আমরা সবাই কমবেশি ‘হাতুড়ে ডাক্তার’ শব্দটির সাথে পরিচিত। একটা সময় ছিল, যখন এই হাতুড়ে ডাক্তাররাই বিভিন্ন রোগব্যাধি মোকাবেলায় বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রধান ভরসাস্থল ছিল। এমনকি খুব গুরুত্বপূর্ণ রোগের ক্ষেত্রেও মানুষ তাদের উপর নির্দ্বিধায় ভরসা করত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার হার বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছে। তাই এখন কেউ অসুস্থ হলে সচরাচর হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে যায় না।
তবে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে হাতুড়ে ডাক্তাররা কালের বিবর্তনে হারিয়ে যায়নি বরং এরা আরো শক্তিশালী হয়েছে। কেননা, তারা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়নি। এখনকার সময়ের হাতুড়ে ডাক্তাররা আরো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে, আর তারা বিভিন্ন অভিনব উপায়ে আমাদের সমাজের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। অসচেতন, অশিক্ষিত ও দুর্বল প্রকৃতির মানুষজনই হচ্ছে তাদের অপচিকিৎসার মূল শিকার। আর এর ফল ভোগ করছে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ।
যাহোক, হাতুড়ে ডাক্তার নিয়ে কথা বলা এ লেখার মূল উদ্দেশ্য নয়। আজ কথা হবে হাতুড়ে ডাক্তারের সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয় নিয়ে, আর সেটি হচ্ছে প্লাসিবো ইফেক্ট।
প্লাসিবো ইফেক্ট কী?
প্লাসিবো ইফেক্ট হচ্ছে, রোগীকে দক্ষতার সাথে এমন ওষুধ বা ব্যবস্থাপনা দেওয়া, যার বাস্তবে রোগের সাথে কোনো সম্পর্কই নেই। কোনো সম্পর্ক তা থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ সময় রোগী সেই ওষুধ বা ব্যবস্থাপনার কারণে সুস্থতা লাভ করে অথবা ভালো বোধ করে। অবাক লাগছে। তাই না? এখন ভালো করে ভেবে দেখুন তো, এ রকম অভিজ্ঞতার সাথে আমরা অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিচিত কিনা? এর উত্তরও রয়েছে আমাদের আশেপাশেই।
বেদে বা বাইদ্যাদের কথা হয়তো শুনে থাকবেন। এরা এমন এক জনগোষ্ঠী যারা নানান কবিরাজি চিকিৎসার জন্য পরিচিত ছিল। যদিও বর্তমান পরিস্থিতি যথেষ্ট ভিন্ন। সময়ের সাথে সাথে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নানাবিধ উন্নতি সাধনের ফলে মানুষ চিকিৎসার জন্য তাদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেললেও ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় এর উল্টো চিত্র। সাপের কামড়ের চিকিৎসা থেকে শুরু করে দাঁতের পোকা এবং বাতের ব্যথা সহ অসংখ্য রোগের জন্য মানুষ তাদের উপর নির্ভরশীল ছিল।
বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞান এসব চিকিৎসা পদ্ধতিকে তীব্রভাবে লোক ঠকানোর কাজ হিসেবে অভিহিত করলেও, সাধারণ গ্রামীণ মানুষজন যে তাদের চিকিৎসা থেকে বিন্দুমাত্র উপকৃত হয়নি, তা বলা যায় না। এর কারণও স্পষ্ট। সেটি হল, শুধুমাত্র প্রতারণা করে এভাবে শত শত বছর লোক সমাজে টিকে থাকা মোটেও সহজ নয়।
পাঠক আবার ভেবে বসবেন না, এখানে তাদের প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিকে সমর্থন করা হচ্ছে। এ লেখার উদ্দেশ্য অন্যত্র; সেটি হলো, অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হওয়া সত্ত্বেও বেদেরা অথবা আমাদের সমাজের নব্য হাতুড়ে ডাক্তাররা ক্ষেত্রবিশেষে রোগীর সমস্যা উপশমে সফল হয় কেন, সে সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে দেখা।
কবিরাজ, ওঝা, হেকিম ও শামানরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে চিকিৎসার জন্য সুপরিচিত ছিল। এমনকি এমনও বলা হয়, যার নামের জোর যত বেশি, তার ওষুধ ও ব্যবস্থাপনার জোর তত বেশি। মানুষ বিশ্বাস করত, ছোটখাটো সাধারণ হেকিম অপেক্ষা বিখ্যাত হেকিম হলে, রোগব্যাধি অতি সহজে এবং অত্যন্ত নিশ্চয়তার সাথে নিরাময় হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বিকশিত হওয়ার আগে এরাই ছিল চিকিৎসাশাস্ত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। ঊনিশ শতকের আগে চিকিৎসাশাস্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে তারা প্লাসিবো ইফেক্ট ব্যবহার করত। অর্থাৎ, না বুঝেই তারা অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা করতো। তারা সমাজে এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে অনেকেই তাদেরকে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী বলে মনে করত।
প্রচলিত আছে, চিকিৎসাবিজ্ঞান বিকশিত হওয়ার আগে ইউরোপে হাতুড়ে ডাক্তাররা এক জায়গায় বেশি দিন থাকত না, তারা ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা দিত। তারা যখন কোনো জায়গায় যাত্রা করতো, তার আগে সেখানে তাদের কিছু দক্ষ ও চালাক অনুসারীদের পাঠাত তাদের হয়ে প্রচারণা করার জন্য। সেই অনুসারীরা তাদের গুরুর নানা অতিমানবীয় কীর্তি জনসমাগমে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করত। এভাবেই তারা সেখানকার সাধারণ মানুষদের প্রভাবিত করত, তাদের চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। আর এর ফলে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হতো এবং দ্রুত অন্যত্র সরে পড়ত।
এ প্রকৃতির চিকিৎসক যথেষ্ট সচেতন ছিল; তার কারণ তারা নিতান্তই অনুমানের উপর ভিত্তি করে ব্যবস্থাপত্র দিত না। তারা প্রথমে রোগাক্রান্ত মানুষের বিভিন্ন লক্ষণ ও উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করত এবং সে অনুযায়ী ওষুধ ও ব্যবস্থাপনা দিত। তাই ছোটখাটো রোগ নিরাময়ে তারা সফলকাম হতো এবং সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করত।
নব্য হাতুড়ে ডাক্তাররা তো আরও একধাপ সরেস। প্রথমে তারা কোনো অনুমতিপ্রাপ্ত ডাক্তারের সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করে এবং কাজ করার সময় নানারকম রোগী ও ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ পায়। এর ফলে একসময় তারাও অবৈধভাবে রোগী দেখার চেম্বার খুলে বসে এবং কোনোপ্রকার অনুমতি ছাড়াই চিকিৎসা দেওয়া শুরু করে। কেউ কেউ তো আবার অত্যন্ত বিপজ্জনকভাবে অপারেশনও করে, যার ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেক মানুষ স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মজাদার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বেশকিছু ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ঝাঁঝালো টনিক ওয়াটারের সাথে এক ফালি লেবু দিয়ে পরিবেশন করানো হয় এবং তাদেরকে বলা হয় এগুলো হচ্ছে ভদকা; অবাক করা বিষয় হলো, পরীক্ষা শেষের প্রশ্নোত্তর পর্বে,পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই নিজেদেরকে মাতাল হিসেবে দাবি করে। তাছাড়া তাদের শরীরে নানা রকম মাতলামির লক্ষণ ও উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করা হয়, অথচ তাদের উপর প্রয়োগকৃত পরীক্ষায় কোথাও অ্যালকোহলের ব্যবহার ছিল না।
কথায় আছে, মনের জোরই বড় জোর। এক্ষেত্রে এটিই সত্য প্রমাণিত হয়েছে এবং এই বিষয়টিকেই বলা হয় প্লাসিবো ইফেক্ট। এখানে ভদকা না খেয়েও মাতাল হওয়ার বিষয়টিকে প্লাসিবো ইফেক্ট আর টনিক ওয়াটাররের পরিবর্তে ভদকা ব্যবহৃত হওয়ার কারণে একে আমরা বলি প্লাসিবো।
ঠিক এরকম ঘটনা ঘটে চিকিৎসাক্ষেত্রে। অনেকসময় ডাক্তাররা ইচ্ছাকৃতভাবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে রোগ নির্ণয় করেন এবং ওষুধ হিসেবে রোগীকে ‘চিনির ট্যাবলেট’ প্রদান করেন। সম্পূর্ণ বিষয়টি রোগীর অজানা থাকায় সে চিনির ট্যাবলেটকেই আসল ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করে এবং আশ্চর্যজনকভাবে সুস্থ বোধ করে। এটিকে নিছক গালগপ্পো ভেবে উড়িয়ে দেবার অবকাশ নেই, এর পেছনেও রয়েছে একটি যুক্তিসঙ্গত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
মস্তিষ্ক যখন বুঝতে পারে অথবা ধরে নেয়, আমরা খুবই কার্যকর কোনো ওষুধ খাচ্ছি, তখন সে নিজেই এন্ডোরফিন নামক একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত করে। এর গাঠনিক সংকেত মরফিনের মতো। আর মরফিন ব্যথা নিরাময়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে এন্ডোরফিন আমাদের মস্তিষ্কের নিজস্ব ব্যথা নিরাময়করী উপাদান হিসেবে কাজ করে; এর প্রভাবে রোগী তার ব্যথা থেকে উপশম লাভ করে এবং ভালো অনুভব করে। প্লাসিবো ইফেক্টের ফলে রোগীর মস্তিষ্কে যে আসলে পরিবর্তন হয়, তা দেখা যায় তা এফএমআরআই করলেই বোঝা যায়।
এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বলে রাখা প্রয়োজন, প্লাসিবো ইফেক্টের ফলে আপনি কোনো রোগ থেকে সাময়িক মুক্তি পেতে পারেন, কিন্তু এটি স্থায়ী সমাধান নয়। কারণ প্লাসিবো ইফেক্টে প্রয়োগকৃত কোনো প্লাসিবো আপনার রোগের উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। তবুও চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর গুরুত্ব অনেক বেশি। নতুন নতুন ওষুধের কার্যকারিতা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্লাসিবো ইফেক্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নতুন কোনো ভ্যাকসিন যখন মানুষের উপর প্রয়োগ করা হয়, তার আগে একটি জনসংখ্যার অর্ধেকের উপর প্লাসিবো ভ্যাকসিন এবং বাকি অর্ধেকের উপর নতুন ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।
এক্ষেত্রে রোগী অথবা ডাক্তার কেউ জানেন না যে, কোন ব্যক্তিকে কোন ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। তবে, সঙ্কেতের মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে এই তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এর ফলে পরীক্ষাটি কোনো পক্ষপাত ছাড়াই সংঘটিত হয়। এ পদ্ধতিকে ডাবল ব্লাইন্ড পরীক্ষা বলা হয়। এ পরীক্ষায়, আসল ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যদি প্লাসিবো ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের থেকে বেশি সুস্থ হয়, তবেই সেটিকে কার্যকরী ভ্যাকসিন বলে ঘোষণা করা হয়।
প্লাসিবো ইফেক্ট অনেকগুলো বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। ডাক্তার আর রোগীর মধ্যকার সম্পর্ক তার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ রোগী আর ডাক্তারের সম্পর্ক যদি ভালো হয়, তাহলে প্লাসিবো ইফেক্ট কাজ করার সম্ভাবনা বেশি। এজন্য বেশিরভাগ সময় মানুষ চিকিৎসার জন্য স্বনামধন্য ও পরিচিত ডাক্তার খোঁজেন। যে ডাক্তারের যত বেশি খ্যাতি, তার বেলায় প্লাসিবো ইফেক্ট তত বেশি কার্যকরী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার ডাক্তার যদি কোনো রোগকে গুরুত্ব সহকারে দেখেন, তাহলে প্লাসিবো ইফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়। তাছাড়া ডাক্তার বা ওষুধ থেকে রোগীর আশা যত বেশি থাকবে, সেটি প্লাসিবো ইফেক্টকে তত বেশি প্রভাবিত করবে। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যদি মনে করে, অমুক ডাক্তার খুবই ভালো এবং তমুক ওষুধ সর্বাধিক কার্যকরী, তাহলে সেক্ষেত্রে প্লাসিবো ইফেক্ট কার্যকরী হবে।
তুলনামূলক বেশি তেতো ওষুধের ক্ষেত্রে প্লাসিবো ইফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়। রঙ-বেরঙের বিভিন্ন রকম ওষুধের মধ্যে ব্যথা নিরাময় করে এমন জাতীয় ওষুধের রং হচ্ছে সাদা, তার কারণ হচ্ছে সাধারণত সাদা রংকে প্রশমনের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও এর ব্যতিক্রম হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক নয়। তবুও ওষুধ তৈরি ও বাজারজাতকরণের আগে ওষুধের রং, নাম ও ওষুধে ব্যবহৃত চিহ্ন অনেক মনস্তাত্ত্বিক বিষয় ভেবে নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রেও প্লাসিবো ইফেক্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্লাসিবো ইফেক্ট কেন কাজ করে, গবেষকদের কাছে এর কারণ এখনও প্রায় অজানা। তবে অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়। সেটি হলো, ব্যক্তির জিনগত বৈশিষ্ট্য। তাই যেসব ব্যক্তির মস্তিষ্কের ডোপামিন বেশি নিঃসৃত হয়, তারা বা তাদের ক্ষেত্রে প্লাসিবো ইফেক্ট বেশি কাজ করে। এর ফলে যেসব ব্যক্তির দেহে ডোপামিন তুলনামূলক বেশি নিঃসৃত হয়, সে সকল ব্যক্তির ক্ষেত্রে চিকিৎসা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি হয়।
আমরা আগেই জেনেছি যে প্লাসিবো ইফেক্ট নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। আর এর কিছু ভালো এবং কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তবে এর ভালো দিকগুলো চিকিৎসাবিজ্ঞানে আশানুরূপ ভূমিকা পালন করছে। যেমন, নতুন ওষুধ,ভ্যাকসিন ইত্যাদির কার্যকরী ভূমিকা নির্ধারণ। তাছাড়া ডিপ্রেশনের রোগীদের সেক্ষেত্রে প্লাসিবো ট্রিটমেন্ট ভালো কার্যকরী হয় কারণ ডিপ্রেশনের সাথে মনস্তাত্ত্বিক বিষয় সরাসরি জড়িত।
আবার আমাদের আশেপাশে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন, যারা সবসময় কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত থাকেন, কিন্তু ডাক্তাররা রোগের সঠিক কারণ নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হন। তাদের ক্ষেত্রে প্লাসিবো ইফেক্টের মাধ্যমে চিকিৎসা করালে বেশ ভালো ফল পাওয়া সম্ভব হতে পারে। আর এর ক্ষতিকর দিক গুলো একটু সচেতন থাকলেই এড়ানো সম্ভব হয়।
যেমন দাঁতে পোকা ধরা একটি সাধারণ সমস্যা। তবে এর চিকিৎসার জন্য আমাদের ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াই সর্বপ্রথম কাজ হওয়া উচিত। কারণ, আমরা যদি বেদে অথবা কবিরাজের কাছে যাই, তারা হয়তো আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দাঁত থেকে পোকা এনে দেখাবে এবং আমরা সন্তুষ্ট হব; এর ফলে প্লাসিবো ইফেক্ট কাজ করবে এবং সাময়িক ব্যথা মুক্তির কারণে ভেবে বসা হবে, দাঁতের সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।
কিন্তু একথা আবারো বলা প্রয়োজন, প্লাসিবো ইফেক্ট সাময়িকভাবে ব্যথা প্রশমন করলেও এটি কোনো চিরস্থায়ী সমাধান নয়। তাই সঠিক চিকিৎসা না নিলে দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণা ভোগ করতে হতে পারে। অতএব, একথা বলা বোধহয় ভুল হবে না, মনের জোর বড় জোর হলেও, জ্ঞানের জোর মোটেও ফেলনা নয়!