আরব-পারস্যের লায়লা-মজনু, শিরি-ফরহাদের মতো উপমহাদেশের সর্ববিদিত প্রেমের কিংবদন্তী হলো হীর-রাঞ্ঝা। পাঞ্জাবের বিয়োগান্তক এই অমর গাঁথার দুই মূল চরিত্র হীর-রাঞ্ঝা কিন্তু কল্পনার কোনো চরিত্র নয়। বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ফয়সালাবাদের ঝং শহরে আছে এই দুই প্রণয়বিহগের সমাধি। তবে লোকমুখে তাদের এই প্রেমগাঁথা পেয়েছে নানা রূপ। অনেকটা কারবালার বাস্তব ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে যেমন নানা উপকথা ও ফিকশনধর্মী সাহিত্য গড়ে উঠেছে, তেমনটিই ঘটেছে হীর-রাঞ্ঝার ক্ষেত্রেও। পাঞ্জাবের তিন অমর প্রেম কিংবদন্তী হলো মির্জা-সাহিবান, সোনি-মাহিয়াল ও হীর-রাঞ্ঝা। এদের মধ্যে পাঞ্জাবসহ পুরো উপমহাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় গাঁথাটি হীর-রাঞ্ঝারই। এ জনপ্রিয়তার পিছে রয়েছে যার হাত, তিনি হলেন ওয়ারিস শাহ। পাঞ্জাবের এই লেখকের ১৭৬৬ সালে লেখা ‘হীর’ উপন্যাস থেকেই ‘হীর-রাঞ্ঝা’ বিক্ষিপ্ত উপকথা থেকে ঘনীভূত হয় হৃদয়গ্রাহী সাহিত্যে, কাগজের গুণে পায় এক সুস্থায়ী রূপ। আজ বলবো সেই হীর-রাঞ্ঝার কথা, মর্মন্তুদ এক সর্বগ্রাসী মিলনের গল্প।
মূল গল্প
আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগের কথা। আরো স্পষ্ট উল্লেখ করতে হলে, সময়টা ১৪৬০-৭০ এর মাঝামাঝি, লোদী সাম্রাজ্যকাল। পাঞ্জাবের তাখত হাজারা গ্রামে (বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সারগোদা শহর) এক লোক ছিলেন; স্থানীয় রাঞ্ঝা বংশীয় সে লোকটির প্রকৃত নাম মুরাদ বখশ রাঞ্ঝা। ডাকনাম ধীড়ো, ‘রাঞ্ঝা’ তার পদবী। গল্পের ধারাবাহিকতা ও কথনের সুবিধার্থে আমরা তাকে রাঞ্ঝাই সম্বোধন করবো (ইতিহাসেও এই নামটিই মূলত প্রচলিত)।
বাবার সব থেকে আদরের এই ছেলেটি ছিলো আট (মতান্তরে চার) ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। দিন-রাত সে শুধু মাঠে-ঘাটে চরে বেড়াতো, মনের খেয়ালে চলতো আর বাঁশি বাজাতো। কেউ বকাঝকা পর্যন্ত করতো না তাকে, বাবার আদুরে আশকারা পেলে যা হয় আর কি! একদিন সেই স্নেহময় বাবার ছায়া মাথা থেকে সরে গেলো রাঞ্ঝার। মৃত্যুকালে উত্তরাধিকার হিসেবে ছেলেদের জন্য অনেক জমি রেখে যান বাবা। তার মৃত্যুর পর রাঞ্ঝার বাকি ভাইরা ভাবলো রাঞ্ঝা যেহেতু অলস-বোকা, বাড়ির বা বাইরের কাজে মন না দিয়ে কেবল বাঁশিই বাজায়, তাই তাকে সব থেকে অনুর্বর অংশটা দেওয়া হোক। ধূর্ত ভাইদের কাছে ‘বলির পাঁঠা’ হওয়া রাঞ্ঝা এসবে ক্ষীপ্ত হয়ে ছাড়লো বাড়ি। জীবনের নতুন মানে খোঁজার আশায় চেহনব নদীর দক্ষিণের অজানা গন্তব্যে পা বাড়ালো রাঞ্ঝা।
একসময় রাঞ্ঝা এসে পৌঁছুলো ঝং নামের একটি গ্রামে। গ্রামে ঢুকেই সে পৌঁছুলো এক খামারী জমিতে, যার বিস্তীর্ণ মাঠে চরে বেড়াচ্ছে গরু, সতেজ ফসলে মাঠ-ঘাট ছড়াচ্ছে জেল্লা। মুগ্ধ রাঞ্ঝা সেই জমির মালিকের কাছে কাজ চাইলো। জমির মালিক সাইয়্যাল বাড়ির প্রধান চুচক সাইয়্যাল, ভাড়ায় খাটা কর্মী হিসেবে রাঞ্ঝাকে নিতে রাজি হলেন।
এরপর গল্পে আগমন ঘটলো নায়িকার। প্রকৃত নাম ইজ্জত বিবি, ডাকনাম হীর। হীর মানে হীরা। নামের মতোই দীপ্তিমাখা যেন সে। হীর ছিলো চুচক সাইয়্যালের মেয়ে। অসাধারণ রূপবতী হীর জীবনানন্দের বনলতার মতোই চোখের দু’দণ্ড স্বস্তির কারণ! ওয়ারিস শাহ’র ভাষায়, চাঁদের মতো মুখ, মখমলে মোড়ানো মূল্যবান রত্নের মতো আভা ছড়ানিয়া চোখ, জেসমিনের পাপড়ির মতো উজ্জ্বল দাঁত, রুবির মতো লাল ঠোঁট এবং হোসেনের তরবারীর অগ্রের মতো টিকোল নাক!
এই সুন্দরী ললনার মনোযোগ আবার শুরুতেই আটকে গেলো এলাকার নতুন সদস্য রাঞ্ঝার ওপর। রাঞ্ঝার লম্বা চুল, বলিষ্ঠ দেহ, বাঁশির সুমধুর মূর্চ্ছনা তাকে আকর্ষণ করতে লাগলো। চোখে চোখে কথা হতে হতে মনের টানে বাধা পড়লো হীর, ধীরে ধীরে প্রেমে পড়ে গেলো রাঞ্ঝার। ওদিকে রাঞ্ঝাও রূপবতী হীরকে ভালো না বেসে পারলো না। বাধাহীনভাবে এভাবেই তাদের প্রেম এগোলো কয়েকটি বছর।
দুর্ভাগ্যবশত ‘খারাপ’ বা ‘ভালো’ কোনোটাই স্থায়ী নয়। হীরের কুটবুদ্ধিসম্পন্ন চাচা কাইড়ু একদিন হীর-রাঞ্ঝার প্রণয় হাতেনাতে আবিষ্কার করে ফেলেন। তিনি তখন হীরের বাবাকে ‘চাকরের’ সাথে হীরের প্রেমের সব কথা বলে দেন।
হীরের বাবা-মা হীরকে ডেকে এনে বোঝালেন। হীরের অবশ্য সেদিকে থোড়াই কেয়ার, সে শুধু একটি জিনিসই জানতো, সে রাঞ্ঝাকে ভালোবাসে। উপায়ন্তর না দেখে হীরের বাবা-মা গ্রামের কাজীকে ডেকে আনলেন শরীয়া আইনের দ্বারা ব্যাপারটি সমাধা করার জন্য। কাজী হীরকে বোঝালেন, দেখো হীর, তুমি একজন মুসলিম মেয়ে। বাবা-মার পছন্দ ও তাঁদের সম্মানের ব্যাপারটি তোমার দেখা উচিত।
হীর তখন সাফ জবাব দিলো, ‘নেশা করা একটা ব্যক্তির থেকে মাদক ছিনিয়ে নিতে পারবেন? হীর থেকে রাঞ্ঝাকে আপনারা কেউই আলাদা করতে পারবেন না। কেউ যদি আমাদের মিলন খণ্ডাতে পারে, তবে তা কেবল আল্লাহ।’
হীরের হাতে একটি ক্ষত চিহ্ন ছিলো, তপ্ত লোহায় পোড়া ক্ষত। হীর সেদিকে তাকিয়ে বলো, ‘সত্যিকারের প্রেম হচ্ছে এই ক্ষতর মতোই। সেটির দাগ রয়েই যাবে।’
হীরের বাবা-মা বুঝে গেলেন, আর কোনোই আশা নেই, মেয়েকে আর বুঝিয়েও লাভ হবে না। তাই তারা মেয়েকে জোরপূর্বক স্থানীয় মৌলভী সাইদা খাইরার সাথে বিয়ে দিতে চাইলেন।
বিয়ের দিন হীরকে কাজী যখন জিজ্ঞেস করলেন সে এই বিয়েতে রাজি কিনা, হীর মুখের ওপর ‘না’ বলে দিলো। লোকলজ্জায় ভয়ে কিছু না বলেই আকস্মিকভাবে হীরের বাবাই বিয়ের কাগজে হীরের হয়ে সই করে দেন। হীর বলতে লাগলো রাঞ্ঝার সাথে তার আগেই বিয়ে হয়েছে, আল্লাহর স্বাক্ষর ছিলো তাতে, রাসূল (সা) ছিলেন সাক্ষী। কিন্তু তার কথা যেন কেউ আমলেই নিলো না। বিয়ের পর জোর করে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো দূরের গ্রামে, সাইদার বাড়িতে।
হতভাগ্য রাঞ্ঝা তার হীরের এই করুণ কাহিনী শুনে দিশাহীন হয়ে পড়লো। সে কোনোদিন কল্পনাও করতে পারে না যে হীরকে তার দেখতে হবে অন্য কারো বাহুডোরে! উদ্ভ্রান্তের মতো সে ছুটে গেলো বনে, শোক বুকে চেপে নিজের অচেনায় নিজেকে বিলীন করতে, রুঢ় বাস্তব থেকে পালাতে। সেখানে তার দেখা হয় শাইবা নামের এক যোগীর সাথে। তার মাধ্যমে ‘তোল্লা জোগিয়াঁ’ পাহাড়ে রাঞ্ঝার পরিচয় হয় গোরাখনাথ যোগীর সাথে। সেখানেই সে সিদ্ধান্ত নিলো তাদের সাথে থেকে যাবার। এভাবে দিন যায়, মাস যায়, কান ফুঁড়িয়ে গায়ে ছাই মেখে পুরোদস্তুর যোগী বন যায় রাঞ্ঝা, যাযাবরের মতো ঘুরতে থাকে এ গ্রাম থেকে ও’ গ্রাম, সাথে থাকে ভিক্ষের থালা।
ভাগ্যের পরিহাসে একদিন সে কড়া ঠুকে বসে সাইদার সদর-দরজায়। হীরের ননদ সেহতি দরজা খুলে দেখতে পান সুদর্শন তরুণ এক যোগীকে। সেহতি হীরের প্রেমের ব্যাপারটা জানতো। হীরের অসম্মতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিয়ে করে ভাইয়ের সংসার করে যাওয়া পছন্দ ছিলো না সেহতির। তার মতে, ইচ্ছের বিরুদ্ধে এ সংসার হলো বলাতকারের নামান্তর, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। নীতির তাড়নায় ভাইয়ের অন্যায়ের মাশুল চোকাতে সে হীরকে বললো রাঞ্ঝার সাথে পালিয়ে যেতে। শেষ অবধি ঘর ছাড়লো হীর।
চেহনব নদী পেরিয়ে রাঞ্ঝা ও হীর পালিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হলো না। রাজা আদালির রাজ্যে এসে খেরা সৈন্যদের হাতে তারা ধরা পড়লো। সৈন্যরা তাদের নিয়ে যায় রাজার কাছে। তিনি জানতেন হীর-রাঞ্ঝার পুরো ঘটনা। তিনি এক কাজী ডেকে ঘটনার মীমাংসা করতে চাইলেন। সে আদালতে উপস্থিত ছিলেন হীরের চাচা কাইড়ুও। তিনি এসেছিলেন রাঞ্ঝার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে রাঞ্ঝাকে ফাঁসাতে। কিন্তু আদালতকার্যের একপর্যায়ে হীরের রূপ-লাবণ্য দেখে আদালির হয় মাথা খারাপ হবার যোগাড়। তিনি বিচারকার্য বাদ দিয়ে হীরকে রেখে দিলেন প্রাসাদে হীন কামনা চরিতার্থ করতে। প্রাসাদের বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়ে ক্রোধে-ক্ষোভে বিস্ফোরিত রাঞ্ঝা অভিশাপ দিতে লাগলো গোটা রাজ্যকে। চিৎকার করে বলতে লাগলো, এ অন্যায় আল্লাহ সইবে না! ওদিকে রাতে হীরের কক্ষে যে-ই রাজা প্রবেশ করলেন, অমনি তার শরীরে অলৌকিকভাবে ধরে গেলো আগুন। পেয়াদা-প্রজারা রাজাকে কোনো রকমে জীবিত উদ্ধার করলেও রাজ্যের নিরাপত্তার ও ঐশ্বরিক শাস্তির ভয়ে তারা হীর-রাঞ্ঝাকে ছেড়ে দেন। এরপর সেই অঞ্চলের সকলে মিলেই রাঞ্ঝা-হীরের বিয়ের আয়োজন করে ধুমধাম করে।
গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারতো! কিন্তু নিয়তি হয়তো শেষটায় অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলো।
হীরের চাচা কাইড়ু রাগে-অপমানে মানহানির জ্বালা মেটাতে সাজালেন এক হীন নীলনকশা।
বিয়ের অনুষ্ঠান উদযাপনে কাইড়ু নবদম্পতির জন্য বিষে মোড়ানো মিষ্টি-লাড্ডু ভর্তি ঝুড়ি পাঠালেন। হীর নিজেই বা কাইড়ু তাকে লাড্ডু খাইয়েছিলো। ঐ একটি লাড্ডুর এক কামড় খেয়েই ঢলে পড়লো হীর, হয়ে গেলো নীল-নিথর। লুটিয়ে পড়া প্রিয়তমার এই পরিণতি দেখে রাঞ্ঝার বুঝতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি যে কী হয়েছে হীরের সাথে! অশ্রুসিক্ত রাঞ্ঝা আহাজারি করে সময় নষ্ট করাকেও হয়তো বাতুলতা ভেবেছিলো, এমনকি কারো উদ্দেশ্যে সে কিছুমাত্র তিরষ্কারটিও করলো না। নীরবে হীরের আধখাওয়া লাড্ডুটি সে নিজের মুখে পুরে নিলো। পরম মমতায় হীরের নিস্তদ্ধ মুখ লাড্ডু খাওয়ার আগেই কোলে আগলে নিয়েছিলো রাঞ্ঝা। সে অবস্থাতেই প্রিয়তমাকে জড়িয়ে জীবনাবসান হয় রাঞ্ঝার!
গল্পটা তো মিলনাত্মকও হতে পারতো! এমনকি হীর-রাঞ্ঝার প্রচলিত অনেক উপকথায় গল্পের শেষটা এমন বিয়োগান্তক নয়। কিন্তু ওয়ারিস শাহর কথায়, এই বেদনাবিধুর বিয়োগই স্মৃতির পাতায় চির অক্ষয় করেছে হীর রাঞ্ঝাকে। নশ্বর দুনিয়ায় শীঘ্র বিয়োগ তো ভাগ্যবিধাতা পরপারের চিরস্থায়ী মিলনকে ত্বরান্বিত করতেই ঘটিয়েছিলেন! বেদনার গুণেই তো রাতের আকাশের মাঝে কোনো এক প্রেমময় হৃদয় চাইলেই দুটো পাশাপাশি তারার মাঝে খুঁজে নিতে পারে হীর-রাঞ্ঝাকে, নক্ষত্রের দীপ্তির মতোই তো তাদের দ্যুতি, তাদের স্থিতি।
গল্প নিয়ে ভিন্নতা
মূলত পাঞ্জাবের পশ্চিমাঞ্চল তথা বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব ভূখণ্ডে লোক মুখে ওয়ারিস শাহর বর্ণনামাফিক শেক্সপিয়রের রোমিও-জুলিয়েট ঘরানার বিয়োগান্তক সমাপ্তিই বেশি প্রচলিত। কিন্তু পূর্ব অংশ সহ পাঞ্জাবের লোকসাহিত্যিক ও সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের কাছে প্রচলিত গল্প শেষ হয় হীর-রাঞ্ঝার বিয়ের পরেই, অর্থাৎ ‘অতঃপর তাহারা সুখে-শান্তিতে ঘর করিতে লাগিলো’ ঘরানার সমাপ্তি। তবে প্রেমের গল্পের চিরন্তন ব্যাকরণ মেনে বিয়োগান্তক গল্পগুলোই যেন বরাবর অমরত্ব অর্জন করেছে। হীর-রাঞ্ঝা নিয়ে নির্মিত কোনো চলচ্চিত্রেই ওয়ারিস শাহ’র উপন্যাস খুব বেশি অনুসরণ করা হয়নি, কিন্তু ঠিকই সিনেমার সমাপ্তিটা ওয়ারিস শাহ’র ‘হীর’ উপন্যাসের মতোই বিয়োগান্তক হয়েছে। যেহেতু ওয়ারিস শাহ’র সেই বিয়োগান্তক পরিণতিওয়ালা গল্পটিই অধিক জনপ্রিয়, তাই উপরের বয়ানে সেটিকেই অনুসরণ করা হয়েছে।
সেলুলয়েডে হীর-রাঞ্ঝা
হীর-রাঞ্ঝার ঘটনা নিয়ে এখন অবধি প্রায় ১২টির মতো সিনেমা নির্মিত হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, প্রায় সবগুলোর নামই ‘হীর-রাঞ্ঝা’! সিনেমা হিট করতে এ দুটো নাম কত বেশি যথেষ্ট, তা-ই বোঝা যাচ্ছে এখান থেকে। এদের ভেতর সবথেকে জনপ্রিয়টি হলো ১৯৭০ সালের চেতন আনন্দ পরিচালিত ‘হীর রাঞ্ঝা‘, যাতে অভিনয় করেছিলেন রাজ কুমার ও প্রিয়া রাজবংশ। বাণিজ্যিকীকরণের প্রয়োজনে ও ‘হীর’ উপন্যাসের বদলে গল্পের ভারতীয় অংশের উপকথাকে অনুসরণ করার কারণে সিনেমাটির সাথে উপরের বয়ানের কিছু পার্থক্য দেখা যায়। যেমন-
- হীর-রাঞ্ঝার প্রথম আলাপ ঘটে ঝং নগরের এক বিয়ের আয়োজনে।
- হীরের বাবা শুরুতে আপত্তি করলেও পরবর্তীতে নমনীয় হয়েছিলেন রাঞ্ঝার ব্যাপারে, কিন্তু সেই চাচার ষড়যন্ত্রে সাইদার সাথে বিয়ে হয় হীরের।
- গল্পের শেষে হীরের আধখাওয়া লাড্ডু খেয়ে নয়, বরং পেটে ছুরি চালিয়ে হীরের শবদেহ জড়িয়ে আত্মাহুতি দেয় রাঞ্ঝা।
অমর এই প্রেমগাঁথার আবেদন বোধহয় চিরসবুজ, কিংবা এতে হয়তো কোনো জাদুকরি শক্তি রয়েছে! নতুবা ছয় ছয়টি শতাব্দী ধরে মানুষের অন্তরে কীভাবে বেঁচে আছে হীর আর রাঞ্ঝা?
ফিচার ইমেজ: bonzasheila.com