Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

প্রাচীন পৃথিবীর অমীমাংসিত কিছু মৃত্যু-রহস্য

প্রাচীন পৃথিবীর নানা রহস্যের সন্ধানে সদা তৎপর থাকেন বিশ্বের নানা প্রান্তের প্রত্নতত্ত্ববিদগণ। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই আমরা জানতে পারি ইতিহাসের নানা বিস্ময়কর তথ্য, সমৃদ্ধ করতে পারি আমাদের জ্ঞান ভান্ডার। মৃতদেহের কথাই ধরা যাক। প্রাচীন সভ্যতার সন্ধানে থাকাকালে বিভিন্ন সময়ই প্রত্নতত্ত্ববিদেরা এমন কিছু মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছেন যাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা সম্ভব হয় নি আজও। বরং বিভিন্ন সময় এমন সব তথ্য উদঘাটিত হয়েছে, যা জেনে পিলে চমকে গেছে অনেকেরই। প্রাচীন পৃথিবীর এমনই কিছু অমীমাংসিত মৃত্যু-রহস্যের ইতিহাস নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের পুরো লেখা।

১. শূলবিদ্ধ খুলি

1

কানালজর্ডেনে খুঁজে পাওয়া এক খুলি

২০০৯ সালের কথা। একদল প্রত্নতত্ত্ববিদ সুইডেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মোটালায় প্রায় ৮,০০০ বছরের পুরনো একটি বসতি খুঁজে পান যার নাম দেয়া হয় কানালজর্ডেন। সেখানেই একটি অগভীর লেকের তলদেশে তারা পাথর চাপা দেয়া এক গণকবরের সন্ধান পান। কবরটিতে ১১টি খুলি ও খুলির অংশবিশেষ পাওয়া গিয়েছিলো। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, এ খুলিগুলোর মাঝে দুটি কাঠের শূলে আটকানো ছিলো। অন্যগুলোর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিলো যে, সেগুলোরও বুঝি একই দশা হয়েছিলো।

আজও প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানতে পারেন নি সেই দুর্ভাগাদের আসল পরিচয় আর কেনই বা তাদেরকে এভাবে কবর দেয়া হয়েছিলো। এমনকি এক মহিলার খুলির ভেতর আরেক মহিলার খুলির অংশবিশেষ কীভাবে এসেছিলো সেই রহস্যেরও কোনো কূলকিনারা করতে পারেন নি তারা।

অবশ্য এ পরিস্থিতি ব্যাখ্যার জন্য বিজ্ঞানীগণ দুটি তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন। এগুলোর পক্ষে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ অবশ্য তাদের হাতে নেই।
১) হয়তো মাংস পচে যাবার পর মৃতদের আবার তোলা হয়েছিলো। তারপর শূলে খুলিগুলো গেঁথে তাদের দ্বিতীয়বার কবর দেয়া হয়। সুইডেনে খুঁজে পাওয়া আরেকটি মেসোলিথিক স্থানে এমন চর্চা এককালে প্রচলিত ছিলো।
২) হয়তো কোনো যুদ্ধে শত্রুর হাতে নিহত হয়েছিলেন তারা। পরে তাদের খুলিগুলো শূলে গেঁথে নিয়ে আসা হয়েছিলো স্মারক হিসেবে।

২. রাজা তুতেনখামুনের মৃত্যু

১৩৩২-১৩২৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত মিশরের ফারাও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তুতেনখামুন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৩২৩ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে রহস্যের কোনো সমাধান হয় নি আজও।

তুতেনখামুনের ডেথ মাস্ক

তুতেনখামুনের ডেথ মাস্ক

কখনো দাবি করা হয়েছে রথ দুর্ঘটনা, জলহস্তীর আক্রমণ কিংবা ঘোড়ার লাথি খেয়ে মৃত্যু হয়েছে রাজা তুতের। তার শরীরে থাকা আঘাতের চিহ্নগুলো দেখেই প্রত্নতাত্ত্বিকেরা এ ধারণাগুলো করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে বেশ কয়েকজন গবেষক এ ধারণাকে নাকচ করে দেন। তাদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন রাজার কবরটি অরক্ষিত অবস্থায় ছিলো, তখন তার কবরে চুরি হয়। চোরেরা তার শরীর থেকে মূল্যবান গয়না নিতে গিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার মমি। আর রাজা তুতের রথে চড়ার ব্যাপারটাও নাকচ করে দেয়া হয়েছে। কারণ জন্ম থেকেই তার পা কিছুটা বাঁকা ছিলো। ফলে অন্যের সাহায্য ছাড়া দাঁড়ানোই ছিলো তার জন্য কষ্টকর, রথ চালনা করা তো আরো দূরের কথা!

রাজা তুতের মমি

রাজা তুতের মমি

কারো কারো মতে আবার তুতেনখামুনকে হত্যা করা হয়েছিলো। ২০০৫ সালে করা এক সিটি স্ক্যান থেকে জানা যায় যে, মৃত্যুর কিছু সময় আগে তার বাম পা ভেঙে গিয়েছিলো। ২০১০ সালে পরিচালিত এক ডিএনএ টেস্টে তার শরীরে ম্যালারিয়ার জীবাণুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, ম্যালেরিয়া ও কোহ্‌লার রোগে ভুগে মারা যান তুতেনখামুন।

২০১০ সালের জুনে একদল জার্মান গবেষক রাজার মৃত্যুর কারণ হিসেবে সিক্‌ল-সেল রোগকে দায়ী করেন। একসময় মনে করা হতো যে, তাকে হয়তো মাথায় আঘাত করে খুন করা হয়েছে। ২০০৫ সালের এক গবেষণা থেকে এ ধারণাটি ভুল বলে প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে গবেষকরা সিটি স্ক্যান ইমেজ পরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে, তুতেনখামুনের বাবা-মা ছিলেন আপন ভাই-বোন! বাবা-মায়ের কাছ থেকে পাওয়া কোনো জেনেটিক ত্রুটিকেও তার শারীরিক দুর্বলতার জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে।

এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগকে তুতেনখামুনের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে। এর মাঝে রয়েছে মার্‌ফান সিনড্রোম, এক্স-লিঙ্কড মেন্টাল রিটার্ডেশন সিনড্রোম, ফ্রহ্‌লিখ সিন্‌ড্রোম, ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোম, এন্ড্রোজেন ইনসেন্সিটিভিটি সিনড্রোম, অ্যান্টলে-বিক্সলার সিনড্রোম, অ্যারোমাটাজ এক্সেস সিনড্রোম ও ক্রেনিওসিনোস্টোসিস সিনড্রোম এবং টেম্পোরাল লোব এপিলেপ্সি।

৩. প্রথম সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের সন্ধান

সাহারা মরুভূমির সীমান্তবর্তী এলাকায় সুদানের উত্তরাঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা বেশ কিছু মানুষের দেহাবশেষ নিয়ে গবেষণা করেছেন। নীল নদের পূর্ব পাশে জেবেল সাহাবা সমাধিক্ষেত্রে মিলেছে এসব দেহাবশেষের সন্ধান। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, এ কঙ্কালগুলোর বয়স প্রায় ১৩,০০০ বছর এবং এখন পর্যন্ত জ্ঞাত ইতিহাসের সবচেয়ে পুরনো সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের নমুনা বলেও ধরা হচ্ছে এগুলোকে।

4

জেবেল সাহাবাতে পাওয়া এক দুর্ভাগা। সম্ভবত মাথায় আঘাতের ফলে মৃত্যু হয়েছিলো তার

সংঘর্ষটি কয়েক মাস থেকে শুরু করে প্রায় বছরখানেক ধরে চলেছিলো বলে গবেষকদলের অনুমান। মৃতদের অধিকাংশই তীরের আঘাতে সৃষ্ট ক্ষত থেকে মারা গিয়েছিলেন। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন যে, এখানে পাওয়া মানুষেরাই আজকের আফ্রিকান আমেরিকানদের পূর্বপুরুষ।

জেবেল সাহাবাতে পাওয়া আরো এক জোড়া কঙ্কাল

জেবেল সাহাবাতে পাওয়া আরো এক জোড়া কঙ্কাল

এত হাজার বছর পরে এসে সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা বেশ কষ্টকর ব্যাপার। তবে গবেষকগণ ধারণা করছেন যে, হয়তো কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে আশেপাশের এলাকাগুলোতে থাকা সব উদ্ভিদ ও প্রাণি মারা যায়, শুকিয়ে যায় সব জলাধার। শুধুমাত্র নীল নদেই পানি প্রবাহমান থাকায় এর দখল নিতেই দু’পক্ষের সংঘর্ষ বেধেছিলো বলে তাদের বিশ্বাস।

৪. বিষক্রিয়ায় মৃত কান্‌গ্রান্দ

চৌদ্দ শতকে ইতালির এক বিখ্যাত সামরিক নেতা ছিলেন কান্‌গ্রান্দ দেলা স্কেলা। ভেরোনা, পাদুয়া, ত্রেভিসো ও ভিসেঞ্জা ছিলো তার আওতাধীন। তবে বর্তমানে তিনি বেশি পরিচিত মধ্যযুগীয় ইতালিয়ান কবি দান্তের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে।

কান্‌গ্রান্দ দেলা স্কেলার প্রতিকৃতি

কান্‌গ্রান্দ দেলা স্কেলার প্রতিকৃতি

১৩২৯ সালের ১৮ জুলাই দীর্ঘ সংগ্রামের পর জয় করা ত্রেভিসো পরিদর্শনে যান কান্‌গ্রান্দ। কিন্তু সেখানে যাবার অল্প কিছুদিনের মাথাতেই জ্বর, বমি, ডায়রিয়াতে ভুগে একেবারে কাবু হয়ে যান তিনি। অবশেষে মাত্র ৪ দিন পর ২২ জুলাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সামরিক এ নেতা। বেশ কিছুদিন আগে একটি অপরিষ্কার ঝর্নার পানি পান করেছিলেন কান্‌গ্রান্দ। সেই পানিকেই তার মৃত্যুর কারণ বলে ধরে নেয় সবাই।

কান্‌গ্রান্দের মৃতদেহ

কান্‌গ্রান্দের মৃতদেহের মমি

তবে ঘটনার মোড় ঘুরে যায় ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে উদঘাটন করার জন্য পাথরের কফিন থেকে বের করা হয় কান্‌গ্রান্দের মৃতদেহ। সৌভাগ্যই বলতে হবে সেই গবেষকদের। কারণ কান্‌গ্রান্দের মৃতদেহটি প্রাকৃতিকভাবেই মমিতে পরিণত হয়েছিলো। সেটি এতটাই ভালো অবস্থায় ছিলো যে, শরীরের অভ্যন্তরের বেশ কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও পরীক্ষা করে দেখা সম্ভব ছিলো। সেখান থেকেই বেরিয়ে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায় যে, কান্‌গ্রান্দের মৃত্যুর পেছনে আসলে ঝর্নার পানি ছিলো না, বরং ছিলো ডিজিটালিস নামক এক ধরনের উদ্ভিদ। খাবারের সাথে এটি মিশিয়ে দিলে শুরুর দিকে বিতৃষ্ণাবোধ, বমি হওয়া ও ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। আর মাত্রা বেশি হলে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে মারা যায় আক্রান্ত ব্যক্তি।

এরপর তাহলে প্রশ্ন আসে- কান্‌গ্রান্দ কি আত্মহত্যা করেছিলেন? নাকি খুন করা হয়েছিলো তাকে? যদি খুন করাই হয়ে থাকে, তাহলে সেই খুনী কে? খুনীর তালিকা করতে গেলে মিলান ও ভেনিসে কান্‌গ্রান্দের অনেক প্রতিপক্ষের নামই আনা যাবে। তবে সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করা হয় তারই ক্ষমতালোভী ভাগ্নে মাস্তিনোকে, যিনি কিনা তার মৃত্যুর পরই ক্ষমতায় এসেছিলেন।

. মেসা ভার্দের মৃত্যুপুরী

কলোরাডো থেকে এবার ঘুরে আসা যাক। বারো শতকের মাঝামাঝিতেও সেখানকার মেস ভার্দের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ছিলো প্রায় চল্লিশ হাজারের মতো মানুষের বসবাস। কিন্তু মাত্র তিন দশক সময়ের ব্যবধানে চল্লিশ হাজার থেকে এ সংখ্যাটি নেমে আসে একেবারে শূন্যের কোঠায়! অর্থাৎ ত্রিশ বছরের মাঝে এ অঞ্চলে বাস করা প্রায় সবাই মারা গিয়েছিলো! কিন্তু কীভাবে?

8

মেসা ভার্দ

এ অঞ্চলে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা যেসব কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছিলেন, সেগুলোর শতকরা প্রায় ৯০ ভাগেরই মাথা কিংবা হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিলো। আর তাদের সবাই মারা গিয়েছিলেন ১১৪০-১১৮০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে, দীর্ঘকাল ধরে চলা ভয়াবহ কোনো সংঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছিলো তাদের। কিন্তু কেনই বা বাঁধবে এমন সংঘাত যা একটি জাতিকেই পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেয়? বিশেষ করে এ অঞ্চলটির দক্ষিণে অবস্থিত রিও গ্রান্দের মানুষগুলোর সুখে-শান্তিতে বসবাসের ইতিহাস প্রত্নতত্ত্ববিদদের আরো কৌতুহলী করে তুলেছিলো।

প্রত্নতত্ত্ববিদ টিম কোহ্‌লারের মতে, রিও গ্রান্দের অধিবাসীরা সেই সময়ে ‘সকল কাজের কাজী’ হওয়ার নীতি বাদ দিয়ে একেকজন একেক কাজে পারদর্শী হয়ে উঠছিলো। কেউ মাছ ধরতো, কেউ শিকার করতো, কেউবা কাপড় বুনতো। এলাকার সবাই এভাবে একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছিলো। মূলত একে অপরের উপর এমন বাণিজ্যিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে যাওয়াই মানুষগুলোকে সংঘাতে জড়ানো থেকে বিরত রেখেছিলো। কিন্তু ব্যতিক্রম ব্যাপার ঘটে মেসা ভার্দের অধিবাসীদের বেলায়। তাদের মাঝে এমন বাণিজ্যিক আন্তঃসম্পর্ক গড়ে ওঠে নি। ফলে সবাই নিজেদের স্বার্থোদ্ধারের চিন্তাতেই মশগুল থাকতো। এরই ফলশ্রুতিতে ঘটেছিলো এমন ভয়াবহ সংঘর্ষ।

অবশ্য এত সুন্দর বর্ণনা কিন্তু কোহ্‌‌লারের অনুমান মাত্র! সত্য ঘটনাটি আমরা কোনোদিনই জানতে পারবো না।

৬. মায়া সভ্যতার লোকদের হাতে শত্রুদের দুরবস্থা

জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক একবার মেক্সিকোর কাম্পেচেতে মায়া সভ্যতার শহর উক্সুলে খননে ব্যস্ত ছিলেন। খুঁড়তে খুঁড়তেই হঠাৎ তারা এমন এক জায়গার সন্ধান পেয়ে যান, যা ছিলো পিলে চমকে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। তারা মনুষ্যনির্মিত একটি গুহার সন্ধান পেয়ে যান যা এককালে জলাধার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেই গুহার ভেতরে তারা ২৪টি কঙ্কাল খুঁজে পান, সবই ছিলো মানুষের। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, সবগুলো কঙ্কালেরই মূল দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা ছিলো। অর্থাৎ শিরশ্ছেদের মাধ্যমে তাদের হত্যা করা হয়েছিলো। সেই সাথে মৃত্যুর পর তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও কেটে এদিক-সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিয়েছিলো মায়া সভ্যতার সেই লোকেরা! সারা গুহা জুড়েই ছড়ানো ছিলো সেসব হাড়গোড়। অনেকগুলো কঙ্কালের মাথা আর মূল শরীর কাছাকাছি ছিলো না। কিছু কিছু কঙ্কালের আবার মাথা আর চোয়াল আলাদা হয়ে গিয়েছিলো। মৃত্যুর সময় নিহতদের বয়স ছিলো ১৮-৪২ বছরের মাঝে। ২৪ জনের মাঝে ২ জন ছিলো নারী ও ১৩ জন পুরুষ। বাকিদের লিঙ্গ নির্ণয় করা সম্ভব হয় নি।

9

এ আবিষ্কার থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা বুঝতে পেরেছিলেন যে, মায়া সভ্যতার লোকেরা তাদের শত্রুদের নিধনের বেলায় এমন নৃশংস পন্থাই অবলম্বন করতো। নিহতদের একজনের দাঁতে এক ধরনের মূল্যবান সবুজ পাথর পরানো ছিলো, যা তার আভিজাত্যের ইঙ্গিত বহন করে।

কিন্তু সেই দুর্ভাগা ২৪ জনের প্রকৃত পরিচয় কিংবা তাদের ভাগ্যে এত নির্মম মৃত্যু নেমে আসার প্রকৃত কারণটা আজও অজানাই রয়ে গেছে।

তথ্যসূত্র

(১) history.com/news/human-skulls-mounted-on-stakes-found-at-stone-age-burial-site
(২) independent.co.uk/news/science/king-tutankhamun-did-not-die-in-chariot-crash-virtual-autopsy-reveals-9806586.html
(৩) en.wikipedia.org/wiki/Tutankhamun
(৪) independent.co.uk/news/science/archaeology/saharan-remains-may-be-evidence-of-first-race-war-13000-years-ago-9603632.html
(৫) en.wikipedia.org/wiki/Cangrande_I_della_Scala
(৬) news.wsu.edu/2014/08/04/wsu-researchers-see-violent-era-in-ancient-southwest/#.VN6UBC46u4K
(৭) uni-bonn.de/Press-releases/maya-dismembered-their-enemies

Related Articles