মূল শ্লোকটি ছিল-
अश्वत्थामा हत: इति तरो वो कुंजरो वा
(উচ্চারণ – অশ্বত্থামা হতঃ ইতি নর বা কুঞ্জর বা)
অর্থাৎ, অশ্বত্থামা আর নেই, তবে সে মানুষ নাকি হাতি তা বলতে পারব না।
মহাভারতের বহুল প্রচলিত বা প্রচারিত শ্লোকগুলোর ভেতর এটি অন্যতম। আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে লিখিত এ বই সর্বযুগেই ছিল যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক এবং গুণে-মানে অসামান্য। মূল মহাভারত সংস্কৃতে লেখা হলেও মোটামুটি ভারতের প্রধান প্রধান আঞ্চলিক ভাষায় এর অনুবাদ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে মহাভারত এবং এর কাহিনী সর্বভারতীয় কৃষ্টি বা লোকজ সাহিত্য উপাদানে পরিণত হয়েছে। বিজ্ঞ ব্যাসমুনি মহাভারতকে অনেকগুলো পর্বে ভাগ করেছেন। পর্বগুলোর মধ্যে দ্রোণ পর্বে পূর্বোক্ত শ্লোকটির উল্লেখ করা হয়েছে। পর্বটিতে প্রধানত গুরু দ্রোণের বধের কাহিনী বিস্তরে বর্ণনা করা হয়েছে।
গুরুদেব দ্রোণ ছিলেন একশ কৌরব ও পঞ্চপাণ্ডবদের শিক্ষক, ভরদ্বাজ মুনির পুত্র এবং অশ্বত্থামার পিতা। ব্রাহ্মণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি ক্ষত্রিয়ের ন্যায় জীবন-যাপন করেছেন। পরশুরামের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে অস্ত্রশিক্ষা লাভ করেন। তিনি ছিলেন মহাভারতের মহারণে একমাত্র ব্যক্তি, যার কাছে ছিল একসাথে দিব্যাস্ত্র ও ব্রহ্মাস্ত্র। দ্রোণাচার্য ভগবান শিবকে তুষ্ট করে এমন পুত্রের বর লাভ করেন, যে হবে শিবের ন্যায় মহাশক্তিধর। জন্মের পর অশ্বের ডাকের মতো হ্রেষাধ্বনিতে ক্রন্দন করায় শিশুটির নামকরণ করা হয়েছিল অশ্বত্থামা। তার কপালে ছিল একটি মণি, যেটি তার পূর্বজন্মের পুণ্যের ধারক। এ মণি তাকে শক্তি দিত। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, জরা, ভয়, ভূত-পিশাচ, দক্ষ-গন্ধর্ব থেকে তাকে রক্ষা করত।
প্রাণাধিক প্রিয় পুত্রকে দ্রোণাচার্য কৌরব ও পাণ্ডব রাজকুমারদের সাথে শিক্ষিত করতে থাকেন। পিতার প্রতিষ্ঠিত গুরুকূলে অশ্বত্থামার মিত্রতা হয় জ্যেষ্ঠ কৌরব দুর্যোধনের সাথে। কৌরব ও পাণ্ডবরা এক রণাঙ্গনে এসে দাঁড়ালে পুত্রের মন রক্ষার্থে গুরু দ্রোণ অনিচ্ছা সত্ত্বেও কৌরব শিবিরে এসে যোগ দেন। বড় বড় রথী-মহারথীরা স্ব স্ব পক্ষে যুদ্ধে দাঁড়িয়ে পড়েন। রাজ্যোদ্ধারের যুদ্ধ পরিণত হয় ধর্মযুদ্ধে। শ্রীকৃষ্ণ অস্ত্র না তুলে পরামর্শ ও হিতোপদেশের মাধ্যমে প্রিয় পার্থ অর্জুন এবং পাণ্ডব শিবিরকে সহায়তা করতে থাকেন। তিনি কৌরব পক্ষের মহারথীদের দুর্বলতার জায়গাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বধের উপায় বাতলে দিতেন পাণ্ডবদের।
ভীষ্ম পিতামহের শরশয্যা লাভের পরে কৌরবরা গুরু দ্রোণকে সেনাপতি হিসেবে অভিষিক্ত করে। মহাপ্রতাপী দ্রোণের নেতৃত্বে কৌরব শিবির আবার কোমর সোজা করে দাঁড়ায়। যুদ্ধের নিয়ম ছিল, সূর্যাস্তের পরে আর যুদ্ধ করা যাবে না। বিরতির শঙ্খ বাজার পরে যোদ্ধারা অস্ত্র ছেড়ে নিজ শিবিরে গমন করতেন। রাতে বিজ্ঞ ও ধর্মপ্রাণ মহারথীদের ধর্ম বিষয়ক আলোচনা সভা বসত। এ ব্যাপারে ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের আগ্রহই বেশি ছিল। কৃষ্ণ, ভীষ্ম, শল্য, দ্রোণ, কৃপ ছাড়াও অনেকেই সে সভায় উপস্থিত হতেন। একদিন সভাশেষে দ্রোণ তার তাবুতে ফিরলে অশ্বত্থামা এসে যুদ্ধে জয়ের আশীর্বাদ বা বর চেয়ে বসে পিতার কাছে। গুরু দ্রোণ যথেষ্ট বিরক্ত হন। দ্রোণ তাচ্ছিল্যভরে পুত্রকে প্রশ্ন করেন,
“তোমার নিজের বীরত্বের উপর কি আর আস্থা নেই? আমার আশীর্বাদের শক্তিতে জিততে চাও?”
পিতার কথায় অশ্বত্থামার আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। পরদিন তিনি রণক্ষেত্রে পাণ্ডবদের পক্ষে অংশগ্রহণকারী রাক্ষসদের বিরাট অংশকে ধুলিসাৎ করেন এবং ঘটৎকচপুত্র অঞ্জনপর্বনকে বধ করেন। যুদ্ধের চৌদ্দতম দিন রাতে যেদিন সন্ধ্যায় অর্জুন দুর্যোধনের ভগ্নিপতি জয়দ্রথকে বধ করে, দুর্যোধন দ্রোণাচার্যকে দোষারোপ করতে থাকে এই বলে যে তিনি ইচ্ছে করে পাণ্ডবদের বধ করছেন না এবং তিনি বিশ্বাসঘাতক। বৃদ্ধ দ্রোণ দুর্যোধনের কথায় ক্ষিপ্ত হন। তখনই গুরু দ্রোণ ব্রহ্মাস্ত্রের আবাহন করেন এবং পাণ্ডব সেনাদের উপরে পতনের ইচ্ছে করেন। ব্রহ্মাস্ত্র দৃশ্যমান হওয়ার পরে তড়িৎ সপ্তঋষি এসে সেখানে উপস্থিত হন। তারা দ্রোণকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। পরের দিন দ্রোণাচার্যের ক্রোধবহ্নির শিকার হয় পাণ্ডব শিবির। তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়।
দ্রোণাচার্য পঞ্চপাণ্ডবের শ্বশুর রাজা দ্রুপদ এবং অজ্ঞাতবাসের বছরে পাণ্ডবদের আশ্রয়দাতা বিরাট রাজাকে হত্যা করেন। বিরাট ও দ্রুপদের পতনের পর যুধিষ্ঠিররা নড়েচড়ে বসে। শ্রীকৃষ্ণ একটি বুদ্ধি আটেন দ্রোণকে ধরাশায়ী করার। তিনি দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীমকে বলেন পাণ্ডবমিত্র রাজা ইন্দ্রবর্মার হাতি অশ্বত্থামাকে বধ করে উল্লাসিত কণ্ঠে প্রচার করার ‘অশ্বত্থামাকে আমি মেরে ফেলেছি’ এবং পুত্রের মৃত্যুসংবাদ শুনে দ্রোণ হতোদ্যম হয়ে অস্ত্র ত্যাগ করলে অর্জুন যেন তাকে বধ করে। অর্জুন এতে অপারগতা প্রকাশ করে।
অর্জুন বলেন,
“আমি ক্ষমাপ্রার্থী, হে মাধব। আমি আমার গুরুকে ছলনার আশ্রয় নিয়ে বধ করতে পারব না এবং এ ধরনের পাপের ভাগীদার হয়ে আমি যুদ্ধ জিততে চাই না”।
প্রত্যুত্তরে কৃষ্ণ বলেন,
“তুমি কে এই যুদ্ধ হারার বা জেতার। তোমার একমাত্র ধর্ম-অধর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করা। সেটিই করো তুমি। কর্ম করে যাও ফলাফল নিয়ে ভেবো না কারণ ফলে তোমার কোনো হাত নেই”।
তারপর, অর্জুন গুরু-শিষ্য পরম্পরার কথা এবং ব্রহ্মহত্যার প্রসঙ্গ তুললে কৃষ্ণ পাণ্ডবদের বলেন,
“আজকের এ কুরুক্ষেত্রে ধর্ম তোমাদের দিকে চেয়ে আছে। একমাত্র তোমরাই পারো ধর্মকে রক্ষা করতে। গুরু দ্রোণ জন্মসূত্রে একজন ব্রাহ্মণ হলেও জীবনাচরণে ছিলেন একজন ক্ষত্রিয়। ক্ষমা ও ধৈর্য একজন ব্রাহ্মণের চরিত্রে সবসময় বিরাজ করে। দ্রোণাচার্য কি সেরকম কোনো ব্রাহ্মণ ছিলেন? তিনি তো দ্রুপদকে ক্ষমা করে দিতে পারতেন? তা কি তিনি করেছিলেন? কৌরব ও পাণ্ডবদের শিক্ষার শেষে তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে গুরুদক্ষিণা চেয়ে বসেন দ্রুপদ রাজাকে যুদ্ধে পরাজয়ের। ধর্মরক্ষার স্বার্থে এটুকু ছলনার আশ্রয় নেওয়া কোনো অন্যায় নয়।”
কৃষ্ণের ভাষণের পরে ভীম দৌড়ে গিয়ে তার গদা দিয়ে হাতি অশ্বত্থামাকে বধ করে মধ্য রণক্ষেত্রে গিয়ে গদা উচিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকে ‘অশ্বত্থামাকে আমি এই গদা দিয়ে অশ্বত্থামাকে বধ করেছি’ ‘অশ্বত্থামা আর নেই’ । দ্রোণাচার্য এ সংবাদ শুনে হতভম্ব হয়ে যান। তার বিশ্বাস হয় না। তিনি ভীমকে বলেন, একমাত্র ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের মুখ থেকে শুনলেই বিশ্বাস করব। কারণ যুধিষ্ঠির কখনো মিথ্যা বলে না। দ্রোণ যুধিষ্ঠিরের সম্মুখে এসে জিগ্যেস করেন, ‘পুত্র যুধিষ্ঠির, অশ্বত্থামা কি সত্যি মারা গিয়েছে?’
উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেন,
“অশ্বত্থামা হতঃ ইতি কুঞ্জর।”
ইতি কুঞ্জর এ অংশটি বলেন মৃদুস্বরে যাতে দ্রোণাচার্যের কানে না পৌঁছে। যুধিষ্ঠিরের কথায় দ্রোণাচার্যের চেতনা হারানোর উপক্রম হয়। তিনি ধনুর্বাণ ত্যাগ করে তপস্যায় উপবেশন করেন। অশ্বত্থামার আত্মাকে খুঁজতে দ্রোণের আত্মা দেহ ত্যাগ করে স্বর্গে প্রবেশ করে। নিথর দেহ সাধনার আসনে যুদ্ধক্ষেত্রে পড়ে থাকে। সুযোগ পেয়ে পাণ্ডবসেনাদের সেনাপতি ধৃষ্টদ্যুম্ন তলোয়ার দিয়ে দ্রোণাচার্যের মুণ্ডুপাত করে। ধৃষ্টদ্যুম্ন ছিল রাজা দ্রুপদের পুত্র এবং দ্রৌপদীর জেষ্ঠ্যভ্রাতা। দ্রোণের কাছে পরাজিত ও অপদস্থ হওয়ার পরে দ্রুপদ পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করে দেবতাদের কাছে এমন বীর্যবান পুত্রের প্রার্থনা করে যে দ্রোণের নিপাত করতে পারবে। দেবতারা তুষ্ট হয়ে ধৃষ্টদ্যুম্নকে প্রেরণ করার সাথে সাথে এক মহাগুণবতী পুত্রীও দান করে দ্রুপদকে। পরে দ্রৌপদী বা পাঞ্চালী নামে পরিচিত হয় দ্রুপদের সে পুত্রী। দ্রোণকে বধের মাধ্যমে ধৃষ্টদ্যুম্ন তার প্রতিশোধ পূরণ করেন।
পিতৃহত্যার খবর শুনে অশ্বত্থামা ক্রোধে ফেটে পড়েন। তিনি নারায়ণ অস্ত্রের আবাহন করেন। নারায়ণাস্ত্র বা বৈষ্ণবাস্ত্রের প্রলয়ঙ্করী রূপ পাণ্ডবসেনাদের ভেতর ত্রাসের সঞ্চার করে। ত্রাহি ত্রাহি রব উঠে পাণ্ডব শিবিরে। এবারও বৈতরণী পার করালেন ভগবান শ্রী মধুসূদন। তিনি পাণ্ডবদের নিরস্ত্র হয়ে ভক্তিভাব নিয়ে নারায়ণাস্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে নমস্কার করতে বললেন। সবাই তাই করল। নারায়ণাস্ত্রের বিশেষত্ব হলো এটি নিরস্ত্র এবং নত কাউকে আহত করে না। সবাই পরিত্রাণ পেল এক ভীম ছাড়া। অশ্বত্থামা নারায়ণ অস্ত্রের আবাহন করার পরে ভীম তার গদা ছুড়ে মারলে নারায়ণাস্ত্র ছুটে আসে ভীমকে গ্রাস করার জন্য। শ্রীকৃষ্ণ এসে ভীমকে রক্ষা করেন।
অশ্বত্থামার বৈষ্ণবাস্ত্র পাণ্ডবদের কোনো অনিষ্ট করতে পারে না। প্রথমবার ব্যর্থ হওয়ার পরে দুর্যোধন অশ্বত্থামাকে আরেকবার বৈষ্ণবাস্ত্র প্রয়োগের আদেশ করলে অশ্বত্থামা বলেন, মিত্র, একবার ব্যর্থ হওয়ার পরে এ অস্ত্র আর প্রয়োগ করা যায় না করলে প্রয়োগকারীরই অনিষ্ট হয়।
এদিকে পাণ্ডবশিবিরে দ্রোণাচার্য বধের পরে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে সবাই। যুধিষ্ঠির শোকে ও পরিতাপে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। অর্জুন তার গাণ্ডীব হাতে নিয়ে ধৃষ্টদ্যুম্নকে বধ করতে উদ্যত হলে দ্রৌপদী এসে তাকে এই বলে নিবৃত্ত করে যে, ‘হস্তিনাপুরের রাজসভায় যখন আমার অপমান করা হয়েছিল তখন গুরু দ্রোণ নিশ্চুপ ছিলেন। অর্থাৎ, শুদ্ধ অন্তঃকরণে তিনিও ধর্মপালন করতে পারেননি। তাই, তার বধ অনেহ্য নয়।’
কৃষ্ণ বলেন, “ধৃষ্টদ্যুম্ন পাণ্ডবশিবিরের সেনাপতি। তুমি তার অধীনে যুদ্ধরত একজন মহারথী। তোমার তার প্রতি অস্ত্র উত্তোলন হবে অন্যায়। যদি শিষ্য হিসেবে গুরুহত্যার প্রতিশোধ নিতে চাও সে নিও- কিন্তু সেটা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে।” আঠেরো দিনের যুদ্ধ শেষে পাণ্ডবদের জয় হয়। দুর্যোধনের উরুভঙ্গ করে ভীম। মিত্র হিসেবে অশ্বত্থামা দুর্যোধনের শেষ ইচ্ছে ‘পাণ্ডবদের বধ’ পূরণ করার প্রতিজ্ঞা করে। পঞ্চপাণ্ডবের জায়গায় অন্ধকারে পঞ্চপাণ্ডবদের পাঁচ পুত্রকে বধ করে অশ্বত্থামা। দুর্যোধন এ সংবাদ পাওয়ার পর হাসিমুখে প্রাণ ত্যাগ করে।
পঞ্চপাণ্ডব পুত্রদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে অশ্বত্থামাকে আক্রমণ করে। অর্জুন ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করলে অশ্বত্থামাও ব্রহ্মাস্ত্রের প্রয়োগ করে। ব্যাসমুনি এসে দুজনকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। অর্জুন ব্রহ্মাস্ত্র ফিরিয়ে নিতে জানলেও অশ্বত্থামা জানত না। সে তার ব্রহ্মাস্ত্রের দিক বদলে অর্জুনের পুত্রবধূ উত্তরার গর্ভে নিক্ষেপ করে। উত্তরার গর্ভের শিশুকে রক্ষার্থে শ্রীকৃষ্ণ তপবলে সে অস্ত্রকে প্রশমিত করেন। গর্ভের শিশু জন্মের আগেই মৃত্যুস্বাদ লাভ করে তাই তার নামকরণ করা হয় পরীক্ষিত (যে পরীক্ষিত)। শ্রীকৃষ্ণ সুদর্শন চক্র দিয়ে অশ্বত্থামার কপালের মণি কেটে নেন এবং সেখানে সৃষ্টি হয় এক গুরুতর ঘা। ক্রোধান্বিত হয়ে কৃষ্ণ তাকে অভিশাপ দেন–
“আজ থেকে পুরো পৃথিবীর পাপের ভার মাথায় নিয়ে তুই ঘুরবি এক অশরীরী প্রেতের ন্যায়! প্রেম, তৃপ্তি, শান্তি কখনও পাবি না তুই! পুরো সমাজ তোকে পরিত্যাগ করবে! আদর, স্নেহ, মমতা তোকে স্পর্শ করবে না একদম! কীট-পতঙ্গ হবে তোর সঙ্গী! প্রতিটি ক্ষণ মৃত্যুর জন্যে আহাজারি করবি তবুও মৃত্যু তোকে স্পর্শ করবে না! কলি কালের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এই দশায় ভুগতে হবে তোকে!”
কৃষ্ণের অভিশাপে অশ্বত্থামা অমরত্ব লাভ করে ঠিকই কিন্তু সে অমরত্ব পরিণত হয় মহাপীড়ায়। আটজন ‘চিরঞ্জীবী’র (পুরাণমতে যারা অমর) একজন হয় অশ্বত্থামা। হিন্দুধর্মমতের অনেকেই বিশ্বাস করে এখনও অশ্বত্থামা বেঁচে আছে। ভারতে অশ্বত্থামার বেঁচে থাকার এবং তাকে দেখার অনেক কিংবদন্তি চালু আছে। কেউ কেউ নাকি দালিলিক প্রমাণও পেশ করে!