আজ থেকে ৪০০ বছর আগে ডাচ বিজ্ঞানী হ্যানস লিপারশে টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন। পরে জ্যোতির্বিজ্ঞানে টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিপ্লব সাধন করেন গ্যালিলিও। আধুনিককালের জ্যোতির্বিজ্ঞান তো সম্পূর্ণই টেলিস্কোপের কারিশমা। সৌরজগৎ তো বটেই, নিজেদের গ্যালাক্সি ছাড়িয়ে এখন মহাবিশ্বের দূরদূরান্তের গ্যালাক্সির দিকে নজর রাখতে পারছে পৃথিবীর মানুষ। এই টেলিস্কোপ নিয়ে তাই আমাদের কৌতূহলের কমতি নেই। আজকের আলোচনায় থাকবে বর্তমান পৃথিবীর বৃহত্তম টেলিস্কোপগুলো। এখানে বড়র মানদণ্ড হিসেবে ‘অ্যাপাচার’ গ্রহণ করা হয়েছে এবং সর্বনিম্ন ৮ মিটার ব্যাসের অ্যাপাচার বিশিষ্ট টেলিস্কোপই কেবল এ তালিকায় স্থান পেয়েছে। বলা প্রয়োজন, আলোকবিজ্ঞানে অ্যাপাচার বলতে আলো প্রবেশের কোনো ছিদ্র বা গমন পথকে বোঝায়। প্রতিফলক টেলিস্কোপে এর প্রতিফলক কাঁচগুলো অ্যাপাচারের চেয়ে বেশ বড় হতে পারে, কিন্তু অ্যাপাচারই মূলত টেলিস্কোপের রেজুলেশন ঠিক করে দেয়। তাছাড়া, টেলিস্কোপের পরিমাপ নির্ধারক মাপকাঠিও অ্যাপাচারের পরিমাপই।
১. গ্র্যান টেলিস্কোপিও ক্যানারিয়াস
স্পেনের লা পালমা দ্বীপে অবস্থিত ১০.৪ মিটার (৪১০ ইঞ্চি) ব্যাসের অ্যাপাচার বিশিষ্ট ‘গ্র্যান টেলিস্কোপিও ক্যানারিয়াস’ পৃথিবীর বৃহত্তম টেলিস্কোপ। এটি লা পালমা দ্বীপে অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম মানমন্দির ‘রুকে ডি লস মুচাচোস অবজারভেটরি’র একটি টেলিস্কোপ। এর মালিকানার ৯০ শতাংশ স্পেনের। বাকি ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের।
১৩০ মিলিয়ন ইউরো খরচে নির্মিত এ টেলিস্কোপের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০০২ সালে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়া আর প্রত্যন্ত দ্বীপে অবস্থিত হওয়ায় এর নির্মাণকাজে বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়েছিল নির্মাতাদের। ১২টি প্রতিফলক কাঁচ নিয়ে ২০০৭ সালে পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণ শুরু হলেও দু’বছর পর, ২০০৯ সালের জুলাইয়ে গ্র্যান টেলিস্কোপের উদ্ভোধন করেন তৎকালীন স্প্যানিশ রাজা প্রথম হুয়ান কার্লোস। এতে মোট ৩৬ খণ্ড প্রতিফলক কাঁচ রয়েছে।
২. কেক-১ ও কেক-২ টেলিস্কোপ
১৯৭৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং লরেন্স বার্কলি গবেষণাগারের কয়েকজন বিজ্ঞানী মিলে একটি বড় টেলিস্কোপ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। কয়েকবছর পর চূড়ান্ত নকশা তৈরি হয়ে গেলে তারা অর্থায়নের জন্য বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান এবং ধনী ব্যবসায়ীর নিকটস্থ হন। শেষতক তাদের আবেদনে সাড়া দেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট ধনকুবের ব্যবসায়ী এইচ. বি. কেক, যার প্রতিষ্ঠিত ডব্লিউ এম কেক ফাউন্ডেশন প্রাথমিকভাবে ৭০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করে ‘কেক-১’ টেলিস্কোপের নির্মাণকাজের জন্য। কেক-১ এর পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণ সফল হলে শুরু হয় কেক-২ এর নির্মাণকাজ, পাশাপাশি চলতে থাকে কেক-১ এর কাজও।
এ দুটি টেলিস্কোপ নির্মাণে মোট খরচ হয় ১৪০ মিলিয়ন ডলার, যার পুরোটাই বহন করে কেক ফাউন্ডেশন। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪,১০০ মিটার উচ্চতায় স্থাপিত এ টেলিস্কোপদ্বয়ের নির্মাণকাজ শেষ হয় যথাক্রমে ১৯৯৩ ও ১৯৯৬ সালে। উভয় টেলিস্কোপে ৩৬টি ষড়ভূজাকার প্রতিফলক কাঁচ রয়েছে এবং উভয়ের ব্যাসই ১০ মিটার। এ টেলিস্কোপদ্বয়ের একটি বিশেষত্ব হলো, এদের প্রতিটি প্রতিফলক কাঁচকে পৃথকভাবে আলো প্রতিফলনের জন্য নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাছাড়া, উভয় টেলিস্কোপেই অবলোহিত রশ্মিগুলোর চিত্র আরো পরিষ্কার এবং স্বচ্ছভাবে ধারণ করার জন্য বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। টেলিস্কোপ দুটি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত ‘মাউনা কিয়া অবজারভেটরি’র অংশ।
৩. সল্ট
‘সাউথ আফ্রিকান লার্জ টেলিস্কোপ’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ সল্ট। ৯.৮ মিটার ব্যাসের অ্যাপাচার বিশিষ্ট এ টেলিস্কোপটি ‘সাউথ আফ্রিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি’ তথা সাও নামক মানমন্দিরের সম্পদ। দক্ষিণ আফ্রিকার কারু নামক অঞ্চলের সাদারল্যান্ড শহরে অবস্থিত এ দৈত্যাকার টেলিস্কোপটির কাঠামো তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৪৫ টন লোহা। পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে এটিই সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা সাও এর সাথে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে টেলিস্কোপটির ১ গিগাবাইট/সেকেন্ড গতিসম্পন্ন তথ্য প্রবাহের ব্যবস্থা রয়েছে।
১০৮ মিলিয়ন ডলার খরচে ২০০৫ সালের মে মাসে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় সল্টের। এ অর্থের এক-তৃতীয়াংশ বহন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাকি অর্থ আসে এ টেলিস্কোপের অপর ৫ অংশীদার জার্মানি, পোল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য থেকে। তৎকালীন দক্ষিণ আফ্রিকান প্রেসিডেন্ট থিবো বেকি এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর সল্টের ধারন করা প্রথম ছবি ছিল ‘৪৭-তুকানে’ নামক একটি তারকাগুচ্ছের ছবি। নক্ষত্ররাজি পর্যবেক্ষণ এবং তাদের উচ্চ রেজুলেশনের ছবি গ্রহণ করা ছাড়াও সল্ট বর্ণালীবীক্ষণ এবং পোলারিমেট্রিক বিশ্লেষণে কাজ করবে।
৪. লার্জ বাইনোকুলার টেলিস্কোপ
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের গ্রাহাম পর্বতমালায় ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩,৩০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত ‘লার্জ বাইনোকুলার টেলিস্কোপ’ বা সংক্ষেপে এলবিটি প্রযুক্তিগতভাবে পৃথিবীর অন্যতম উন্নত একটি টেলিস্কোপ। ৮.৪ মিটার ব্যাসের অ্যাপাচার বিশিষ্ট এ টেলিস্কোপটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম টেলিস্কোপও। ‘মাউন্ট গ্রাহাম অবজারভেটরি ১৯৯৬ সালে ‘প্রোজেক্ট কলম্বাস’ নামে এ টেলিস্কোপটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর বাজেটের ১০০ মিলিয়ন ইউরো আসে ৫টি যুক্তরাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ৪টি জার্মান ও ১টি ইতালিয়ান গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে। এ টেলিস্কোপটির দুটি ৮.৪ মিটার অ্যাপাচার কাচ রয়েছে, যে কারণে এর নামের সাথে ‘বাইনোকুলার’ শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে।
নির্মাণকাজ শুরুর সময় বেশ কিছু বাঁধার সম্মুখীন হয়েছিল এই টেলিস্কোপটি। প্রথমত, গ্রাহাম পর্বতকে ঐ অঞ্চলের স্যান কার্লোস উপজাতি গোষ্ঠী পবিত্র মনে করতো। দ্বিতীয়ত, গ্রাহাম পর্বত ছিল পৃথিবীর একমাত্র পর্বত যেখানে বিরল প্রজাতির লাল কাঠবিড়ালির বসবাস আছে। প্রকৃতিবিদরা অভিযোগ করেছিলেন যে, টেলিস্কোপ স্থাপনে কাঠবিড়ালিদের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে। ৪০টির বেশি মামলা হলেও শেষতক টিকে যায় এলবিটি। ২০০৬ সাল থেকে আনুষ্ঠানিক পর্যবেক্ষণ শুরু করার পর থেকে এটি এখনো পর্যন্ত বেশ কয়েকটি নক্ষত্ররাজি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে, যাদের একটি পৃথিবী থেকে ৭০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে!
৫. সুবারু টেলিস্কোপ
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের ‘মাউনা কিয়া’ মানমন্দিরে অবস্থিত সুবারু টেলিস্কোপটি জাপানের ‘ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি’র সম্পত্তি। জাপানী শব্দ ‘সুবারু’র ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘প্লিয়েডস’। এই প্লিয়েডস হচ্ছে একটি মুক্ততারকা গুচ্ছের নাম, যার নামানুসারে এই টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই অপটিক্যাল টেলিস্কোপটির অ্যাপাচার ব্যাস ৮.২ মিটার। জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম এ টেলিস্কোপ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়। সম্পূর্ণ পরিকল্পনা ও নকশা প্রস্তুত হয়ে গেলে তারা মাউনা কিয়া মানমন্দির কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি করে মাউনা কিয়া পর্বতে টেলিস্কোপটি স্থাপনের জন্য।
১৯৯১ সালে শুরু হয় এর নির্মাণকাজ, যা শেষ হয় ৭ বছর পর। এ সময় দুটি পৃথক দুর্ঘটনায় চারজন কর্মী নিহত হন। টেলিস্কোপটির প্রবেশপথে তাদের স্মরণে ফলক নির্মাণ করে রাখা হয়েছে। শত মিলিয়ন ডলার খরচ করে সুবারু টেলিস্কোপটি নির্মাণ করার মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘প্লানেট নাইন’ নামক কল্পিত নক্ষত্র খুঁজে বের করা, যা আমাদের সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত। মহাকাশ পর্যবেক্ষণের অন্যান্য কাজ করলেও, এটিই এখনো পর্যন্ত সুবারুর অদ্বিতীয় লক্ষ্য।
৬. ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ
চিলির দক্ষিণাঞ্চলে আতাকামা মরুভূমিতে অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম মানমন্দির ‘প্যারানাল অবজারভেটরি’তে ‘ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ’ বা ভিএলটি নামে পরিচিত ৪টি সমমানের টেলিস্কোপ রয়েছে, যাদের পরিচালনার দায়িত্বে আছে ‘ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি’। ভূপৃষ্ঠ থেকে ২,৬০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত টেলিস্কোপগুলোর নাম যথাক্রমে আন্তু, ইয়েপুন, কুয়েন ও মেলিপাল। প্রতিটিরই অ্যাপাচার ব্যাস ৮.২ মিটার। টেলিস্কোপগুলো পৃথকভাবে কাজ করলেও একত্রে ছবি ধারণ করতেও সক্ষম। ভিএলটি যখন একত্রে ছবি ধারণ করে, তখন তা পৃথিবীর যেকোনো টেলিস্কোপের চেয়েই উচ্চ রেজুলেশনের ছবি তুলতে সক্ষম হয়।
মানুষ খালি চোখে সর্বোচ্চ যে মাত্রার দুর্বল আলো দেখতে পায়, ভিএলটি তার চেয়ে প্রায় ৪০০ কোটি ক্ষীণতর আলো শনাক্ত করতে পারে! সাধারণত দৃশ্যমান এবং অবলোহিত আলোকরশ্মি নিয়েই কাজ করে টেলিস্কোপটি। ভিএলটি তিনটি ভিন্ন মোডে কাজ করতে পারে। প্রথমত, প্রতিটি টেলিস্কোপ পৃথকভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে প্রত্যেকের অ্যাংগুলার রেজুলেশন হয় ০.০৫ আর্কসেকেন্ড। দ্বিতীয়ত, সবগুলো টেলিস্কোপ একত্রে কাজ করে। তখন এর অ্যাংগুলার রেজুলেশন হয় ০.০০২ আর্কসেকেন্ড, যা পৃথিবীর যেকোনো টেলিস্কোপের চেয়ে উন্নত। তৃতীয়টি হলো ‘এক্সট্রা লাইট গ্যাদারিং মোড’, যা সাধারণ অবলোহিত আলোর ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
৭. জেমিনি টেলিস্কোপ
জেমিনি মানমন্দির পৃথিবীর সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল এবং উন্নত প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মানমন্দির। এই মানমন্দির দুটি পৃথক স্থানে দুটি ৮.১ মিটার অ্যাপাচার টেলিস্কোপ নিয়ে গঠিত। প্রথমটির নাম ‘জেমিনি নর্থ’, যা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। আর দ্বিতীয়টির নাম ‘জেমিনি সাউথ’, যা চিলিতে অবস্থিত। এ তালিকায় সবার শেষে স্থান পেলেও এ টেলিস্কোপদ্বয় ইনফ্রারেড টেলিস্কোপের জগতে বৃহত্তম। যুক্তরাষ্ট্র, চিলি, কানাডা, ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা, এ পাঁচটি দেশের সম্মিলিত অর্থায়নে নির্মিত হয়েছিল এই টেলিস্কোপদ্বয়। সৌরজগৎ, গ্রহণক্ষত্রের গঠন ও বিবর্তন, এক্সোপ্লানেট, বিভিন্ন ছায়াপথের গতিপ্রকৃতি, সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল, কোয়াসার, এককথায় আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের তাবৎ কাজে পারদর্শী এই অত্যাধুনিক টেলিস্কোপদ্বয়।
উভয় টেলিস্কোপ মিলে প্রায় পুরো মহাকাশই পর্যবেক্ষণ করতে পারে, কেবল দুটি বিষুবলম্ব কোণ বাদে। জেমিনি নর্থ +৮৯° কোণে এবং জেমিনি সাউথ -৮৯° কোণে পর্যবেক্ষণ করতে অক্ষম। তথাপি পৃথিবীর যেকোনো টেলিস্কোপের চেয়ে অধিক পর্যবেক্ষণে পারদর্শী এ টেলিস্কোপদ্বয়। ১৮৪ মিলিয়ন ডলার খরচে নির্মিত এ টেলিস্কোপদ্বয়ের রক্ষণাবেক্ষণ খরচও অত্যধিক। উপরন্তু, ২০০৮ সালে ব্রিটেন এর রক্ষণাবেক্ষণ কনসোর্টিয়াম থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিলে বাজেট পরিচালনাতেও কিছু সমস্যার মুখোমুখী হয় মানমন্দিরটি।