মাত্র কদিন আগেই তিথিকে কলেজে ভর্তি করালেন মুনির সাহেব। বেশ ভালোভাবেই চলছে এ পর্যন্ত। কলেজের পড়ালেখা কিংবা পরিবেশ, সবকিছুই দারুণ। কলেজ থেকে একটা কার্ড দেওয়া হয়েছে তিথিকে। কী কী সব সুবিধা নাকি রয়েছে সেই কার্ডের, কাজের ব্যস্ততার কারণে এখনো সেগুলো ভালোমতো দেখা হয়ে উঠেনি মুনির সাহেবের। শুধু জানেন, তিনি নিজের মোবাইল থেকেই সেই কার্ডে কল দিয়ে সরাসরি কথা বলতে পারবেন মেয়ের সাথে। এদিকে হঠাৎ করেই আজকে তিথিকে ফোন দেওয়াটা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। টিভিতে খবর দেখাচ্ছে, হরতাল ডাকা হয়েছে, গণ্ডগোল শুরু হয়ে গেছে রাস্তায়। মুনির সাহেব বেশ চিন্তায় পড়ে গেছেন, মেয়ের কলেজ ছুটি হতে হতে তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হবার সম্ভাবনা আছে। আজকের মতো এখনই সে বাসায় ফিরতে পারলে বেশ ভালো হতো। এদিকে তার সাথে তো যোগাযোগের কোনো উপায় নেই, সেই কার্ড আবার শিক্ষার্থী ক্লাসে থাকাকালীন বন্ধ থাকে, মেয়ের কাছে মোবাইলও নেই। এখন কীভাবে কার সাথে যোগাযোগ করবেন মুনির সাহেব! হাজারও শিক্ষার্থীর মাঝে শুধু তার মেয়েকে চলে আসতে দেওয়ার জন্য কলেজের কাকেই বা অনুরোধ করবেন! এই নিয়ে ভেবে ভেবে যখন অস্থিরদশা মুনির সাহেবের, তখনই মোবাইলটা বেজে উঠল তার। একটা এসএমএস এসেছে- কলেজ ছুটি হয়ে যাচ্ছে, আপনার সন্তানকে নিয়ে যান। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন তিনি, রওনা হলেন মেয়েকে আনতে।
বাবা-মায়ের কাছে সন্তান যে কী অমূল্য সম্পদ, সেটা খানিকটা হলেও উপলব্ধি করার ফলাফলই হলো ক্যামব্রিয়ানের এই স্মার্ট কার্ড। ছোট্ট বয়সের কেজি স্কুল থেকে শুরু করে একেবারে বড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া পর্যন্তই বাচ্চাদের নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না তাদের। ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে, সব ঠিক আছে কিনা- এই ভেবে ভেবে অস্থির থাকেন তারা। সময়ের সাথে এগিয়ে চলা আধুনিক জীবনব্যবস্থাও যে সন্তানদের খুব একটা সুপথে নিয়ে যাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়, তাও নয়। এই পরিস্থিতিতে মুনির সাহেবদের একটুখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস এনে দেওয়ার জন্যই ক্যামব্রিয়ানের এই প্রচেষ্টা।
এই স্মার্ট আইডি কার্ডটি থাকবে মূলত শিক্ষার্থীর কাছে। বাবা-মায়ের স্মার্টফোনে ইনস্টল করতে হবে একটি অ্যাপলিকেশন। স্মার্ট কার্ডের তিনটি বাটনে মা, বাবা ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের ফোন নম্বর সেভ করা রয়েছে। যেকোনো বাটনে চাপ দিলেই কল চলে যাবে সাথে সাথে। ওদিকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে কল এলে ফোন ধরার ও কেটে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে দুটি বাটন। সেই সাথে কার্ডে একটি ‘ইমার্জেন্সি বাটন’ও রয়েছে। এই বাটনে চাপ দিলে সাথে সাথে এসএমএস চলে যাবে তিন জায়গাতেই, মুহূর্তে মাঝে তারা যোগাযোগ করতে পারবেন শিক্ষার্থীর সাথে।
স্মার্টকার্ডধারী কোনো শিক্ষার্থী কলেজের ভবনে প্রবেশের সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসএমএস যাবে অভিভাবকের কাছে। এরপর কার্ডটি চলে যাবে ‘ক্লাস মুডে’। ক্লাস শেষে আবার সক্রিয় হবে কার্ড। কলেজ থেকে বের হবার মুহূর্তেই আবার এসএমএস যাবে বাবা-মায়ের ফোনে।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, কার্ডটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে জিপিএস প্রযুক্তি। বাবা-মা পৃথিবীর যেখানেই থাকুন না কেন, নিজেদের স্মার্টফোনের তিনটি ‘ভিউ মুডের’ মাধ্যমে তারা দেখতে পারবেন, তাদের সন্তান ঠিক কোন মুহূর্তে কোন জায়গায় অবস্থান করছে।
শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল, বাড়ির কাজ, পরীক্ষার রুটিন, ক্লাস রুটিন, বিশেষ নোটিশ ইত্যাদির সবই এই কার্ডের মাধ্যমে চলে যাবে বাবা-মায়ের কাছে। অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে ছুটির প্রয়োজন হলে এর মাধ্যমেই বাসা থেকে ছুটির আবেদন করা যাবে। প্রয়োজনে সরাসরি কথাও বলা যাবে শিক্ষকের সাথে। আর যেকোনো জরুরি মুহূর্তে কার্ডের প্রযুক্তি ব্যবহার করেই কলেজ থেকে এসএমএস দেওয়া হবে বাবা-মায়ের কাছে।
কার্ডটি বানানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বহনের উপযোগী করে। কোনো কারণে হাত থেকে পড়ে গিয়ে বা হালকা চাপে এটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। নিয়মিত চার্জ দেওয়ার পদ্ধতি রয়েছে এতে, এমনকি কার্ডে কতটুকু চার্জ আছে সেটাও বাবা-মা নিজেদের ফোনেই দেখতে পারবেন।
সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য একরকমের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবেই কাজ করবে এই স্মার্টকার্ড। প্রযুক্তি থেকে সন্তানদের দূরে রেখে নয়, বরং প্রযুক্তির উত্তম ব্যবহারের সাথে পরিচয় করানোর মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের আধুনিক সময়ের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় ক্যামব্রিয়ান। এই স্মার্টকার্ড তারই অনন্য উদাহরণ।
ফিচার ইমেজ © Cambrian Education Group
This article is brought to you by Cambrian College