Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

নিঝুম দ্বীপ: প্রকৃতির এক অন্যরকম হাতছানি

বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার একেবারে শেষপ্রান্ত, বর্তমানে নিঝুম দ্বীপ বলে পরিচিত চরসমষ্টি। নিঝুম দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত এবং এখানে আসা যাওয়ার পথ ও এই হাতিয়া হয়েই। নোয়াখালী বললেই সাধারণত আমাদের দৃশ্যপটে যে চিত্র ভেসে ওঠে, নোয়াখালীরই একটি অংশ হয়েও এই দ্বীপের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। নিঝুম দ্বীপে দাঁড়িয়ে মনে হবে এই দ্বীপ আসলেই নিঝুম, যেন বাংলাদেশ ছেড়ে, পৃথিবী ছেড়ে অন্য কোনো এক স্বপ্নভূমি অবলোকন করছি।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত এই দ্বীপ অবারিত সবুজ, বৈচিত্র্যময় অদ্ভুত প্রাণচাঞ্চল্যের দ্বীপ। একদিকে ম্যানগ্রোভ বন ও অন্যদিকে বিস্তীর্ণ বালুরাশির এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা বৈচিত্র্যময় এবং সেইসাথে কষ্টের ও বটে। অন্যদিকে পর্যটনের জন্য বড় একটি সম্ভাবনাময় জায়গা এই দ্বীপ।

এই দ্বীপের সৃষ্টি মূলত বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা চরের সমন্বয়ে। সময়ের সাথে বাড়তে বাড়তে আজ বিশাল এক ভূখণ্ডে পরিণত হয়েছে। এবং ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা এসব চর বাংলাদেশের মানচিত্রে বেশ ভালোই প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যায়।

নিঝুম দ্বীপের প্রবেশ মুখ- বন্দরটিলা ঘাট; Photographer: Rafia Tamanna

সন্ধান ও বসতি গড়ে ওঠা

চল্লিশের দশকের শেষের দিকে কিংবা পঞ্চাশের দশকের প্রথমে মানুষ প্রথম এর সন্ধান পায়। হাতিয়া, চর ফ্যাশন, রামগতি, শাহবাজপুর ইত্যাদি অঞ্চলের জেলেরা মাছের সন্ধানে যেতো দূর দূরাঞ্চলে। এরাই প্রথম এই দ্বীপের সন্ধান পায়। দ্বীপের সন্ধান পাওয়ার বহুদিন পরেও দ্বীপে বসতি গড়ে ওঠেনি। পঞ্চাশের  দশকের শেষের দিকে খুব সম্ভবত ১৯৫৭ সালে প্রথম হাতিয়া সহ আশেপাশের কিছু অঞ্চলের বাথানিয়ারা (মহিষ পালক) সর্বপ্রথম এই অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করে। এই দ্বীপ স্থানীয়দের মধ্যে ইছামতি নামেও পরিচিত ছিলো। নোয়াখালী অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় চিংড়িমাছের নাম ‘ইছা’, ‘ইচা’ বা ‘ইছামাছ’। নিঝুম দ্বীপের আশেপাশে প্রচুর চিংড়ি পাওয়া যেতো তখন। এ থেকেই এই নামে ডাকা হয়। চর জুড়ে উঁচু বালুর ঢিবি ও বিস্তীর্ণ বালুরাশির কারণে স্থানীয়রা এই দ্বীপকে ‘বাউলার চর’ ও বলে থাকে। বাথানিয়াদের সর্দার ছিলো বাতাইন্না ওসমান (বাথানিয়ার স্থানীয় নাম)। তার নামেই বেশ অনেকদিন এই দ্বীপ ‘চর ওসমান’ নামে পরিচিত ছিলো। ১৯৫৯-৬০ সালে বাংলাদেশের ভূমি বিভাগের চালানো জরিপে ওসমান বাতাইন্নার আন্তরিক সহায়তার কারণে তৎকালীন ভূমি অফিসার তার নামে দ্বীপের নাম দেন ‘চর ওসমান’। তখন থেকেই এই নামে দ্বীপটি পরিচিত ছিলো। দ্বীপের উত্তরাংশের নাম চর কমলা, উত্তর-পূর্বাংশের নাম বন্দরটীলা। ৭০ এর দশক থেকে এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মানুষের বসতি গড়ে ওঠে।  ১৯৭৯ সালে এই দ্বীপের নাম পরিবর্তন করে প্রশাসনিকভাবে নিঝুম দ্বীপ রাখা হয়।

চৌধুরী খাল ও পাশের ম্যানগ্রোভ বন; source: Rafia Tamanna

জীববৈচিত্র্য

১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের বনবিভাগ এখানে উপকূলীয় বনাঞ্চল গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। ২০ বছর মেয়াদী একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রায় ২ কোটি ৪৩ লক্ষ গাছের চারা রোপণ করা হয়। এই অঞ্চলের বনভূমির গাছপালার মধ্যে আছে কেওড়া, গেওয়া, কাঁকড়া, বাইন ইত্যাদি। এছাড়াও প্রায় ২১ প্রজাতির বৃক্ষ ও ৪৩ প্রজাতির লতাগুল্ম আছে এই দ্বীপে।

দ্বীপের কোল ঘেষে গড়ে ওঠা বনাঞ্চল; source: Rafia Tamanna

চিত্রাহরিণ, বন্য কুকুর, সাপ, বনবেড়াল ইত্যাদি প্রাণী ও সারস, মাছরাঙা, সোয়ালো, বুলবুলি, হট্টিটি, চিল, আবাবিল সহ প্রায় ৩৫ প্রজাতির পাখির সমন্বয়ে এই দ্বীপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিবেচনায় অমূল্য সম্পদ। ১৯৭৮ সালে বনবিভাগ চার জোড়া চিত্রা হরিণ এনে দ্বীপে জঙ্গলে ছাড়ে। পরবর্তী কয়েক দশকে এর পরিমাণ বেড়ে বিশ হাজারের বেশি বলে জানা যায়। শীতকালে অতিথি পাখির বিচরণে এই দ্বীপ অনন্য এক রূপ ধারণ করে। সমগ্র বাংলাদেশে অতিথি পাখির যেই অপূর্ব বিচরণ দেখা যায়, তার সবচেয়ে মধ্যকার সবচেয়ে অভিন্ন, অনিন্দ্য এবং বৈচিত্র্যময় দৃশ্যের দেখা মেলে এই দ্বীপে।

শীতকালে আগত অতিথি পাখি; source: travelpeg.com

সমুদ্র বালুবেলায় সামনে সূর্যকিরণ, অসংখ্য অতিথি পাখির উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য সব মিলিয়ে এক অন্য জগত এই দ্বীপ।

পর্যটন

বাংলাদেশের অন্যান্য পর্যটন এলাকার তুলনায় নিঝুম দ্বীপ অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। নোয়াখালী জেলার মূল অংশেই জীবন যাত্রার মান উন্নত নয়। সেদিক দিয়ে নিঝুম দ্বীপ নোয়াখালীর মূল অংশ অনেকটা দূরে ভৌগোলিক অবস্থানের ক্ষেত্রে। হাতিয়াই নোয়াখালীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত নয়, সেখানে নিঝুম দ্বীপ তো হাতিয়া থেকেও আরো দূরে অবস্থিত। এহেন অবস্থা, অর্থাৎ দূরত্ব ও যাতায়াত সমস্যার কারণে এর পর্যটন এখনো অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে আছে। বেশ কষ্ট সহ্য করার এবং সময় ব্যয় করার মানসিকতা নিয়েই যেতে হবে নিঝুম দ্বীপে। সময় কম নিয়ে তাড়াহুড়া করলে এই প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপলব্ধি সম্ভব নয়।

যাতায়াত

স্থল ও জলপথ, উভয় পথেই আসা যাওয়া করা যায় এই দ্বীপে। সড়ক পথে সময় কিছুটা কম লাগে। সেক্ষেত্রে আপনি লঞ্চ ভ্রমণের অপূর্ব অভিজ্ঞতা পাবেন না।

সড়কপথে যাওয়ার উপায়

সড়কপথে গেলে বাস কিংবা ট্রেন উভয়ভাবেই যাওয়া যায়।

ট্রেন/বাস

ট্রেনে গেলে কমলাপুর স্টেশন থেকে উঠে নোয়াখালীর মাইজদিতে নামতে হবে। কিংবা বাসে করে গেলে বাস নোয়াখালীর সোনাপুর থামাবে। সোনাপুর বা মাইজদি থেকে যেতে হবে চেয়ারম্যান ঘাট। মাইজদি বা সোনাপুর  থেকে লোকাল বাস বা সিএনজি করেই যাওয়া যাবে চেয়ারম্যান ঘাট। চেয়ারম্যান ঘাট থেকে আবার যেতে হবে হাতিয়া।

স্পিডবোট, ট্রলার বা সি-ট্রাকে করেই যাওয়া যাবে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে। নলচিরা ঘাট থেকে আবার হাতিয়ার মোক্তারঘাট যেতে হবে। যাওয়া যাবে রিজার্ভ সিএনজি বা বাইক নিয়ে। হাতিয়ার মোক্তারঘাট থেকে অবশেষে লোকাল ট্রলারে উঠলে পৌঁছে যাবেন নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে। নিঝুমদ্বীপে থাকতে চাইলে রিক্সা বা বাইক নিয়ে বন্দরটিলা থেকে যেতে হবে নামার বাজার। সবমিলিয়ে, ট্রেন বা বাসের এই পথ বেশ ভেঙে ভেঙে যেতে হবে, যা বেশ বিরক্তিকরই বটে।

লঞ্চ

লঞ্চে করে গেলে সদরঘাট থেকে সরাসরি পৌঁছে যাবেন হাতিয়ার তমুরুদ্দি ঘাটে। ঢাকা থেকে প্রতিদিন হাতিয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চ একবারই ছেড়ে যায় এবং লঞ্চ একদম সঠিক সময়ে ছাড়ে। তাই এই ব্যাপারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সন্ধ্যায় ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ পরদিন সকাল ৮-৯টার মধ্যে হাতিয়ার তমুরুদ্দি ঘাটে পৌঁছায়।

হাতিয়ার তমুরুদ্দি ঘাট; source: Rafia Tamanna

হাতিয়া থেকে নিঝুম দ্বীপে যাওয়ার পথটা বেশ সময়সাধ্য। তাই হাতিয়ায় নেমে সকালের নাস্তা করে নেওয়া ভালো। হাতিয়ার তমুরুদ্দি ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার পথ আবার দুটি। দুটি পথের দু’রকম আকর্ষণ রয়েছে। কোনো পথই কম আকর্ষণীয় নয়। তাই চাইলে আসা যাওয়ার দুবার দুটো পথ ব্যবহার করতে পারেন।

প্রথম পথটি হচ্ছে তমুরুদ্দি ঘাটের পাশের বাজার থেকে রিজার্ভ সিএনজি ভাড়া করে কিংবা বাইক ভাড়া নিয়ে হাতিয়ার মোক্তার ঘাটে যাওয়া। এই পথটুকুই বেশ কষ্টকর, কেননা হাতিয়ার রাস্তাঘাট বর্ণনাতীত ভাঙ্গাচোরা। স্থানীয় লোকেদের মতে বেশ কয়েকবার সরকারী হস্তক্ষেপে বাজেট দেওয়া হলেও কোনো এক অজানা কারণে এই এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কারের উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

সিএনজিতে পাঁচজন যাওয়া যাবে, এবং সিএনজিতে যাওয়াই বেশ কষ্টকর ভাঙা রাস্তার কারণে। বাইকে দু’জন করে যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ভাঙা রাস্তার অসুবিধা কিছুটা কম বোঝা যায় এবং সিএনজির চেয়ে কম সময়ে মোক্তার ঘাটে যাওয়া যায়। মোক্তার ঘাট থেকে লোকাল ট্রলারে সরাসরি নিঝুম দ্বীপ পৌঁছে যাবেন। কিন্তু এই রাস্তার সুবিধা হলো, যেতে যেতে আপনার হাতিয়া দেখা হয়ে যাবে। কিছু জায়গায় সিএনজি বা বাইক থেকে নামতেও হয়, সেক্ষেত্রে নেমে আশেপাশে ঘুরে দেখতেও পারেন। কষ্টকর ভ্রমণ হলেও পুরো হাতিয়ার দর্শন এক অন্যরকম অনুভূতি।

হাতিয়ার পথে; source: Rafia Tamanna

দ্বিতীয় পথটি হচ্ছে লঞ্চ থেকে নামার পর হাতিয়ার তমুরুদ্দি ঘাটের পাশের বাজার থেকে ট্রলারে করে সরাসরি নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার। এজন্য সরাসরি ট্রলার রিজার্ভ করেও যাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ভাড়া বেশি পড়বে। এছাড়া বাজারে স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে ফিশিং ট্রলারে করে সরাসরি নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে যাওয়া যায়। ট্রলারে করে উন্মত্ত মেঘনার বুক চিরে কয়েক ঘণ্টার ছুটে চলা, সে যেন এক স্বর্গীয় প্রশান্তিকর অনুভূতি।

হাতিয়া-নিঝুম দ্বীপ ও নিঝুম দ্বীপ- হাতিয়া যাতায়াতকারী ট্রলারের দৃশ্য; source: Rafia Tamanna

কারো দুটি পথের ই অভিজ্ঞতা লাভের ইচ্ছা থাকলে দ্বীপে যাওয়ার পথে একটি এবং ফিরে আসার পথে আরেকটি পথ অবলম্বন করতে পারেন।

থাকা-খাওয়া

নিঝুম দ্বীপে গিয়ে হোটেলে থাকতে চাইলে বন্দরটিলা ঘাট থেকে বাইক বা রিক্সা নিয়ে যেতে হবে নামার বাজারে। নিঝুম রিসোর্ট, হোটেল শাহীন, হোটেল দ্বীপ সন্দ্বীপ থাকার জন্য ভালো। বন্দরটিলায়ই থাকতে চাইলে নিঝুম দ্বীপ ড্রিম ল্যান্ড রিসোর্ট ও হোটেল সেরাটনে থাকতে পারেন। এছাড়াও চাইলে ক্যাম্পিং করে থাকতে পারবেন।

খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও বেশ ভালোই। অন্যরকম একটি স্বাদ পাওয়া যাবে তাদের রান্নায়। সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি উল্লেখযোগ্য। বার্বিকিউ করতে চাইলে সরঞ্জাম নিজেদের নিয়ে যেতে হবে। একমাত্র নিঝুম রিসোর্টে থাকলে সেখানে বার্বিকিউ সরঞ্জাম পাবেন।

কী কী অবশ্যই করবেন?

খুব সকালে হরিণ দেখা নিঝুম দ্বীপের প্রধান আকর্ষণ। পূর্বে পর্যাপ্ত পরিমাণে হরিণ থাকায় যেকোনো সময়ে হরিণের দেখা মিলতো। স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদের শিকারে এবং বন্য কুকুরের শিকারে হরিণের দেখা মেলা এখন ভাগ্যের ব্যাপার।

বন্য কুকুরের শিকার হরিণ; source: PhotosBangladesh.com

খুব সকালে চোয়াখালী বাইকে করে যেতে হবে হরিণ দেখতে চাইলে হরিণের দেখা না মিললেও আফসোস করার খুব বেশি কিছু নেই। সকাল বেলা দ্বীপটি এমন দৃশ্য ধারণ করে যেই সৌন্দর্য দেখে যে কেউ কিছুক্ষণের জন্য অজানায় হারিয়ে যাবেন।

ভোরে বনের আশেপাশের দৃশ্য; source: Rafia Tamanna

এছাড়া যেদিন দুপুরে পৌঁছাবেন নিঝুম দ্বীপে, সেদিন সকালে ঘোরাঘুরি করতে নামাবাজার থেকে কোনো ট্রলার বা নৌকার মাঝির সাথে কথা বলে ভাড়া নিতে পারেন। তিনিই আশেপাশের  চরগুলোয় নিয়ে ঘুরিয়ে আনবেন চৌধুরী খালের মধ্য দিয়ে। খালের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে একপাশে দেখতে পাবেন অন্যরকম সবুজ ম্যানগ্রোভ বন। দেখা পেয়ে যেতে পারেন শেয়াল ও বন্য কুকুরের।

কবিরাজের চর; source: Rafia Tamanna

এই দ্বীপের সূর্যাস্ত এতই মোহনীয় যে কিছুক্ষণের জন্য আপনার মনে হবে আশেপাশের জগত স্তব্ধ হয়ে গেছে। প্রকৃতির এমন সান্নিধ্যে খেই হারিয়ে ফেলাটাও একেবারে ভিন্নরকম অনুভূতি।

পড়ন্ত বিকেল; source: Rafia Tamanna

এছাড়াও আছে নামার বাজার সি-বিচ। বিচে ভাটার সময় গেলে পানির নাগাল পাওয়া যাবে না, জোয়ারের সময় যেতে হবে। নামাবাজার থেকে অল্প কিছু মিনিট হেঁটেই পৌঁছে যাবেন সেখানে। ম্যানগ্রোভ বনের ভেতরে  ঘুরতে যাবেন দিনের বেলায়। এছাড়াও রাতের বেলা আশেপাশের পুরো এলাকা ঘুরে দেখতে পারেন হেঁটে হেঁটে। রাতের বেলায় আকাশে তারার যে মেলা বসে, এরকম অসম্ভব অসহ্যকর সৌন্দর্য দেশের খুব কম জায়গায়ই আছে।

শ্বাসমূলের বন, প্রমত্ত মেঘনার বুক চিরে যাত্রা, বনের ভেতর ভোরের মোহনীয় সৌন্দর্য, আচমকা ছুটে যাওয়া চিত্রা হরিণ, সমুদ্র বালুবেলা, গহীন রাতের খোলা প্রান্তরে তারার হাতছানি, নিঝুম এক পরিবেশে এক অনন্য প্রকৃতি অবলোকন, এসব মিলেই নিঝুম দ্বীপ। যেকোনো জায়গার চেয়ে রহস্যময়, ভ্রমণপিপাসুদের রোমাঞ্চ দেয় এটি। যেকোনো ভ্রমণপিপাসুর জন্য অবশ্য দর্শনীয় স্থান এই বিচ্ছিন্ন, রহস্যময়, রূপসী দ্বীপ।

Feature Image: tripbangla.blogpost.com

Related Articles