বেশ কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছিল, নাসার বিজ্ঞানীরা প্যারালাল ইউনিভার্সের সন্ধান পেয়েছেন! এমন আচমকা তথ্য বেশ নাড়া ফেলে দিয়েছিলো বিজ্ঞানপ্রেমীদের মাঝে। তবে বেশ কয়দিন পর আবার জানা গেলো, এমন কিছুর সন্ধান আসলে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ দিনশেষে পদার্থ বিজ্ঞানের এই রহস্যময় অধ্যায়টা এখনও অনাবিষ্কৃতই রয়ে গিয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছে। এই প্যারালাল ইউনিভার্স বা মাল্টিভার্স বলতে আসলে কী বোঝায়? এগুলো কি শুধুই তত্ত্ব, নাকি আদতে এর অস্তিত্ব রয়েছে? চলুন প্যারালাল ইউনিভার্স বা মাল্টিভার্স নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের কিছু দুর্বোধ্য তত্ত্ব সহজভাবে জানার চেষ্টা করি।
প্রথমেই জেনে নেই সাধারণ ভাষায় প্যারালাল ইউনিভার্স বা মাল্টিভার্স কাকে বলে! পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্বমতে, আমাদের এ বিশাল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আমাদের মহাবিশ্বের মতোই সমান্তরাল কিছু মহাবিশ্ব রয়েছে, যেখানে সময় আমাদের উল্টোদিকে প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ, বিশ্বজগতের কোথাও ঠিক এমন একটি মহাবিশ্ব আছে, যেখানে হয়তো আমাদের মতোই মিল্কিওয়ে ছায়াপথ আছে, আছে নানা নীহারিকা। সেখানেও সৌরজগতের মাঝে পৃথিবী নামে নীলাভ একটি গ্রহ আছে, যে গ্রহে হয়তো এই মুহুর্তে আপনার মতো দেখতে কেউ একজন অসীম আগ্রহ নিয়ে প্যারালাল ইউনিভার্সের তত্ত্ব সম্পর্কে পড়াশোনা করছে। অর্থাৎ, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কোথাও না কোথাও একইরকমের কিছু সমান্তরাল মহাবিশ্ব রয়েছে, যারা একে অপরের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানে না। একেই সাধারণভাবে প্যারালাল ইউনিভার্স বলা হয়ে থাকে।
এই অবিশ্বাস্য তত্ত্বটির উদ্ভবের পেছনের কারণগুলোও বেশ চমকপ্রদ। একটি নয়, বরং পদার্থবিজ্ঞানের বেশ কিছু তত্ত্ব সম্মিলিতভাবে প্যারালাল ইউনিভার্সের অস্তিত্বের দিকে ইঙ্গিত করে। আজ আমরা তেমনই কিছু ভিন্ন ভিন্ন তত্ত্বের মাধ্যমে প্যারালাল ইউনিভার্সের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।
সময় পরিভ্রমণের সম্ভাবনা
ভবিষ্যৎ পরিভ্রমণ বা টাইম ট্রাভেল তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব হলেও অতীত পরিভ্রমণ সংক্রান্ত সম্ভাব্যতার ক্ষেত্রে অতীতে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হন, যার মধ্যে একটি হলো ‘গ্রান্ডফাদার প্যারাডক্স’। মনে করুন, কোনো একজন ব্যক্তি সময় পরিভ্রমণ করে অতীতে গিয়ে তার শিশুবয়সী দাদুকে মেরে ফেললো। কিন্তু এটি যদি কেউ সত্যি সত্যি করতে পারে, তবে তার দাদুর তো প্রাপ্তবয়সে পৌঁছানোর কথা না, বিয়ে করার কথা না, বিয়ের পর সন্তানের জন্ম দেয়ার কথা না, এমনকি নাতী-নাতনী থাকারও কথা না। তাহলে, যদি কেউ অতীতে গিয়ে তার দাদুকে মেরেই ফেলে, তাহলে সেই হত্যাকারী নিজেই বা আসলো কোথা থেকে?
এই প্রশ্নের সম্ভাব্য কিছু উত্তরের একটি উত্তর হলো প্যারালাল ইউনিভার্স। বিজ্ঞানীদের মতে, কেউ যদি অতীত পরিভ্রমণ করতে চায়, তবে সে ওয়ার্মহোলের মধ্যে প্রবেশ করার পরে একই রকমের দেখতে অন্য একটি মহাবিশ্বে প্রবেশ করবে, সেখানে গিয়ে সে যদি তার দাদুর মতো কাউকে হত্যাও করে, তবে তা বিশেষ কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ ওয়ার্মহোলের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করা সেই সমান্তরাল মহাবিশ্বে হত্যাকারীর কখনোই কোনো অস্তিত্ব ছিলো না! তাছাড়াও, যেহেতু সময় সবসময় সামনের দিকে এগোয়, কখনোই পেছনের দিকে যায় না, সুতরাং অতীতে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে এমন এক মহাবিশ্বে প্রবেশ করা যেখানে সময় উল্টোদিকে প্রবাহমান। আর এই বৈজ্ঞানিক সম্ভাবনা এমন কোনো মহাবিশ্বে সম্ভব যেখানে সময় উল্টোদিকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। মূলত এভাবেই সময় পরিভ্রমণ সংক্রান্ত জটিলতার উত্তর খুঁজতে গিয়ে প্যারালাল ইউনিভার্সের সম্ভাবনাটি সামনে আসে।
স্রডিঞ্জারের বেড়াল তত্ত্ব
প্যারালাল ইউনিভার্সের সবচেয়ে চমৎকার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় সম্ভবত কোয়ান্টাম ফিজিক্সে। যেহেতু কোয়ান্টাম ফিজিক্স যথেষ্ট দুর্বোধ্য রকমের গাণিতিক সম্ভাবনা-নির্ভর একটি ক্ষেত্র, তাই আমরা বোঝার সুবিধার্থে খুব ছোট একটি উদাহরণ নিয়ে আলোচনা করবো। এই তত্ত্বটি জম্বি-ক্যাট থিউরি নামেও পরিচিত।
কোয়ান্টাম ফিজিক্সের মতে, ইলেকট্রন একই সময়ে ক্লক-ওয়াইজ ও এন্টি-ক্লকওয়াইজ ঘুরতে পারে। অর্থাৎ একটা মার্বেল, ক্রিকেট বল, ফুটবল থেকে শুরু করে গ্রহ-নক্ষত্রগুলোও ঘোরার সময় নির্দিষ্ট এক দিক অনুসরণ করলেও সাধারণত ইলেকট্রন তা করে না। এটি একই সময়ে দুই দিকেই স্পিন করতে পারে।
এখন মনে করুন, একটি বদ্ধ রুমে একটি ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন রাখা আছে। ইলেকট্রনটি স্পিন ডিটেক্টর একটি যন্ত্রের সাথে যুক্ত করা, যার শেষ প্রান্তে একটি হাতুড়ি যুক্ত আছে, যে হাতুড়ির সামনে রাখা বিষাক্ত গ্যাসভর্তি একটি কাচের টেস্টটিউব। ইলেকট্রনটি যদি ক্লক-ওয়াইজ স্পিন করে, তাহলে ডিটেক্টর যন্ত্রটি তা ডিটেক্ট করতে পারবে এবং হাতুড়ির আঘাতে টেস্টটিউবটি ভেঙে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়বে ও বিড়ালটি মারা যাবে। ইলেকট্রনটি এন্টি-ক্লকওয়াইজ ঘুরলে ডিটেক্টরে কোনো সংকেত পৌঁছাবে না, সুতরাং হাতুড়ি নড়বে না, টেস্টটউবটি অক্ষত থাকবে, ফলে বিড়ালটিও বেঁচে থাকবে। এখন, এক্ষেত্রে ঠিক কোন ঘটনাটি ঘটবে?
উত্তরটি একইসাথে খুবই সহজ এবং গোলমেলে। যদি ইলেকট্রনটি ক্লক-ওয়াইজ ঘুরে থাকে, তার মানে রুমটিতে একটি মৃত বিড়াল পড়ে আছে। যদি এর উল্টোটা হয়, অর্থাৎ ইলেকট্রনটি এন্টি ক্লক-ওয়াইজ ঘুরে থাকে, তবে সেক্ষেত্রে রুমটিতে একটি জীবিত বিড়াল আছে। কিন্তু আমরা যেহেতু বলেছি ইলেকট্রনটি একই সময়ে দুই দিকেই ঘুরছে, সুতরাং তত্ত্বমতে ঐ রুমে এখন এমন একটি বিড়াল রয়েছে যা একই সঙ্গে জীবিত ও মৃত! অর্থাৎ পরীক্ষণের ফলাফল অনুসারে ওই রুমটিতে এমন একটি বিড়াল রয়েছে, যা জীবিত না আবার মৃতও না! এ ধরনের সম্ভাবনার কারণে একে জম্বি-ক্যাট বলা হয়!
কোয়ান্টাম ফিজিক্সের এই অদ্ভুত নিয়মের কারণে গাণিতিকভাবে একই স্থানে ভিন্ন ভিন্ন একাধিক কিন্তু বিপরীত ঘটনা ঘটমান থাকার সম্ভাবনা থেকে যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেউ যদি রুমের ভেতর লক্ষ্য করেন, তাহলে কি তিনি একইসাথে জীবিত ও মৃত বিড়াল দেখতে পাবেন? উত্তর হচ্ছে, না! অর্থাৎ একই পরীক্ষণের জন্য আমরা ভিন্ন ভিন্ন পর্যবেক্ষক রাখলে প্রত্যেকে শুধুমাত্র একটি ফলাফলই দেখতে পাবেন। একজন পরীক্ষক মৃত বিড়াল এবং একই সময়ে অন্য একজন পরীক্ষক ওই রুমটিতে জীবিত বিড়াল দেখতে পাবেন। এর মানে হচ্ছে, একই ঘটনা দুজন পর্যবেক্ষক দুভাবে দেখতে পাচ্ছেন, কিন্তু একে অন্যেরটা দেখতে পাচ্ছেন না। অর্থাৎ ঐ নির্দিষ্ট ঘটনার সাপেক্ষে তারা ভিন্ন দুটি সময় প্রত্যক্ষ করছেন, তাদের পর্যবেক্ষণ দুটি ভিন্ন সময়রেখায় বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। ঠিক যেভাবে সমান্তরাল দুটি রেখা পাশাপাশি অবস্থানে চলতে শুরু করলেও অসীম দূরত্বেও তাদের কখনও দেখা হবে না। অর্থাৎ, দুটি ভিন্ন বা বিপরীত ঘটনা একই সময়ে একই স্থানে ঘটার গাণিতিক এই সম্ভাবনা আমাদের প্যারালাল ইউনিভার্সের দিকেই ইঙ্গিত প্রদান করে!
স্ট্রিং থিওরি
স্ট্রিং থিওরি (পরবর্তীকালে সুপার স্ট্রিং থিউরি)-কে ‘থিওরি অফ এভ্রিথিং’ বলা হয়। সম্ভবত আইনস্টাইনের স্পেইস-টাইম থিওরির পর এই স্ট্রিং থিওরিই পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে সাড়া জাগানো তত্ত্ব। এর সাহায্যে বিজ্ঞানীরা মূলত মহাবিশ্বের চারটি বল (মহাকর্ষ বল, তড়িৎ চৌম্বকীয় বল, সবল নিউক্লিয় বল ও দুর্বল নিউক্লিয় বল)-কে একত্রে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। এ তত্ত্বের মূলকথা হচ্ছে, মহাবিশ্বের সকল কিছুই কিছু স্ট্রিং-এর কম্পন থেকে তৈরি। প্রশ্ন হচ্ছে, এই স্ট্রিংগুলোর কোথায় অবস্থান করে?
আমরা যদি কোনো পদার্থকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করতে থাকি, তবে আমরা অণু, পরমাণু, নিউক্লিয়াস, ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন, কোয়ার্ক ইত্যাদির দেখা পাবো। তবে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান বলে, কোয়ার্কের পরেও আরো একটি ক্ষুদ্র অংশ রয়েছে পদার্থের। যদি আমরা কোয়ার্ককে বর্ধিত করি তাহলে পাবো এক শক্তি, যা সুতো বা তারের মতো। যখন কেউ গিটারে সুর তোলে গিটারের তার কেঁপে শব্দগুলো তৈরি করে। এখানেও স্ট্রিং অর্থাৎ সুতোটি ভাইব্রেট করে আর কোয়ার্ক তৈরি করে। কোয়ার্ক তৈরি করে নিউট্রন। এভাবে যদি আমরা সবগুলোকে আবার একত্রিত করি তাহলে পাবো সেই মূল মৌলিক পরমাণুটি। আমরা এখন পর্যন্ত যা কিছু আবিষ্কার করলাম তার সবই মূলত কিছু স্ট্রিং প্রতিটি ধাপে তার নিজের রূপে কম্পিত হয়ে এগুলো সৃষ্টি করছে। এটাই স্ট্রিং থিওরির মৌলিক ধারণা।
এখন, বিজ্ঞানীরা এ স্ট্রিং থিওরি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে একপর্যায়ে দেখলেন, এগুলোকে ব্যাখ্যা করার জন্য বেশ কিছু মাত্রার প্রয়োজন হচ্ছে, যা কি না আমাদের চতুর্থমাত্রিক মহাবিশ্বের থেকেও অধিক মাত্রার। অর্থাৎ, এই স্ট্রিং থিওরির সাহায্যে কণিকাগুলোকে ব্যাখ্যা করার জন্য প্রয়োজন দশটি ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার। যেক্ষেত্রে এই মাত্রাগুলো এই চার মাত্রার বাইরেও থাকতে পারে, আবার ঘুরে-ফিরে এই চার মাত্রার ভেতরেও থাকতে পারে। প্রশ্ন জাগতে পারে, মাত্রার ভেতরে আবার মাত্রা কীভাবে থাকে! একটু কঠিন লাগছে? আরেকটু সহজভাবে ব্যাখ্যা করা যাক!
ধরে নেই, আমি একটি একটি সরু বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। বাঁশটি আমার কাছে একটি সরলরেখার মতোই, একমাত্রিক। আমি শুধুমাত্র এর দৈর্ঘ্য বরাবরই হাঁটতে পারবো। কিন্তু একটি পিঁপড়ার কাছে বাঁশটি দ্বিমাত্রিক। কারণ সে চাইলে বাঁশের পরিধি বরাবরও ঘুরে আসতে পারবে। ঠিক একইভাবে, আমাদের চারপাশের মাত্রাগুলোর মধ্যেও এমন ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা থাকা সম্ভব, যেসকল মাত্রায় আমাদের অধিগমনের ক্ষমতা না থাকলে অন্য মাত্রায় অধিগমন করার ক্ষমতা অন্য কারোর থাকতেই পারে। আবার, যে পিঁপড়াটি যখন বৃত্তাকার বাঁশের ভেতরের ঢুকবে, তখন তার মনে হবে সে একটি বেলনাকার ত্রিমাত্রিক তলের মধ্যে আছে। এখন ভেবে দেখুন, বাঁশের দ্বিমাত্রিক তলে চলাচল করার সময় সে কিন্তু বাঁশের উপরে শুধুমাত্র একমাত্রিক তলে হেঁটে যাওয়া আমাকে দেখতে পাচ্ছে না। অর্থাৎ, ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় প্রবেশ সাপেক্ষে আমরা একে অন্যকে অনেক সময় দেখতে পাইনি। দশমাত্রিক এই মহাবিশ্বের ধারণা থেকেই প্যারালাল ইউনিভার্স ধারণা আসে। ধারণা করা হয়, আমাদের এই মহাবিশ্বের মাঝেই অন্য কোনো মহাবিশ্ব বিদ্যমান আছে, কিন্তু মাত্রাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে আমাদের সেসকল মহাবিশ্বে অধিগমনের ক্ষমতা নেই।
স্ট্রিং তত্ত্বের অন্য একটি দিক আমাদের মাল্টিভার্সের সম্ভাবনার দিকেও ইঙ্গিত প্রদান করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আমাদের বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এত বেশি পরিমাণে অসীম ব্যপ্তিসম্পন্ন যে, এখানে একাধিক পরিমাণে ইউনিভার্স থাকা সম্ভব। বিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের মহাবিশ্বের বাইরেও আরো কিছু বিগ ব্যাং হয়েছে বা হয়ে চলেছে, যার ফলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে একাধিক মহাবিশ্ব। অর্থাৎ একটি বড় বাবলের মধ্যে যদি আমরা অনেকগুলো ছোট ছোট বাবলের কথা চিন্তা করি তাহলে আমরা বুঝতে পারবো মাল্টিভার্স কীভাবে সৃষ্টি হচ্ছে বা টিকে আছে।
সবশেষে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ প্রশ্নের উত্তর! প্যারালাল ইউনিভার্সের সত্যিই ভ্রমণ করা সম্ভব কি না! উত্তর, তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব! তবে তার জন্যে দুটি জিনিসের প্রয়োজন। এক, ভিন্ন মাত্রায় অধিগমনের সক্ষমতা অর্জন; দুই, ওয়ার্মহোলের মধ্যে দিয়ে অতীত ভ্রমণের মাধ্যমে প্যারালাল ইউনিভার্সে যাত্রা। তবে পদার্থবিজ্ঞান যেহেতু আজ অব্দি আমাদের এই দুটির কোনোটিরই কোনোরুপ বাস্তব সম্ভাবনা দেখাতে সক্ষম হয়নি, তাই ধরে নিচ্ছি, আপাতত আমাদের আর প্যারালাল ইউনিভার্স বা মাল্টিভার্সে ভ্রমণ করা সক্ষম হচ্ছে না। এই লেখাটি পড়ে এই মুহূর্তে পাঠকের যে রকমের আফসোস হচ্ছে, হয়তো বা পাঠকের অনুরুপ একজন মানুষও একই সময়ে, একইভাবে, অন্য কোনো মহাবিশ্বে বসে একই লেখাটি পড়ছেন আর প্যারালাল ইউনিভার্সের দেখা পাবেন না বলে আফসোস করছেন!