Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

স্মার্টফোনের টাচস্ক্রিন যেভাবে কাজ করে

আপনার কি কখনো জানার আগ্রহ হয়েছে আপনার নিত্য সঙ্গী স্মার্টফোনটি কীভাবে কাজ করে? কীভাবে মুহূর্তের মাঝে আপনার সকল আদেশ পালন করে ফেলে? এক সেকেন্ডের ভেতরে একটি স্মার্টফোনের ভেতর যে কতকিছু হয়ে যায়, তা সত্যি অবাক করে তুলবে আপনাকে। স্মার্টফোন তৈরি করা হয়েছে আপনার আদেশ পালনের জন্য, সেভাবেই একে ডিজাইন করা হয়েছে। কিন্তু একটি যন্ত্রকে মানুষের সোজা ভাষা কীভাবে বোঝানো যেতে পারে এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা শেষে এ আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীর অত বাহারী ঢঙের ভাষা শেখানো যায়নি একটি কম্পিউটারকে, স্মার্টফোনও কিন্তু একটি কম্পিউটার, যেসকল যন্ত্র কম্পিউট করে অর্থাৎ সংখ্যা গণনা করে থাকে, তাদেরকেই কম্পিউটার বলা হয়। মানুষ যা করেছে সেটি হলো একটি কম্পিউটার অর্থাৎ যন্ত্রকে গণনা করতে শিখিয়েছে। গণনার জন্য দশটি অঙ্ক শেখাতে হতো, সেখানেও বিপত্তি। অতঃপর ডেসিমাল পদ্ধতি বাদ দিয়ে এলো বাইনারী পদ্ধতি, এই বাইনারীতে দুটি মাত্র অঙ্ক; ০ আর ১।

বাইনারী সংখ্যা পদ্ধতি, এক আর শূন্য যার ভিত্তি; Source: digitrading.biz

একটি যন্ত্রকে তখন এই দুটো অঙ্ক শিখিয়ে দেয়া হলো। দুনিয়ার তাবৎ কম্পিউটার এই দুই অঙ্ক দিয়েই কাজ করে শুরু করে দিলো। মানুষ শুধু চুপিচুপি এর দক্ষতা বাড়ানোয় কাজ করছে। ফলে আমরা এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে পেয়েছি স্মার্টফোন। যা-ই হোক, আজকের বিষয় স্মার্টফোনের পেছনের দৃশ্য নিয়ে নয়। স্মার্টফোনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো টাচস্ক্রিন। এটি সাধারণ কোনো কাঁচ নয় যাতে হাত রাখলে আমার মনের কথা বুঝে নেয়। এই হাত রাখার গভীরেও অনেক হিসেব-নিকেশ হয়ে যায়। অনেক ধরনের টাচস্ক্রিন তৈরি হয়েছে এ পর্যন্ত। তবে আপনি দুই ধরনের টাচস্ক্রিনের সাথে পরিচিত। নাম বললে হয়তো চিনবেন না, কিন্তু বিস্তারিত পরিচয় দিলে ঠিকই বুঝতে পারবেন। মানুষের বহুল ব্যবহৃত টাচস্ক্রিন চুটি হলো রেজিস্টিভ আর ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন।

Source: ee.co.za

বেশ কিছু বছর পূর্বে ‘আশা’ নামের ফোন বাজারে নিয়ে আসে নোকিয়া। মানুষের কাছে ভালোই গ্রহণযোগ্যতা পায়, যদিও হাতের স্পর্শে কাজ করতো ফোনটি, তবে সেটি স্মার্টফোন ছিলো না। আপনারা যদি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে নিশ্চয় এর টাচস্ক্রিন ব্যবহার করতে গিয়ে নানা সময়ে বিরক্ত হয়েছেন।

Source: theverge.com

এই ফোনটিতে ছিলো রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিন। ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন ব্যবহার শুরুর পূর্বে রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিনই দেখা যেতো সব জায়গায়। আইফোন-অ্যান্ড্রয়েড বাজারে আসার পূর্বে কিছু ফোন এসেছিলো যেগুলো শুধু কর্পোরেট ব্যক্তিদের হাতেই দেখা যেতো। মানুষ অবাক হতো দেখে যে, এতে কোনো বোতাম নেই, হাত দিয়ে স্পর্শ করলে কত সুন্দর কাজ করে! এর কাজ করার মাঝে এতটাও সৌন্দর্য ছিলো না কিন্তু, কারণ এতেও ছিলো রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিন। অনেক শক্তি প্রয়োগ করে এতে স্পর্শ করতে হতো। আপনি আপনার স্মার্টফোনের স্ক্রিনে বেশ কিছু জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন আঙুল রেখে দেখুন অথবা আঙুল রেখে স্ক্রিনের একদিক থেকে টেনে অন্যদিকে নিয়ে যান, খুব সুন্দরভাবে কাজ করবে। রেজিস্টিভ স্ক্রিন কিন্তু এসবে কাজ করতো না। একবারে শুধু একটি আঙুল দিয়ে আপনি আদেশ করতে পারবেন, সেই সাথে আঙুল দিয়ে খুব জোরে চাপ দিতে হবে। ঠিক এজন্যই রেজিস্টিভ স্ক্রিনের ফোনগুলোর সাথে লম্বা একটি স্টিক দেয়া হতো, যাতে চাপ প্রয়োগ করা সহজ হয়।

প্রাইভেট কারগুলোতে যে টিভি কিংবা রিয়ারভিউ ক্যামেরা যুক্ত থাকে, ওগুলোতেও কিন্তু এই রেজিস্টিভ স্ক্রিন থাকে। আপনি শুধু হাত রাখলেই এটি কাজ করবে না। শক্ত চাপ প্রয়োগ করার পরেই কাজ করতে শুরু করবে স্ক্রিন। রেজিস্টিভ স্ক্রিনের বদনাম করা হচ্ছে বলে ভাবার কোনো কারণ নেই যে, এই স্ক্রিন একেবারেই ফেলনা। LG Optimus, LG GW620, Sony Ericsson Vivaz, Nokia N97 mini, Nokia N900 মডেলের ফোনগুলোতে কিন্তু রেজিস্টিভ স্ক্রিন ব্যবহার করা হয়েছিলো। তবে বর্তমানে স্মার্টফোনগুলোতে ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিন ব্যবহৃত হওয়াতে রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিন খুব একটা চোখে পড়ে না। এই ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিনের অনেক সুবিধা, আবার কিছু ক্ষেত্রে রেজিস্টিভ স্ক্রিনেরও সুবিধা রয়েছে।

১৯৪৮ সালের দিকে হিউ লি কেইন নামক একজন কানাডিয়ান পদার্থবিদ ইলেক্ট্রনিক স্যাকবাট নামক একটি স্বরযন্ত্র তৈরি করেন। এর স্বর বোতামগুলোতে তিনি এমন ব্যবস্থা করেন যে, বোতামে প্রযুক্ত চাপের পরিমাণ অনুযায়ী স্বরের তারতম্য দেখা দেবে। রেজিস্টিভ স্ক্রিনের পেছনে এই প্রযুক্ত চাপই দায়ী।

লি কেইন কাজ করে চলেছেন নিজের তৈরি ইলেক্ট্রনিক স্যাকবাট সিনথেসাইজারে; Source: noisey.vice.com

তবে সর্বপ্রথম টাচস্ক্রিন থিওরীর উদ্ভাবকের সম্মান প্রদান করা হয় ই. এ. জনসনকে। তিনি ১৯৬৫ সালে রেজিস্টিভ ও ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন উভয়ই বর্ণনা করেন তার প্যাটেন্টে

রেজিস্টিভ স্ক্রিন

বর্তমানে স্মার্টফোনে যদিও এই স্ক্রিন ব্যবহার করতে দেখা যায় না, তবু আপনি প্রতিদিন নিজের অজান্তেই হয়তো ব্যবহার করে চলেছেন। বেশ কিছু ব্যাংকের এটিএম বুথে টাচস্ক্রিন সুবিধা রয়েছে, সেগুলো রেজিস্টিভ স্ক্রিন ছাড়া আর কিছুই নয়। আঙুল রাখলেই কাজ করবে না ওগুলো, আঙুল রেখে আপনি যদি চাপ প্রয়োগ করেন তবেই সাড়া দেবে স্ক্রিন।

রেজিস্টিভ স্ক্রিনের সবগুলো স্তর; Source: admetro.com

ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিনে যেহেতু বৈদ্যুতিক ক্যাপাসিটেন্সকে ভিত্তি করে কাজ করা হয়, সেহেতু আপনাকে কোনো পরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করতেই হবে। এখন মানুষের শরীরের থেকে ভালো মানের পরিবাহী আর কী-ই বা হতে পারে। তড়িৎ পরিবাহী আঙুল রাখলেই তড়িৎ প্রবাহে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। অপরদিকে রেজিস্টিভ স্ক্রিন যেহেতু প্রযুক্ত চাপকে ভিত্তি করে কাজ করে থাকে, সেহেতু স্পর্শ করানো বস্তুটি পরিবাহী হোক কিংবা অপরিবাহী, স্ক্রিনে পরিমিত চাপ প্রযুক্ত হলে সেটি কাজ করবে।

Source: goenkanscienceblog.wordpress.com

একটি রেজিস্টিভ স্ক্রিনে দুটি স্তর থাকে। বাইরের দিকে যেটি থাকে সেটি হলো রেজিস্টিভ স্তর, আর ভেতরের দিকে থাকে কন্ডাক্টিং স্তর অর্থাৎ তড়িৎ পরিবাহী স্তর। ভেতরের এই তড়িৎ পরিবাহী স্তরটিতে সর্বক্ষণ তড়িৎ প্রবাহিত হয়। বাইরের স্তরটি তৈরি করা হয়েছে পলিইথিলিনের মতো পদার্থ থেকে। এই পলিইথিলিন তড়িৎ অপরিবাহী হওয়াতে এমন ব্যবস্থা। এই দুই স্তরের মাঝখানে থাকে স্পেসার নামক অতি ক্ষুদ্র কিছু তড়িৎ অপরিবাহী বস্তু। এদের কাজই হলো দুই স্তরকে পৃথক রাখা, আপনা-আপনি যাতে স্তর দুটি স্পর্শ করে কাজ করতে না পারে। আপনি যখনই বাইরের স্তরটিতে চাপ প্রদান করবেন, স্তরটি সামান্য বাঁকিয়ে যাবে আর ভেতরের স্তরটিকে স্পর্শ করবে। আপনারা যারা ব্যবহার করেছেন এই রেজিস্টিভ স্ক্রিন, তারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন বাইরের স্তরটির এভাবে বেঁকে যাওয়া। বাইরের স্তরটি যখন বেঁকে গেয়ে ভেতরের স্তরটিকে স্পর্শ করবে, ভেতরের পরিবাহী স্তরটিতে ধ্রুবক হারে যে তড়িৎ প্রবাহ চলছিলো তাতে বাঁধাপ্রাপ্ত হবে স্তরটি। পুরো স্ক্রিনে হবে না সেটা, ঠিক যেখানে রেজিস্টিভ স্তর স্পর্শ করানো হয়েছে সেখানেই তড়িৎ প্রবাহ কেন্দ্রীভূত হয়ে প্রসেসরকে এর অবস্থান জানিয়ে দেবে।

ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইডের তৈরি স্বচ্ছ তড়িৎ পরিবাহী কাঁচ; Source: phys.org

দুটি স্তরকেই ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইড যৌগটির আবরণে আচ্ছাদিত করা হয়। এই যৌগটি টাচস্ক্রিনে ব্যবহারের একটিই কারণ রয়েছে, এটি তড়িৎ পরিবাহী এবং একইসাথে স্বচ্ছ। যদি স্বচ্ছ না হতো তাহলে টাচস্ক্রিন হয়তো স্পর্শে সাড়া দিত, কিন্তু এই স্ক্রিনের নিচে যে ডিসপ্লে স্ক্রিন রয়েছে সেটির আলোকে বাইরে আসতে দিত না। স্বচ্ছ হবার সাথে সাথে এটি তড়িৎ পরিবাহী। সুতরাং টাচস্ক্রিনের উভয় স্তরকে কাজ করাবার জন্য এই যৌগের আচ্ছাদন সর্বোচ্চ প্রয়োজন ছিলো।

লেখচিত্রের দুই অক্ষকে ব্যবহার করেই প্রযুক্ত চাপের অবস্থান খুঁজে বের করে রেজিস্টিভ স্ক্রিনে সংযুক্ত প্রসেসর; Source: farhek.com

এখন অবস্থান কীভাবে জানাবে সেটিও চিন্তার বিষয়। টাচস্ক্রিন নির্মাণে অবস্থান জানানোর জন্য সবথেকে কম চিন্তা করতে হয়েছে। কেননা গাণিতিকভাবে অবস্থান জানানোর একটাই উপায় বহু প্রাচীনকাল থেকে চলে এসেছে। নামে হয়তো পুরনো, কিন্তু এখনও এই পদ্ধতি ছাড়া আমাদের চলে না। সেটি গ্রাফ তথা লেখচিত্র। এক্স-অক্ষ আর ওয়াই-অক্ষ দিয়ে দ্বিমাত্রিক স্থানে যেকোনো কিছু চিহ্নিত করে ফেলা যায়। তড়িৎ পরিবাহী স্তরে তড়িৎ সিগন্যাল প্রবাহিত হয় বাম থেকে ডানে আনুভূমিকভাবে, আবার উপর থেকে নিচে উলম্বভাবে। এই দুই ধরনের সিগন্যাল একসাথে মিলে অদৃশ্য এক গ্রাফ তৈরি করে। আমরা যখনই এই স্ক্রিনে চাপ প্রয়োগ করছি, প্রসেসর সঙ্গে সঙ্গে টের পেয়ে যায় গ্রাফটির কোথায় তড়িৎ প্রবাহ কেন্দ্রীভূত হয়েছে।

Source: yalescientific.org

ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিন

Source: admetro.com

এই ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিনগুলো যেকোনো পরিবাহীর সংস্পর্শে কাজ করতে শুরু করে। বেশ কিছু ধরনের ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন রয়েছে, কিন্তু সবগুলো স্ক্রিনের মৌলিক ধারণাটি হলো ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইড যৌগের তৈরি চুলের থেকেও সূক্ষ্ম গ্রিডলাইনের ব্যবহার। অর্থাৎ এই যৌগটি দিয়ে পুরো স্ক্রিনজুড়ে একটি জালের মতো তৈরি করা হয়। এই গ্রিড তৈরি করার জন্য উলম্ব (Driven Line) ও আনুভূমিক (Receive Line) দুই ধরনের সরলরেখা তৈরি করা হয়।

স্ক্রিনে হাত রাখার সঙ্গে সঙ্গে বর্তনীটি পূর্ণ হয়, যার দরুন স্ক্রিনে তড়িৎ প্রবাহেও পরিবর্তন দেখা দেয়; Source: atmelcorporation.wordpress.com

ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিনের গ্রিড লাইন, একটি অ্যাপকে পূর্ব থেকেই বলে দেয়া থাকে গ্রিড লাইনের তড়িৎক্ষেত্রের কোথায় তড়িৎ প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটলে কেমন সাড়া প্রদান করতে হবে; Source: google.com

সবগুলো সরলরেখা একত্রে মিলিত হয়ে তৈরি করে এই গ্রিড। উলম্ব রেখাগুলো দিয়ে ধ্রুব হারে তড়িৎ প্রবাহিত হয়ে থাকে, আর আনুভূমিক রেখাগুলোর কাজ হলো প্রবাহিত এই তড়িৎকে শনাক্ত করা। উলম্ব ও আনুভূমিক রেখাগুলো পরস্পর যে যে বিন্দুতে স্পর্শ করেছে সেখানে একটি করে তড়িৎক্ষেত্র তৈরি হবে, স্মার্টফোনে এই তড়িৎক্ষেত্রগুলোর মান শূন্য তথা নিরপেক্ষ হিসেবে চিহ্নিত থাকে। প্রসেসরে সংরক্ষিত এই নিরপেক্ষ মানগুলো তখনই পরিবর্তন হয়ে যায় যখন কোনো পরিবাহীকে এই গ্রিডের সংস্পর্শে নিয়ে আসা হয়।

গ্রিড লাইনে তড়িৎ প্রবাহে ব্যাঘাতকে কেন্দ্র করেই প্রসেসর স্পর্শানুভূতির লোকেশন খুঁজে পায়; Source: ubreakifix.com

পূর্বেই বলা হয়েছে, মানব শরীর একটি উৎকৃষ্ট মানের তড়িৎ পরিবাহী, পুরো শরীরজুড়েই ধনাত্মক-ঋণাত্মক আধান বিরাজ করে আছে। এই আধানগুলোর উপস্থিতি কারণেই আমাদের শরীর প্রাকৃতিক ক্যাপাসিটেন্স প্রদর্শন করার মাধ্যমে পরিবাহী হিসেবে কাজ করতে সক্ষম।

কোনো ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনে যদি আঙুল দিয়ে স্পর্শ করানো হয়, তখন কিন্তু তড়িৎ আঙুল দিয়ে দেহে প্রবেশ করে না। একটি পরিবাহীর উপস্থিতিতে প্রসেসরে সংরক্ষতি তড়িৎক্ষেত্রগুলোর নিরপেক্ষতা পরিবর্তিত হয়। তড়িৎক্ষেত্রগুলো আঙুলের তড়িৎ আধানগুলোকে অনুভব করতে শুরু করে। সামান্যতম স্পর্শও প্রসেসরকে কাজ করতে বাধ্য করে। তাই ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনে মাল্টিটাচ আর স্লাইডের মতো সুবিধাগুলো পাওয়া যায়।

রেজিস্টিভ স্ক্রিনে একাধিক স্পর্শের প্রতিও সাড়া প্রদান করতে পারে এতে সংযুক্ত প্রসেসরটি; Source: google.com

কোনো অপরিবাহী পদার্থের সংস্পর্শে এই টাচস্ক্রিনগুলো কাজ করবে না। হাতে মোজা পরিহিত অবস্থায় ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিন দিয়ে ঠিক এজন্যই কাজ করা সম্ভব হয় না। কিছু হাতমোজার আঙুলগুলোতে মেটাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়, এমন হাতমোজা দিয়ে এই টাচস্ক্রিনে কাজ করা যাবে। এছাড়াও কখনো কখনো দেখে থাকবেন, ত্বক ঘেমে স্মার্টফোনের স্ক্রিনে লেগে থাকার পর আপনার কাজ করতে অসুবিধা হয়। আপনি স্পর্শ করছেন এক জায়গায়, কিন্তু কাজ চলছে কয়েক জায়গায়, মাল্টিটাস্কিং চলছে। এর কারণ হলো ঘামের মাঝে লবণ রয়েছে আয়নিত অবস্থায়। এই আয়নগুলো বাধ্য করে টাচস্ক্রিনকে তড়িৎক্ষেত্রের নিরপেক্ষতা পরিবর্তনে।

প্রযুক্তি বাজারে বহুল ব্যবহৃত এই হলো দুই টাচস্ক্রিনের পেছনের গল্প। প্রযুক্তি কখনোই একটি পদ্ধতি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেনি। সময়ের সাথে সাথে নিত্য নতুন পদ্ধতির আগমন ঘটেছে প্রযুক্তির বাজারে। যদিও বর্তমানে ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনকে ব্যবহার করা হয় স্ট্যান্ডার্ড স্বরূপ, তবুও চুপিসারে ঠিকই চলছে টাচস্ক্রিনের ভবিষ্যত পদচারণার কাজ। হয়তো আরো বিশ্বস্ত আর সুন্দর কোনো এক পদ্ধতি তৈরি হবে, পুরনো হয়ে যাবে আমাদের বহুল ব্যবহৃত এই ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন।

ফিচার ইমেজ: touchdynamic.com

Related Articles