অ্যাডেনোভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে যা জানা উচিত

সম্প্রতি ভারতের কিছু কিছু জায়গায় অ্যাডেনোভাইরাসের (Adenovirus) সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও আমাদের সতর্ক থাকা উচিত। কারণ অ্যাডেনোভাইরাস (Adenovirus) বেশ ছোঁয়াচে ধরনের রোগ। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এর মূল কারণ ভাইরাস। অন্তত ৫০ রকমের অ্যাডেনোভাইরাস মানবদেহে রোগের জন্য দায়ী।

অ্যাডেনোভাইরাস; Image Source: duke.edu

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের ভালো, তারা সাধারণত তেমন কোনো সমস্যা বোধ করেন না। লক্ষণ দেখা দিলে সাধারণত শরীরে ভাইরাস প্রবেশের ৫-৬ দিনের মধ্যেই দেখা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঠাণ্ডা-জ্বরের উপসর্গ থাকে। জ্বর, কফ-কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি লক্ষণই সাধারণত দেখা যায়। কেউ কেউ আবার ডায়রিয়া, বমি, পেটব্যথা, চোখ লাল হওয়া ইত্যাদি নিয়েও ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন। ক্ষেত্রবিশেষে ফুসফুসে সংক্রমণ, এমনকি নিউমোনিয়াও হতে পারে। মস্তিষ্কের সংক্রমণ দুর্লভ হলেও একেবারে অসম্ভব নয়।   

রোগের নানা লক্ষণ; Image Source: tokiomarine.com.vn

অ্যাডেনোভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশি অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে। শীত এবং বসন্তে ভাইরাসের আক্রমণ বেশি হয়। ভাইরাস সবাইকেই আক্রমণ করতে পারে। তবে দশ বছরের নিচে বাচ্চাদের এবং বড়দের মধ্যে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের ঝুঁকি বেশি।

বাচ্চারাই সাধারণত ঝুঁকিতে থাকে বেশি; Image Source: cradlehallps.wordpress.com

চিকিৎসা না করলেও অ্যাডেনোভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত কিছুদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা, স্বাস্থ্যকর আহার গুরুত্বপূর্ণ। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় সমস্যা থাকলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। এই রোগীদের জন্য প্রয়োজন হলে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র অ্যাডেনোভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাক্সিন তৈরি করেছে, তবে কেবল সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্যই এর প্রয়োগ সীমাবদ্ধ।তবে এই ভ্যাক্সিন কেবল দুই ধরনের ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

ভ্যাক্সিন কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দেয়া হয়; Image Source: who.int

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। সুতরাং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে ভাইরাসের আক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়। সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি দেবার সময় মুখ ঢেকে রাখা ইত্যাদি সাধারণ, কিন্তু কার্যকর প্রতিরোধ। যতটা সম্ভব রোগীর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। কেউ অ্যাডেনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে তার উচিত হবে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাইরে না যাওয়া।  

Language: Bangla
Topic: A short introduction to Adenovirus
References
• American Thoracic Society: Patient Education. Adenovirus Infection and Outbreaks: What You Need to Know.
• Centers for Disease Control and Prevention. Adenovirus Infection.
• Adenovirus Infections. Merck Manual.
Feature Image: forbes.com

Related Articles

Exit mobile version