পৃথিবীতে কোনো মানুষই একদম নিখুঁত নন, তিনি কোনো জিনিয়াসই হন, কিংবা নিতান্তই সাদাসিধে গোবেচারা একজন ব্যক্তিত্ব। তবে এরই মধ্যে কিছু ইতিহাস বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, যারা নিখুঁত নন তো বটেই, ‘নিখুঁত’ ধারণাটির ধারেকাছেও ছিলেন না! ‘দর্শনধারী’ হিসেবে আমাদের কাছে তারা আজ অবধি জনপ্রিয় হয়ে আছেন বটে, তবে ‘গুণবিচার’-এর দিক থেকে তারা আদতে খুব একটা উঁচু গোত্রে ঠিক পড়েন না। এমনই কয়েকজনকে নিয়ে আজকের আয়োজন।
ববি ফিশার
আন্তর্জাতিক দাবার সাথে যারা পরিচিত, তাদের কাছে এই নামটি রীতিমতো কিংবদন্তীতুল্য। বলা যায়, তিনি অনেকটা একাই দাবা খেলাটিকে মূলধারায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। তার প্রভাব এতোটাই ছিলো যে রাশিয়ান মাস্টার বরিস স্পাসকির সাথে খেলা ম্যাচটির কথা পত্রিকার প্রথম পাতায় বড় বড় করে হেডলাইন করা হয়েছিলো। সেই ম্যাচে জয়ের পর রাতারাতি মিডিয়ার চোখের মণি হয়ে উঠেছিলেন ফিশার, এমনকি ‘ফিশার বুম’ নামের একটি শব্দগুচ্ছও চালু হয়ে যায়।
তবে ‘মিডিয়া ডার্লিং’ হয়ে উঠলেও আমেরিকার প্রতি তার মনোভাব খুব একটা সুবিধার ছিলো না; আর সেই মনোভাবের ‘সৌজন্যেই’ তাকে আর যা-ই হোক, দেশপ্রেমিক বলা চলে না। এমনকি ৯/১১ হামলা ঘটার পর ফিশার মন্তব্য করে বসেন, “প্রশংসনীয় কাজ হয়েছে এটা।” অনেকটা এক নিঃশ্বাসে তিনি এটাও বলে ওঠেন, “উচ্ছন্নে যাক যুক্তরাষ্ট্র, আমি গোটা দেশটাকে ধ্বংস হতে দেখতে চাই।”
শুধু তা-ই নয়, তিনি উগ্র বর্ণবাদী বলেও পরিচিত ছিলেন। তার মারাত্মক ফ্যানরাও তাকে আবিষ্কার করতো বিরক্ত, নিরস এবং উদ্ধত একজন ব্যক্তি হিসেবে। তবে তার দাবার প্রতিভা নিয়ে কোনোদিনই কারো সন্দেহ ছিলো না।
ভার্জিনিয়া উলফ
সাহিত্যজগতে ভার্জিনিয়া উলফ একটি অবিস্মরণীয় নাম। আপনি যদি তার লেখা কোনো বই না-ও পড়ে থাকেন, তবু তার নাম শোনার একটা বড় রকমের সম্ভাবনা থেকে যায়। কারণ হিসেবে দুটো ব্যাপারকে বিবেচনা করা যায়- প্রথমত, বইগুলো দুর্দান্ত এবং দ্বিতীয়ত, লিটারারি আর্টে তার অসাধারণ কিছু অবদান। ফলে বিশ্বের শতকরা ৯৯ ভাগ লেখকের থেকে তিনি অনেকটাই বিখ্যাত। বর্তমানে কয়েক লক্ষ শিশু তার বই পড়ে, তার বই থেকে শেখে। তবে তিনি যদি এখন বেঁচে থাকতেন, তার বই ‘ট্রাস্ট ফান্ডবিহীন’ শিশুদেরকে পড়তে দেখলে রীতিমতো তুলকালাম কান্ড শুরু করে দিতে পারতেন। বুঝতে পারলেন না তো?
‘লেইজার ক্লাস’ বলতে সেসব মানুষদেরকে বুঝায়, যারা পায়ের উপর পা তুলে কোনো কাজকর্ম না করে আয়েশ করে জীবনযাপন করেন। আর এভাবে জীবনযাপন করার জন্য যে অঢেল সম্পত্তির মালিক হতে হয়, সেটা কে না জানে! আদতে উলফ ছিলেন সেই ‘লেইজার ক্লাস’ মানুষদের বড় সমর্থক। উলফের মতে, পড়াশুনা হলো বড়লোকি ব্যাপারস্যাপার, এগুলো এই ‘লেইজার ক্লাস’-এর মানুষদেরই মানায়।
তিনি নিজ গৃহে এই উচ্চ আত্মম্ভরিতাকে নিয়ে গিয়েছিলেন অন্য উচ্চতায়। তার লেখা ডায়েরিগুলো প্রথমবারের মতো প্রকাশ হওয়ার পর সেখানে সকলে আবিষ্কার করেন, তিনি তার গোটা ডায়েরিতে তার গৃহকর্মীদের যাচ্ছেতাই ভাষায় গালিগালাজ করে গেছেন। এমনকি তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে তিনি ঘৃণা থেকে করুণা, সবরকমের তিক্ত অনুভূতিগুলো ব্যাখ্যা করে গেছেন। তিনি যেমন মনে করতেন, এই দরিদ্র শ্রেণী হয়তো আরো ভালো কিছু পেতে পারতো, একই সময়ে তিনি এটাও ভাবতেন যে এরা কোনোদিনই তার মতো করে জীবনযাপন করতে পারবে না।
সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার, তার কর্মচারীদের কেউ যদি কোনো একটি আদেশ পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তিনি তৎক্ষণাৎ সেটাকে ডায়েরিতে তুলে রেখেছেন। উদ্দেশ্য? দরিদ্র শ্রেণীর মানুষগুলোর ‘নির্বুদ্ধিতা’র নিদর্শন রাখার প্রয়োজনীয়তা বোধ করতেন তিনি!
রিচার্ড ডকিন্স
বর্তমান অনলাইন বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয়গুলোর একটি হচ্ছে ‘মিম’ (Meme), যা দিয়ে মূলত সামাজিক, সাংস্কৃতিক কিংবা সাম্প্রতিক কোনো বিষয়কে ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে তুলে ধরা হয়। এই শব্দটি প্রথমবারের মতো ‘দ্য সেলফিশ জিন’ বইতে ব্যবহার করেন লেখক রিচার্ড ডকিন্স। বইটি তখনই ক্লাসিক হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিলো, এখনও বইটি বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পাঠ্যবই হিসেবে স্বীকৃত।
ডকিন্স অনলাইনে ছিলেন দারুণ সক্রিয়, বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছিলেন। ‘জনপ্রিয়’ শব্দটি উল্লেখ করা হলেও সেটা আদতে কিছুটা নেতিবাচক অর্থেই, কেননা অফলাইনে কিংবদন্তীতুল্য লেখক হলেও অনলাইনে তিনি হয়ে উঠেছিলেন জীবন্ত কমেন্ট ট্রল। তিনি প্রায়ই বিভিন্ন মানুষের ব্লগে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে তাদেরকে বিব্রত করার চেষ্টা করতেন। কীভাবে? একটা ছোট্ট গল্প শোনাই তবে।
স্কেপটিসিজমের উপর একটি কনফারেন্স শেষ করে দারুণ জনপ্রিয় একটি ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা রেবেকা ওয়াটসন যখন ফিরছিলেন, লিফটে একজন অদ্ভুতুড়ে লোকের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তার। হুট করেই সেই ভদ্রলোক রেবেকাকে সরাসরি তার রুমে আসার প্রস্তাব দিয়ে বসেন। সেটাও যেনতেন সময়ে নয়, ভোর চারটায়! রেবেকা পরে অনলাইনে এই অভিজ্ঞতার কথা জানান। আর সেখানেই কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ডকিন্স প্রচন্ড আপত্তিকর ভাষায় এবং বাজেভাবে একটি উস্কানিমূলক মন্তব্য করে বসেন। এমনকি তার নামের প্রথমাংশের জন্য ‘কৌতুক’ করে ‘মুসলিমা’ নামে সম্বোধন করেন। রেবেকা ব্যাপারটিকে খুব ভালোভাবে নিতে পারেননি। বলাই বাহুল্য, ডকিন্সের জন্য এহেন কর্মকাণ্ড মোটেই নতুন কিছু ছিলো না!
অ্যারিস্টটল
প্রাচীন বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত দার্শনিকদের একজন হিসাবে অ্যারিস্টটল সুপরিচিত। মৃত্যুর দু’হাজার বছর পরও তার জীবন এবং কাজ নিয়ে গবেষণা এবং পড়াশোনা অব্যাহত রয়েছে। অ্যারিস্টটল মূলত ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছেন সাধারণ কিছু নীতিশাস্ত্রের প্রবর্তন এবং বিজ্ঞানের বিশেষ কিছু শাখার জনক হিসেবে। তবে তার জীবনদর্শনটাও খুব একটা সুবিধার ছিলো না।
নারীদের প্রতি অ্যারিস্টটলের দৃষ্টিভঙ্গি এতোটাই বিস্তৃত ছিলো যে একটা আস্ত উইকিপিডিয়া পেজ পর্যন্ত রয়েছে! তার মতে, নারীদের হওয়া উচিত পুরুষের কাছে পরাধীন, নির্ভরশীল। তিনি এমনকি প্রতি বেলায় নারীদের খাবার খাওয়ারও অধিকার দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি আরো দাবি করতেন, নারীরা আসলে অসম্পূর্ণ পুরুষ, সুতরাং তারা নিকৃষ্ট।
কিন্তু তাতে কী? ২,০০০ বছর আগে তো সবারই এই একই ধারণা ছিলো, তা-ই না? আজ্ঞে না, বরং ঠিক উল্টোটা। তৎকালীন স্পার্টান নারীদেরকে পুরুষের সমমর্যাদায় দেখা হতো। স্পার্টার কুইন গারগোকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন, “কেন স্পার্টান নারীরা পুরুষদের উপর এমন অনায়াসে ছড়ি ঘুরাতে পারেন?” উত্তরটা গারগো দিয়েছিলেন দুর্দান্ত শক্তিশালী একটা কথা বলে, “কেননা শুধুমাত্র স্পার্টান নারীরাই স্পার্টান পুরুষ জন্ম দিতে পারে।” একদিকে অসাধারণ সাহসিকতায় বলীয়ান স্পার্টান নারীরা, অন্যদিকে সমসাময়িক অ্যারিস্টটলের এমন অদ্ভুত জীবনদর্শন, কোনোমতেই সেটাকে ঠিক আদর্শ বলে মেনে নেয়া চলে না।
স্যার আইজ্যাক নিউটন
আইজ্যাক নিউটনকে সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানীদের একজন হিসেবে স্মরণ করা হয়ে থাকে। পদার্থবিজ্ঞানের তিন গতিসূত্র থেকে শুরু করে গণিতের ক্যালকুলাস সহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তার অবদান অসীম। অনেকেই তার অর্জনগুলোর যেকোনো একটি করতে পারলেই যে বর্তে যেতেন, সে বিষয়ে বিশেষ সন্দেহ নেই। তবে তিনিও একদম নিপাট নিষ্কলুষ ভদ্রলোক ছিলেন, সেটা ঠিক দাবি করা যায় না।
রবার্ট হুকের নাম অনেকেই শুনেছেন নিশ্চয়ই। ঠিক ধরেছেন, রবার্ট হুকই জীবকোষের আবিষ্কারক। তিনিও ছিলেন অসাধারণ একজন বিজ্ঞানী, যাকে বলা হতো ‘ইংল্যান্ডের দ্য ভিঞ্চি’। তিনি এবং নিউটন একবার মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েন আলোকে একটি কণা বলা যায় কিনা, তা নিয়ে। এই দ্বন্দ্ব পরবর্তীতে আরো জঘন্যরূপ ধারণ করে, যখন নিউটন তার অভিকর্ষ তত্ত্ব প্রকাশ করেন। রবার্ট হুকও এই ব্যাপারে নিউটনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন এবং কিছুটা হলেও কৃতিত্ব আশা করেছিলেন। কিন্তু নিউটন সোজাসুজি তা দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন।
বস্তুত এই কাজটির মধ্য দিয়ে তিনি রবার্ট হুককে রীতিমতো ইতিহাসের পাতা থেকেই মুছে ফেলার মতো ভয়াবহ একটি কাজের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিলেন!
নিকোলা টেসলা
বর্তমানে নিকোলা টেসলা অনেকটাই প্রবাদপ্রতিম একজন ব্যক্তিত্ব, তার সম্পর্কে মিথ এবং সত্যি কিছু ঘটনা তাঁকে রীতিমতো কিংবদন্তীতে পরিণত করেছে। টেসলা ছিলেন দারুণ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন মানুষ, তার অনেক ধারণাই পরে সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। কখনও কখনও তা এতটাই বিস্ময়কর ছিলো যে তাকে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা ভেবে ভুল করে বসলেও খুব একটা দোষ দেওয়া চলে না। তবু আমরা আশা করবো, ২১০০ সাল নিয়ে টেসলার একটি ভবিষ্যদ্বাণী যেন কোনোক্রমেই বাস্তবতার মুখ না দেখে।
কিন্তু কী এমন কথা, যেটা বাস্তবতার মুখ না দেখাই ভালো?
১৯৩৫ সালে নাৎসিরা যখন তাদের ভয়ানক চরিত্রটি উন্মোচন করতে শুরু করেছিল, টেসলা তখন ‘লিবার্টি’ পত্রিকাটিতে কিছু ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার কথা লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আজ পর্যন্ত আমরা (অর্থাৎ মানবজাতি) দারুণভাবে টিকে আছি, বশে এনেছি প্রকৃতিকে। কিন্তু এই লম্বা যাত্রাপথে আমরা যেন কিছুটা দুর্বলতা দেখিয়ে চলেছি। মানুষের তুলনামূলক আবেগময় চরিত্রকে তিনি দুর্বলতার নাম দেন। এদেরকে তিনি অযোগ্যও ভাবেন। টেসলা দাবি করেছিলেন, ভবিষ্যতে (অর্থাৎ ২১০০ সাল নাগাদ) শুধু যোগ্যতমরাই টিকে থাকবে। এমনকি শুধুমাত্র যোগ্য ব্যক্তিরাই বিবাহের অনুমতি পাবে, যাতে করে কোনোক্রমেই ‘অযোগ্য’রা বংশবিস্তারের স্বপ্নও দেখতে না পারে!
সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপারটা কী ছিলো বলুন তো? টেসলা নিজেই আজীবন অকৃতদার ছিলেন!
জন লেনন
জন লেননকে বলা হয় সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী। ‘বীটলস’ ব্যান্ডের হয়ে এবং ব্যক্তিগত অ্যালবামে তার করা গানগুলো এখনও মানুষের প্লে লিস্টে অনায়াসেই জায়গা করে নেয়। আততায়ীর হাতে মৃত্যুর আগপর্যন্ত ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে, মৃত্যুর পর কিংবদন্তী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তিনিও ছিলেন একজন নিকৃষ্ট ব্যক্তিত্ব, যিনি মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীকে মারধর করতেন!
অবিশ্বাস্য মনে হলেও তিনি সত্যিই এটা করতেন। শুধু তা-ই নয়, তার জন্য অলিখিত নিয়ম হয়ে উঠেছিলো যেন সেটি। তিনি ‘প্লেবয়’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নিজেই সেটি স্বীকার করেছিলেন! যুক্তিটাও ছিলো অদ্ভুত; তিনি শান্তির দূত ছিলেন, কেননা তার মতে ‘একজন উগ্রতম ব্যক্তিত্বই শান্তি এবং ভালোবাসার ধারণাটি সবচেয়ে ভালো ধারণ করতে সক্ষম’!
স্টিভ জবস
‘অ্যাপল’ এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, যার মূল স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে স্টিভ জবস দারুণ জনপ্রিয়। তবে তাকে নিয়ে কদর্য কাজের রীতিমতো দীর্ঘ একটি তালিকাও দাঁড়িয়ে যেতে পারে। বস্তুত, বিজনেস ইনসাইডার ইতোমধ্যে সেই কাজটি করেও ফেলেছে!
ব্যক্তিগত জীবনে জবস ছিলেন দারুণ উগ্র মেজাজের একজন মানুষ, যিনি নিজের পিছিয়ে থাকাকে কোনোক্রমেই মেনে নিতে পারতেন না। আর সে কারণে তিনি যেকোনো উপায়েই হোক, সফলতা পেতে চাইতেন। সেই রাস্তায় কাউকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেখলে তাকে তিনি মোটেই ছেড়ে কথা বলতেন না। জবসের প্রিয় বন্ধু জন আইভকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে এমনই উত্তর পাওয়া গিয়েছিলো।
জবস ছিলেন বদমেজাজী এবং অতিমাত্রায় আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন একজন ব্যক্তিত্ব। হোটেল রুম পছন্দ হয়নি বলে হুট করে বেরিয়ে চলে এসেছেন মালিককে দু-চার কথা শুনিয়ে, ফুড মার্কেটে বৃদ্ধার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন, বাবা-মা তাকে কলেজ ছাড়তে বাধ্য করলে তিনি পরবর্তীতে তাদেরকে ‘গুড বাই’ বলার প্রয়োজনীয়তাও বোধ করেননি। আবার হুটহাট করে কর্মচারী বরখাস্ত করা, ক্লায়েন্টদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার সহ আরো হাজারো অভিযোগ রয়েছে তার সম্পর্কে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপারটা তিনি সম্ভবত করে বসেছিলেন ইন্টারভিউ বোর্ডে।
সেখানে একজন চাকরিপ্রার্থীকে তিনি সরাসরি জিজ্ঞেস করেছিলেন, “কত বছর বয়সে কুমারীত্ব হারিয়েছেন?” প্রার্থী অবাক হয়ে পুনরায় জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আমি ঠিক বুঝতে পারিনি আপনি কী জিজ্ঞেস করলেন!” জবস পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি কুমারী?” প্রার্থী সেখানেই হতভম্ব হয়ে বসে থাকাতে জবস প্রসঙ্গ বদলে ফেলেন অন্য একটি প্রশ্ন দিয়ে, “জীবনে কতবার এলএসডি নিয়েছেন?”
বলা বাহুল্য, চাকরির সাথে প্রশ্নগুলোর বিশেষ সাদৃশ্য ছিলো না বৈকি!
ফিচার ইমেজ- Theverge.com