সব দিন যেমন আমাদের খারাপ কাটে না, সব দিন আবার ভালোও যায় না। ভালো-খারাপের মিশেলেই চলছে জীবন, চলবেও। তবে কিছু কিছু দিন এত বেশি রকমের বাজে কাটে যে দিশেহারা লাগে। একের পর এক এমন কিছু ঘটছে যে তাল সামলানো দায়, বুঝে উঠতে পারছেন না কী করবেন। এই সময়গুলো শক্ত হাতে মোকাবেলা করার জন্য আজ আপনাদের জন্য রইল কিছু পরামর্শ।
মন খারাপের দিনে
১) যখন অনেক বেশি খারাপ লাগবে, সব ধরনের ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন। নিজেকে অন্য কাজ, যেমন- বাগান করা, বই পড়া, রান্না করা, সেলাই করা কিংবা ছবি আঁকা জাতীয় কাজে ব্যস্ত রাখুন, অর্থাৎ মাইন্ড ডাইভার্ট করা যাকে বলে। যে কারণে মন খারাপ হচ্ছে, সেটা যেন আর মনে না পড়ে!
২) প্রচুর পানির ব্যবহার মন ভালো করে দিতে পারে। সেটা হতে পারে পর্যাপ্ত পরিষ্কার পানি পান করা কিংবা উষ্ণ জলে গোসল করা। দেহ-মনের সমস্ত ক্লান্তি আর মন খারাপও এতে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
৩) নিজের সাথে নিজে সময় কাটান। আমরা যতই সামাজিক জীব হই না কেন, নিজের সাথে প্রত্যেকের কিছু সময় কাটানো দরকার। কিছু সময় সামাজিকতা রক্ষার্থে মানুষের অনেক কিছুই করতে হতে পারে। দেখা যায়, জোর করে অনেক কিছু করতে গেলে এবং নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করতে গেলে মন খারাপ হয়। দিনও খারাপ যায়। তাই নিজেকে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করুন।
৪) একজন বন্ধু কিংবা পরিবারের কারো সাথে কথা বলতে পারেন। অনেক সময় একের পর এক বাজে অভিজ্ঞতার দরুন দিশেহারা লাগে। এ সময় কাছের মানুষের সাহায্য সকলের কাম্য। তাই যদি দেখেন সময়টা ভালো যাচ্ছে না, কাউকে কল করুন কিংবা এক কাপ চা বা কফির সাথে আড্ডা জমান তার সাথে।
৫) দিন বা সময় খারাপ গেলে অনেক সময় খুব কান্না পায়। কিন্তু পারিপার্শ্বিকতার খাতিরে আমরা কাঁদতে চাই না কিংবা ভয় পাই। নিজের সমস্ত কষ্ট আর দুঃখ কমাতে গেলে কাঁদুন। নিজেকে যখন সময় দেবেন, তখন কাঁদুন, যতক্ষণ চান ততক্ষণ কেঁদে নিজের সমস্ত খারাপ কিছু দূর করে ফেলুন।
৬) ঘুমান। ঘুমের মতো ওষুধ খুব কমই হয়। যখন মন বেশি খারাপ হবে, দিন বেশি খারাপ যাবে, কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিন। ঘুম থেকে উঠে দেখবেন, নিজেকেও বেশ হালকা লাগছে। নিজের শক্তি ফিরে পাবেন, লক্ষ্য নতুন করে স্থির করতে পারবেন। ঘুমানোর পরিবেশ যেন অবশ্যই উপযুক্ত হয়।
৭) বড় বড় করে শ্বাস নিন। যখনই মানসিক চাপ বেশি হয়ে যাবে, তখন একটা লম্বা শ্বাস নিন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম কিছু সময় করুন, দেখবেন খারাপ লাগার অনুভূতিগুলো যেন ধীরে ধীরে উবে যাচ্ছে।
এছাড়াও কোথাও ঘুরতে যাওয়া, মুভি দেখা, গান শোনা, শপিং করা কিংবা নিজের অনুভূতিগুলো লিখে রাখতে পারেন। এতে অনেক ক্ষেত্রে নিজেকে বেশ হালকা লাগে। আবার নিজের পোষা প্রাণীকে সময় দেয়া কিংবা স্বীয় ধর্মীয় আচার পালন খারাপ দিনের অভিশাপকে কখন আশীর্বাদে পরিণত করবে তা টেরও পাবেন না।
খারাপ দিনের বা মুহুর্তের অনুভূতিগুলো একবারে মুছে দেয়া সম্ভব না। এই খারাপ মুহুর্ত আছে বলেই ভালো লাগার ক্ষণগুলোর গুরুত্ব বেশি। খুঁজে নিন কীসে আপনার আনন্দ, যে জিনিসে দিন খারাপ যাচ্ছে সেটা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। ধীরে ধীরে খারাপ সময় হাসিমুখে মোকাবিলা করতে শিখে যাবেন।