দিগ্বিজয়ী গ্রিকবীর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের মনোবাসনা ছিল, পৃথিবীর প্রতিটি অংশকেই তিনি জয় করে নেবেন। প্রাচীনকালের ভারতবর্ষ আয়তনে ছিল বিশাল, ধনসম্পদেরও ছিল না কোনো কমতি। তাই, বাকি সকলের মতো আলেকজান্ডারেরও দৃষ্টি পড়েছিল এই ভূমির উপরে।
তবে, ভারতবর্ষের ধূসর মাটিতে তার ক্ষমতাকাল বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তিনি ভারতবর্ষ ত্যাগ করার পর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। দাঁড় করালেন এক সেনাবাহিনী, হারালেন নন্দ রাজবংশকে। এভাবে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের হাত ধরেই লৌহ যুগে মৌর্য রাজবংশের গোড়াপত্তন। খ্রি.পূ. ৩২২ অব্দ থেকে খ্রি.পূ. ১৮৫ অব্দ পর্যন্ত ভারতবর্ষের পূর্ব এবং পশ্চিমের বৃহৎ এক অংশ ছিল তার শাসন আওতায়।
প্রাচীন ভারতবর্ষের পূর্বদিকে সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমিতে অবস্থিত মগধকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই মৌর্য সাম্রাজ্য। পাটলিপুত্র ছিল এর রাজধানী।
মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় চাণক্যের ভূমিকা
চাণক্যের সাথে মৌর্য সাম্রাজ্য ওৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তিনি ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা। সুপ্রাচীন রাষ্ট্রনীতি বিষয়ক গ্রন্থ ‘অর্থশাস্ত্র’ তাঁরই হাতেই রচিত। এই চাণক্য, কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত নামেও সুপরিচিত ছিলেন। চাণক্যের সহায়তায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এই সুবিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। প্রাচীন লোককথা অনুসারে, নন্দ রাজবংশের সম্রাট ধননন্দ একবার অপমান করেছিলেন চাণক্যকে। এর প্রতিশোধ হিসেবে তিনি নন্দ সাম্রাজ্যকে ধসিয়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।
চন্দ্রগুপ্তকথা গ্রন্থ থেকে জানা যায়, প্রথমদিকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও চাণক্যের ফৌজ ধননন্দের সাথে যুদ্ধে পরাজয় বরণ করলেও পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে ধন নন্দ ও তার সেনাপতি ভদ্রশালাকে যুদ্ধে হারান তারা। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নগরী পাটলিপুত্র অবরোধ করলে ধন নন্দ পিছু হঠতে বাধ্য হন। খ্রি.পূ. ৩২১ অব্দ নাগাদ নন্দ সাম্রাজ্য হটিয়ে মগধে মৌর্য রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। হয়ে যান পুরো সাম্রাজ্যের সম্রাট। চাণক্যের রাজনৈতিক কূটকৌশলের আরও বিস্তৃত বর্ণনা পাওয়া যায় বিশাখদত্ত রচিত মুদ্রারাক্ষস নাটকে।
ক্ষমতার সমন্বয়সাধন
নিজ সাম্রাজ্যের সীমানা বিস্তারে চন্দ্রগুপ্ত ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে মিত্র তৈরিকরণ, রাজনৈতিক কূটকৌশল, এবং যুদ্ধ-বিগ্রহের পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। দীর্ঘ ২৪ বছর সিংহাসনে আসীন থেকে সফলতার সাথে রাজ্যভার সামলেছেন তিনি। খ্রি.পূ. ৩২৩ অব্দে আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর ব্যাক্ট্রিয়া ও সিন্ধু নদ পর্যন্ত তার সাম্রাজ্যের পূর্বদিকের অংশ পর্যন্ত দখল নেন আলেকজান্ডারের সেনাপতি প্রথম সালোকাস নিকাটোর। খ্রি.পূ. ৩০৫ অব্দে নাট্যমঞ্চে রোমাঞ্চকরভাবে আবির্ভাব ঘটে চন্দ্রগুপ্তের। তিনি প্রথম সালোকাস নিকাটোরের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।
সেই যুদ্ধে পরাজয় বরণ করার পর সালোকাস চন্দ্রগুপ্তকে আরাকোশিয়া, গেদ্রোসিয়া, ও পারোপামিসাদাইসহ সিন্ধু নদের পশ্চিমদিকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল চন্দ্রগুপ্তের হাতে তুলে দেন। সেই সাথে নিজ কন্যা হেলেনাকে চন্দ্রগুপ্তের সাথে বিয়ে দিতেও বাধ্য হন তিনি।
এরপর তিনি মৌর্য সাম্রাজ্যকে সম্পূর্ণ উত্তর-পশ্চিম ভারত জুড়ে বিস্তৃত করেন। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও বিন্দুসার এই সাম্রাজ্যের মানচিত্র দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত নিয়ে গেলেও, সম্রাট অশোক কলিঙ্গ রাজ্য জয়ের মাধ্যমে সমগ্র দক্ষিণ ভারতকে মৌর্য সাম্রাজ্যের ছায়াতলে নিয়ে আসেন। জৈন আচার্য ভদ্রবাহুর কাছে আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। খ্রি.পূ. ২৯৮ অব্দে, ৪২ বছর বয়সে ক্ষমতার মোহ ছেড়ে সিংহাসন ত্যাগ করেন তিনি। এরপর জৈন ধর্ম গ্রহণ করে ভদ্রবাহুর সাথে দাক্ষিণাত্য যাত্রা করেন।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের স্বেচ্ছা অবসরের পর সিংহাসনে আরোহণ করেন তার পুত্র বিন্দুসার। তখন তার বয়স মাত্র বাইশ বছর।কলিঙ্গ, চের, পাণ্ড্য ও চোল রাজ্য ছাড়া দক্ষিণ ভারতের বড় একটা অংশ মৌর্য সাম্রাজ্যের অধীনে নিয়ে আসেন তিনি। আর উত্তর ভারতের সমগ্র অংশ আগে থেকেই তার করায়ত্তে ছিল। ২৬৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রয়াণ ঘটে বিন্দুসারের। পিতার মৃত্যুর তিন বছর পরে মৌর্য সাম্রাজ্যের সিংহাসনে আসীন হন সম্রাট অশোক। রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব আয়ত্ত করতে করতে তার প্রায় বছর আটেক লেগে যায়। এরপর তিনি মনোনিবেশ করেন সাম্রাজ্য বিস্তারে।
উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালা থেকে শুরু করে দক্ষিণ ভারতের কিছু অংশ বাদ দিয়ে মোটামুটি সমগ্র ভারতবর্ষই চলে আসে তার শাসনের আওতায়। এরপর তিনি পরিকল্পনা করেন কলিঙ্গ রাজ্য আক্রমণের। এই কলিঙ্গ যুদ্ধই সম্রাট অশোককে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছিল। এই যুদ্ধের ভয়াবহতা এতোই তীব্র ছিল যে, প্রায় ১ লক্ষ মানুষ এতে প্রাণ হারিয়েছিলেন, নির্বাসিত হয়েছিল দেড় লক্ষেরও বেশি। রক্তের এই মহাসমুদ্র এবং অধিকসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি দেখে দারুণ বিমর্ষ হয়ে পড়েন সম্রাট অশোক। তীব্র অনুশোচনায় দগ্ধ হন তিনি। এই যুদ্ধের পরেই তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, জীবনে আর কোনো যুদ্ধ-বিগ্রহ কিংবা সংঘর্ষে জড়াবেন না। তিনি সকলকেই হানাহানি, সন্ত্রাস রাহাজানি এসব ত্যাগ করে শান্তিতে বসবাসের আহবান জানান। হয়ে যান বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষক, শান্তিকামী, প্রজাবৎসল এক রাজা। তার আমলে শুধু মৌর্য সাম্রাজ্যই নয়, এশিয়ার বিভিন্ন রাজ্যেও বৌদ্ধধর্মের প্রসার ঘটেছিল।
অর্থনীতি
হরেকরকম ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে তখন যুক্ত ছিল তখনকার লোকজন। সরকার এবং সাধারণ জনগণ উভয়েই ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত সম্পদ এবং প্রজাদের থেকে খাজনা আদায়ের মাধ্যমে রাজ-কোষাগারে জমা হতো অর্থ। রাজার অধীনে থাকত জমি-জমা, বনাঞ্চল, বিভিন্ন রকমের কাঁচামাল, এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো জিনিস থাকলে তা বিক্রি করে দেওয়া হতো। অর্থ উৎপাদন, খনন, লবণ চাষ, অস্ত্র, নৌকা- এসব জিনিসের নিয়ন্ত্রণ ছিল কেন্দ্রীয় সরকারে হাতে।
অধিকাংশ প্রজা জীবিকা নির্বাহ করত কৃষিকাজের মাধ্যমে। তাদের নিয়মিত কর বা খাজনা দিতে হতো। যারা বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত ছিল তারা দলবদ্ধভাবে থাকত। দলগুলোকে বলা হতো সমবায় সংঘ। তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল। তাদের এই পণ্য বিক্রি করতে হতো দূরের কোনো স্থানে গিয়ে, যেখানে এই জিনিসের চাহিদা বিদ্যমান। রাস্তা এবং নদী ব্যবহারের জন্য কর দিতে হতো তাদের। যে রাজ্যে গিয়ে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করবে, সেই রাজ্যও তাদের থেকে কর আদায় করত। পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিত সরকার নিজে। সোনা, রূপা, এবং তামার মুদ্রা দিয়ে লেনদেন করত তারা।
পরবর্তীতে পরিশোধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে অর্থ কর্জ নেওয়ার রীতিও তখন চালু ছিল। মৌর্য সাম্রাজ্যে বৃহৎ ও সুসজ্জিত এক রাস্তার অস্তিত্ব ছিল যেটা ছিল গ্রিসে যাতায়াতের সাথে সম্পৃক্ত। নিয়মিত দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো এই রাস্তার। এতে বিভিন্ন চিহ্ন ও সংকেতের মাধ্যমে দেখিয়ে দেওয়া হতো কোন জিনিস কোথায় ও কতদূর নিয়ে যেতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে গঙ্গা নদী থেকে নৌকা রওয়ানা দিত দূর শ্রীলঙ্কা, চীন ও আফ্রিকায়। জলদস্যুতা নির্মূলে সদা সচেষ্ট থাকত সরকার।
প্রশাসন
মৌর্য সাম্রাজ্যে রাজাই ছিলেন সকল ক্ষমতার মূল উৎস। তিনি নিজেই সেনাবাহিনী, বিচারপতি, আইনকানুনসহ দেশের জন্য হিতকর সিদ্ধান্ত নিতেন। তার মন্ত্রীসভায় সভাসদ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জ্ঞানী-গুণী, পণ্ডিত ও দক্ষ জনবল নিযুক্ত ছিলেন। যেমন, প্রধানমন্ত্রী, হিসাবরক্ষক, কোষাধ্যক্ষ, সেনাপতি ইত্যাদি। মৌর্য সাম্রাজ্য বিভিন্ন প্রদেশে বিভক্ত ছিল, যেগুলোর শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত থাকতেন রাজকুমারেরা। একেকটা প্রদেশের অধীনে থাকত বিভিন্ন গ্রাম ও শহর। শাসনকর্তা ওই এলাকার দেখভাল করতেন। তাকে শুধু রাজার কাছে জবাবদিহি করতে হতো। তৎকালেও, চাকরির মানের ভিন্নতা ছিল। উচ্চপদে আসীন থাকা একজন নিম্ন পদের একজনের থেকে অধিক বেতন-ভাতা পেতেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রধানমন্ত্রী থেকে একজন কেরানিকে কম বেতন দেওয়া হতো। দল ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা দেখভালের দায়িত্ব ছিল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার।
মৌর্য সাম্রাজ্যের একটা উল্লেখযোগ্য দিক হলো, কৌটিল্যের বুদ্ধিতে বিভিন্ন গুপ্তচর পুষতেন সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। তারা বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে গোপন ও স্পর্শকাতর সকল সংবাদ এনে দিত রাজামশাইকে। এই সাম্রাজ্যের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, সর্বদা বৃহৎ এক সেনাবাহিনী তৈরি থাকত এই রাজ্যে। আদেশ পাওয়া মাত্রই তারা যেকোনো কিছুর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ত। এমনকি মৌর্য সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট অশোক যুদ্ধ-বিগ্রহ থামিয়ে দেওয়ার পরেও তার কাছে ওই সেনাবাহিনী মজুদ ছিল। সৈনিকদের প্রধান কাজ ছিল যুদ্ধে শামিল হয়ে প্রতিপক্ষের সাথে লড়াই করা। যখন কোনো যুদ্ধ-বিগ্রহ থাকত না, তখন তারা তাদের খেয়ালখুশি মতো যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারত।
সৈনিকেরা অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত ছিল। যেমন, পদাতিক বাহিনী, অশ্বারোহী সৈন্য, নৌবাহিনী, রথারোহী, হাতি বাহিনী, সরবরাহকারী ইত্যাদি। সৈনিকদের ভরণপোষণ এবং অস্ত্র যোগান দেওয়ার দায়িত্ব ছিল রাজার। পদাতিক সৈন্যদের কাছে থাকত তীর-ধনুক, বর্ম, বর্শা, এবং লম্বা তরবারি। অশ্বারোহীদের কাছে থাকা ঘোড়ার শরীরে কোনো জিন পড়ানো থাকত না। অস্ত্র বলতে তাদের সম্বল ছিল বর্শা এবং বর্ম।
ধর্ম
মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত ছিলেন হিন্দু ধর্মের অনুসারী। বিন্দুসার পালন করতেন অজীবিক নামক ধর্ম। শেষ জীবনে তিনি জৈন ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তার দৌহিত্র অশোক পুরো রাজ্যে বৌদ্ধধর্মের বাণী ছড়িয়েছিলেন। হিন্দু, জৈন, ও বৌদ্ধধর্ম ছাড়াও মৌর্য সাম্রাজ্যের একটা অংশ ছিল নাস্তিক এবং অজ্ঞেয়বাদী। অনেকে আবার আদিম কিছু ধর্মের অনুসারী ছিল।
সাম্রাজ্যের পতন
সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের হাতে মৌর্য বংশের উদয় ঘটার পর সম্রাট বিন্দুসার, এবং সম্রাট অশোক পর্যন্ত গণগণে তেজে জ্বলতে থাকে মৌর্য রাজবংশের সূর্য। তবে, সম্রাট অশোকের মৃত্যুর পর শুরু হয় সাম্রাজ্য পতনের ধারা। অশোকের প্রয়াণের ৫০ বছর পর, মৌর্য রাজবংশের শেষ সম্রাট বৃহদ্রথ খুন হন তার সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক পুষ্যমিত্রের হাতে। এই পুষ্যমিত্র শুঙ্গ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। বিশেষজ্ঞরা এই সাম্রাজ্য পতনের পিছনে বিভিন্ন কারণ দাঁড় করিয়েছেন। এর মধ্যে সর্বাধিক যুক্তিযুক্ত হলো, অশোকের মৃত্যুর পর আর কোনো যোগ্য শাসক বসতে পারেননি মৌর্য সাম্রাজ্যের মসনদে।
ক্রমশ অনুপযুক্ত শাসকের পাল্লায় পড়ে ভেতর থেকে দুর্বল হতে থাকে মৌর্য সাম্রাজ্য। এই সুযোগের ফায়দা তোলে প্রতিবেশী সম্রাট ও রাজার বিশ্বস্ত সহযোগীরাই। ক্রমে ক্রমে রাজ্য সীমানা ছোট হতে থাকে। খ্রি.পূ. ১৮৫ অব্দে পুষ্যমিত্র কর্তৃক মৌর্য রাজা হত্যার মাধ্যমেই অস্তমিত হয় দীর্ঘ ১৫০ বছর ধরে ভারতে দাঁপিয়ে বেড়ানো মৌর্য সূর্য। পুষ্যমিত্র যখন সিংহাসনের বসেন তখন মৌর্য সাম্রাজ্য তার গৌরব ও যৌবন অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। এর অধীনে তখন শুধুমাত্র পাটলিপুত্র, অযোধ্যা, বিদিশা শহর এবং পাঞ্জাবের কিছু অংশ ছিল।