Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফুটবল বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের অন্যতম নায়ক যারা

ফুটবল বিশ্বকাপে গোল করা মানেই বিশেষ কিছু। এই আসরে দেশের হয়ে যিনি হ্যাটট্রিক করেন, নিজ দেশে তিনি হয়ে যান মহানায়ক এবং বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকেন বিশ্বকাপ ইতিহাসে। কেননা, বিশ্বকাপে অনুষ্ঠিত শত শত ম্যাচে হ্যাটট্রিকের সংখ্যা মাত্র ৫০টি। যদিও গত শতাব্দীর তুলনায় এই শতাব্দীতে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে বিশ্বকাপে হ্যাট্রিকের সংখ্যা। ১৯৫৪ সালের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৮টি হ্যাটট্রিকের দেখা মিলেছিলো, অন্যদিকে বিশ্বকাপ’ ০৬ একমাত্র আসর যেখানে একটিও হ্যাটট্রিকও করতে পারেনি কোনো খেলোয়াড়।

গত আসরে হ্যাটট্রিকের অর্ধশতক পূর্ণ হয়েছে সুইস তারকা জের্দান শাচিরির হ্যাটট্রিকের মধ্য দিয়ে, হন্ডুরাসের বিপক্ষে ৩-০ গোলের সবগুলোই করেছিলেন তিনি। আগের পর্বে তুলে ধরা হয়েছিলো হ্যাটট্রিকের অভিজাত শ্রেণীর চারজনের কথা, বিশ্বকাপে যাদের দুটি করে হ্যাটট্রিক রয়েছে। আজকের আয়োজন বিশ্বকাপের অন্যতম হ্যাটট্রিক করা খেলোয়াড়দের নিয়ে।

১৯৩০, বার্ট প্যাটন্যু, ইউএসএ

১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র দলের হয়ে মাঠে নেমেছিলো মাত্র ২০ বছর বয়সী এক কিশোর, বেলজিয়ামের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে এই কিশোরও করেছিলেন এক গোল। এই ম্যাচের চারদিন পরেই ১৯২৯ সালের কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন দল প্যারাগুয়েকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে আমেরিকা, প্রায় ১৮,০০০ দর্শককে অবাক করে দিয়ে এই ৩টি গোলই করেছিলেন বার্ট প্যাটন্যু নামের এই কিশোর, যা ছিলো ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক

১৯৩০, প্রথম বিশ্বকাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দল; Source: si.com

অনেক ফুটবল ভক্তই হয়তো এই আমেরিকান কিংবদন্তিকে চিনতে পারবে না, কিন্তু প্যাটন্যুকে ফুটবল ইতিহাসে আজীবন মনে রাখবে তার এই অবিস্মরণীয় কীর্তির জন্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও প্যারাগুয়ের মধ্যকার খেলাটির দ্বিতীয় গোলটি কার, এই নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কারণে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের স্বীকৃতি পায়নি প্যাটন্যু। ফিফার অফিশিয়াল ম্যাচ রিপোর্টে দ্বিতীয় গোলের গোলদাতার খাতায় নাম উঠে মার্কিন অধিনায়ক টম ফ্লোরির নাম, আরেকটি পরিসংখ্যান সংস্থা গোলটিকে আত্মঘাতী হিসেবে উল্লেখ করেছিলো।

যা-ই হোক, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, ম্যাচ রিপোর্ট, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাতকার নিয়ে বিস্তর গবেষণা শেষে ২০০৬ সালে ফিফা প্যাটন্যুকে বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকদাতা হিসেবে ঘোষণা করে। নিজের এই অনন্য ইতিহাসের স্বীকৃতি দেখে যেতে পারেননি তিনি। যতদিনে রেকর্ডের খাতায় তার নাম উঠলো, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, কেননা ১৯৭৪ সালেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

১৯৩৮, আর্নেস্ট উইলোমস্কি, পোল্যান্ড

ফ্রান্স বিশ্বকাপে ব্রাজিলের বিপক্ষে পোল্যান্ডের ম্যাচটি বিখ্যাত শুধুমাত্র ৬-৫ গোলে ব্রাজিলের জয়ের জন্য নয়। বিশ্বকাপে এটিই প্রথম ম্যাচ, যেখানে এক ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন দুজন খেলোয়াড় হ্যাটট্রিক করেছিলো এবং বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো এক ম্যাচে পোল্যান্ডের আর্নেস্ট চার গোল করেছিলেন। ১১ গোলের ম্যাচটিতে গোলবন্যার শুরু হয় ব্রাজিলের লিওনিদাসের পা থেকে, পরবর্তীতে তিনি হ্যাটট্রিকও করেন। প্রথমার্ধে ব্রাজিল ৩-১ গোলে এগিয়ে গেলেও নাটকীয় উত্তেজনার কেবল শুরু তখন।

নাটকীয় ম্যাচটির অন্যতম নায়ক, আর্নেস্ট উইলোমস্কি; Source: wikipedia.org

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু হতেই আর্নেস্ট যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ব্রাজিলিয়ানদের উপরে, ৫৯ মিনিটের মধ্যেই দুই গোল করে দলকে ৩-৩ সমতায় ফেরান তিনি। ৭১ মিনিটে ব্রাজিল এগিয়ে গেলে সবাই যখন ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত ভেবে রেখেছিলো, তাদের অবাক করে দিয়ে ম্যাচের শেষ মিনিটে আর্নেস্ট গোল করে পোল্যান্ডকে সমতা এনে দেন। আর্নেস্টের কল্যাণে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ে ব্রাজিলের ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন লিওনিদাস, টানা দুই গোল করে পূর্ণ করেন নিজের হ্যাটট্রিক এবং সেই সাথে দলকে এনে দেন সুবিধাজনক অবস্থান। তবে হাল ছাড়েননি আর্নেস্ট, ম্যাচ শেষ হওয়ার দুই মিনিট পূর্বে নিজের চতুর্থ গোল করে ব্রাজিলিয়ানদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত ৬-৫ গোলেই শেষ হয় সকল নাটকীয়তা।

১৯৫৮, পেলে, ব্রাজিল

সুইডেন ‘৫৮ বিশ্বকাপে পেলে যখন মাঠে নামেন, তখন তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর। সেমিফাইনালে ব্রাজিল মুখোমুখি হয় দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ফ্রান্সের, যাদের দলে ছিলো ফন্টেইন নামের এক দুর্ধর্ষ স্ট্রাইকার। ফ্রান্সের বিপক্ষে ব্রাজিলের ৫-২ গোলের জয়ের ম্যাচে পেলের হ্যাটট্রিকটি ছিলো অনন্য এক রেকর্ড, কারণ পেলে তখন বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম বয়সে হ্যাটট্রিক করা খেলোয়াড়।

১৭ বছর বয়সী বিধ্বংসী পেলে; Source: dfb.de

ম্যাচের প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে ছিলো ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধে টানা তিন গোল করে দলকে নিশ্চিত জয় এনে দেন এই ব্রাজিলিয়ান। ৫২ মিনিটে প্রথম গোল করা পেলে মাত্র ২২ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক সম্পন্ন করেছিলেন। প্রথম দুটি গোল খুব সহজেই করলেও, পেলের তৃতীয় গোল ছিলো তার প্রতিভার দারুণ এক প্রতিফলন। ফাইনালেও সুইডেনের বিপক্ষেও দেখা মেলে দুর্দান্ত সেই কিশোর ফুটবলারের, যিনি কিনা নিজের প্রথম বিশ্বকাপেই ফাইনালে ২ গোল করে দলকে শিরোপা জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন। বিশ্বকাপে পেলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নজর কাড়ে গোটা বিশ্বের। দিদি, ভাভা ও পেলেকে তখন অনেক স্পোর্টস ম্যাগাজিন বিশ্বের সেরা ত্রয়ী হিসেবে গণ্য করতে শুরু করে। অসাধারণ পারফরম্যান্সের দরুণ সুইডেন বিশ্বকাপে সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের খেতাব জিতে নেন এই কিংবদন্তি। পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।

১৯৬৬, জেফ হার্স্ট, ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ড’ ৬৬ বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানিকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ও একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে নেয়। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যত জন হ্যাটট্রিক করেছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হ্যাটট্রিক অবশ্যই জেফ হার্স্টের। ইংল্যান্ডের এই কিংবদন্তি বিশ্বকাপ ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন এবং এখানেই তিনি এক ও অদ্বিতীয়।

জুলে রিমে ট্রফি হাতে ইংল্যান্ডের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের সেরা নায়ক, হার্স্ট;  Source: telegraph.co.uk

ম্যাচের ৮৯ মিনিটের গোলে জার্মানি সমতায় ফিরলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত এই ফাইনাল ম্যাচটি, আলোচনার অন্যতম বিষয়টি ছিলো হার্স্টের দ্বিতীয় গোলটি। হার্স্টের শট ক্রসবারে লেগে সত্যিই গোললাইনের ওপারে পড়েছিলো কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক হয়তো আজীবন চলবে। তৎকালীন প্রযুক্তি ততটা উন্নত না থাকায় গোলটি নিয়ে বিতর্ক আজও বিদ্যমান। এই গোলটি যদি রেফারি গোল না দিতো, তাহলে ম্যাচের ফলাফল কী হতে পারতো তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কিন্তু, ম্যাচের ১২০ মিনিটে হার্স্টের তৃতীয় গোলটি, অর্থাৎ ঐতিহাসিক হ্যাটট্রিকের পর জার্মানির বিপক্ষে পরিষ্কার ব্যবধান গড়ে দেন এ ইংলিশ কিংবদন্তি।

১৯৮২, পাওলো রসি, ইতালি

স্পেন ‘৮২ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার পূর্বে পাওলো রসি যে ইতালি দলে জায়গা পাবেন, এমনটা হয়তো কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি। ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারির শাস্তিস্বরূপ প্রায় দুই বছর পেশাদার ফুটবল না খেলা একজন জায়গা পেয়ে গেলো ইতালি দলে। সেই রসি আবার হ্যাটট্রিক করে দলকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান। প্রায় খোঁড়াতে থাকা দলটি ইতালি দলটি শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ নিয়ে ঘরে ফেরে, যে অর্জনে রসির অবদান হয়ে আছে কিংবদন্তিতুল্য, কেননা তার হ্যাটট্রিকেই ইতালি হারিয়েছিলো বিশ্বকাপ ফুটবলে সবচেয়ে সুন্দর খেলা দলটিকে।

১৯৮২ বিশ্বকাপে কিংবদন্তি তেলে সান্তানার ব্রাজিল বধের নায়ক, রসি; Source: fifa.com

১৯৮২ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে সবগুলো ম্যাচ ড্র করা ইতালি দ্বিতীয় পর্বে মুখোমুখি দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আক্রমণাত্মক ব্রাজিল দলের। ইতালির মুখোমুখি হওয়ার আগপর্যন্ত ব্রাজিল করেছিলো অসম্ভব সুন্দর ১৩ গোল। সার্বিক বিবেচনায় এই ব্রাজিল দলের বিপক্ষে ইতালির পাত্তাই পাওয়ার কথা না। তবে রসি এসবের ধার ধারেননি, তাই ম্যাচের ৫ মিনিটেই গোল করে ইতালিকে লিড এনে দেন তিনি।

এরপর ব্রাজিল সমতায় ফিরলে ২৫ মিনিটে আবারো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রসি। আসর জুড়ে অসাধারণ ফুটবল উপহার দেওয়া ব্রাজিল ৬৯ মিনিটে সমতায় ফিরলে অনেকটা হাল ছেড়ে দেয় ইতালি, শুধু হাল ছাড়েননি একজনই। প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করা রসি ৭৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে শট করে বল জালে জড়িয়ে ইতালিকে এনে দেন এক ঐতিহাসিক জয়, যা ব্রাজিলিয়ান তথা ফুটবল বিশ্বে আজও এক করুণ আক্ষেপ। বিশ্বকাপ না জেতা সবচেয়ে সুন্দর ফুটবল খেলা দলটির এই হারের পর বলা হয়ে থাকে যে, সুন্দর ফুটবলের মৃত্যু হয়েছিলো সেদিনই, যেখানে নীরব ঘাতক ছিলেন রসি।

১৯৯০, টমাস স্কুরাভি, চেকোস্লোভাকিয়া

প্রায় ১০০ কেজি ওজনের ও ১.৯৩ মিটার উচ্চতার লম্বা চুলের টমাস স্কুরাভি হলেন ইতালির সবচেয়ে পুরনো ক্লাব জেনোয়ার কিংবদন্তি, যিনি ছিলেন ক্লাবটির সমর্থকদের লিগ জয় করার স্বপ্নের অন্যতম ভরসা। গোল করার পরে বিশাল দেহ নিয়ে তার ডিগবাজি খেয়ে উদযাপন সমর্থকদের দিতো আলাদা আনন্দ। তাই ক্লাবে থাকাকালীন সময়ে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই তাকে গোল করার উৎসাহ যুগিয়ে  ক্লাবটির সমর্থকরা সমস্বরে গান ধরতো, “তার গোলে তুমি আকাশে উড়ো, আমাদের একটি ডিগবাজি দাও, একটি ডিগবাজি দাও।

দ্বিতীয় পর্বে হ্যাটট্রিক করা শেষ খেলোয়াড়, স্কুরাভি; Source: dailymail.co.uk

১৯৯০ সালের বিশ্বকাপে চেকোস্লোভাকিয়ার স্ট্রাইকার স্কুরাভি আসরের দ্বিতীয় সেরা গোলদাতা ছিলেন, যেখানে তিনি করেছিলেন মোট ৫ গোল। আসরের দ্বিতীয় পর্বে কোস্টারিকাকে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে পরাজিত করে স্কুরাভির দল এবং ম্যাচে দারুণ এক হ্যাটট্রিক করে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন এই স্ট্রাইকার।

স্কুরাভির হ্যাটট্রিকটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এজন্য যে, বিশ্বকাপে প্রথম পর্বের পরবর্তী পর্বে হ্যাটট্রিক করা সর্বশেষ খেলোয়াড় তিনি। ইতালি ‘৯০ বিশ্বকাপের পর এখন পর্যন্ত আর কোনো খেলোয়াড় গ্রুপপর্বের পরবর্তী পর্বগুলোতে কোনো হ্যাটট্রিক করতে পারেননি।

১৯৯৪, ওলেগ সালেঙ্কো, রাশিয়া

বিশ্বকাপে এক ম্যাচে প্রথমবারের মতো ৪ গোল করেছিলেন পোল্যান্ডের আর্নেস্ট, তারপর আরও পাঁচজন এই অসাধারণ মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। বিশ্বকাপে এক ম্যাচে ৪ গোল করার অভিজাত গ্রুপে ছয়জন থাকলেও, এক ম্যাচে রেকর্ড ৫ গোল করার একমাত্র খেলোয়াড় একজনই, তিনি হলেন রাশিয়ান স্ট্রাইকার ওলেগ সালেঙ্কো।

স্ট্রাইকার হিসেবে ফুটবল ইতিহাসে তেমন একজন প্রভাবশালী কেউ না হলেও, সালেঙ্কো ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন বিশ্বকাপে তার অনবদ্য পারফরম্যান্সের জন্যই। গ্রুপপর্বের প্রথম দুই ম্যাচেই পরাজিত হওয়ায় রাশিয়ার পরবর্তী পর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ হয়ে আসে। ঐ আসরের নিয়মানুযায়ী গ্রুপের তৃতীয় দলের পরবর্তী পর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো, কিন্তু তা ছিলো অনেক হিসাব-নিকাশের সাপেক্ষে। পরবর্তী পর্বে দলকে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় ক্যামেরুনের বিপক্ষে সালেঙ্কো টানা ৫ গোল করে তার সেরা পারফরম্যান্সের অবতারণা করেছিলেন।

ক্যামেরুনের বিপক্ষে অপ্রতিরোধ্য সালেঙ্কো;  Source: 90min.com

ম্যাচের ১৫ মিনিটে গোলের সূচনা করা সালেঙ্কো প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক করে ফেলেন এবং দলকে ৩-০ গোলের দারুণ ব্যবধান এনে দেন। ম্যাচের ৭২ মিনিটে চতুর্থ গোল করলে সালেঙ্কো চলে আসেন কচিস, ফন্টেইনদের মতো কিংবদন্তিদের কাতারে। অবশ্য সালেঙ্কোর গোলের ক্ষুধা তখনো শেষ হয়ে যায়নি। ৭৫ মিনিটে নিজের পঞ্চম গোল করে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড করে ছাড়িয়ে যান সবাইকে। সেই বিশ্বকাপে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও জিতে নিয়েছিলেন এই রাশিয়ান স্ট্রাইকার।

এই ম্যাচটি বিখ্যাত আরেকটি রেকর্ডের জন্য। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ক্যামেরুনের একমাত্র গোলটি করেন ৪২ বছর বয়সী রজার মিলা, যা তাকে এনে দেয় বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী গোলদাতার খেতাব।

Related Articles