Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মে দিবস: শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ে রক্তাক্ত সংগ্রামের ইতিহাস

মানবসভ্যতা প্রতিদিন একটু একটু করে এগিয়ে যায় শ্রমিকের রক্ত পানি করা ঘামে। তাই এই সভ্যতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে আছে শ্রমিক শ্রেণি। শিল্প বিপ্লবের পর বিশ্বের নানান প্রান্তে শ্রমঘন এলাকা তৈরি হয়েছে, যেখানে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক একটি কারখানা বা শিল্পকে কেন্দ্র করে একত্র হয়েছে। শ্রমিক শ্রেণির নিজেদের অধিকার আদায়ের প্রয়োজনে সংঘবদ্ধ হয়েছে, শ্রমিক ইউনিয়ন হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে পৃথিবীজুড়ে শ্রমিকের কর্মঘন্টার ব্যাপারটি সুরাহা হয়নি, বৃহৎ পুঁজির অধিকারি মালিকপক্ষ ঠিক করে দিচ্ছে শ্রমিকের কয় ঘন্টা কাজ করতে হবে।

দৈনিক দশ, বারো কিংবা তার চেয়ে বেশি ঘন্টা কাজ আদায় করিয়ে নেওয়া হয়েছে একজন শ্রমিকের কাছ থেকে। এই দীর্ঘ কর্মঘন্টার প্রভাব পড়েছে তার দৈনন্দিন জীবনে। তাই বিশ্বের নানা প্রান্তের শ্রমিক সংগঠনগুলো আট ঘন্টা কাজকে ‘প্রমাণ কর্মঘন্টা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। মে মাসের এক তারিখ যে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ পালিত হয়ে থাকে সেটিও মূলত আট ঘণ্টা কাজের দাবি প্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলন হিসেবেই শুরু হয়েছিল। তবে এই আন্দোলন বিশ্বজুড়ে শ্রমিক শ্রেণির সামগ্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

কর্মঘন্টার ব্যাপারটি সুরাহা করা হয়ে উঠেনি দীর্ঘদিন; Image source: history.com

 

 

বৃহৎ পুঁজির কারখানা যত বেশি কর্মক্ষম থাকবে, তা থেকে পণ্য উৎপাদন চলবে। বাজার যত গতিশীল থাকবে সরকারেরও তত লাভ, সরকার সেখান থেকে আদায় করবে নানা ধরনের কর। ভিক্টোরিয়ান যুগের সাহিত্যের দিকে চোখ মেললেও দেখা যাবে কলকারখানাকে এক দানবের সাথে তুলনা দেওয়া হয়েছে কোথাও কোথাও, শ্রমিকের শেষ রক্তবিন্দুতে ফুলে ফেপে উঠছে কারখানার মালিকেরা। 

কারখানাভিত্তিক শিল্প ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে এমন দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে সেখানের রাষ্ট্রযন্ত্র আর পুঁজিপতি কলকারখানার মালিকরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই চলেছে। সরকার কিংবা রাষ্ট্র শ্রমিক শ্রেণির ভালোমন্দের চেয়ে মালিকের স্বার্থ রক্ষায় বেশি তৎপর। সময় বদলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে অনেক নতুন পরিবর্তন এসেছে কিন্তু এখনো বিশ্বজুড়ে সাধারণ কর্মজীবী মানুষকে শোষণ করা বন্ধ হয়নি। নানাভাবে তা এখনো চলছেই। তাই ১৮৮৬ সালের আমেরিকার শিকাগো শহরের শ্রমিক আন্দোলন, যেটি এখন ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ বা ‘মে দিবস’ নামে পরিচিত সেটি শ্রমজীবী মানুষকে পথ দেখিয়ে যায়।

মে দিবসের ইতিহাস

আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পর শিকাগো শহর হয়ে উঠে শিল্পায়নের অন্যতম কেন্দ্র। আমেরিকান শ্রমিকের পাশাপাশি শিকাগো শহরে জার্মানি এবং ইউরোপের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকেরা কাজের খোঁজে আসতে শুরু করে। গড়ে দেড় ডলার প্রতিদিনের মজুরীতে হাড়ভাঙ্গা খাটুনী, সপ্তাহে ছয়দিন কাজ করতে হয় মালিকপক্ষের ইচ্ছে অনুযায়ী সময়মতো। একটি কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদেরকেও একটি যন্ত্র হিসেবে গণ্য করা হয়েছে দীর্ঘদিন, উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলা কিংবা কোনো দাবি তোলা ছিল তার ক্ষমতার বাইরে। 

আট ঘন্টাকে প্রমাণ কর্মঘন্টা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে মালিকের হাতে নিপীড়িত হয়েছে অনেক শ্রমিক, যাদের বেশিরভাগই সংগঠিত ছিল না। আন্দোলন করে দাবি আদায় করতে চাইলেই নিপীড়ন করে উদাহরণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, শ্রমিকদের মনে ভয়ের সঞ্চার করা হয়েছে। এভাবে পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায় তখন আমেরিকার শিকাগো, নিউ ইয়র্ক, উইসকনসিন এবং বিভিন্ন রাজ্যে গড়ে উঠতে থাকে সংঘবদ্ধ আন্দোলন। ১৮৮৪ সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকার ‘ফেডারেশন অফ অর্গানাইজড ট্রেডস এন্ড লেবার ইউনিয়নস’ এর এক বৈঠকে আট ঘন্টা কাজের সময়কে কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। আমেরিকার বিভিন্ন লেবার ইউনিয়নের সম্মতিক্রমে ১৮৮৬ সালের মে মাসের এক তারিখকে ঠিক করা হয়, যেদিন সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়। দাবি একটাই, আট ঘন্টার বেশি আর কাজ নয়।

মালিকপক্ষ এই আন্দোলনকে মোকাবেলার জন্য শুরু থেকেই শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের গ্রেফতার করতে থাকে, আন্দোলনকারীদের বাছাই করে নিপীড়ন করতে থাকে। তবে এতে করে শ্রমিক অসন্তোষ না কমে বরং আরো বাড়তেই থাকে। মালিকপক্ষের চাপিয়ে দেওয়া চৌদ্দ ঘন্টা/ষোল ঘন্টা কাজের শিকল ভেঙে আমেরিকার শ্রমিক শ্রেণি দাবি তোলে দৈনিক আট ঘণ্টাকে আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠার।

আট ঘন্টা কাজ, আট ঘন্টা বিশ্রাম, আট ঘন্টা নিজের জন্য 

শিল্পোন্নত দেশগুলোর মূল চালিকাশক্তি তাদের শ্রমিক, কারখানা বন্ধ থাকলে তার উৎপাদন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। এই উৎপাদন প্রক্রিয়া স্থবির হওয়ার সাথে সরাসরি রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক যোগসূত্র আছে। তাই শ্রমিকের অহিংস ধর্মঘটও মালিকপক্ষ এবং ক্ষমতার গদিতে থাকা রাজনীতিবিদদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে। বিশেষ করে ১৮৮৬ সালের সেই আন্দোলনের সময়ে আমেরিকায় নৈরাজ্যবাদীরা প্রভাব ফেলতে শুরু করে, বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষের উপরে। ১৮৮৬ সালের মে মাসের এক তারিখ পূর্ব ঘোষিত সাধারণ ধর্মঘটে আমেরিকার বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকদের স্লোগান ছিল, 

“Eight Hours for work. Eight hours for rest. Eight hours for what we will.”

আট ঘণ্টার বেশি কাজে বাধ্য করা যাবে না শ্রমিককে, দাবি ছিল এমটাই; Image source: chicagology.com

এই স্লোগানের মাঝে শ্রমিক নিজের অবস্থান ঠিক করে নিচ্ছে, যেখানে সে আট ঘন্টার বাইরে শ্রমিক যদি না চায় তাহলে তাকে দিয়ে কাজ করানো যাবে না। আমেরিকার শ্রমিকঘন এলাকাগুলোতে এই স্লোগান আর মূল দাবি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সংঘটিত শ্রমিক তার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে শুরু করে। পহেলা মে থেকে তিন তারিখ পর্যন্ত এই আন্দোলন ছিল অহিংস, পুলিশের অবস্থান ছিল বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিক সমাবেশের পাশে। 

ধর্মঘট অহিংস হলেও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় স্থবিরতার প্রভাব নিয়ে আগেই আলোচনা হয়েছে, তাই সরকার এবং কর্তৃপক্ষ বল প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। শিকাগোর বিক্ষোভরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে প্রচুর পুলিশ মাঠে নামে। শিকাগোর ম্যাককরমিক হারভেস্টিং মেশিন কোম্পানির সামনে পুলিশ গুলি চালায় শ্রমিকদের উপর, সেখানে নিহত হয় দুই জন। ছত্রভঙ্গ শ্রমিকদের বিপুল সংখ্যক হতাহত হয়।

এই হতাহতের সংবাদ শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি করে, চার তারিখ অনেক সংঘটিত শ্রমিকদের আন্দোলন আর অহিংস থাকবে না তা বুঝাই যাচ্ছিল। শ্রমিকদেরকে আন্দোলনের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে শিকাগোর ‘হেমার্কেট স্কয়ারে’ সমাবেত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।  

শ্রমিকদেরকে আন্দোলনের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে শিকাগোর ‘হেমার্কেট স্কয়ারে’ সমাবেত হওয়ার আহ্বান জানানো হয় লিফলেটে; Image source: Library of Congress, Washington, D.C.

আগের দিনের শ্রমিকের মৃত্যু, দাবি সম্পর্কে মালিকপক্ষের উদাসীনতা শ্রমিকদের ক্ষুব্ধ করে তুলে। এই ঘটনায় নাটকীয়তা যোগ হয় যখন পুলিশকে লক্ষ্য করে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি বোমা ছুঁড়ে। ডায়নামাইট ভর্তি হাতে তৈরি ঐ বোমাটি বিস্ফোরণের পরে পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এবং সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষে সাতজন পুলিশ এবং চারজন  শ্রমিক নিহত হয়। দাবি আদায় করতে আসা শত শত নিরস্ত্র শ্রমিক হতাহত হয়। পৃথিবীর শ্রমিক সংগ্রামের ইতিহাসে রক্তের অক্ষরে এটি লেখা হয়ে থাকে ‘Haymarket massacre নামে।

পুলিশের উপর কে বোমা নিক্ষেপ করেছিল তা অমিমাংসিত রয়ে গেছে; Image source: allthatsinteresting.com

ঘটনার প্রতিক্রিয়া 

এই ঘটনার পরে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় আমেরিকার সরকার। আট নৈরাজ্যবাদীকে গ্রেফতার করা হয়, যাদেরকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযোগ দেওয়া হয়। তবে পুলিশের উপর কে ডায়নামাইটের বোমাটি ছুড়েছিল তা আজও রহস্য। তবে শ্রমিকদেরকে উসকে দেওয়া, নৈরাজ্য সৃষ্টির সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে নৈরাজ্যবাদী আটজনকে এই বিচারকাজ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলে, বিশেষ করে ইউরোপের দেশে দেশে সংঘটিত শ্রমিক, সমাজতান্ত্রিক তাত্ত্বিকরা এর সমালোচনা করেন।

নৈরাজ্যবাদীদের বিচার চলাকালীন আদালত কক্ষের একটি স্কেচ;  Image source: The New York Public Library Digital Gallery

এই ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ দিয়ে যাদের গ্রেফতার করা হয় তাদের মধ্যে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি একজনকে পনের বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরমধ্যে চারজনের মৃতুদণ্ড কার্যকর হয়, একজন আত্মহত্যা করেন এবং বাকি দুইজনের সাজা কমিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় সাতজনকে, এই বিচার নিয়ে আমেরিকায় এবং ইউরোপে তৈরি হয় বিতর্ক; Image source: Chronicling America: Historic American Newspapers

এই বিচারের বিচারকদেরকে রাষ্ট্রপক্ষের নিযুক্ত এটর্নির পক্ষ থেকে বলে দেওয়া হয়,

“Law is on trial. Anarchy is on trial. These men have been selected, picked out by the Grand Jury, and indicted because they were leaders. There are no more guilty than the thousands who follow them. Gentlemen of the jury; convict these men, make examples of them, hang them and you save our institutions, our society.”

মূলত এই বিচারের মাধ্যমে আমেরিকার সরকার এবং প্রশাসন মালিকপক্ষের পক্ষে তাদের অবস্থান নেয়, এবং শ্রমিকদের দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাসকে আইনিভাবে অস্বীকার করার চেষ্টা করে। সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণি, নৈরাজ্যবাদী এবং সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদেরকে দমন পীড়নের চেষ্টা করে। আইন বিচার ব্যবস্থা মূল দাবি ‘আট ঘন্টা প্রমাণ কর্মঘন্টা’ এই দাবিকে এড়িয়ে যায়।

১৮৮৯ সালে মে মাসের এক তারিখকে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ বলে ঘোষণা দেয় ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর ওয়ার্কার্স এন্ড সোসালিস্টস’। হেমার্কেট ম্যাসাকারকে শ্রমিক আন্দোলনের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যদিও আমেরিকার সরকার এই ঘটনার কোনো স্বীকৃতি দেয়নি, এবং শ্রমিকদের আট ঘন্টা কাজের দাবিকেও গুরুত্ব দেয়নি।

দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ১৯১৬ সালে আমেরিকা আট ঘন্টা কাজের দাবিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার পথে এগিয়ে যায়। ১৯১৭ সালে রাশিয়ার জার দ্বিতীয় নিকোলাসের পতনের চারদিন পরে আমেরিকা অফিসিয়াল ডিক্রির মাধ্যমে ‘দিনে আট কর্মঘন্টা’র স্বীকৃতি দেয়।

বিশ্বজুড়ে এই আন্দোলনের প্রভাব 

বিশ্বজুড়ে এই আন্দোলনের প্রভাব ছিল ব্যাপক, বিশেষ করে ইউরোপের শ্রমঘন এলাকায় এই ঘটনা ব্যাপক প্রভাব ফেলে। শিকাগোতে শিল্পায়নের বিকাশের সময় প্রচুর জার্মান, ব্যাভারিয়ান শ্রমিক সেখানে স্থায়ী হয়, এবং এই শ্রমিক আন্দোলনেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের যুক্ত থাকার সুবাদে এই ঘটনা ইউরোপে বেশ প্রভাব ফেলে। ১৯১৭ সালের পর বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে সোভিয়েত রাশিয়ার বৈপ্লবিক উত্থানের পর সোভিয়েত ক্ষমতাবলয়ে থাকা দেশগুলোতে মে মাসের এক তারিখে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বেশ ঘটা করে পালন শুরু হয়। সোভিয়েত পতনের পরে রাষ্ট্রীয়ভাবে অনেক দেশেই পালন হয় না এখন আর মে দিবস, তবে এখনো বিশ্বের অনেক দেশেই এই দিন সরকারি ছুটি হিসেবে চিহ্নিত। 

বিশ্বজুড়ে শ্রমিক অসন্তোষ বন্ধ নেই, ২০১৯ সালে ফ্রান্সে দেখা গেছে ‘ইয়োলো ভেস্ট’ আন্দোলন। শুধু এটিই নয় বাংলাদেশসহ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নিয়মিতই শ্রমিক অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। এটিও প্রমাণ করে পুঁজি টিকিয়ে রাখা এবং মুনাফার স্বার্থে কর্মজীবীদের ক্রম শোষণ করেই যাচ্ছে বৃহদাকার প্রতিষ্ঠানগুলো, একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর সাথে বাকিদের বেতনের বৈষম্য নিয়েও প্রশ্ন উঠছে নতুন করে। তাই ‘মে দিবস’ নামে পরিচিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস এখনো বিশ্বের নিপীড়িত কর্মজীবী মানুষকে পথ দেখায় তাদের অধিকার আদায় করে নিতে। 

শেষ করা যাক কাজী নজরুলের ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কয়েকটি লাইন দিয়ে:

“আসিতেছে শুভ দিন,

দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ!

হাতুড়ি শাবল গাঁইতি চালায়ে ভাঙিল যারা পাহাড়,

পাহাড়-কাটা সে পথের দু’পাশে পড়িয়া যাদের হাড়।”

This article is in Bangla and about 'International Workers' Day'. Information sources are hyperlinked in the article. 

Featured image source: Library of Congress, Washington, D.C. (digital. id. ggbain 03321)

Related Articles