আকাশ জয়ের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পর মানুষের দৃষ্টি ছিল মহাকাশে। পৃথিবী ছাড়িয়ে অসীম মহাশূন্যে ডানা মেলার জন্য বিজ্ঞানীরা লিপ্ত হন কঠোর গবেষণায়। রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে, বিশেষত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্নায়ুযুদ্ধের অংশ হিসেবে মহাকাশে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠায় ছিল প্রতিযোগিতার মুখোমুখি। তখনো ইউরি গ্যাগারিন পৃথিবীর কক্ষপথ পরিভ্রমন করেননি, নিল আর্মস্ট্রং, এডউইন অল্ড্রিন আর মাইকেল কলিন্স পাড়ি জমাননি চাঁদের বুকে। মহাকাশ যাত্রায় মানুষের তখন হাঁটি হাঁটি পা পা।
হুট করেই একজন মানুষকে রকেটে উঠিয়ে ছুঁড়ে দেয়া যায় না, কারণ বিজ্ঞানীরা জানেন না মহাশূন্যের ভরশূন্য পরিবেশে, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে মানবদেহ কেমন আচরণ করবে। বায়ুমন্ডল ত্যাগ করার সময়ই বা প্রাণীর শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা-ও অজানা। তাদের মনে আরো প্রশ্ন- মহাশূন্যের নানা মহাজাগতিক রশ্মির আঘাত কি পৃথিবীর কার্বনভিত্তিক প্রাণের উপর প্রভাব ফেলতে পারে?
সমাধান খুঁজতে বিজ্ঞানীরা চিরাচরিত পন্থাই বেছে নিলেন। নানা রকম পশু মহাকাশের দিকে পাঠিয়ে তারা তাদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নিলেন। যেকোনো ওষুধ মানবদেহে প্রয়োগ করবার আগে যেমন প্রাণীদের শরীরে ওষুধের নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়, তেমনি পশুদের রকেটে তুলে বিজ্ঞানীরা মানুষকে মহাকাশে পাঠানো কতটা নিরাপদ হবে তা বিশ্লেষণ করেন। সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা মূলত কুকুর আর মার্কিন বিজ্ঞানীরা শিম্পাঞ্জি দিয়ে তাদের পরীক্ষা নিরিক্ষা করেন। এর পথ ধরেই সূচীত হয় মানুষের মহাকাশ যাত্রার। আজকে এমনই এরকম কিছু প্রাণীর কথা বলা হবে যারা আমাদের মহাকাশ অভিযানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ফলের মাছি
১৯৪৪ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন প্রায় শেষের দিকে। দিকে দিকে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া নাৎসি বাহিনী শেষ চেষ্টা হিসেবে তৈরি করল ইতিহাসের সর্বপ্রথম ব্যালিস্টিক মিসাইল, ভি-২। ভন ব্রাউন নামে এক জার্মান ইঞ্জিনিয়ারের আবিষ্কার ভি-২ পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার বা ৫০ মাইল উপরে উঠে যেতে পারত, যা কিনা বায়ুমণ্ডল আর মহাকাশের সীমানার খুব কাছাকাছি। ভি-২ আঘাত হানতে সক্ষম ছিল ১৯০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে। পৃথিবীর প্রথম স্পেস রকেটের তকমা ভি-২ এর কপালেই জোটে।
তবে মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রা ঠেকাতে ভি-২ ব্যর্থ হয়। মিত্রবাহিনি ভি-২ এর কার্যকারিতা অনুধাবন করতে পেরেছিল। ফলে ভন ব্রাউন আমেরিকানদের কাছে আত্মসমর্পণ করলে তাকে ফুলের মালা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দলে ভিড়িয়ে নিল। অনেক জার্মান বিজ্ঞানীর মতোই বিচার আচার কিছুই হলো না তার। ভন ব্রাউনকে চাইছিল রাশিয়াও, তবে শেষ পর্যন্ত তারা সন্তুষ্ট থাকল ভি-২ বানানোর কারখানা আর পরীক্ষাগার দখল করেই।
২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৭।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডস মিসাইল রেঞ্জ থেকে আকাশের দিকে ছুটে গেল জার্মানির থেকে দখল করা একটি ভি-২ রকেট। রকেটের বিস্ফোরক বসানোর স্থানে জায়গা হয়েছিল ফ্রুট ফ্লাই, বা ফলের মাছির। বিজ্ঞানীরা জানতে চান প্রাণীর ডিএনএ-তে মহাজাগতির রশ্মির প্রভাব কেমন হতে পারে। এই জ্ঞান তাদের ভবিষ্যতে মনুষ্যবাহী রকেট বানাতে সহায়তা করবে। মহাশূন্য বলতে আমরা যা চলচ্চিত্রে দেখে থাকি, নিঃসীম অন্ধকারে আর তারকারাজি, সেই মহাশূন্য রকেটের লক্ষ্য ছিল না। এর গন্তব্য ছিল বায়ুমণ্ডল আর মহাকাশের সীমানা, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০৯ কিলোমিটার উপরে শুরু হয়েছে। রকেট ততটুকু উঠতে পারলেই বিজ্ঞানীদের কাজ সমাধা হয়। রকেট ঠিকই সেই সীমানায় পৌঁছে। এরপর আকাশ থেকে রকেট খসে পড়ার সময় ফ্রুট ফ্লাই বহনকারী অংশটি আলাদা হয়ে প্যারাসুটের মাধ্যমে নিউ মেক্সিকোর নির্দিষ্ট স্থানে পতিত হয়। বিজ্ঞানীরা দেখতে পান মাছিগুলো দিব্যি আবদ্ধ স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কোনো ক্ষতিই হয়নি তাদের।
আলবার্টের অভিযান
এই আলবার্ট আমাদের আলবার্ট আইন্সটাইন নন, এই আলবার্ট একটি রেসাস প্রজাতি পুরুষ বানর। ১৯৪৮ সালের জুনে আরেকটি ভি-২ রকেটে করে তাকে ছুড়ে দেয়া হয় মহাকাশ বরাবর। প্রথম স্তন্যপায়ী হিসেবে মহাকাশ অভিযানের কৃতিত্ব আলবার্টেরই। আলবার্টের রকেট ভুপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬২ কিলোমিটার উপরে উঠতে সমর্থ হয়। তবে আলবার্ট সম্ভবত উৎক্ষেপণের সময়েই অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। পরের বছর জুনের ১৪ তারিখ মার্কিন বিজ্ঞানীরা আবার চেষ্টা করেন দ্বিতীয় আরেকটি রেসাস বানরকে দিয়ে, এর নাম দ্বিতীয় আলবার্ট। ১৩৩ কিলোমিটার উপরে গিয়ে দ্বিতীয় আলবার্ট মহাশূন্য পরিভ্রমণ করে আসলেও ফেরার পথে তার বাহনের প্যারাসুট কাজ না করায় তীব্র বেগে আলবার্ট আছড়ে পড়ে পৃথিবীর বুকে।
আলবার্টের পর থেকে আজ পর্যন্ত ৩২টি বিভিন্ন প্রজাতির বানর মহাশূন্যে পাঠানো হয়েছে। রেসাস ছাড়াও ম্যাকাও, পিগ-টেইলড, সাইনোমলগ্যাস, স্কুইরেল-টেইলড ইত্যাদি প্রজাতি এর অন্তর্ভুক্ত।
ইঁদুর
১৯৫০ সালের ১৪ অগাস্ট যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা ইঁদুরকে মহাকাশে পাঠাতে চেষ্টা করেন। ১৩৭ কিলোমিটার উপরে উঠতে পারলেও দুর্ভাগ্যবশত ফিরতি পথে প্যারাসুট কাজ না করলে দ্বিতীয় আলবার্টের ভাগ্য বরণ করতে হয় একে। অ্স্রআগ ৩১ তারিখ আরেকটি ইঁদুর প্রেরণ করা হয়, কিন্তু এবারো একই সমস্যার কারণে অভিযান ব্যর্থ হলো। বিজ্ঞানীরা হাল না ছেড়ে ইঁদুর দিয়েই চেষ্টা চালিয়ে যান। অবশেষে ১৯৬০ সালের ১৯ আগস্ট সফলভাবে উৎক্ষিপ্ত ৪৪টি ইঁদুর জীবিত অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরে আসতে সক্ষম হন। ইদুরের উপর পরীক্ষা থেকে মহাকাশের পরিবেশে মানুষকে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে তার বিশদ বিশ্লেষণ সম্ভব হয়েছিল।
সাইগান এবং ডেজিক
সোভিয়েত বিজ্ঞানিরাও কিন্তু মার্কিনীদের থেকে খুব একটা পিছিয়ে ছিলেন না। আমেরিকানরা যখন ইঁদুর নিয়ে ব্যস্ত, তখন ১৯৫১ সালের ১৫ আগস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন সাইগান আর ডেজিক (Tsygan and Dezik) নামে দুটি কুকুরকে মহাশূন্যে পাঠায়। আমরা মহাকাশ বলতে যে নিঃসীম আঁধার আর গ্রহ-নক্ষত্রের কথা ভাবি, সাইগান আর ডেজিকই প্রথম সেখানে পৌঁছাতে পারে। তবে তারা পৃথিবীর কক্ষপথে ভ্রমণ করেনি। কুকুর দুটি নিরাপদে ভূপৃষ্ঠ ফিরে এসেছিল, তবে সেপ্টেম্বর মাসে দ্বিতীয় অভিযানের সময় ডেজিক মারা যায়।
লাইকা
মহাকাশযাত্রী প্রথম পশুর নাম বললে লাইকার কথাই মনে আসবে। সোভিয়েত ইউনিয়নের রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া এই কুকুরকে ১৯৫৭ সালের নভেম্বরের ৩ তারিখ মহাকাশে পাঠানো হয়। লাইকাই প্রথম প্রাণী যে পৃথিবীর কক্ষপথ ঘুরে আসে। তবে জীবিতাবস্থায় লাইকাকে ফিরিয়ে আনা যায়নি। অভিযোগ করা হয়, মাত্র সাত দিনের অক্সিজেন আর একদিনের খাবার দিয়ে লাইকাকে রকেটে তুলে দেয়া হয়েছিল। সোভিয়েতরা দাবি করে, লাইকা সাত দিন বেঁচে ছিল, অন্যদিকে সমালোচকরা বলে থাকেন বেচারা লাইকা সম্ভবত উৎক্ষেপণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায়। জীবিত বা মৃত যা-ই হোক, লাইকাই আমাদের গ্রহের কক্ষপথ ভ্রমণ করা সর্বপ্রথম মহাকাশচারী।
আবেল আর বেকার
মার্কিন বিজ্ঞানীদের পাঠানো বানরগুলোর মধ্যে আবেল আর বেকারই প্রথম যারা নিরাপদে মহাকাশে ঘুরে আসতে সক্ষম হয়। আবেল ছিল আমেরিকার কানসাসের একটি রেসাস বানর, বেকারকে আনা হয়েছিল পেরু থেকে ১৯৫৯ সালের ২৮ মে তাদের রকেট ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫৬৩ কিলোমিটার উপরে উঠে যায়। যদিও তারা বেঁচে ফিরে আসে, তবে আবেল চারদিন পর সার্জারির সময় মারা যায়। বেকার বেঁচে ছিল ২৪ বছর বয়স অবধি, যা তার প্রজাতির মধ্যে বেশ লম্বা সময়।
খরগোশ
১৯৫৯ সালের ২ জুলাই সোভিয়েতরা দুটি কুকুরের সাথে একটি খরগোশ মহাকাশে প্রেরণ করে। এই খরগোশের নাম ছিল মারফুশা, তার সঙ্গী কুকুর অতভ্যাজনিয়া (সাহসি) আর স্নেঝিঙ্কা (তুষারকনা)। সবাই তারা নিরাপদেই ফিরে এসেছিল। তাদের সম্মানে একই বছর রুমানিয়া একটি ডাকটিকিটও প্রকাশ করে।
বেল্কা আর স্ট্রেল্কা
১৯৬০ সালের ১৯ আগস্ট স্পুটনিক-৫ এ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেল্কা আর স্ট্রেল্কা নামে দুটি কুকুর পাঠানো হয়। এদের ভাগ্য লাইকার থেকে ভাল ছিল। পৃথিবীর কক্ষপথ ঘুরে প্রথম কুকুর হিসেবে এরা নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হয়। তবে স্ট্রেল্কা আর বেল্কা একা ছিল না। সঙ্গী হিসেবে ছিল ৪৪টি ইঁদুর, ফলের মাছি আর একটি খরগোশ।
শিম্পাঞ্জি
শিম্পাঞ্জির সাথে মানব ডিএনএ-র সাদৃশ্যের কারণে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর আগের ধাপ হিসেবে শিম্পাঞ্জি প্রেরণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৬১ সালের ৩১ জানুয়ারি হ্যাম দ্য শিম্পাঞ্জি (HAM the Chimpanzee) সফল মহাকাশ পরিভ্রমণ সমাপ্ত করে, তবে কক্ষপথ প্রদক্ষিণ সে করেনি। তিন মাসের মাথায় ১২ এপ্রিল আমেরিকানদের পেছনে ফেলে প্রথম মানব হিসেবে মহাকাশে ঘুরে আসেন সোভিয়েত কসমোনট ইউরি গ্যাগারিন। একই বছর মে মাসের ৫ তারিখে আমেরিকানদের পক্ষে সেই কাজ করেন অ্যালান শেপার্ড। তবে পশু পাঠানো বন্ধ হয়নি, কারণ গবেষণার কাজে তাদের গুরুত্ব ছিল। ১৯৬১ সালের ২৯ নভেম্বর এনোস নামে আরেকটি শিম্পাঞ্জি মহাকাশে পাঠান মার্কিন বিজ্ঞানীরা, যে পৃথিবীর কক্ষপথ ঘুরে আসতে সমর্থ হয়।
ব্যাং আর গিনিপিগ
১৯৬১ সালের মার্চ মাসে করাব্ল-স্পুটনিক মহাকাশযানে করে ব্যাং, গিনিপিগ, ইঁদুর আর চেরনুস্কা নামে একটি কুকুর মহাকাশ ভ্রমণ করে জীবিত ফিরে আসে। ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা অলোলিথ (Olotith) মহাকাশযানে করে দুটি ব্যাং মহাকাশ পাড়ি দেয়। নাসার উদ্দেশ্য ছিল ভরশূন্য পরিবেশে কীভাবে তারা খাপ খাইয়ে নেয় তা পর্যালোচনা করা। বিজ্ঞানীরা দেখতে পান যে ৬ দিনের মাথায় এই প্রানীরা নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়।
ফেলিসেট
অন্যান্য দেশও ততদিনে মহাকাশ নিয়ে গবেষণা চালাতে শুরু করে। ১৯৬৩ সালের ১৮ অক্টোবর ফেলিসেট (Félicette) নামে একটি বিড়াল মহাকাশে পাঠিয়ে ফরাসিরা তাদের উপস্থিতি জানান দেয়। ফেলিসেট জীবিত ফিরে এলেও ছয়দিন পরে উৎক্ষেপিত আরেকটি বিড়ালের ভাগ্য তার মতো ভাল ছিল না।
মাকড়সা
১৯৬৯ সালে মানুষ চাঁদে পদার্পণের পর প্রাণী দিয়ে গবেষণার হার কমে গেলেও একেবার বন্ধ হয়ে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের হাই স্কুলের ছাত্রী জুডিথ মিলস প্রস্তাব করেন মাকড়সা মহাকাশে জাল বুনতে পারে কিনা দেখা দরকার। নাসার মনঃপুত হলো তার প্রস্তাব। ফলে ১৯৭৩ সালের ২৮ জুলাই অ্যানিটা আর অ্যারাবেলা নামে দুটি মাকড়সা পাঠানো হয়। অ্যারাবেলা মহাকাশে জাল বুনে বিজ্ঞানীদের তাক লাগিয়ে দেয়। এই জাল ছিল পৃথিবীর জালের থেকে কিছুটা সূক্ষ্ম। তা পর্যবেক্ষণ করে প্রাণীর চলাচলে ভরশূন্য পরিবেশের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
মহাকাশচারী মাছ
১৯৭৩ সালে নাসা মাছ আর মাছের ডিম পাঠিয়েছিল মহাশূন্যে। ২০১২ সালে জাপান মহাকাশ স্টেশনে মাছে অ্যাকুয়ারিয়াম প্রেরণ করে। স্বচ্ছ ত্বকবিশিষ্ট মাদেকা প্রজাতির মাছ এজন্য নির্বাচিত করা হয়, যাতে গবেষণার সুবিধা হয়। মূলত বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য রেডিয়েশনের প্রতি এসব মাছ কী প্রতিক্রিয়া দেখায়।
টারডিগ্রেড
এরা একরকমের অমেরুদণ্ডী প্রাণী, যাদের বাস পানিতে। পানির ভাল্লুক নামে পরিচিত টারডিগ্রেডরা যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য বিখ্যাত। ২০০৮ সালে মহাকাশে পাঠানোর পর দেখা যায় সেখানেও তারা নিজেদের স্বভাবমতো টিকে আছে। কেবল অতিবেগুনি রশ্মি তাদের কিছুটা ক্ষতি করতে পেরেছিল।
মহাশূন্যে প্রাণী পাঠানো নিয়ে বর্তমানে অনেক নৈতিক বিতর্ক থাকলেও এ কথা অনস্বীকার্য যে তাদের অবদান ব্যতিত মহাকাশ যাত্রা সম্ভবপর হতো না। নভোচারি এসব প্রাণীই বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, যা দ্বারা মানববাহী নভোযান উৎক্ষেপণের ঝুঁকি নেয়া হয়। এখনও কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশই এরকম পরীক্ষা নিরিক্ষা করে থাকে। তবে বিতর্ক ঠেকাতে তা সাধারণত গোপনীয়তা বজায় রেখেই করা হয়।