২১ নভেম্বের, ১৯৭১; যশোরে মোতায়েনকৃত পাকবাহিনীর ১০৭ ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার হায়াত খান একটা খবর পান। তিনি কোনোভাবে জানতে পারেন- যশোরের বয়রা সীমান্ত পার হয়ে গরিবপুর এলাকায় মুক্তিবাহিনীর একটি কোম্পানি অবস্থান নিয়েছে। জায়গাটিতে পাকবাহিনীর তেমন একটা প্রহরা ছিল না। একজন চৌকস অফিসারের মতো দ্রুতই পাল্টা আঘাতের পরিকল্পনা করেন তিনি।
২১ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের দুটি কোম্পানি নিয়ে তিনি দ্রুত ছোটেন সেদিকে। কিন্তু হায়াত খানের জন্য চমক অপেক্ষা করছিল! যুদ্ধ শুরুর কিছুক্ষণ পরই তীব্র কুয়াশার ভেতর থেকে ভূতের মতো উদয় হয় কয়েকটি ভারতীয় PT-76 Amphibious ট্যাংক। পাকবাহিনীর ধারণাই ছিল না কপোতাক্ষ নদ এবং জলমগ্ন বাঁওড় এলাকার নরম কাদামাটি পাড়ি দিয়ে এখানে কোনো ট্যাংক আসতে পারবে! ট্যাংক তো দূরে থাক, এই নরম মাটিতে মানুষের চলাফেরাও বেশ কষ্টকর। আর তাই এই এলাকায় তেমন প্রতিরক্ষাও ছিল না তাদের। চতুর মুক্তিবাহিনী এই ফাঁকফোঁকর ব্যবহার করে স্রোতের মতো আসতে শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয়, মূল রাস্তাগুলোকে বাইপাস করে এবং পাকবাহিনীকে বোকা বানিয়ে মুক্তিবাহিনী গ্রামের সরু রাস্তা দিয়ে নিয়ে এসেছে মিত্রবাহিনীকেও! ব্রিগেডিয়ার হায়াত বুঝতে পারেন- বুদ্ধি আর আর্ট অব ওয়ারের খেলায় মুক্তিবাহিনী যুদ্ধ শুরুর আগেই তাদের হারিয়ে দিয়েছে! উল্লেখ্য, ভারত-পাকিস্তান পূর্ণ যুদ্ধ ডিসেম্বরে শুরু হলেও এপ্রিল থেকেই দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ চলছিল।
পরের গল্প জানতে হলে শুরু করতে হবে মার্চ থেকে!
বয়রা, বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক অখ্যাত গ্রাম। যশোর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে চৌগাছা ইউনিয়নের মস্যমপুর গ্রামের পাশেই ভারতের এই গ্রাম। সীমান্তের এই এলাকা হাওড়-বাঁওড়ে পরিপূর্ণ এবং জলমগ্ন। গ্রামটির পূর্বদিকে কপোতাক্ষ নদ বয়ে গেছে। এই নদীই বাংলাদেশ এবং ভারতের সীমানা। কিন্তু কপোতাক্ষ নদের পানি এবার লাল হতে যাচ্ছে! অখ্যাত গ্রামটি ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাতে চলেছে।
১৯৭১ সালে খুলনা অঞ্চলে পাকিস্তানি ৯ পদাতিক ডিভিশনকে মোতায়েন করা হয়। ১০৭ এবং ৫৭ হেভি ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড এই ডিভিশনের অন্তর্গত ছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মোতায়েনকৃত সবচেয়ে শক্তিশালী ডিভিশন বলা হতো ৯ পদাতিক ডিভিশনকে। এছাড়াও যশোর এবং কুষ্টিয়াতে ট্যাংক স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা হয়। একাত্তরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দপ্তর ছিল কলকাতায়। যেটা যশোর থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার। গুরুত্ব বুঝেই খুলনা-যশোরে ব্যাপক সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছিল পাকবাহিনী।
খুলনা ফ্রন্টে যুদ্ধের শুরুতেই এক ধাক্কা খায় শত্রুরা। কুষ্টিয়াতে মুক্তিবাহিনীর ঝটিকা আক্রমণ অপারেশন ফাস্ট লেগে পাকবাহিনীর অভিজাত বেলুচ রেজিমেন্টের সম্পূর্ণ একটি কোম্পানি ধ্বংস হয়। নিহত হয় ১৫০-২৫০ শত্রু। ধরা পড়ে এক অফিসার এবং ক’জন সেনা। প্রচুর অস্ত্র দখলে আসে।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে যশোরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ শক্ত করে পাকবাহিনী। যশোর সেনানিবাস পুরোপুরি দখল করার পর ১৬ এপ্রিল তারা ঝিনাইদহ নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তী সময় মাগুরায় আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে এবং ধীরে ধীরে তারা মুক্তিবাহিনীকে বেনাপোলের দিকে হটিয়ে দেয়। বেনাপোল এলাকার ২ বর্গ কিলোমিটার বাদে খুলনার প্রায় সব অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয় তারা। বেনাপোল থেকে যায় স্বাধীন অঞ্চল, পরিণত হয় এক স্ট্রংহোল্ডে। তীব্র হামলা সত্ত্বেও বেনাপোল নিজেদের আয়ত্তে রাখে মুক্তিবাহিনী। বেনাপোল যুদ্ধের ইতিহাস জানতে ক্লিক করুন এখানে। এখানে ৮ নম্বর সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল।
খুলনা অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর প্রাথমিক প্রতিরোধ নিস্ক্রিয় করার পর ১০৭ পদাতিক ব্রিগেডের আওতাধীন ২২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের বিভিন্ন কোম্পানি বেনাপোল, রঘুনাথপুর ও ছুটিপুরে অবস্থান নেয়।
যুদ্ধের পরিকল্পনানুযায়ী এ অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর কাজ ছিল বেনাপোল, দর্শনা এবং রাজাপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় মুক্তিবাহিনীর সম্ভাব্য আক্রমণ আসার পথ বরাবর প্রতিরক্ষা অবস্থান নেয়া।
সমগ্র কুষ্টিয়া ও যশোর জেলা, ফরিদপুরের অধিকাংশ এলাকা এবং দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়কের উত্তরাংশ নিয়ে গঠিত হয় ৮ নং সেক্টর। প্রথমে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল)। ৮ নং সেক্টরের সাবসেক্টর ৭টি: বয়রা, হাকিমপুর, ভোমরা, লালবাজার, বনপুর, বেনাপোল, ও শিকারপুর।
এপ্রিলের শেষ দিকে বয়রা সাব-সেক্টরের কমান্ডার ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন কাশীপুর বা বয়রা সীমান্তবর্তী একটি বাধের উপর এর পশ্চিমে প্রায় ১ কোম্পানি ইপিআর সদস্য নিয়ে অবস্থান নেন। এখান থেকে তারা ছুটিপুর ও এর আশপাশের এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থানের উপর আক্রমণ করে নিজ অবস্থানে ফিরে আসতেন। তাদের এ কার্যক্রমের উদ্দেশ্য ছিল পাকসেনাদের হতাহত করা এবং সার্বিকভাবে তাদের মনোবল নষ্ট করা। স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় হামলা পরিচালনা করা হতো।
বয়রা থেকে পাকিস্তানি সেনাদের উপর বার বার আঘাত করায় তারা মুক্তিযোদ্ধাদের উপর আক্রমণের পরিকল্পনা করে। পাকিস্তানি সেনারা ২৮ মে ভোর ৪টায় প্রথমে ২ কোম্পানি সৈন্য নিয়ে কাশীপুর-বয়রায় মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। পাকিস্তানি সেনাদের এ আক্রমণের প্রথম ধাপ মুক্তিবাহিনী প্রতিহত করায় তারা তেমন সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়।
২ ঘণ্টা পর সকাল ৬টার দিকে পুনরায় পাকিস্তানি সেনারা আক্রমণ করে। থেমে থেমে এ সংঘর্ষ ১৪ ঘণ্টা স্থায়ী হয়। পাকিস্তানি সেনাদের একটি ব্যাটালিয়ন এ সংঘর্ষে অংশ নেয়। তাদের ব্যাপক আক্রমণের মুখে ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন তার বাহিনী নিয়ে কাশীপুর থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে বয়রায় অবস্থান নেন।
বেনাপোলে সেক্টর সদর দপ্তরে ২ কোম্পানি রিজার্ভ মুক্তিযোদ্ধা ছিল। কিন্তু বয়রায় মুক্তিবাহিনীর কোনো ওয়্যারলেস বা ফিল্ড টেলিফোন না থাকার কারণে জরুরি সাহায্য চাওয়া যায়নি। পাকবাহিনী সংখ্যা এবং অস্ত্রে অনেক এগিয়ে ছিল। সব মিলিয়ে সমন্বিতভাবে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু পাকবাহিনী কখনোই এই এলাকাকে নিজেদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। জনগণের সাহায্যে মুক্তিবাহিনী প্রায়ই পাকবাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালাত। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে গেরিলা বা মুক্তিবাহিনীর সংখ্যাও কম ছিল। তবুও অল্প অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং স্বল্প প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়েও ঝটিকা হামলা করে পাকিস্তানি সেনাদের প্রচুর ক্ষতিসাধন করা সম্ভব হয়েছিল। মুক্তিবাহিনী হামলা করে সীমানা পেরিয়ে যাওয়ায় পাকবাহিনীর করার তেমন কিছুই ছিল না। এই এলাকাগুলোতে মুক্তি এবং পাকবাহিনীর ফাইটিং প্যাট্রল পার্টির মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষ হতো। যুদ্ধ যত এগোচ্ছিল, ভারতীয় সেনাদের সাথেও নিয়মিত সীমান্ত সংঘর্ষ বাড়ছিল। শুধু মে মাসেই মুক্তিবাহিনীর গেরিলা হামলায় ওই সীমান্তে অন্তত ১০০ পাকসেনা নিহত হয়।
নভেম্বরে ভারত-পাকিস্তানের সরাসরি যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে নভেম্বরে ১০৭ এবং ৫৭ ব্রিগেড খুলনার অঞ্চলের সীমান্তে কড়া অবস্থান নেয় এবং বিশাল প্রতিরক্ষা লাইন বানায়। ১০৭ ব্রিগেডকে যশোর প্রতিরক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়।
বয়রা-চৌগাছা-যশোর অক্ষে আফ্রা নামক স্থানে ৬ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট, ঝিকরগাছা অক্ষে ২২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্ট, সাতক্ষীরা অক্ষে ১৫ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্ট প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করে এবং ২১ পাঞ্জাব রেজিমেন্টকে যশোর সেনানিবাসে রিজার্ভ হিসেবে রাখা হয়। কিন্তু পাক প্রতিরক্ষা লাইনে বয়রায় কোনো সেনা রাখা হয়নি। এদিকে যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী নিয়মিত সীমান্ত এলাকা এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড রেকি করত। জনসাধারণও পাকবাহিনীর মুভমেন্ট নিয়ে তথ্য দিত। মুক্তিবাহিনী খবর পায়- বয়রার সীমান্ত অরক্ষিত রেখেছে পাকবাহিনী। আর তাই এদিক দিয়েই অপারেশনের পরিকল্পনা করে তারা। আসলে পাকবাহিনীর ধারণাই ছিল না নদী, হাওড়-বাঁওড় এবং কর্দমাক্ত এই এলাকা দিয়ে গেরিলা হামলা ছাড়া অন্য কিছু হবে। তারা ভেবেছিল- দুই-চারজন গেরিলা আসলেও জলমগ্ন এলাকা দিয়ে গোটা ব্রিগেড বা রেজিমেন্টের আসা সম্ভব না।
২১ নভেম্বর পাকবাহিনী খবর পায়- বয়রা সীমান্ত পার হয়ে ৩/৪ কিলোমিটার ভেতরে গরিবপুরের কাছে চলে এসেছে মুক্তিবাহিনী। এদিকে পাকবাহিনী গরিবপুরে আঘাত হানার আগেই যৌথ বাহিনী সেখানে শক্ত অবস্থান নিয়ে নেয় এবং প্রতিরক্ষা লাইন বানায়। পাকবাহিনী তখনও ভারতীয় বাহিনীর অবস্থানের কথা জানত না।
২১ নভেম্বর প্রথম প্রহরে মুক্তিবাহিনীর বয়রা পার হয়ে গরিবপুরে আসার খবর পায় পাকবাহিনী। সকাল ৬টায় পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। শুরুতে তারা সাফল্য পাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই গাছের ফাঁক থেকে একটি ট্যাংক বের হয়ে আসে। এটি তাদের জন্য বড় একটি চমক ছিল!
পিটি ৭৬ মডেলের এই ট্যাংক ভারতীয় বাহিনীর উভচর ট্যাংক ছিল। উভচর ট্যাংক পানিতে ভাসতে পারে। পাকবাহিনী এই এলাকাকে যেখানে পদাতিক বাহিনী চলাচলের জন্যই দুষ্কর ধরে নেয়, সেখানে ট্যাংক এসে হাজির হয়েছে! এর মধ্যে মিত্রবাহিনীর আর্টিলারি সাপোর্ট নিয়ে মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর উপর হামলা চালায়।
মুক্তিবাহিনী অত্যন্ত চাতুর্যের সাথে যেসব সীমান্তে পাকসেনা মোতায়েন করা আছে, সেদিক দিয়ে না এসে অন্যদিক দিয়ে এসেছে। পাকবাহিনীকে বোকা বানিয়ে স্রোতের মতো বয়রা দিয়ে ঢুকে পড়ে যৌথবাহিনী। পাকবাহিনী বেশিরভাগ সময় বড় রাস্তা বা হাইওয়েকে কেন্দ্র করে প্রতিরক্ষা সাজাত, আর প্রতিবারই মূল রাস্তাগুলোকে বাইপাস করে মুক্তিবাহিনী গ্রামের সরু রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করত। গ্রাম্য পথঘাট, গাছপালাও যেন মুক্তিবাহিনীর চেনা। ডিসেম্বর থেকে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া চূড়ান্ত অভিযানে নিজেদের ভূখণ্ডের সমস্ত কানাগলি চেনার সুবিধা দারুণভাবে নিয়েছিল মুক্তিবাহিনি।
ধুলিয়ানী ইউনিয়নের কাবিলপুরে কপোতাক্ষ নদের উপর সেনা পারাপারের জন্য একটি ব্রিজও বানায় মিত্রবাহিনী। পাকবাহিনী একদফা বিমান হামলা চালিয়ে ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত করলেও পরে সেটা ঠিক করে ফেলে মিত্রবাহিনী। ঐ ব্রিজ পেরিয়ে মিত্রবাহিনীর ১৭টি ট্যাংক আসে।
মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার সামনের ট্যাংকের উপর বসে গাইড হয়ে সেগুলোকে নিয়ে আসেন। যেসব জায়গায় কাদা ছিল, সেসব জায়গায় খেজুর গাছ দিয়ে ট্যাংক ও গাড়ি পারাপারের ব্যবস্থা করে মুক্তিবাহিনী। যুদ্ধের ময়দানে মিত্রবাহিনীর ক্যাপ্টেন পাটিয়েল দিকনির্দেশনা দেন- কৌশলগত কারণে মুক্তিবাহিনী আগে থাকবে।
যুদ্ধের শেষদিকে ধরা পড়া এক পাকিস্তানি সেনার বয়ান থেকে চমকপ্রদ সব তথ্য জানা যায়। বয়রা যুদ্ধের পর পিছু হটে পাকিস্তানিরা চলে যায় খুলনায়। সেখানে সংঘটিত হয় ভয়ঙ্কর ট্যাংক ব্যাটল অফ শিরোমণি।
বয়রা যুদ্ধে একইসাথে হাতাহাতি, ট্যাংক যুদ্ধ, ডগফাইট, এবং ভারতীয় মাটিতে পাকিস্তানি গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটে। বয়রা যুদ্ধের বাকি অংশ থাকছে সিরিজের ২য় পর্বে।