
দ্য প্লেয়ার্স ট্রিবিউনে বার্নার্দো সিলভা বলেছেন তার স্বপ্নের কথা, শুনিয়েছেন স্বপ্ন পূরণের বন্ধুর পথের চমকপ্রদ গল্প। বার্নান্দো সিলভার জবানিতে রোর বাংলার পাঠকেদের জন্য সেই দুর্দান্ত স্বপ্নের কথা তুলে ধরা হয়েছে বাংলাতে।
সব ফরাসি খেলোয়াড়েরা ছিল একটি হোটেল কক্ষে এবং পর্তুগিজরা অন্যটিতে। শান্তি বজায় রাখার একমাত্র উপায় ছিল এটি।
আমরা যখন ইউরো ২০১৬ ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হই, এটি ছিল পর্তুগিজ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এই রকম একটি মুহূর্তের জন্য আমি সারা জীবন অপেক্ষা করেছি, এখানে আসার জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। কিন্তু স্তাদে দে ফ্রান্সের সুড়ঙ্গ দিয়ে আমার সহ-খেলোয়াড়েরা বের হয়ে আসছিল, আমি ছিলাম শত শত কিলোমিটার দূরে। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সুইজারল্যান্ডের একটি হোটেল কক্ষে টেলিভিশনে আমি খেলাটি দেখছিলাম।
আমার ভাগ্য এর চেয়ে খারাপ হতে পারত না। বাছাই পর্বে জাতীয় দলের সাথে খেলেছি, কিন্তু ক্লাব দল মোনাকোর হয়ে খেলার সময় আমি ইনজুরিতে পড়লাম ঠিক ইউরোর পূর্বে, মৌসুমের সর্বশেষ ম্যাচটিতে। সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে খারাপ মুহূর্ত ছিল এটি এবং আসরে পর্তুগালের অগ্রগতি দেখে আনন্দের সাথে খানিকটা কষ্টও ছিল। ফাইনালের সময়, ততদিনে আমি এএস মোনাকো দলের সাথে সুইজারল্যান্ডে প্রাক-মৌসুম প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ফিরেছি।

কিছু ক্ষেত্রে আমি মনস্থির করে ফেললাম এর থেকে ভালো কিছু করার। প্রথম ধাপ হবে আমার ফরাসি সহ-খেলোয়াড়দের থেকে দূরে থাকা। ফাইনালের দুই দিন আগেই মজা নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল এবং তারা বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল। যারা আমার বন্ধু বেঞ্জামিন মেন্দিকে চেনেন, তারা জানেন সে কথা বলতে কতটা ভালোবাসে। যদি ফ্রান্স জেতে, তাহলে আমি তার আশেপাশে থাকতেই পারব না। অসম্ভব। আমাদের হোটেলে একটি আলাদা কক্ষ খুঁজে নিয়ে সেখানে পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের জড়ো করলাম- ইভান কাভালেইরো, গিল দিয়াস এবং ফ্যাবিনহো। (জানি ফ্যাবিনহো ব্রাজিলিয়ান, কিন্তু শুধু এক রাতের জন্য আমরা তাকে পর্তুগিজ বানিয়ে নিয়েছিলাম।)
খেলা শুরু হতেই সবাই খুবই চিন্তিত। ফরাসিরাও ঘামছে, ইউরো ২০০০ এর পর তারা একটি শিরোপাও জেতেনি। কিন্তু আমরা কখনই কিছু জয় করতে পারিনি। কখনোই না। তাছাড়া ২০০৬ বিশ্বকাপে পেনাল্টিতে জিদানের কাছে আমাদের পরাজয়ের ক্ষত তখনও আমার মনে ছিল।

এরপর, ২৫তম মিনিট, কল্পনাতীত খারাপ কিছু ঘটার ঠিক আগমুহূর্ত; ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে খোঁড়াচ্ছিল। যেভাবেই হোক, ফলাফল ০-০ রাখতে পেরেছিলাম আমরা। অতিরিক্ত সময়ে, হোটেল রুমে বসে আমরা কাঁপছিলাম সবাই। এই পর্যায়ে, টাচ লাইন থেকে ক্রিশ্চিয়ানো চিৎকার করে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিচ্ছিল। যে যা-ই বলুক না কেন, এটি অবশ্যই কাজ করেছে, কারণ ১০৯ মিনিটে জয়সূচক গোলটি আসে এদেরে’র পা থেকে।
বসা থেকে আমরা লাফিয়ে উঠেছিলাম; এবং অন্য রুমে ফরাসিরা? আচ্ছা, এই প্রথমবারের মতো তারা ছিল অত্যন্ত নীরব।
আমরা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমাদের মতো ছোট দেশের জন্য এই শিরোপা অসাধারণ অর্জন। আরেকটা ব্যাপার যা আমি সবসময় মনে রাখব তা ঐ রাতের পর, তখনও আমরা উল্লাস করছিলাম, জাতীয় দলের আমার কিছু সহ-খেলোয়াড় আমাকে বার্তা পাঠিয়েছে, “অভিনন্দন, এই যাত্রার একটি অংশ তুমিও ছিলে।”
বুনো উল্লাসের সময়েও যে তারা সময় বের করে আমাকে স্মরণ করেছে, এটা আমার জন্য বিশাল পাওয়া। যদিও তাদের এই অভিজ্ঞতায় আমি সাথে ছিলাম না। পর্তুগালের হয়ে শিরোপা জয়ের একটি স্বপ্ন ছিল, যে স্বপ্নের শুরু এমনকি যখন আমি কেবল হাঁটতে শুরু করেছিলাম।

আমার জন্ম একটি ফুটবল পরিবারে। মজার ব্যাপার হলো, এটি একটি বিভক্ত পরিবার। মায়ের পরিবারের সবাই স্পোর্টিং সমর্থক এবং বাবার দিকের সকলে বেনফিকার সমর্থক। আমার মা সম্ভবত আমাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমার জন্য সেখানে কোনো আশা ছিল না। যতদূর মনে পড়ে, আমি সবসময় বেনফিকাকে ভালবেসেছি। রুই কস্তা আমার নায়ক এবং যখনই আমার পায়ে ফুটবল থাকে (যা প্রায় সবসময়), আমি তার মতো হওয়ার চেষ্টা করেছি।
যখন আমার ছয় বছর, বেনফিকার যুব দলের কিছু কোচ আমাকে শনাক্ত করে, যারা আমাকে তাদের হয়ে খেলার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। সমস্যা হলো, একাডেমি খুবই ব্যয়বহুল এবং আমার বাড়ি থেকেও দূরে ছিল। আমাকে যেতে দেওয়ার জন্য পরিবারের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, তারা বলতো আমি খুবই ছোট।
২০০১ সালের ১০ আগস্টের কথা আমি কখনই ভুলব না। আমার ৭ম জন্মদিন। পার্টিতে আমি উপহার খুলছিলাম এবং আমার নানা আমাকে শুধু একটি কার্ড দিয়েছিল। কোনো বক্স না, শুধু কার্ড। আমি তা খুললাম এবং আসলে জানিও না সে সময় কতটা ভালো পড়তে পারতাম আমি। কিন্তু ব্যাপার না, কারণ কার্ডের ভেতরে ছোট একটি বার্তার সাথে বেনফিকার প্রতীক ছিল।
কার্ডে বলা ছিল, “শুভ জন্মদিন, তুমি বেনফিকার হয়ে খেলতে যাচ্ছ।”

আমাকে যুব একাডেমিতে পাঠানোর খরচ বহন করতে নানা রাজি হয়েছিলেন। সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন ছিল এটি। মজার ব্যাপার হলো তিনি হলেন আমার মায়ের বাবা, স্পোর্টিং ভক্ত পরিবার। তিনি তার গর্ব একপাশে সরিয়ে রেখে, নাতিকে তার দলের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীর শিবিরে যাওয়ার অর্থ পরিশোধ করেছিলেন।
যা-ই হোক, এটি অন্য সেসব গল্পের মতো নয়, যেখানে আমি বলতে পারবো, “এবং এরপর আমি সেখানে গিয়েছিলাম শৈশবের ক্লাবের কিংবদন্তি হতে।” বাস্তবে, আমার পথ ছিল খুবই কঠিন। সবসময় আমি লম্বায় খুব খাট ছিলাম এবং যখন আপনি তারুণ্যে পা রাখবেন, তখন কিছু কোচের ক্ষেত্রে এটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ১৬ বছর বয়সে আমি ক্যারিয়ারের একটি সংকটময় পর্যায়ে ছিলাম। আমি যুব দলের হয়ে খুব একটা খেলতে পারতাম না। আমার জন্য এটি ছিল অত্যাচার। ফুটবল খেলার জন্যই আমার জীবন। তাই আমি মানিয়ে নেওয়ার জন্য সংগ্রাম করলাম। সত্যি বলতে, ব্যাপারটি এমন একটি পর্যায়ে চলে এসেছিল যেখানে আমি ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলাম। এতটাই অখুশি ছিলাম।
কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে, ফার্নান্দো শালানা নামক এক ব্যক্তির জন্য টিকে গিয়েছিলাম।
শালানা পর্তুগালের সর্বকালের সেরাদের একজন। অবিশ্বাস্য গোঁফের অধিকারী সে ছিল এরকম ক্ষুদে উইঙ্গার যে এত ভালো ড্রিবল করত এবং পাস দিত যে লোকে তাকে ও পেকেন জেনিয়াল ( ক্ষুদে প্রতিভাধর) বলে ডাকে।

সে ছিল বেনফিকার যুব কোচদের একজন এবং মনে হয় সে আমার মধ্যে তার নিজের কিছু অংশ অবশ্যই দেখতে পেয়েছিল। কারণ একদিন সে আমাকে পাশে নিয়ে বলল, “শোন, তোমার ম্যানেজারের ফুটবল সম্বন্ধে কোনো ধারণাই নেই। এখানকার সেরা খেলোয়াড় তুমি এবং বিশ্বাস কর… একদিন তুমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন হবে।”
এটি হয়ত আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একক কথোপকথন। শালানা ব্যতীত জানি না কী হতো আমার। এমনকি সে আমাকে ‘মেসিজিনহো’ বলে ডাকত। আমার মনে হয় সে এটি করত কারণ মেসি এবং আমি দুজনই ছোট, কৌশলী এবং বাঁ পায়ের খেলোয়াড়। অবশ্যই আপনি আমাকে মেসির মতো একজন প্রতিভার সাথে তুলনা করতে পারেন না, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে শালানা যা করেছিলেন তা আর যা-ই হোক, আমাকে প্রবল আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছিল। তাই আমি নিজেকে বলতাম, আচ্ছা, যদি দ্য লিটল জিনিয়াস তোমাকে বিশ্বাস করে, তাহলে তোমারও নিজের উপর বিশ্বাস রাখা উচিত। এই অনুপ্রেরণায় বেনফিকা বি দলে জায়গা করার আগপর্যন্ত আমি সব ধাপ পার করেছিলাম। কিন্তু মনে হচ্ছিলো, যত ভালোই করি না কেন, আমি প্রথম দলে জায়গা করে নিতে পারব না। ১৮ বছর বয়সেও, আমি শীর্ষ পর্যায়ে খেলছিলাম না এবং সত্যিই আমি লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপ স্টাডিজের উপর ব্যাচেলর ডিগ্রির পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছিলাম।
সত্যি বলতে, বেনফিকার একটি দারুণ দল ছিল। ২০১৪ সালে তারা লিগ ও দুটি ঘরোয়া শিরোপা জিতেছিল। পুরো মৌসুমে আমি মাত্র একটি মাত্র লিগ ম্যাচ খেলেছিলাম, তা-ও বদলি হিসেবে। এবং অনেক হয়েছে। তাই গ্রীষ্মে, আমি জানতাম আমাকে চলে যেতে হবে। সাত বছর বয়স থেকে খেলা একমাত্র ক্লাবটিকে আমার বিদায় বলতে হবে।
প্রথমদিকে, বেনফিকা ছেড়ে এএস মোনাকোতে যাওয়া খুবই কঠিন ছিল। পর্তুগাল তো দূরের কথা, আমি কখনও লিসবনের বাইরে বাস করিনি। অনেকে মনে করেছিল আমি খেলতে পারব না এবং আসলে আমি তাদের ব্যাপারটি বুঝতে পারতাম। বিপুল অর্থের অধিকারী ছিল মোনাকো, যারা লিগ ওয়ানে সবেমাত্রই দ্বিতীয় হয়েছিল। আমি ছিলাম ১৯ বছর বয়সী একজন, যে কিনা সরাসরি পর্তুগিজ দ্বিতীয় বিভাগ থেকে চলে এসেছি।

কিন্তু দেখা গেল, মোনাকোতে যোগ দেওয়া আমার জীবনের সেরা সিদ্ধান্ত ছিল। পর্তুগিজ ম্যানেজার লিওনার্দো জার্দিমের সাথে এবং রিকার্দো কারভালহো এবং জোয়াও মৌতিনহোর মতো পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের সাথে কাজ করতে পারায় সৌভাগ্যবান ছিলাম। আমি দলে জায়গা করে নিলাম এবং আমার তৃতীয় মৌসুমে তরুণ দলটি সত্যিই ভালো করতে লাগল। আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে খেলেছিলাম এবং এখনও দারুণ লাগে, লিগ শিরোপায় আমরা প্যারিস সেইন্ট জার্মেইকে হারিয়েছিলাম।
এটি ছিল হৃদয়গ্রাহী জয়। এবং আপনি জানেন কি? আমরা জানতাম পিএসজি আমাদের চেয়ে ভালো দল। আমরা ব্যাপারটিকে পাত্তা দিইনি, এতটা অকুতোভয় ছিলাম। জানি না, হয়ত আমরা এতটাই বেশি তরুণ ছিলাম যে ভয় পাইনি।
কিন্তু ২০১৭ সালের একটা মুহূর্ত আমি ভুলবো না, যখন আমরা ইতিহাদে চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে খেলেছিলাম। এটি একটি পাগলাটে ম্যাচ ছিল যা ৫-৩ গোলে শেষ হয়েছিল এবং আমি কিছু সাক্ষাতকারের জন্য সুড়ঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলাম, যেখানে পেপ গার্দিওলার সাথে দেখা হয়ে যায় আমার। ভাবিনি যে সে আমার দিকে তাকাবে, কিন্তু সে থেমেছিল এবং হাত মিলিয়েছিল, বলল যে আমি অসাধারণ খেলেছি। আমরা সামান্য কিছু কথা বলেছিলাম এবং এটি অবিশ্বাস্য ছিল, কারণ তার দল সবসময় যেরকম সৃজনশীল ফুটবল খেলে সেজন্য আমি তার অনেক প্রশংসা করতাম। তা ছিল পুরোপুরি আমার ধরনের ফুটবল।
এটা মজার, কারণ যখন মৌসুম শেষ হল তখন অনেক গুজব রটল যে মোনাকোর সব তরুণ খেলোয়াড়দের বিক্রি করে দেওয়া হবে। বেঞ্জামিন মেন্দি ও কিলিয়ান এমবাপের সাথে আমার ভালো বন্ধুত্ব এবং আমাদের জড়িয়ে কথা হচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, পিএসজি এবং আরও অন্যান্য ভিন্ন ভিন্ন ক্লাব সম্বন্ধে। আজকালের গুজব এতটাই হাস্যকর যে আপনি জানেন না যে কী বিশ্বাস করবেন। তাই আমরা প্রত্যেকদিন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মজা করতাম, যেমন, “পরে দেখা হবে, ছেলেরা! আমি জিদানের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।”

সেই সময়, যখনই আমি মেন্দির পাঠানো বার্তার নোটিফিকেশন দেখি, শুধু হালকা মাথা ঝাঁকাই, কারণ জানি তা খ্যাপাটে ধরনের কিছু হতে যাচ্ছে।
কিন্তু শেষপর্যন্ত, ছোট্ট খেলায় আমিই জিতি, কারণ আমাকেই প্রথম বিক্রি করে দেওয়া হয়। আমার জন্য ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ভালো জায়গা হতে পারত না। পেপকে নিয়ে অনেক লিখা হয়েছে, কিন্তু আমি এখনও জানিনা সে খুঁটিনাটিতে কতটা সিদ্ধহস্ত তা লোকে সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছে কি না। ম্যাচের পূর্বে প্রায়ই বলে যে, আমাদের একটি মানচিত্র দিচ্ছে সে, কিন্তু মাঠের ধাঁধা সমাধান করতে হবে আমাদেরকেই। ফুটবল পাগল যে কারও জন্য সে নিখুঁত ম্যানেজার, যার কাছ থেকে শেখা যাবে। আমি প্রতিদিন দারুণ আনন্দের সাথে জেগে উঠি এজন্য যে, এখানে আমি খেলছি।
যেদিন আমি ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিলাম, সেদিন মোনাকোতে আমার বন্ধুদের জার্সি ধরে থাকা আমার ছবি পাঠিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, “এটি সম্পূর্ণ হয়ে গেছে বন্ধুরা, কখন আমাদের সাথে যোগ দিচ্ছ?”
মেন্দি বলেছিল, “বন্ধু! এখন আমি আসবো!”
কিলিয়ান বড় হয়েছে পিএসজি ভক্ত হিসেবে, তাই আমার মনে হয় প্যারিস তার জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু দুই মাস মাস পরে মেন্দিও সিটিতে যোগ দিল। অবশ্যই, সে দ্রুত সিটির ড্রেসিংরুমের সবচেয়ে বড় জোকারে পরিণত হলো। কিন্তু, আপনাদের বলছি, সে একা নয়। এখন সমস্যা হলো যে, দলে আমিই একমাত্র পর্তুগিজ। আমি ব্রাজিলিয়ান, স্প্যানিশ, ইংরেজদের দিয়ে ঘেরা এবং তারা মনে করে ইনস্টাগ্রামে আমাকে নিয়ে কৌতুক করাটা মজার। তারা সিলিংয়ে আমার জুতা বেঁধে রাখে, আমাকে জামা-কাপড়সহ পুলে ছুড়ে দেয়।

এমনকি যদিও আমরা প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন, প্রতিদিন প্রশিক্ষণে যাওয়াটা মনে হয় যেমনটা আপনি ছোটবেলায় করতেন, যখন আপনি শুধু আনন্দ করতেন। আমি মনে করি, ফুটবলে এরকম খুব বিরল।
এরকম অনুভূতির পেছনে সাধারণত রয়েছে ব্রাজিলিয়ানদের দল- ফার্নানদিনহো, এডারসন, দানিলো ও গ্যাব্রিয়েল হেসুস এবং আমি তাদের খুব কাছের বন্ধু। শপথ করে বলছি, এই গ্রীষ্মে বিশ্বকাপের পর আমি পেপকে কিছু পর্তুগিজ খেলোয়াড় কেনার জন্য বোঝাবো। তারা ভালো না খারাপ খেলে আমি পাত্তা দিচ্ছি না। কৌতুক করার ব্যাপারে তাদের সৃজনশীল হতে হবে। এতটুকুই চাইছি আমি।
ফিচার ইমেজ- worldfootballindex.com