১
১৫৬৭ সালের শেষের দিকে আকবর রাজপুতদের দুর্ভেদ্য ও অন্যতম শক্তিশালী দুর্গ চিতোর আক্রমণ করেন। পরের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্গটি মুঘলদের দখলে আসে। পরাজিত হয়ে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে রাজপুতরা চিতোর থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরাজিত এই রাজপুত সেনাবাহিনীর বিশাল একটা অংশই আশ্রয় নেয় চিতোর থেকে প্রায় ১৪০ মাইল উত্তর-পূর্বে অবস্থিত রাজপুতদের আরেকটি শক্তিশালী ঘাটি রণথম্ভোর দুর্গে।
ভৌগোলিক কারণেই রণথম্ভোরের এই দুর্গটি ছিলো এককথায় দুর্ভেদ্য। পাহাড়ের উপর অবস্থিত হওয়ায় দুর্গটি আক্রমণ করা এমনিতেই দুঃসাধ্য ছিলো। তার উপর দুর্গটির গঠন এবং দুর্গটিকে ঘিরে এর আশেপাশের বিশাল এলাকাজুড়ে ঘন বনাঞ্চল দুর্গটিকে আরও দুর্ভেদ্য করে তুলেছিলো।
এছাড়া প্রায় ৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দুর্গটিতে ঘিড়ে আরও প্রায় ৪ বর্গ কিলোমিটারের মতো ভূখন্ড ছিলো, যা দুর্গের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতো। তাছাড়া দুর্গের উঁচু প্রাচীর আর পর্যবেক্ষণ টাওয়ারগুলোতে চলতো নিয়মিত টহল। ফলে আক্রমণকারীর জন্য রণথম্ভোর দুর্গ পরিণত হতো এক দুঃস্বপ্নে। এতকিছুর পর স্বভাবতই দুর্গটি তৎকালীন রাজস্থানের রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছিলো।
আর সদ্যই পরাক্রমশালী মুঘল সেনাবাহিনীর হাতে বেদম মার খাওয়ার পর থিতু হয়ে বসার জন্য রাজপুতদের প্রয়োজন ছিলো এমনই একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ। মুঘল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আবারও লড়াইয়ে নামার জন্য প্রয়োজন নিজেদের সংগঠিত হওয়া ও সামরিক প্রস্তুতি। আর এই কাজগুলো করার জন্য রণথম্ভোরের চেয়ে ভালো বিকল্প হতেই পারে না।
২
রণথম্ভোরে মুঘল সেনাবাহিনীর অভিযানের ঘটনাবলী জানার আগে দুর্গটির ইতিহাসের দিকে একবার উঁকি দিয়ে আসা যাক।
ধারণা করা হয়, ৯৫০ সালের আশেপাশে কোনো এক সময়ে চৌহান রাজপুতরা রণথম্ভোরের এ দুর্গটি নির্মাণ করেছিলেন। নির্মাণের পর প্রায় দুইশ বছরেরও বেশি সময় দুর্গটি চৌহানদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু এরপরই হঠাৎ চৌহান রাজপুতদের ভাগ্যাকাশে ঘন কালো মেঘের ছায়া পরলো। আসলে সুলতান ঘুরি বংশের সুলতান মুহাম্মদ ঘুড়ি এসময় রাজপুতদের উপর আক্রমন চালান। ১১৯২ সালের তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে চৌহান অধিপতি পৃথ্বীরাজ চৌহান শোচনীয়ভাবে মুহাম্মদ ঘুরির কাছে পরাজিত হলে রণথম্ভোর দুর্গটির দখল চলে আসে মুসলিমদের হাতে।
অবশ্য এরপর পৃথ্বীরাজের পুত্র গোবিন্দ রাজ ঘুরি সাম্রাজ্যের আনুগত্য স্বীকার করেন। সুলতান দুর্গটির নিয়ন্ত্রণ চৌহানদের কাছেই ফিরিয়ে দেন। পরবর্তীতে দুর্গটি থেকে চৌহানরা আবার নিজেদের স্বার্বভৌমত্ব দাবী করে বসে।
দিল্লি সালতানাত শাসানামলেও বেশ কয়েকবার এই দুর্গটি দখল করা হয়েছিলো। অবশ্য মুসলিম রাজদরবারে অন্তর্দ্বন্দ্ব কিংবা রাজনৈতিক পালাবদলের সুযোগে প্রতিবারই দখলের কয়েক বছর পর রাজপুতরাও আবার দুর্গটি দখল করে নিয়ে নিতো। যেমন- ১২২৬ সালে সুলতান ইলতুৎমিশ এই দুর্গটি দখল করেন, পরবর্তীতে সুলতানের মৃত্যু পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে ১২৩৬ সালে চৌহানরা দুর্গটি পুনর্দখল করে নেয়। ১২৫৯ সালে সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন দুর্গটি আবারও চৌহানদের থেকে দখল করে নেন। কিন্তু শক্তি দেব ১২৮৩ সালেই আবারও দুর্গটি দখল করে নেন। এরপর সুলতান জালালউদ্দিন ফিরোজ শাহ ১২৯১ সালে এবং সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি ১৩০১ সালে দুর্গটি দখল করেন।
কাজেই রণথম্ভোরকে দুর্ভেদ্য বলা হলেও দুর্গটি আসলে ততটা দুর্ভেদ্য ছিলো না। আবার মুসলিম সুলতানদের জন্য দুর্গটি দখলে নেয়া সম্ভব হলেও বেশিদিন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছিলো না।
এদিকে ক্ষমতা হাতবদলের মতো রণথম্ভোর দুর্গটিও হাতবদল হতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৩২৬ সালে দুর্গটির নিয়ন্ত্রণ নেন মেবারের রানা হামির সিং। এরপর কালের আবর্তনে প্রথম উদয় সিংয়ের শাসনামলে (১৪৬৮-১৪৭৩) দুর্গটি বুন্দির হারা রাজবংশের অধীনে চলে যায়। গুজরাটের বাহাদুর শাহ ১৫৩২ সালে রণথম্ভোর দুর্গ অবরোধ করলে আরেকবার রাজপুতরা দুর্গের নিয়ন্ত্রণ হারায়। অবশ্য বাহাদুর শাহের ভাগ্যবিড়ম্বনার সুযোগে রাজপুতরা দুর্গটি আবারও নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়।
৩
সে যা-ই হোক, ১৫৬৮ সালে চিতোরে পরাজয়ের পর মুঘল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে শক্তি সঞ্চয়ের জন্য রাজপুতরা রণথম্ভোরের এই দুর্গটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। আকবরের মতো একজন বিচক্ষণ সম্রাটের পক্ষে রাজপুতদের বেশিদিন রণথম্ভোর দুর্গে অবস্থানের বিষয়টি সহ্য করা কঠিন ছিলো। কারণ একবার প্রস্তুতি নেয়ার মতো যথেষ্ট সময় পেলে রাজপুতরা প্রথমেই চিতোর পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাবে। আর একবার চিতোর দখল পারলে আবারও মুঘল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কাজেই আকবর ছোট থাকতেই এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলেন।
১৫৬৮ সালের শেষের দিকে বা ১৫৬৯ সালের শুরুর দিকে সম্রাট আকবর রাজপুতদের শক্তিশালী ঘাটি রণথম্ভোর অভিযানের জন্য প্রায় ৫০,০০০ দুর্ধর্ষ সৈন্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। এ সময় রণথম্ভোর দুর্গের অধিপতি ছিলেন রাজপুত হারা রাজবংশের রাজা সূর্য হারা।
রাজা সূর্য হারা মুঘলদের দাপটের কথা আগেই জেনেছেন। একে একে রাজপুতদের আত্মসমর্পণ আর দুর্গম চিতোরের পতনে সূর্য হারা এমনিতেই ভড়কে গিয়েছিলেন। আর এখন বিপদ স্বয়ং তার ঘাড়ের উপরেই নিঃশ্বাস ফেলছে। এটা এমনই এক বিপদ, যা এড়ানোর কোনো উপায় আর নেই। তবে রাজপুতরা এমনিতেই ছিলেন প্রচন্ড আত্মমর্যাদাবান আর জাত্যাভিমানী। কাজেই পরাজয় মোটামুটি নিশ্চিত জেনেও সূর্য হারা মুঘল সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিলেন।
এদিকে অবরোধ শুরুর পরবর্তী কয়েকদিনের মাঝেই মুঘল সেনাবাহিনী রনথম্ভোরকে ঘিরে আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা দখল করে নিলেন। এতে দুর্গটি বাইরের দুনিয়া থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। রণথম্ভোরের এই অবরোধে আকবর স্বয়ং অংশ নিয়েছিলেন। দুর্গের একটি প্রবেশপথ বরাবর পাহাড়ের পাদদেশে নিজের রক্তবর্ণের তাবু স্থাপন করে যুদ্ধ পরিচালনার হেডকোয়ার্টার স্থাপন করেন তিনি।
চিতোরের মতো প্রায় একই রকমের অবস্থানগত কারণে রনথম্ভোর অবরোধে আকবর চিতোর অবরধের মতোই কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। প্রথমেই উঁচু ভূমিতে আর্টিলারি ইউনিটের কামানগুলো মোতায়েন করে দুর্গে বৃষ্টির মতো কামানের গোলা নিক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। একইসাথে পাহাড়ের নিচ দিয়ে দুর্গ বরাবর সুড়ঙ্গ খনন করারও নির্দেশ দেয়া হয়।
পরবর্তী কয়েক সপ্তাহেই আকবর দুর্গের খাড়া দেয়ালের আশেপাশের ভূমিতে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন।
৪
এদিকে দুর্গের ভেতরে রাজপুতরাও সাহসিকতার সাথে মুঘল সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু সমস্যা হলো রাজপুতরা তেমন আত্মবিশ্বাসী ছিলো না। একে একে রাজপুতদের পতনে তারা এমনিতেই চুপসে গিয়েছিলো। তার উপর দুর্দান্ত মুঘল সেনাবাহিনীর দুর্ধর্ষ আক্রমণ মোকাবিলা করার মতো প্রয়োজনীয় সামরিক সক্ষমতা রাজপুতদের ছিলো না। দুর্গটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় বাইরে থেকে কোনো সাহায্য আসারও সম্ভাবনা ছিলো না।
এদিকে মুঘল সেনাবাহিনীর কামানগুলো থেকে দুর্গ বরাবর অবিরাম গোলাবর্ষণ করা হচ্ছিলো। তবে রাজপুতদের জন্য স্বস্তির বিষয় হলো, দুর্গটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত হওয়ায় কামানগুলো তেমন সুবিধা করতে পারছিলো না। মুঘল সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়াররা তাই বিকল্প উপায় ভাবলেন। দুর্গ পর্যন্ত কামানের গোলা পৌঁছানোর জন্য উঁচু উঁচু প্লাটফর্ম তৈরি করা হলো। এরপর এই প্লাটফর্মগুলোর উপর কামানগুলো স্থাপন করা হলো। এবার কাজ হলো। মুঘল সেনাবাহিনীর ১৫ ফুট, ২০ ফুট আর ২৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একেকটি কামানের গোলা দুর্গের ভেতরে পড়ছিলো আর দুর্গটি কেঁপে উঠছিলো। কামানের প্রচণ্ড আক্রমণে বলতে গেলে দুর্গের উপরের পুরো আকাশই ঢেকে গেলো।
এত তীব্র আক্রমণে অবশেষে হাল ছেড়ে দিলো রাজপুতরা। রাজা সূর্য হারা সন্ধি স্থাপনের জন্য তার দুই পুত্র ভোজা আর দুদাকে পাঠালেন আকবরের কাছে। আকবর সূর্য হারার দুই পুত্রের সাথে সম্মানজনক আচরণ করলেন। উপহার ও রাজকীয় খিলাত দিয়ে তাদের দুর্গে প্রেরণ করলেন।
আকবরের উদারতায় মুগ্ধ হয়ে কিংবা নিরুপায় হয়ে রাজা সূর্য হারা সম্রাট আকবরের কাছে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিলেন। আত্মসমর্পণের শর্ত নির্ধারণের জন্য মুঘল শিবিরে বার্তা পাঠালেন তিনি।
৫
আত্মসমর্পণের শর্ত নির্ধারণের জন্য আকবর দুর্গের অভ্যন্তরে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। প্রতিনিধিদল গঠনের পর মান সিংহের নেতৃত্বে তিনি দলটিকে দুর্গে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। এরপর হঠাৎ কী মনে করে কে জানে, নিজেও ছদ্মবেশে প্রতিনিধিদলের সাথে দুর্গের ভেতরে চলে গেলেন।
রণথম্ভোরের দরবার কক্ষে যখন মুঘল আর রাজপুতদের মধ্যে রণথম্ভোরের আত্মসমর্পণ নিয়ে দরকষাকষি হচ্ছিলো, তখন হঠাৎই রাজার কোনো এক আত্মীয় আকবরকে দেখে চিনে ফেললেন ফেললেন। সাথে সাথেই সবাই মাথা নত করে আকবরকে সম্মান জানালেন।
রাজা সূর্য হারা এরপর একবার মাত্র জানতে চাইলেন, এখন তার করণীয় কী? উত্তর দিলেন মান সিংহ। তিনি বললেন, রণথম্ভোর আকবরের নিকট সমর্পণ করুন আর রানার সঙ্গ ত্যাগ করুন। রাজা সূর্য হারা মান সিংহের এই শর্ত মেনে নিলেন।
অবশেষে আম্বারের রাজার মধ্যস্থতায় সম্রাট আকবর আর রাজা সূর্য হারার মাঝে একটি শান্তিচুক্তি হয়ে গেলো। অবশ্য আকবরকে রাজা সূর্য হারার কয়েকটি শর্ত মেনে নিতে হয়েছিলো। যেমন- বুন্দির রাজার কোনো কন্যাকে মুঘল হেরেমে যাওয়া থেকে অব্যহতি দেয়া, বুন্দির রাজধানী পরিবর্তন না করার নিশ্চয়তা, জিজিয়া কর থেকে অব্যহতি, বুন্দির রাজপুতদের অস্ত্রসহ দিউয়ান-ই-আম এ প্রবেশের অনুমতি প্রদান, অন্য কোনো হিন্দু কমান্ডের অধীনে বুন্দির রাজপুতদের মোতায়েন না করা ইত্যাদি।
আত্মসমর্পণের এ চুক্তি সম্পাদনের পর ১৫৬৯ সালের ২১ মার্চ (৩ শাওয়াল, ৯৭৬ হিজরি) বুন্দির রাজা সূর্য হারা মুঘল সেনাবাহিনীর কাছে রণথম্ভোর দুর্গ সমর্পণ করে দিলেন। শেষপর্যন্ত মুঘল সৈন্যরা বেশ শান্তিপূর্ণভাবেই রণথম্ভোর দুর্গের দখল বুঝে নিলেন।
৬
দুর্গে মুঘল নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর সম্রাট আকবর সূর্য হারাকে নিজের শিবিরে আমন্ত্রণ জানালেন। রাজা সূর্য হারা সম্রাটের তাবুতেই আনুষ্ঠানিকভাবে সম্রাটের আনুগত্য স্বীকার করলেন। এরপর সম্রাট আকবর রাজাকে বুন্দিতে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করলেন। একইসাথে রাজাকে বেনারসে জাঁকজমকপূর্ণ একটি বাসভবন প্রদান করা হয়। এর কিছুদিন পর তিনি গোন্ডয়ানায় দুর্গ রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারও কিছুদিন পর চুনার দুর্গে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে বেনারসের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজার দুই পুত্রও মুঘল সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং মুঘল সেনাবাহিনীর গুজরাট অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
এদিকে রণথম্ভোর বিজয়ের পর আকবর মেহতার খানকে দুর্গ রক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।
রণথম্ভোরের এই অবরোধে মুঘল সেনাবাহিনীকে আসলে এতটাই সামান্য প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছিলো যে, আকবরের দীর্ঘ রাজত্বকালের অসংখ্য যুদ্ধের মাঝে এই অবরোধকে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো অভিযান হিসেবেই মনে করা হয় না। এই অভিযানে আকবর আসলে সেনাবাহিনী নিয়ে রণথম্ভোর অবরোধ করে কিছুদিন অপেক্ষা করেছেন, এরপর রণথম্ভোর নিজে থেকেই আত্মসমর্পণ করেছে।
আপাতদৃষ্টিতে মুঘল সেনাবাহিনীর রণথম্ভোর অভিযান কম গুরুত্বপূর্ন মনে হলেও, আকবর তার দূরদৃষ্টি দিয়ে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন যে, রাজপুতদের রণথম্ভোরকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিলে তা শেষপর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তার জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কাজেই মুঘল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তার জন্যই রণথম্ভোরের পতন অবশ্যম্ভাবী ছিলো।
[এই সিরিজের পূর্বের প্রকাশিত পর্বটি পড়ুন এখানে। সিরিজের সবগুলো লেখা পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এখানে।]
মুঘলদের সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন এই বইটি