Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট দ্বৈরথ: ক্রিকেটের অনুপম সৌন্দর্য

“লাহোরে তুষারপাত হতে পারে, কিন্তু ভারত-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সিরিজ নয়।”

কথাটি বলেছিলেন ভারতের সাবেক কিংবদন্তি ওপেনার এবং টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম দশ হাজার রানের মালিক সুনীল গাভাস্কার। গাভাস্কারের মন্তব্যটিই প্রমাণ করে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচ মাঠে গড়ানোর প্রতিবন্ধকতা। প্রিয় পাঠক, এ পর্বে আমরা ভারত-পাকিস্তানের চিরন্তন ক্রিকেট যুদ্ধের কিছু দিক দেখবো।

Image Credit: OLI SCARFF/AFP/Getty Images

১.

ভারত-পাকিস্তান প্রসঙ্গ উঠলেই অবধারিতভাবে চলে আসে দু’দেশের ভূরাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক চিরায়ত দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ। দুই দেশের উপমহাদেশীয় রাজনীতি এবং আর্থ-সামাজিক দ্বন্দ্বের রেশ লেগেছে প্রায় সব ক’টি সেক্টরে। ক্রিকেটও এর ব্যতিক্রম নয়।

ক্রিকেট প্রসঙ্গ উঠলেই অবধারিত চলে আসে ভারত-পাকিস্তানের নাম। বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা এ দু’টি দেশের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্রিকেটীয় অনুপম সৌন্দর্য্য দেখতে পাই। দেশ দু’টির প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিশ্ব ক্রিকেটকে করেছে সমৃদ্ধ, এবং দর্শকমনেও জাগিয়ে তুলেছে ক্রিকেটের প্রতি ব্যাখ্যাতীত রোমাঞ্চ।

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের তীব্র উত্তেজনা দু’দেশ ছাপিয়ে এক সময় ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপমহাদেশজুড়ে। এ যেন ক্রিকেট ম্যাচের চেয়েও বেশি কিছু। আমরা ক্রিকেটপাগল জাতির বেশ কয়েকটি প্রজন্ম বড় হয়েছি ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটযুদ্ধ দেখে। তাই আমাদের অনেকেরই প্রিয় চাইল্ডহুড মেমোরি ছিল ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট লড়াই উপভোগ করা। কিন্তু গত এক দশক ধরে দেশ দু’টিতে বিবাদমান রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলস্বরূপ মুখোমুখি ম্যাচসংখ্যা কমে যাওয়ায় সে উন্মাদনায় ভাটা পড়েছে অনেকখানিই।

.

তাই বলে জৌলুশ একেবারেই চলে যায়নি। ভারত-পাকিস্তানের খেলা হবে, আর চায়ের কাপে ঝড় উঠবে না, তা কখনো হয়নি। পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ক্রিকেট অ্যানালিস্টরা দু’দলের তথ্য-উপাত্ত কষে প্রি-ম্যাচ অ্যানালাইসিস করবেন, কিংবা সাবেক ক্রিকেটারদের পরস্পর খোঁচাখুঁচির দ্বন্দ্বে ম্যাচটি পাবে আলাদা তাৎপর্য। ম্যাচ শুরুর প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে টিভি স্ক্রিনে। প্রতিটি বলে বলে ছড়িয়ে পড়বে রোমাঞ্চ, অপ্রত্যাশিত অভূতপূর্ব সব ঘটনার জন্ম হবে ক্রিকেট মাঠে।

ভারত-পাকিস্তান প্রথম মুখোমুখি হয় ১৬ অক্টোবর ১৯৫২ সালে, ক্রিকেটের রাজকীয় ফরম্যাট টেস্টে। সেবারই প্রথমবারের মতো ভারত সফর করে পাকিস্তান। ৫ ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইনিংস ও ৭০ রানের বিশাল জয় পায় ভারত। ২য় টেস্টে স্বাগতিক ভারতকে ইনিংস ও ৪৩ রানে হারিয়ে টেস্টে নিজেদের প্রথম জয়ের স্বাদ পায় পাকিস্তান। ৩য় টেস্টে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে এবং পরের দুই ম্যাচ ড্র করে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়লাভ করে স্বাগতিক ভারত। দু’দলের ক্রিকেট যুদ্ধের যাত্রা সেই থেকে শুরু, কালের পরিক্রমায় যা এখনো বর্তমান।

ভারত-পাকিস্তান সর্বশেষ টেস্ট খেলে ২০০৭-০৮ সালে। ২০০৭ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজ স্বাগতিক ভারত জিতে নেয় ১-০ ব্যবধানে। সেবারই টেস্টে তাদের সর্বশেষ মুখোমুখি হওয়া। সর্বমোট ৫৯ দেখায় ১২ ম্যাচ জেতে পাকিস্তান, ভারত ৯ ম্যাচ, বাকি ৩৮ ম্যাচ ড্র।

Image Credit: MANAN VATSYAYANA/AFP via Getty Images

এরপর ২০০৮ সালের নভেম্বরে মুম্বাই হামলার পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। এরপর থেকে বাতিল হতে থাকে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। এরই মধ্যে দু’দেশের ক্রিকেট লড়াইকে আবারো মাঠে গড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পিসিবি। ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ উপভোগ করতে যেমন উপমহাদেশের দর্শকরা উন্মুখ হয়ে আছে, ঠিক তেমনি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দলের ক্রিকেটাররাও সময় পেলেই তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

.

ভারত-পাকিস্তান প্রথম ওয়ানডে খেলে ১৯৭৮ সালের পহেলা অক্টোবর। ভারত সেবার বহুল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তান সফর করে। মাঝে ১৯৬২ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত আন্তঃদেশীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বিশেষ করে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যু্দ্ধের প্রেক্ষিতে খেলা মাঠে গড়ায়নি। তাই ভারতের ‘৭৮ সালের পাকিস্তান সফর ক্রীড়াপ্রেমীদের আনন্দ দিয়েছিল। যাই হোক, ওয়ানডেতে দু’দলের প্রথম দেখায় ভারত ৪ রানে ম্যাচ জিতে নেয়। পরের দু’টি জিতে নিয়ে অবশ্য ৩ ম্যাচ সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জয়লাভ করে পাকিস্তান।

ওয়ানডেতে দু’দলের সর্বশেষ দেখা গত বছরের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে। সে ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮৯ রানে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে সপ্তমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পায় ভারত। বিশ্বকাপে হারলেও ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারতকে ১৫৮ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান।

ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের বিশ্বমঞ্চে সাফল্য বলতে গেলবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়; Image Credit: Getty Images

ওয়ানডেতে দু’দলের ১৩২ দেখায় পাকিস্তান জিতে নেয় ৭৩ ম্যাচ, ভারত ৫৫ ম্যাচ। অমীমাংসিত থাকে বাকি ৪ ম্যাচ। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতে ৭ বার মুখোমুখি হয় দুই দল; যেখানে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালসহ ৬ জয় ভারতের, একটি জেতে পাকিস্তান ।

.

ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যেকটা টিম তাদের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে খেলতে নামত, নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে তারা ছিল বদ্ধপরিকর। ক্রিকেটের তিনটি ফরম্যাটেই স্ব স্ব দলের ক্রিকেটাররা অপূর্ব ক্রিকেটীয় প্রতিভা দেখিয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটে দু’দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে সর্বোচ্চ রান পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসমান জাভেদ মিয়াঁদাদের। ২৮ ম্যাচে প্রায় ৬৮ গড়ে ২,২২৮ রান করেন তিনি। প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখযোগ্য ‘৮৬ সালের শারজা কাপ ফাইনালে ম্যাচ জেতানো ট্রেডমার্ক শটে শেষ বলে ছয় আজও বিখ্যাত হয়ে রয়েছে।

দুই দলের ‘টেস্ট ক্ল্যাসিকো’তে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান টেস্টের প্রথম দশ হাজারি ক্লাবের সদস্য সুনীল গাভাস্কারের। ২৪ ম্যাচে প্রায় ৫৭ গড়ে তার রান ২,০৮৯। টেস্টে ভারতের হয়ে ২৯ ম্যাচে ৯৯ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী কপিল দেব। পাকিস্তানের পক্ষে যে রেকর্ডটি ইমরান খানের, ২৩ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৯৪ উইকেট।

দু’দলের দুই বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক (বাঁ থেকে) কপিল দেব এবং ইমরান খান; Image Credit: Sharjah Cricket Gallery

ওয়ানডেতে দু’দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে সর্বোচ্চ রান কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের। ৬৯ ম্যাচে ৪০ গড়ে ২,৫২৬ রান করেন তিনি। পাকিস্তানের পক্ষে ৬৭ ম্যাচে প্রায় ৪৪ গড়ে ২,৪০৩ রান করে এরপরের স্থানেই আছেন ইনজামাম-উল হক। বোলিংয়ে প্রথম দু’টি স্থান দখল করেছেন গ্রেট ওয়াসিম আকরাম এবং সাকলায়েন মুশতাক। তারা যথাক্রমে ৪৮ ম্যাচে ৬০ এবং ৩৬ ম্যাচে ৫৭ উইকেট নেন। ভারতের পক্ষে অনিল কুম্বলে সর্বোচ্চ ৫৪ উইকেট নেন ৩৪ ম্যাচে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে বরাবরই জ্বলে উঠতেন লিটল মাস্টার; Image Credit: TARIQ MAHMOOD/AFP via Getty Images

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতে দু’দলের মুখোমুখি ম্যাচের সংখ্যা ৮, যার ৬টিই ভারত জিতে নেয়। এর মধ্যে ২০০৭ সাউথ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে জয় একটি। সেবার পাকিস্তানকে ফাইনালে ৫ রানে হারিয়ে প্রথমবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ভারত।

৫.

বিশ্ব ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চ যদি হয় মুদ্রার এপিঠ, তাহলে দেশ দু’টির ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব হবে মুদ্রার ওপিঠ। তাই তো দেখা যায় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশার পারদ কত উঁচু। দর্শকদের কারো দাবি, আমাদের বিশ্বকাপ লাগবে না, শুধু ভারত-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় এনে দাও; কেউ আবার ম্যাচ হারার পর ক্রিকেটারদের বাড়িঘর ভাঙচুরের নেশায় মত্ত। এ সমস্ত উন্মাদনার ক্রিকেটীয় যুদ্ধের পেছনে কাজ করছে দেশ দু’টির যুগ যুগ ধরে চলে আসা আত্মাভিমান এবং আধিপত্যের লড়াই। তাই ক্রিকেট মাঠে কেউ কাউকে ছেড়ে দিয়ে কথা বলে না। জয় তার চাই-ই চাই।

পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার – ওয়াসিম আকরাম; Image Credit: Graham Chadwick /Allsport

প্রচণ্ড ক্রিকেটদ্বন্দ্ব ছাপিয়ে দুই দেশ সত্যিকার অর্থে প্রোডিউস করেছে কিছু অসাধারণ ক্রিকেটার। যারা নিজেদের দেশকে গর্বের সাথে রিপ্রেজেন্ট করার সাথে সাথে বিশ্ব ক্রিকেটকেও করেছেন সমৃদ্ধ। সেই হানিফ মোহাম্মদ, বিজয় হাজারে থেকে শুরু করে গাভাস্কার-জহির আব্বাস, কিংবা ‘বড়ে মিয়াঁ’-খ্যাত জাভেদ মিয়াঁদাদ। ভারতের আছে প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব, অন্যদিকে পাকিস্তান পেয়েছে তাদেরকে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দেয়া ইমরান খানকে। বছরের পর বছর ওয়াসিম-শচীন, সৌরভ-শোয়েব আখতারদের দ্বৈরথ ছিল দেখার মতো। যার জৌলুশ অনেকটাই ফিকে হয়ে গেলেও হালের কোহলি-আমিরদের লড়াইয়ে খানিক আঁচ পাওয়া যায়।

.

সম্প্রতি কিছুদিন আগে পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি দাবি করেছেন, ভারতীয় ক্রিকেট টিম পাকিস্তানের কাছে এমনভাবে হারতো যে, ম্যাচ শেষ হলে মাফ চাইতো। কথাটি অন্যান্য অনেক ভারতীয়দের মতো গায়ে লেগেছে ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়ারও। আফ্রিদির কথার পাল্টা জবাব দিয়ে তিনি আফ্রিদিকে পরিসংখ্যানের দিকে তাকাতে বলেছেন। এই যে কথার চালাচালি, এটা ভারত-পাকিস্তানের মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ের একটি অন্যতম অংশ। এই যেমন কিছুদিন আগে শহীদ আফ্রিদি আরও দাবি করেছিলেন যে, শোয়েব আখতারকে ফেস করতে শচীন টেন্ডুলকারের হাঁটু কাঁপতে তিনি দেখেছেন। এ দাবিটি নতুন নয়, এর আগে ২০১১ সালেও করেছিলেন।

কথার লড়াইয়ে কম যায় না ভারতও। তাই তো সময় পেলেই পাকিস্তানকে খোঁচা মারা সুযোগ হাতছাড়া করেন না গম্ভীর-শেবাগরা। দু’দলের ক্রিকেটারদের কথার যুদ্ধ কখনো কখনো মাঠ অব্দি গড়ায়। তাই তো মিয়াঁদাদ-মোরে, আফ্রিদি-গম্ভীর কিংবা হরভজন-শোয়েব আখতাররা সময় পেলেই লঙ্ঘন করেছেন ক্রিকেটীয় সীমা। বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি কেউ কাউকে।

আফ্রিদি-গম্ভীর একদমই দেখতে পারতেন না পরস্পরকে; Image Credit: Getty Images

মাঠ এবং মাঠের বাইরে এমন লড়াই, প্রত্যেকটা প্লেয়ারের ম্যাচে নিজেকে সঁপে দেয়া, কিংবা ক্রিকেট বিশ্লেষকদের ইতিহাস হাতড়ে পরিসংখ্যানের সূক্ষ্ম হিসাবতত্ত্ব – এমন উন্মাদনাই প্রমাণ করে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটের তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা, যা ঋদ্ধ করে বিশ্ব ক্রিকেটকে। ক্রিকেটপাগল প্রজন্মকে দেয় সুন্দর সব স্মৃতি।

.

ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটের সম্পর্ক শুধুই বৈরিতার, এটা ভাবলে আপনি ভুল করছেন। প্রচণ্ড ক্রিকেটীয় দ্বন্দ্ব ছাপিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে বিভিন্ন সময়ই দারুণ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেছে। ইমরান-কপিল দেব, ওয়াসিম-শচীন থেকে শুরু করে শোয়েব মালিক-যুবরাজ, আফ্রিদি-জহির খান, বিভিন্ন প্রজন্মের এ ক্রিকেটারদের মধ্যে দারুণ সম্পর্ক দেখা গেছে। বর্তমানে কোহলি-আমিররাও সুযোগ পেলেই পরস্পর বন্দনায় মেতে ওঠেন।

প্রচণ্ড বৈরী সম্পর্কের বাইরে এটি একটি চমৎকার পেশাদারিত্বের উদাহরণ।

আমিরকে নিজের ব্যাট উপহার দিচ্ছেন বিরাট; Image Credit: Getty Images

ভারত-পাকিস্তান সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে ২০১২তে ভারতে অনুষ্ঠেয় তিন ম্যাচ ওয়ানডে ও দুই ম্যাচ টি-২০ সিরিজে। এরপরে বেশ কয়েকবার সম্ভাবনা দেখা গেলেও আদতে ক্রিকেট আর মাঠে গড়ায়নি। নিকট ভবিষ্যতেও এর সম্ভাবনা আছে বলে মনে হচ্ছে না। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম এই দুই পরাশক্তির ক্রিকেট-লড়াই মাঠে গড়াতে পারলে হয়তো আরো সমৃদ্ধ হতো বিশ্ব ক্রিকেট। ক্রিকেট প্রজন্ম উপভোগ করতে পারতো অসাধারণ সব ক্রিকেটীয় নৈপুণ্য। হয়তো ক্রিকেটের মাধ্যমেই দুই দেশের ভূ-রাজনৈতিক বৈরিতা কিছুটা হলেও কমে আসতে পারতো৷ বাস্তবতা ভিন্ন গান শুনালেও ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট আবার গড়াক, এটাই প্রত্যাশা।

Related Articles