৬৩৩ থেকে ৬৫৪ সাল পর্যন্ত সময়টা তাৎপর্যপূর্ণ। সাসানীয়দের সমাপ্তি টেনে গোটা পারস্য সাম্রাজ্যে এই সময়েই আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে আরবরা। হঠাৎ এ পরিবর্তনের দাগ কেবল জনগণের ধর্মের উপরই পড়েনি। পড়েছিল ভাষা ও সাহিত্যেও। আরবি হরফের আগমন সরিয়ে দিল প্রাচীন পাহলভী লিপিকে।
ভাষার ধাঁচ ইন্দো-ইউরোপীয় থাকলেও তাতে মিশে গেল প্রচুর আরবি শব্দ। নরম্যানদের ইংল্যাণ্ড অভিযানের পর স্যাক্সনদের ভাষার দশা যা হয়েছে, পারসিকদের অবস্থা ছিল অনেকটাই সেরকম। অন্যান্য সৃষ্টিকর্মকে ছাপিয়ে এখানেই অনন্য হয়ে উঠেছে ফেরদৌসীর ‘শাহনামা’ বা Book of Kings। পারসিক পরিচিতি ও জাতীয় সংস্কৃতিকে বুকে ধারণ করে যেন সগর্বে ঘোষণা করছে সেমেটিক আক্রমণের বিরুদ্ধে আর্যদের প্রতিক্রিয়া। সচেতনভাবে করুক বা অবচেতন থেকে। খুব সম্ভবত তা উপলব্ধি করেই সৃষ্টিকর্ম নিয়ে এতটা আত্মবিশ্বাস ছিল ফেরদৌসীর,
গত তিরিশ বছরের পরিশ্রমে এখন আমি শেষপ্রান্তে। আমার মৃত্যু হবে না। যে শব্দের বীজ বপণ করলাম, তা পুনর্জাগরিত করবে আজম (অনারব, বিশেষত পারসিক)-কে। যাদের বুদ্ধি ও জ্ঞান আছে, তারাই আমার প্রশংসা ও সুখ্যাতি প্রচার করবে, যখন আমি না থাকব।” (Ferdowsi, Shahnameh: The Persian Book of Kings, 2006, Translated by Dick Davis, New York: Viking)
ফেরদৌসী বৃত্তান্ত
৯৪০ সালে খোরাসানের তুস-এ যে নবজাতক জন্ম লাভ করে, সেদিন হয়তো তাকে কেউ চিনতেই পারেনি। প্রয়োজনবোধ করেনি তথ্যাবলি সংরক্ষণের। অথচ সেই শিশুটিই পরবর্তীতে স্বীকৃত হয়েছে ফার্সি সাহিত্যের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে। বিশ্বসাহিত্য তাকে আসন দিয়েছে হোমার, ভার্জিল এবং বাল্মিকীর পাশে। ১২২৩ সালে ফাতিহ বিন আলি বন্দারির দেয়া তথ্য মতে তার নাম আল-আমির আল-হাকিম আবুল কাসিম মানসুর ইবনে আল-হাসান আল-ফেরদৌসী আল-তুসি। যদিও ফেরদৌসী নামেই সমধিক পরিচিত। পরিবার ছিলো দিহকান। বলা বাহুল্য, প্রাচীন সাসানীয় যুগে দিহকান একটি বংশানুক্রমিক সামাজিক শ্রেণী, যারা স্থানীয় বিষয়াদি মীমাংসা করত। অর্থনীতি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরেও শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চায় ছিল বিশেষ খ্যাতি। ইসলামের আগমনে সবদিকে পরিবর্তন ঘটলেও কারো কারো মাঝে পূর্বতন ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণের মনস্তত্ব গড়ে ওঠে। ফেরদৌসী ছিলেন তাদেরেই একজন।
৯৭৭ সালে কবি দাকিকির মৃত্যুর পর তার লেখা এগিয়ে নেবার ইচ্ছায় শাহনামার কাজ শুরু। সামানীয় শাসক মানসুরের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথম সংস্করণ সমাপ্ত হয় ৯৯৪ সালেই। গজনভী বংশের মাধ্যমে সামানীয়রা উৎখাত হলে পুনঃলেখার কাজ শুরু করেন নতুন শাসকের অধীনে। ৮ই মার্চ, ১০১০ সালে শেষ হয়। ১০১৯ সালে মৃত্যুর আগে আরো কিছু লেখা থাকলেও তা সময়ের সাথে যুদ্ধ করে টিকতে পারেনি। ‘ইউসুফ ও জুলেখা’ নামে এক কাহিনীকাব্যকে তার সাথে সংশ্লিষ্ট করা হলেও আধুনিক পণ্ডিতেরা প্রত্যাখ্যান করেন। মৃত্যুর পর ফেরদৌসীকে তার বাগানে সমাহিত করা হয়। গজনভী গভর্নর সেখানে সৌধ নির্মাণের নির্দেশ দেন। কালের বিবর্তনে ক্ষয়িষ্ণু সৌধ ১৯২৮-৩৪ সালে রেজা শাহের পৃষ্ঠপোষকতায় পুনঃনির্মাণ করা হয়। বর্তমানে তা জাতীয় সৌধের মর্যাদায় অভিষিক্ত। বাংলায় ফররুখ আহমদ তাকে নিয়ে একটা সনেট লিখেছেন,
মিশেছে তাজ ও তখত কায়কোবাদ, কায়কাউসের
তোমার অরণ্য তবু সজীব, শ্যামল চারাগাছে,
তোমার প্রতিভা-দীপ্তি মানে নাই শতাব্দীর ঘের
আজো সে বিলায় দ্যুতি দূরতম নক্ষত্রের কাছে।(ফেরদৌসী, মুহূর্তের কবিতা)
শাহনামা
শাহনামা মহাকাব্য প্রাচীন ইরানীয় কিংবদন্তী এবং ইতিহাসের মৌলিক মিশ্রণ। যুগ যুগ ধরে আখ্যানগুলো মানুষের মুখে মুখে চর্চিত হয়ে এসেছে। সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে সংকলন এবং সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলেছে। সেদিক থেকে এটি ইরানের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যগত সমৃদ্ধির দীর্ঘ ইতিহাসের সর্বশেষ সফল ও পরিণত উদাহরণ। ৬০,০০০ শ্লোক বিশিষ্ট শাহনামা বৃহত্তর ইরানের জাতীয় মহাকাব্য হিসাবে স্বীকৃত। প্রভাবিত করেছে তুর্কি, জর্জিয়া ও আর্মেনিয়ার মতো অন্যান্য পার্শ্ববর্তী সংস্কৃতিকেও। পৌরাণিক যুগে সৃষ্টির শুরু থেকে সপ্তম শতকে সাসানীয়দের পতন পর্যন্ত সময়কালে পারস্যের উত্থান-পতন বর্ণনা করা হয়েছে সাবলীল কবিতায়।
পারসিক জাতীয়তাবাদী এবং জরাথুস্ত্রবাদীদের কাছেও তাৎপর্যপূর্ণ দলিল হিসাবে স্বীকৃত এই মহাকাব্য। মধ্যযুগীয় পারসিক ভাষায় ইরানীয় ইতিহাস অনেক আগে থেকেই লিখিত ছিল। গদ্যাকারে লিখিত এই সংকলন জাদাইনামাগ নামে পরিচিতি পায়। সাসানীয় আমলের শেষ দিকে সৃষ্টির শুরু থেকে দ্বিতীয় খসরু (৫৯০-৬২৮) পর্যন্ত সময়কে গ্রন্থিত করা হয়। প্রথমবারের মতো কবিতায় রূপান্তরের প্রচেষ্টা চালান ফেরদৌসীর সমসাময়িক কবি দাকিকি (৯৩৫-৯৭৭)। কিন্তু মাত্র ১,০০০ পংক্তিতেই তার জীবনাবসান ঘটলে ফেরদৌসি এগিয়ে আসেন। সাহায্য নেন অনেক পাহলভী উৎসের। তার মধ্যে ‘কার নামাগ-ই আরদাশির-ই পাবাগান’কে উৎস হিসাবে সঠিক বিবেচনা করা হয়। সেখানে সম্রাট আরদাশির কীভাবে ক্ষমতায় আরোহন করলেন ও তার ঐতিহাসিক বিবরণী তুলে ধরা আছে।
কেউ কেউ ‘খোদায় নামেহ’ নামক একটি সাসানীয় আমলের গ্রন্থকেও শাহনামার পূর্বসূরী বলে দাবি তুলতে চান।
কাহিনীর কিঞ্চিত স্বাদ
উপকথা ও ইতিহাস পরস্পর মাখামাখি হয়ে আছে শাহনামাতে। সৃষ্টির শুরু থেকে আরবদের পারস্য অভিযান পর্যন্ত। কিছু চরিত্রকে কয়েকশো বছর জীবিত দেখা গেলেও সাধারণ ক্ষেত্রে আয়ু স্বাভাবিক। রাজা যায়, রাজা আসে। এক দৈত্যের মৃত্যু হয়, আরেক খলনায়ক জন্মলাভ করে। শুধু অপরিবর্তিত পারস্য নিজে। যেন সে-ই মূল নায়ক। পুরো শাহনামাকে তাই তিনটা ক্রমিক যুগে ভাগ করা যার। পৌরাণিক যুগ, বীরদের যুগ এবং ঐতিহাসিক যুগ।
পৌরাণিক যুগ
এই অংশের পরিসর অপেক্ষাকৃত অল্প। শুরু হয় আল্লাহর প্রতি প্রশংসা প্রেরণের মাধ্যমে। তারপর বিশ্ব সৃষ্টি ও প্রথম মানুষ কাইয়ুমারসের আবির্ভাব। সভ্যতার মৌলিক প্রয়োজনসমূহ ও তাদের উদ্ভাবনের বর্ণনা করা হয় এরপরেই। জামসেদের সাতশো বছরের রাজত্বকালে জাহহাক নামে এক দানবের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়, যার ধমণীতে আরব রক্ত ছিল।
তাকে পরাজিত করার জন্য আবির্ভূত হন ফারেদুন। ফারেদুনের আখ্যান বেশ রোমাঞ্চকর। তিনি গোটা পৃথিবীকে তিন ভাগ করে তিন পুত্র- ইরাজ, তুর ও সালমকে দিয়ে যান। ষড়যন্ত্র করে ইরাজকে হত্যা করে অপর দুই ভাই। ইরান ও তুরানের সংঘাতের সূত্রপাত এখান থেকেই।
বীরদের যুগ
শাহনামার দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে বীরদের আখ্যান। ইরাজের পুত্র মনুচেহের থেকে শুরু। পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে দেরি করেন না মনুচেহের। তার সময়ে সাম নামক এক বীরের কথা জানা যায়।
মনুচেহেরের পুত্র জাল প্রেমে পড়েন রুদাবার। তাদের সন্তান রুস্তম শাহনামায় স্থান পাওয়া সমস্ত বীরের থেকে বেশি শক্তিশালী। বিভিন্ন রাজত্বকালে তার আয়ু তিনশো বছরেরও বেশি। মনুচেহেরের রাজত্বকালে জন্ম নিয়ে গুশতাস্পের সিংহাসন আরোহন পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। শাহ এসফানদিয়ারকে হত্যার প্রতিশোধ হিসাবে তাকে বিশ্বাসঘাতকতা করে হত্যা করা হয়। রুস্তমের অধিকাংশ বীরোচিত কাজ সংঘটিত হয় শাহ কাউসের আমলে। শিয়াউসের সময়কালেও অব্যাহত থাকে তা। পুত্র সোহরাবের সাথে রুস্তমের যুদ্ধ ও সোহরাবের দুঃখজনক মৃত্যু সবথেকে বেশি জনপ্রিয় আখ্যানগুলোর একটি।
সে যা-ই হোক, ইরান-তুরান সংঘাত আবার তেতে ওঠে শাহ কাউস এবং তার পুত্র শিয়াউসের বিবাদের কারণে। শিয়াউস পালিয়ে গিয়ে তুরানের রাজা আফরাসিয়াবের কাছে আশ্রয় নেয়। প্রথমে আফরাসিয়াব নিজ কন্যার সাথে শিয়াউসের বিয়ে দিলেও পরে অসন্তুষ্ট হয়ে হত্যা করেন। সেখানেই বেড়ে ওঠে পুত্র কায় খসরু। আফরাসিয়াবকেও প্রতিদানে হত্যা করা হয়। আখ্যানের এই অংশে সংযুক্ত বিজান ও মনিজাহর প্রেমকাহিনী।
কায় খসরুর পর কাইয়ানিদ বংশের সমান্তরাল শাখার লোহরাস্প সিংহাসনে আরোহন করেন। তার পুত্র গোশতাস্প বিয়ে করেন পূর্ব রোমের সিজারের মেয়েকে। তার আমলেই পুত্র এসফানদিয়ার কর্তৃক সমর্থিত জরাথুস্ত্র তার নতুন ধর্মমত প্রচার করেন। এসফানদিয়ারের মৃত্যু হয় রুস্তমের হাতেই। তারপর দারিউস ক্ষমতায় আসেন। দারিউসের রাজত্বকাল শেষ হলে ইসকান্দার (আলেকজান্ডার)- এর অভিযান শুরু হয়। তার কিছু দুঃসাহসিক অভিযানের উপকথার বিবরণের সাক্ষাৎ মিলে।
ঐতিহাসিক যুগ
ইসকান্দারের পরেই আরদাশিরের প্রসঙ্গ আসে। আর সেই সাথে শাহনামা তার রচনার ঐতিহাসিক অংশে প্রবেশ করে। যদিও বিক্ষিপ্তভাবে কিছু উপকথা স্থান পেয়েছে, তথাপি এ পর্যায়ে ঐতিহাসিক সত্যতার মাত্রা নেহাত মন্দ না। আরদাশিরের পর শাপুর, বাহরাম, খসরু এবং কোবাদের মতো শাসকদের উত্থান-পতন ও ক্ষমতার টানাপোড়েন অত্যন্ত যত্নের সাথে তুলে ধরা হয়েছে।
শেষ শাহ ইয়াজদিজার্দের সময়কালে জনৈক সেনাপতি দ্বিতীয় রুস্তমের পরিচালিত বাহিনীর সাথে আরবদের সংঘর্ষ ঘটে। কাদেসিয়ার এই যুদ্ধে পতন ঘটে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করে রাখা ইরানীয় সাম্রাজ্যের। আরবদের অভিযান ও সংঘর্ষকেও সাবলীল নাটকীয়তার ভেতর দিয়ে চিত্রিত করেছেন মহাকবি ফেরদৌসি। তারপর কিছু সংখ্যক তারিখসহ দীর্ঘ কাহিনীর সমাপ্তি টানা হয়েছে একটা সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদে।
চরিত্র চিত্রণ
ছোট ছোট কাহিনী নিয়ে রচিত উপাখ্যানটি সংযোজিত হয়েছে খুবই আলগাভাবে। ইতিহাসের কাহিনীর উপযুক্ত কালক্রম অনুসরণ করা হয়নি। বছরের পর বছর ধরে কাহিনীগুলো প্রচলিত ছিল। গঠন পর্যালোচনা করে অবাক হতে হয় প্রায়শঃ। মূলত শেকসপিয়ারের ভাষা ও শাহনামার ভাষায় রয়েছে অদ্ভুত মিল। মিলনাত্মক ও বিয়োগাত্মক- উভয় নাটকীয় ধাঁচই বিদ্যমান। ইতিহাসের উৎস থেকে উদ্ভিদবিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা। খুব সাবলীলভাবে উঠে এসেছে। রাজা ও বীরদের জন্য বিলাপ এবং সূর্যোদয়ের বর্ণনাকে উচ্চ শৈল্পিক মাত্রায় নিয়ে গেছেন তিনি। এ দুয়ের জৈবিক যোগসূত্র দ্বৈত-সঙ্গীতের মতো প্রবাহিত হয়।
পুনরাবৃত্তির ত্রুটি থেকে মুক্ত থাকার জন্য ফেরদৌসী বেছে নেন শক্তিশালী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিল্প-আঙ্গিক। প্রয়োগ করা হয় কাব্য শিল্পের পূর্ণ শক্তিকে। তাই প্রতি দুটি সূর্যোদয়ের দৃশ্য কিংবা প্রতি দুটি বীরের জন্য শোকগাঁথা একরকম নয়। অস্ত্রের ঝনঝন, বীরে বীরে সংঘাত, জন্ম-মৃত্যু, শিকার কিংবা কামকেলি- সবকিছুকে ছাপিয়ে মুখ্য হয়ে উঠেছে কবির জন্মভূমি ইরানের গল্প। সেই গল্প কেবল মাটিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি, এসেছে সমুদ্র এবং আকাশও। অভিযানমুখর রাজারা যেখানে জমিনে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসাবে ভূমিকা পালন করেন। বেঁচে থেকে যুদ্ধ করেন শত শত বছর। সমগ্র কাব্যে জাতীয় শত্রুর সাথে যুদ্ধ করা উপস্থাপিত হয়েছে ভালো আর মন্দের মধ্যে দ্বন্দ্ব হিসাবে। যেখানে দিনশেষে ভালোরই জয় হয়।
এবং তারপর
শাহনামাতে সময়ের ব্যবধানে ৫০ জন শাসকের উত্থান-পতনকে তুলে আনা হয়েছে, যা শুরু হয়েছিল প্রথম মানুষ কাইয়ুমারস থেকে এবং শেষ হয়েছে ইয়াজদিজর্দের পতনের মধ্য দিয়ে। ছয় হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেন পরবর্তী প্রজন্ম ভুলে না বসে, অনেকটা এজন্যই ফেরদৌসীর প্রয়াস। শাহনামা ফার্সি ভাষাকে যে ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে গেছে, এক হাজার বছর পরেও তা অপরিবর্তিত। এই জন্যই মহাকবি গ্যাটে ফার্সি সাহিত্যর সুনাম করে লিখে গেছেন তার West-East Divan। এজন্যই তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল সাদী, জামী, রুমি, হাফিজ, আত্তার কিংবা সানাইয়ের মতো পরবর্তী দুনিয়া কাঁপানো ফার্সি কবিরা। দ্বাদশ শতকের কবি খাকানি যথার্থই বলেন,
বিষাদ গূঢ় অন্ধকারে জ্ঞানীর গাঢ় বাতি
ফেরদৌসীর কথার সাথে তুল্য শুধু তাই;
ফেরেশতাদের মতোন সেই তীব্র অনুভূতি
অমন করে লিখবে যারা ফেরেশতা তারাই।(লেখক কর্তৃক অনূদিত)
বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন অনুবাদ থাকলেও বাংলা ভাষায় শাহনামার সবথেকে প্রামাণ্য অনুবাদ ৬ খণ্ডে প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। প্রাঞ্জল এই অনুবাদ প্রায় ১৭ বছর সময় নিয়ে করেছেন মনিরউদ্দীন ইউসুফ ‘ফেরদৌসীর শাহনামা’ নামে।