Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে স্টিভ ব্যাননের উত্থান ও পতন

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য আমেরিকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দেন। এছাড়া আরো কিছু নির্বাহী আদেশ দেন, যাতে তার যতটা না প্রভাব ছিল, তার চেয়ে বেশি প্রভাব ছিল হোয়াইট হাউজের কৌশলী প্রধান স্টিভ ব্যাননের। এমনকি অভিষেক অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভাষণ দেন, সেখানেও অনেকটা ব্যাননের আদর্শ প্রতিফলিত হচ্ছিল। ট্রাম্প যেন হয়ে উঠছিলেন ব্যাননিজমের বার্তাবাহক।

টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে ‘প্রেসিডেন্ট ব্যানন’ হ্যাশট্যাগ। টাইম ম্যাগাজিন তাকে ‘দ্য গ্রেট ম্যানিপুলেটর’ আখ্যা দিয়ে কভার পেজে ছাপায়। তখন দেশটা আসলে কে চালাচ্ছেন, ট্রাম্প নাকি ব্যানন, সে প্রশ্ন উঠে যায়। আগস্ট মাসে ট্রাম্প তাকে বরখাস্ত করে। তবে মাত্র সাত মাস সময় হোয়াইট হাউজে থাকলেও সেখানে ভালোই প্রভাব ফেলেছিলেন স্টিভ ব্যানন। তার ডানপন্থী আদর্শ বাস্তবায়নে ট্রাম্পকে ব্যবহার করেছিলেন হাতিয়ার হিসাবে। বিতর্কিত ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কোম্পানির সাথেও জড়িত ছিলেন তিনি।   

২০১৭ সালে টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে দেখা যায় তাকে; Image Source: Time

তবে প্রভাবশালী হলেও নিজেকে প্রচারের আড়ালেই রাখতেন সবসময়। হোয়াইট হাউজে দায়িত্ব পালনের তিন বছর আগে ভ্যাটিকান কনফারেন্সের অনলাইন আলোচনায় এক ইসলাম বিরোধী বক্তব্য দিতে দেখা যায়। কে এই স্টিভ ব্যানন?

স্টিভ ব্যাননের জন্ম ১৯৫৩ সালে ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডে এক আইরিশ ক্যাথলিক পরিবারে। রিচমন্ডের সব পরিবারই ছিল জন এফ ক্যানেডির ভক্ত। তার বাবাও ছিলেন ক্যানেডির সমর্থক। তার বাবা কাজ করতেন এটিএন্ডটি কোম্পানির লাইনম্যান হিসেবে। বাবার কাছ থেকে ব্যানন শেখেন পরিশ্রমী হওয়ার গুরুত্ব। 

ব্যানন ১৯৭১ সালে রিচমন্ডের এক ক্যাথলিক মিলিটারি স্কুল থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর পরিকল্পনা বিষয়ে পড়াশোনা করার সময় তিনি স্থানীয় এক জাঙ্ক ইয়ার্ডে কাজ করতেন। এ সময় তার মাঝে রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটে। তিনি তখন স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর যোগ দেন নৌবাহিনীতে। তার রাজনৈতিক সমর্থন ডেমোক্রেট পার্টি থেকে রিপাবলিকান পার্টির প্রতি সরে আসাটা হয় এ সময়টাতে। তার নৌবাহিনীতে থাকার সময় শুরু হয় ইরান বিপ্লব। তেহরানে আমেরিকান অ্যাম্বেসিতে আক্রমণ করে ইরানী ছাত্ররা। আমেরিকানদের জিম্মি করে রাখে। ব্যানন এ অবস্থার জন্য দায়ী করেন তখনকার প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারকে। আমেরিকার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হতে দেখে তিনি তখন ক্ষুব্ধ হন। এটা ছিল তার রাজনৈতিক আদর্শের দিক দিয়ে একটা সন্ধিক্ষণ মুহূর্ত। তিনি পরবর্তী প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের ভক্ত হয়ে যান।  

ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় স্টিভ ব্যাননের মাঝে রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটে; Image Source: Virginia Tech

 

নেভিতে সাত বছর কাটানোর পর আশির দশকে সেখান থেকেও বের হয়ে আসেন। এরপর হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে এমবিএ করতে ভর্তি হন। এতে তিনি রিচমন্ডের শ্রমিক শ্রেণি থেকে এলিট শ্রেণির সান্নিধ্যে আসতে পারেন। সেখান থেকে ডিগ্রি নিয়ে কাজ শুরু করেন গোল্ডম্যান স্যাকস কোম্পানিতে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার হিসেবে। দুই বছর কাজ করে সেখান থেকে বের হয়ে আসেন।

এরপর চলে যান সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগতে। নব্বইয়ের দশকে যাত্রা করেন হলিউডের উদ্দেশ্যে। সেখানে নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে বিভিন্ন সিনেমা প্রযোজনা করা শুরু করেন। তিনি ততদিনে আর্থিকভাবে ভালোই সামর্থ্যবান হয়ে ওঠেন। কিন্তু তার আদর্শগত দিক দিয়ে তখনো অপূর্ণতায় ছিলেন। তিনি তখন দর্শন, ইতিহাস ও ডানপন্থী ভাবধারার বইগুলো পড়তে থাকেন। তার সবচেয়ে প্রিয় বই ‘দ্য ফোর্থ টার্নিং’। এতে আমেরিকার বিভিন্ন সময়ে ঘটা সঙ্কটগুলোর চারটি সাধারণ ধাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এটা থেকে তিনি একটা ডকুমেন্টারিও নির্মাণ করেন।  

মিলিটারি ত্যাগ করার পর চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি নির্মাণ করা শুরু করেন ব্যানন; Image Source: Marissa Roth/The New York Times/Redux

এমন সময় ঘটে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের টুইন টাওয়ার হামলার ঘটনা। এটা তাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যায় ইরান বিপ্লবের সময়টায়। তিনি তখন ইসলামী মৌলবাদ বিরোধী মনোভাব প্রচার করতে থাকেন তার ডকুমেন্টারিগুলোর মাধ্যমে। ২০০৪ সালে রোনাল্ড রিগ্যানকে মহিমান্বিত করে নির্মাণ করেন ‘ইন দ্য ফেস অব ইভিল’। ২০০৮ অর্থনৈতিক মন্দার জন্য বুশ প্রশাসনকে দায়ী করেন।

আমেরিকার উদারপন্থী রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অভিবাসন বান্ধবতার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। একসময় তার সাথে পরিচয় হয় ডানপন্থী সাংবাদিক এন্ড্রু ব্রেইটবার্টের, যিনি ব্রেইটবার্ট নামে ডানপন্থী এক সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ছিলেন। ব্রেইটবার্টের সাথে ব্যানন তার আদর্শের মিল খুঁজে পান। তিনি তখন ব্রেইটবার্টে যোগ দেন। সেখানে রক্ষণশীল বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করতে থাকেন। ব্রেইটবার্টের ফান্ডের জন্য আরেক রক্ষণশীল মনোভাবের বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী রবার্ট মারসারকে।   

২০১২ সালে হঠাৎ ব্রেইটবার্ট মারা যান। তখন তার স্থলাভিষিক্ত হন স্টিভ ব্যানন। ব্যানন এসে ব্রেইটবার্ট নিউজে ডানপন্থী মনোভাবের সংবাদ আরো বাড়িয়ে দেন। ২০১৩-১৪ সালের দিকে ব্রেইটবার্টের খবরগুলো নিয়মিত পড়তেন আরেক বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন ট্রাম্পকে রাজনৈতিক অঙ্গনের কেউ অত গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন না। ট্রাম্প তখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার ব্যাপারে চিন্তা করছিলেন। অভিবাসীরা এসে আমেরিকানদের চাকরি দখল করে ফেলা নিয়ে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। এছাড়াও ব্যাননের মতোই আমেরিকার নীতি নির্ধারণী বিষয়গুলোর প্রতি নাখোশ ছিলেন।

২০১৫ সালে ব্রেইটবার্ট নিউজের ওয়াশিংটনের অফিসে সহকর্মীদের সাথে স্টিভ ব্যানন; Image Source: Jeremy Liebman

ব্যাননকে তখন ট্রাম্পের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ডেভিড বসি নামে এক চলচ্চিত্র প্রযোজক, যিনি ব্যাননের বেশ কিছু ছবি প্রযোজনা করেছিলেন। কৌশলগত দিক থেকে ব্যানন ছিলেন ক্ষুরধার মস্তিষ্কের। তখন ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী বিষয়ে পরামর্শ দিতে থাকেন। এ সময় তিনি ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কোম্পানির উচ্চপদেও কাজ করেন।

ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা ফেসবুকের মাধ্যমে আমেরিকান ভোটারদের ডেটা সংগ্রহ করে। তারপর সেই ভোটারদের লক্ষ্য করে প্রোপাগান্ডামূলক সংবাদ পরিবেশন করা হতো। আর এর পেছনের মস্তিষ্ক ছিল স্টিভ ব্যাননের। তিনি ২০১৬ নির্বাচনের সময় ভোটারদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ও হিলারি ক্লিনটনের বিপক্ষে প্রভাবিত করার জন্য তাদের মধ্যে ক্ষোভের উদ্রেক তৈরি হয় এমন সব সংবাদ পৌঁছানোর জন্য কাজ করেন। এ কাজে তিনি ব্যবহার করেন ব্রেইটবার্ট এবং বিভিন্ন ফেক ফেসবুক পেজ ও গ্রপকে। ব্রেইটবার্ট তখন হয়ে উঠে ট্রাম্পের পক্ষে প্রোপাগান্ডা মেশিন।

স্টিভ ব্যানন শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে না থাকলেও তার কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ীই চালানো হতো সবকিছু। তবে শেষের দিকে তিনিই নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার পরও ট্রাম্প যেসব ভাষণ দিতেন, সেখানের কিছু কিওয়ার্ড থাকত, যেগুলো শুনে ব্যাননের পরিচিতরা ধরে ফেলতেন যে ট্রাম্প আসলে ব্যাননের বুলিই আওড়াচ্ছেন।    

ট্রাম্প নির্বাচনে জেতার পর হোয়াইট হাউজের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্টের দায়িত্ব পান ব্যানন। তিনি তখন আরো প্রভাবশালী হয়ে উঠেন। এমনকি হোয়াইট হাউজে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায়ও ব্যাননকে দেখা যেত। হোয়াইট হাউজের উপদেষ্টারা আশা করছিলেন, ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময় যেসব আগ্রাসী বক্তব্য দিয়েছেন, এখন তার চেয়ে তুলনামূলক নমনীয় অবস্থান নেবেন। কিন্তু ব্যানন সেটা চাননি।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর হোয়াইট হাউজের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্টের দায়িত্ব পান স্টিভ ব্যানন; Image Source: Drew Angerer/Getty Images

মুসলিম দেশগুলোর আমেরিকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার নির্বাহী আদেশটি আসে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার বিকেলে। পরের দুই দিন ছুটি থাকায় আমেরিকান নাগরিকরা প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমে আসে। মিডিয়াও এ প্রতিবাদের সংবাদ প্রচার করতে থাকে। পুরো ব্যাপারটাই ছিল ব্যাননের পরিকল্পনা। তিনি ট্রাম্পের ভোটারদের দেখাতে চাচ্ছিলেন, নির্বাচনে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এভাবে একের পর এক জনতুষ্টিমূলক পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় ট্রাম্পকে যেগুলো করা হয় মূলত ব্যাননের পরিকল্পনা অনুযায়ী।

ব্যানন সবসময় নিজেকে আলোচনার বাইরে রাখলেও আমেরিকান কনজারভেটিভ ইউনিয়নের এক সম্মেলনে উপস্থিত হন। এরপর থেকে তিনি মিডিয়ায় ভালোই আলোচনায় চলে আসেন। কিন্তু এ ব্যাপারটাতে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কারণ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে ট্রাম্পের চেয়ে ব্যাননই বেশি কৃতিত্ব পেয়ে যাচ্ছিলেন। তখন প্রশ্ন উঠে দেশটা ট্রাম্প চালাচ্ছেন, নাকি ব্যানন? তাছাড়া ব্যানন ও ট্রাম্পের জামাতা জেরেড কুশনারের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চলছিল হোয়াইট হাউজের নীতি নির্ধারণী বিষয়ে। কুশনারও ছিলেন ট্রাম্পের উপদেষ্টা। ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত তার পরিবারকেই গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট, আর ব্যানন আমার অধীনে চাকরি করে।” যদিও ততদিনে সবার ধারণা হয়ে গিয়েছিল ব্যাননের প্রভাবের ব্যাপারে। শেষ পর্যন্ত সম্পর্কের তিক্ততায় ব্যাননকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প।  

হোয়াইট হাউজ থেকে বরখাস্ত হতে হয় স্টিভ ব্যাননকে; Image Source: Andrew Harrer/Bloomberg/Getty Images

বরখাস্ত হলেও তিনি নিজেকে ট্রাম্পের ‘ভক্ত’ হিসাবেই উল্লেখ করেছিলেন ব্যানন। এরপর ফিরে যান আবার ব্রেইটবার্টে। যদিও ২০১৮ সালেই ব্রেইটবার্ট ছেড়ে দেন। মেক্সিকো সীমান্তে ট্রাম্পের দেওয়াল নির্মাণের প্রকল্পকে নিজের ব্যক্তিগত লক্ষ্য হিসাবেও দেখেন। ২০১৮ সালে দেয়াল নির্মাণের ফান্ডের জন্য ট্রাম্পের প্রস্তাব কংগ্রেস প্রত্যাখ্যান করলে ‘উই বিল্ড দ্য ওয়াল’ নামে অনলাইন ক্যাম্পেইন শুরু হয়। ব্যাননের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে একটি অলাভজনক সংস্থার মাধ্যমে এ ক্যাম্পেইন থেকে ১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। যদিও এ মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন তিনি।

কিন্তু এরপরও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি ব্যাননকে। ব্যানন’স ওয়ার রুম নামে একটি পডকাস্ট চালু করেছিলেন, যেটা ইউটিউব থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন এর মাধ্যমেই নিজের আদর্শ প্রচার করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে স্টিভ ব্যানন যতটা না মেধাবী, তার চেয়ে বেশি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হিসাবেই পরিচিত হয়ে থাকবেন।

This is a Bengali article written about former Trump associate Steve Bannon. All the references are hyperlinked in the article. 

Featured Image: NPR

Related Articles