মোটকথা, একবার এই ইউনিটে নাম লেখালে বের হবার কোনো উপায় ছিল না। দাইকিচি ইরোকাওয়া নামের একজন বেঁচে যাওয়া কামিকাযে পাইলট পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ট্রেনিংয়ে তার মুখে এত বেশি আঘাত করা হয়েছে যে যুদ্ধ শেষে তার চেহারাই চেনা যাচ্ছিল না। ‘কামিকাযে ডায়েরি’ নামক একটি বইয়ে তিনি আরো বলেন,

“We tried to live with 120% intensity, rather than waiting for death. We read and read, trying to understand why we had to die in our early twenties. We felt the clock ticking away towards our death, every sound of the clock shortening our lives”

প্রথম ব্যাচের এই কামিকাযে পাইলটগণ মাত্র ৪০ ঘণ্টার ফ্লাইট ট্রেনিং পেয়েছিলেন; Image Source : Chiran Kamikaze Peace Museum

এছাড়া ক্যাডেটদের আধ্যাত্মিক ট্রেনিং দিয়ে মৃত্যুর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা হতো। এমনকি তাদের চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ সিলেবাস দেয়া হয়েছিল। জাপানিদের ভাষায় একে বলা হতো ‘high level of spiritual training’। এছাড়া স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ক্যাডেটদের তুলনামূলক ভালো খাবারদাবারের ব্যবস্থা করা হতো, এবং প্রতিবারই বলা হতো- এটাই তোমার জীবনের শেষ খাবার। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ন্যায় তাদেরকে প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর পাশাপাশি দেশপ্রেমের কথা স্মরণ করানো হতো। কামিকাযে ফ্লাইট ম্যানুয়ালে লেখা ছিল,

“When you eliminate all thoughts about life and death, you will be able to totally disregard your earthly life. This will also enable you to concentrate your attention on eradicating the enemy with unwavering determination, meanwhile reinforcing your excellence in flight skills”

এভাবে গড়ে একমাস ট্রেনিং নেয়ার পর যুদ্ধে নামতেন পাইলটরা। জ্বালানির অভাব, মার্কিন হামলা ইত্যাদি কারণ থাকলে দুই মাসও ট্রেনিং নিতে হতো। ফাইনাল মিশনের আগে পাইলটদের প্রয়োজনীয় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন, মেডেল ও কাতানা তরবারি গ্রহণ, পরিবারের জন্য ছবি তোলা, চিঠি লেখা এবং শেষকৃত্যানুষ্ঠানের জন্য চুল-নখ কেটে রেখে যেতে হতো। অতঃপর জাপানের পতাকাযুক্ত হেডব্যান্ড পরে ছোট এক গ্লাস Sake (জাপানি ধেনো মদ) পান করে তারা বিমানে উঠতেন। অভিজ্ঞ পাইলটরা নবীন আত্মঘাতী পাইলটদের মিশনে আকাশে পথ দেখানো, সঙ্গ এবং মার্কিন হামলা থেকে নিরাপত্তা দিতেন।

আত্মঘাতী ফ্লাইটের পূর্বপ্রস্তুতি; Image Source : Chiran Kamikaze Peace Museum
কামিকাযে পাইলটদের বিদায় জানাচ্ছে জাপানি শিশুরা; Image Source : nationalww2museum.org

কামিকাযে পাইলটদের আর ফিরে না আসার নির্দেশ ছিল। তবে টার্গেট খুঁজে না পেলে অযথা আত্মহত্যা না করতে পাইলটদের নির্দেশনা দেয়া হতো। তবে বার বার মিশনে গিয়ে ফিরে এলে তাকে গুলি করে মারা হতো। ইরোকাওয়া উক্ত বইয়ে এমন একজন ভার্সিটি গ্রাজুয়েট ক্যাডেটের কথা লিখেছেন যাকে কামিকাযে মিশন থেকে নয়বার জীবিত ফিরে আসার পর তাকে কাপুরুষ আখ্যা দিয়ে গুলি করে মারা হয়। (চলবে) 

দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

This is a Bangla article about the Japanese suicidal kamikaze attack during world war ii

Reference :

1) Kamikaze: Definition, History & Attacks

2) Japan’s Deadly WW2 Kamikaze Pilots

3) The Divine Wind: Japan's Kamikaze Pilots of World War II

4) Kamikaze Attack, 1944

5) Remembering Japan's kamikaze pilots

6) kamikaze - military tactic

 

Related Articles

  • মানব চিড়িয়াখানা: মানবতার এক চরম অবমাননার ইতিহাস

    article
    ইতিহাস
    সেপ্টেম্বর 10, 2016
  • ব্যাটল অব মেগিড্ডো: লিখিত ইতিহাসের সর্বপ্রথম যুদ্ধ

    article
    ইতিহাস
    অক্টোবর 9, 2022
  • জর্জ রিভস হত্যারহস্য: আত্মহত্যা না খুন, কী জুটেছিল সুপারম্যানের ভাগ্যে?

    article
    ইতিহাস
    মার্চ 7, 2018
  • ঔপনিবেশিক যুগে ইউরোপীয়দের রাজকীয় লুটতরাজ

    article
    ইতিহাস
    এপ্রিল 18, 2021
  • আনখেসেনামুন: তুতানখামেনের প্রেয়সীর খোঁজে

    article
    ইতিহাস
    অক্টোবর 12, 2018
  • স্বর্ণনির্মিত প্রাচীন পৃথিবীর রহস্যময় ৭ পুরাকীর্তি

    article
    ইতিহাস
    নভেম্বর 17, 2018
  • ভেলেন্টিনা টিরিস্কোভা: মহাশূন্যে উড়াল দেওয়া প্রথম নারী

    article
    ইতিহাস
    আগস্ট 18, 2018
  • ১৯১৮ সালে জাপান কেন সোভিয়েত রাশিয়ায় আক্রমণ চালিয়েছিল?

    article
    ইতিহাস
    ফেব্রুয়ারি 22, 2021
Roar logo

Roar Media is a global storytelling platform.

  • About
  • Brand Partnerships
  • Content Policy
  • Contact

Copyright © 2025 Roar Media. A Roar Global Company.