Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যে ১০টি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আগামী বিশ্ব

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমাগত আধুনিকায়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে নিত্যনতুন পদ্ধতি আবিষ্কার, প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে বড় বড় বাঁধ আর ব্রিজ নির্মাণ কিংবা বিশ্বজুড়ে রমরমা অস্ত্র ব্যবসা, সবকিছুই আজকের পৃথিবীকে পরিবর্তন করছে প্রতিনিয়ত। ভেঙে দিচ্ছে প্রচলিত রীতিনীতি, পরিবর্তন করে ফেলছে সমাজের খোলনলচে। এসবই মানুষ করছে প্রাত্যহিক জীবনকে আরো সহজ, আরো আরামদায়ক করে তুলতে। কিন্তু কেবল বর্তমান নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে কি? নিজেদের সুবিধার জন্য কাজ করতে গিয়ে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা কেমন পৃথিবী রেখে যাচ্ছি, তা-ও ভাবতে হবে। ভাবতে হবে আমাদের অদূরদর্শিতার জন্য ভবিষ্যৎ পৃথিবী কোন সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। ‘BBC Future Now’ এই ভাবনার কাজটি করেছে এবং ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য সবচেয়ে বড় ১০টি চ্যালেঞ্জ, অন্য কথায়, সমস্যা নির্দিষ্ট করেছে।

১) জেনেটিক মডিফিকেশন অব হিউম্যান

ক্রিসপার কেস-৯; source: igtrcn.org

‘জেনেটিক মডিফিকেশন অব হিউম্যান’ ব্যাপারটির সাথে পরিচয় আছে কি? সহজ ভাষায় বললে, ‘ক্রিসপার কেস-৯’ নামক অত্যাধুনিক জিনোম সম্পাদনার টুল দ্বারা মানুষের জিনে লক্ষণীয় পরিবর্তন সাধনই হচ্ছে জেনেটিক মডিফিকেশন। একে অনেকসময় ‘জিন এডিটিং’ বা জিন সম্পাদনাও বলা হয়। কম্পিউটারে ফটোশপ এডিটিংয়ের ব্যাপারে সকলেরই কম বেশি জানা আছে। যদি বলি, এই ব্যাপারটাও অনেকটা তেমন! কোনো ছবিতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু বস্তু থাকলে, ফটোশপ দিয়ে প্রয়োজনমাফিক তা মুছে ফেলা যায়, ছবিকে আরো সুন্দর করে তোলা যায়। এক্ষেত্রে ক্রিসপার কেস-৯ হচ্ছে বায়োলজিক্যাল ফটোশপ।

হ্যাঁ, একটি ছবির মাঝে বিদ্যমান অনভিপ্রেত কিছু যেমন ফটোশপ দিয়ে মুছে ফেলা যায়, বায়োলজিক্যাল ফটোশপ ক্রিসপার কেস-৯ দ্বারা, মানুষের জিনের অনভিপ্রেত অংশটাও মুছে ফেলা সম্ভব! জিন এডিটিং করে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধি থেকেও সহজে নিস্তার লাভ করা যেতে পারে! দারুণ, তা-ই না? তবে এতটুকু জেনেই জিন এডিটিংয়ের পক্ষে চলে যাবেন না যেন, এর অন্ধকার দিকটাও তো দেখা প্রয়োজন! ফটোশপ একটি ছবিকে যেমন সুন্দর করে, তেমনি ফটোশপের কল্যাণে অনেক সম্পাদিত ছবিকে দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে। ফটোশপের বহুবিধ অপব্যবহারের কথা কে না জানে? জিন এডিটর ক্রিসপার কেস-৯ দিয়েও কি এমন অপকর্ম সম্ভব? তা অবশ্য নয়।

জিন এডিটিং দ্বারা আপনি ভালো কাজই করবেন, যা অন্যদের দৃষ্টিকোণ থেকে অনৈতিক হবে। কীভাবে? জিন এডিটিং দ্বারা কোনো শিশুর রোগ-ব্যাধির নিরাময়ের পাশাপাশি তার লিঙ্গ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব! আরো বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, আপনি চাইলেই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনার শিশুর মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু গুণাবলী উপস্থিত করতে পারেন! এই শিশুকে বলা হয় ‘ডিজাইনার বেবি’। এতে করে আপনার শিশুটি অন্যান্যদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী, বুদ্ধিমান এবং মেধাবী হয়ে উঠতে পারে! এবারো কি মনে হচ্ছে পদ্ধতিটি ভালো? স্বাভাবিক নৈতিকতা বলছে, অবশ্যই না। সমাজের ধনীরা যখন এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ডিজাইনার বেবি জন্ম দেবে, তখন গরীবদের সন্তানের মেধা-মননে তাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়বে। স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে। যদিও জিন এডিটিং এখনও অনুমোদিত নয়, তথাপি ভবিষ্যতে যে তা অননুমোদিতই থাকবে, তার নিশ্চয়তা কিন্তু দেয়া যাচ্ছে না। আবার যদি, এই পদ্ধতি অনুমোদন দেয়াই হয়, তাহলে নৈতিকতার কোন মাপকাঠি থেকে এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ করা হবে, তা-ও একটি ভবিষ্যৎ সমস্যা।

২) ডুবে যাবে অনেক নিচু শহর?

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসের দিকে; source: blueandgreentomorrow.com

গ্রিনহাউজ বা বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে মানুষের চিন্তার শেষ নেই। আর চিন্তা হবে না-ইবা কেন? যখন আপনি জানবেন যে এই শতকের শেষতক, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১.৩২ মিটার বৃদ্ধি পেতে চলেছে, তখন আপনার কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য। আর যদি তা-ই হয়, তাহলে মালদ্বীপের মতো দ্বীপ রাষ্ট্র, কিংবা বাংলাদেশের অনেক নিচু উপকূলীয় দেশের জন্য বিভীষিকা অপেক্ষা করছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে, ২০৫০ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫° সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে গবেষকগণ সতর্ক করে দিয়েছেন, যদি ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের হার বর্তমান হারের অর্ধেকে নামিয়ে আনা না যায়, তাহলে পরিকল্পিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভবপর হবে না। এমতাবস্থায় দেখার বিষয়, বিশ্বনেতারা এই ব্যাপারটিকে কতটা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন। অন্যথায়, হলিউড চলচ্চিত্র ‘ওয়াটার ওয়ার্ল্ড’ এর মতোই হতে যাচ্ছে আমাদের সত্যিকারের পৃথিবীটা!

৩) যানবাহনে ছেয়ে যাবে রাস্তাগুলো!

ট্রাফিক জ্যাম; source: Autoevolution.com

প্রথমে ঢাকার তথ্য দিয়েই শুরু করা যাক। গত বছরের এক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ৩০৩টি নতুন গাড়ি নিবন্ধিত হচ্ছে! প্রায় ২ কোটি মানুষের এই মেগাসিটিতে রাস্তার পরিমাণ শহরের মাত্র ৭ শতাংশ। আর ঢাকায় গাড়ির গড় কত? মাত্র ৭ কিলোমিটার/ঘন্টা! তার উপর এই বিপুল পরিমাণ গাড়ি প্রতিদিন রাস্তায় নামতে থাকলে অবস্থাটা কী দাঁড়াবে বলুন তো! এই চিত্র কেবল ঢাকার নয়, বিশ্বের অধিকাংশ দেশের প্রধান শহরগুলোই যানবাহন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। এই সমস্যা নিয়ে এখনই না ভাবলে ভবিষ্যতে তা প্রকট আকার ধারণ করবে।

গাড়ি নিয়ে সমস্যা এখানেই শেষ নয়। রাস্তায় যানজট কমাতে প্রতিটি দেশই নিত্যনতুন কত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। উড়ন্ত গাড়ি, বুলেট ট্রেন কিংবা টেসলার প্রস্তাবিত অত্যাধুনিক হাইপারলুপ নিয়েও মানুষ কিন্তু সন্তুষ্ট হতে পারছে না। কারণ, প্রযুক্তির বাজারে গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো এখন ঝুঁকেছে স্বয়ংক্রিয় (মানুষ ড্রাইভার ছাড়া) গাড়ি নির্মাণে। এভাবে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি বাড়তে থাকলে, একসময় বিপুল পরিমাণ পরিবহন শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। পাশাপাশি, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে এবং জটলা পাকানো ব্যস্ত রাস্তায় এসব স্বয়ংক্রিয় গাড়ি কতটা নিরাপদ হবে, সেটিও একটি প্রশ্ন।

৪) খনিজ ধাতুর মজুদ শেষের দিকে!

পর্যায়সারণীতে বিরল ধাতুগুলো; source: periodictablegroups.wordpress.com

পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদ অফুরন্ত নয়, এ কথা আমরা সকলেই জানি। প্রাকৃতিক সম্পদগুলো একসময় শেষ হয়ে গেলে পৃথিবীতে কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে, তা নিয়েও আলোচনা নিছক কম হয়নি। তবে যা খুব শীঘ্রই পৃথিবীতে একটি বড় ধরণের সমস্যা বাঁধাবে, তা হচ্ছে খনিজ ধাতুর মজুদ। সাধারণ কোনো খনিজ ধাতু নয়, দুর্লভ এবং অধিক মূল্যবান ধাতুর কথা বলছি, যেমন- ল্যান্থানাইড সিরিজের ধাতুগুলো। আর এগুলো ফুরিয়ে গেলে স্থবির হয়ে যেতে পারে আধুনিক প্রযুক্তির বিপ্লব! একটি স্মার্টফোন কিংবা আধুনিক কম্পিউটার মাদারবোর্ড তৈরিতে কমবেশি ৬০ প্রকারের বিরল ধাতুর প্রয়োজন হয়! আর এই বিরল ধাতুর ৯০ ভাগই মজুদ রয়েছে চীনের খনিগুলোতে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই মজুদ আহরণের বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে, আগামী ২ দশকের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যাবে। কী হবে তখন?

৫) ব্রেইন বুস্টার

একটি সাধারণ ব্রেইন বুস্টার ঔষধ; source: shophealthy.in

না, ব্রেইন বুস্টার দ্বারা কোনো যন্ত্রের কথা বোঝানো হচ্ছে না, যা আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেবে। তবে নিছক কিছু ঔষধ বা মাদক কিংবা জিন এডিটিং এর কথাই বলা হচ্ছে এখানে। কিছু ব্যয়বহুল মাদক দ্রব্য এবং ঔষধ রয়েছে, যেগুলো প্রয়োগে আপনি কয়েকদিন কিংবা কয়েক ঘণ্টা, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে অত্যধিক দ্রুত এবং তীক্ষ্ণভাবে চিন্তা করতে পারবেন! জিন এডিটিংয়ের কথা তো আগেই বলা হয়েছে। তাই এখানেও প্রশ্ন চলে আসছে, এসব আধুনিক প্রযুক্তি কিংবা ঔষধ কি মানুষের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা আরো বৃদ্ধি করবে না? ব্যয়বহুল এসব পদ্ধতি গরীব বা মধ্যবিত্তের নাগাল থেকে আলোকবর্ষ দূরে। ফলে ধনীরা আরো ফুলে-ফেঁপে উঠবে না তো? নিঃসন্দেহে ব্রেইন বুস্টার ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় সমস্যার নাম।

৬) বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি

বাড়ছে আয়ুরেখার ভিড়; source: indianexpress.com

নিত্যনতুন প্রযুক্তি এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিস্ময়কর অগ্রগতির ফলে পৃথিবী জুড়েই মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি সুখের কথা হলেও চিন্তার অবকাশ রয়েছে। এখনই এর প্রভাব না পড়লেও ভবিষ্যতে এটি একটি বড় সমস্যা হতে চলেছে। সমাজে কত বছর বয়সীদের ‘সিনিয়র সিটিজেন’ বা প্রবীণ নাগরিক বলা হয়? ৫০? ৬০? সমাজভেদে ভিন্নতার কারণে ৬৫ই ধরা যাক। কিন্তু বিশ্বজুড়ে মানুষের গড় আয়ু বাড়তে বাড়তে ৮১ (সুইজারল্যান্ড) তে গিয়ে ঠেকেছে! আর এ তো কেবল গড় আয়ু, পৃথিবীতে এখন শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা ৫ লক্ষাধিক! এই সংখ্যা শতাব্দীর শেষ নাগাদ ২ কোটি ৬০ লক্ষে গিয়ে ঠেকবে! এই বিপুল পরিমাণ শতবর্ষী এবং প্রবীণ নাগরিকের দেখভালের জন্য, প্রতিটি দেশেই সেবাখাতে লোকবল প্রচুর বৃদ্ধি করতে হবে। বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ কিংবা বয়স্কভাতা প্রদান করতে গিয়ে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়বে অনেক উন্নয়নশীল দেশ।

৭) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা

বিভিন্ন জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম; source: vecteezy.com

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বর্তমান সময়ে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ঘুম থেকে উঠে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত, কোনো না কোনোভাবে আমরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সক্রিয় থাকছি। আর এতে করে ব্যাহত হচ্ছে আমাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা, যা আমরা বুঝতেও পারছি না। আমাদের অজান্তেই আমাদের অনেক গোপন তথ্য চলে যাচ্ছে অন্যদের কাছে এবং সম্মুখীন হচ্ছি নানাবিধ সমস্যার। গোপনীয়তার অভাব এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম দ্বারা কীভাবে আমাদের ব্যক্তিগত জীবন প্রভাবিত হচ্ছে, তা জানতে পড়তে পারেন ‘ট্রুম্যান শো’ লেখাটি। অন্যদিকে, প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নানারূপ অপরাধ সংঘটিত হয়ে চলেছে। সাইবার বুলিং বর্তমান সমাজের একটি প্রধান আলোচ্য বিষয়। আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া সংবাদ ও তথ্যের জন্য প্রতিদিনই ঘটছে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা। তাই দ্রুত বাড়তে থাকা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো মানুষের জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করছে, তা ভেবে দেখতে হবে এখনই। নয়তো, অনাগত ভবিষ্যতে তা প্রচলিত ধ্যান ধারণা এবং সমাজব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠবে।

৮) ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া; source: sofrep.com

বিশ্ব রাজনীতি বিগত বছরগুলোতে বেশ নাটকীয় এবং অস্থির হয়ে উঠেছে। ঘটে যাচ্ছে অপ্রত্যাশিত সব ঘটনা এবং পরিবর্তিত হচ্ছে শক্তি কাঠামো। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যা থেকে শুরু করে, শরণার্থী সমস্যা, হ্যাকিং সমস্যা, সিরিয়ায় যুদ্ধ, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব, বিশ্ব জুড়ে উগ্র জাতীয়তাবাদী এবং ধর্মীয় চেতনার উদ্ভব, বিভিন্ন দেশে স্বৈরাচারী একনায়কের ক্ষমতায় জেঁকে বসা, ব্রেক্সিট আর রোহিঙ্গা সমস্যা, এ সকল ঘটনাই বিশ্বরাজনীতিতে ঘটিয়েছে বড় পরিবর্তন। সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরানের মধ্যে শক্তিশালী জোট গঠনের। অন্যদিকে অধিকাংশ তাত্ত্বিকের মতে, হোয়াইট হাউজের জন্য অযোগ্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রতিনিয়ত ট্রাম্প তা প্রমাণও করে চলেছেন। তার আর কিম জং উনের মধ্যে সৃষ্ট তিক্ততা বিশ্বের জন্য বড় হুমকি। আর সম্প্রতি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা এবং ফিলিস্তিনের তৃতীয় ইস্তিফাদা ঘোষণা বিশ্ব রাজনীতিকে করেছে আরো অস্থিতিশীল। ফলে, ভবিষ্যত বিশ্বের একটি বড় সমস্যাই হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা।

৯) বেকারত্ব

source: thestreet.com

বেকারত্ব হবে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য একটি অভিশাপ। ‘ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন’ এর তথ্য অনুযায়ী ২০০৮-১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে চাকরিচ্যুত হয়েছে ২০ কোটির অধিক মানুষ! প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীলতা বাড়তে থাকায় এই সংখ্যা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, রোবট দ্বারা রেস্টুরেন্ট এবং অফিস পরিচালনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমাগত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব। ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে, নতুন প্রস্তুত হওয়া কর্মক্ষম জনশক্তি এবং উপস্থিত বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৫০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই এই সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে ৫০ কোটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে না। ফলে, বেকার সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

১০) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

source: delnext.com

সাধারণ কম্পিউটার বা রোবট, যা দৃষ্টিলব্ধ উপলব্ধি, শ্রবণশক্তি এবং অনুধাবন, সিদ্ধান্ত নেয়া ও কথা বলার মতো কাজগুলো করতে সক্ষম হয়, তার এই ক্ষমতাকে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমতা দিনকে দিন শক্তিশালী হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও আরো হবে। প্রযুক্তিবিদরা আশঙ্কা করছেন, আগামী শতকে পৃথিবীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বুদ্ধি মানুষকে ছাড়িয়ে যেতে পারে! প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে, এই আশংকা সম্পূর্ণ উড়িয়েও দেয়া যাচ্ছে না। আসিমো, অ্যাটলাস আর অতি সম্প্রতি সোফিয়ার মতো কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবটের আগমন উপরোক্ত আশংকাকে আরো শক্ত করেছে। প্রযুক্তির অগ্রগতি এই হারে চলতে থাকলে, শীঘ্রই আমরা দেখবো বলিউড সিনেমার ‘চিট্টি’র মতো অতি চালাক রোবট! ফলাফল কী হতে পারে, তা নিশ্চয়ই সিনেমা দেখেই বুঝেছেন!

ফিচার ছবি: hdwallpaperdaily.com

Related Articles