দ্রুত ওজন কমানোর কারণে ইদানীং কিটো ডায়েটের বেশ জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। তবে কিটো ডায়েট সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। পাশাপাশি কিটো ডায়েট অনুসরণের কারণে কিটো ফ্লু, কিডনীতে পাথর, ফ্যাটি লিভার প্রভৃতি রোগ হতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এ ডায়েট অনুসরণের ফলাফল সম্পর্কে গবেষকদের হাতে খুব বেশি তথ্য নেই।
সম্প্রতি অ্যামেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির বার্ষিক সভায় উপস্থাপিত এক গবেষণায় দীর্ঘমেয়াদে কিটো ডায়েটের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। গবেষণা বলছে- কিটো ডায়েট অনুসরণের ফলে অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্টের রক্তনালিতে ব্লক, স্ট্রোকের মতো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে।
আমাদের দেহের শক্তির মূল উৎস শর্করা জাতীয় খাদ্য। সাধারণত আমরা দৈনিক শক্তি চাহিদার ৪৫%-৬৫% শর্করা থেকে, ১০%-৩৫% আমিষ থেকে ও ২০%-৩৫% চর্বিজাতীয় খাদ্য থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিটো ডায়েটে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ১০% করা হয়। শর্করার অভাবে দেহ ফ্যাট বা চর্বিকে ভাঙতে শুরু করে, ফলে ওজন কমে। যকৃতে চর্বির ভাঙনে ‘কিটোন’ তৈরি হয় বলেই একে ‘কিটো ডায়েট’ বলা হয়। অন্যদিকে, এ ডায়েটে চর্বিজাতীয় খাদ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে ৬০%-৮০% এ নিয়ে আসা হয়।
প্রাথমিকভাবে যুক্তরাজ্যে কিটো ডায়েটের অনুরূপ খাবার গ্রহণকারী ৩০৫ জন ও স্বাভাবিক খাবার গ্রহণকারী ১,২২০ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এরপর প্রায় ১২ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়- কিটো ডায়েট অনুসরণকারী ব্যক্তিদের ৯.৮% ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকি দেখা দেয় যা স্বাভাবিক খাবার গ্রহীতাদের ক্ষেত্রে ৪.৩%। অর্থাৎ কিটো ডায়েটে হৃদরোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে।
পাশাপাশি কিটো ডায়েটে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) এর মাত্রাও বেড়ে যায়, যা মূলত হৃদরোগের কারণ হিসেবে কাজ করে। প্রাথমিকভাবে এ গবেষণায় বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কিটো ডায়েট অনুসরণ না করতে পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।