Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যে কারণে চীনা পর্যটকরা অস্বাভাবিক হারে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন

মানুষ মাত্রই স্বাধীনচেতা। যখন মানুষকে আবদ্ধ করে রাখার চেষ্টা করা হয়, তখন সে মুক্তি লাভের উপায় খুঁজতে থাকে। নানা নিয়ম-কানুনের জালে আবদ্ধ চীনা পর্যটকরাও যেন তেমন একটি মুক্তির উপায় খুঁজছিলেন। অবশেষে সেই মুক্তির পথ হিসেবে তারা বেছে নিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আধা-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দ্বীপকে, যা তাদের জন্য বহির্বিশ্বের দরজা হিসেবে কাজ করছে। 

সেই দ্বীপটির নাম জেজু। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জেজুকে বলা হয় দক্ষিণ কোরিয়ার ‘হলিডে প্যারাডাইস’। ভৌগলিক অবস্থান ও গঠনের কারণে দ্বীপটিকে ‘হাওয়াই অফ কোরিয়া’ও বলা হয়। দ্বীপটির আয়তন প্রায় ১,৮৪৮ বর্গ কিলোমিটার, যা কোরীয় উপদ্বীপের সর্ববৃহৎ দ্বীপ। 

স্যাটেলাইট থেকে ধারণকৃত জেজু দ্বীপের চিত্র; Image Source: wikimedia.org

বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান করে নেওয়া এই আগ্নেয়গিরিসমৃদ্ধ দ্বীপটি চীনের পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, এ বছর ইতোমধ্যে প্রায় ৩,০০,০০০ চীনা নাগরিক জেজু দ্বীপ ভ্রমণ করতে এসেছেন। এই সংখ্যাটি আপনাদের কাছে অনেক বেশি মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দিন দিন এই সংখ্যা আরও বাড়ছে। এ বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান বিবিসির সাংবাদিক ইরিন ক্রেগ বলেন,

আমি যখন জেজু দ্বীপের ‘ড্রাইভার ও যানবাহন লাইসেন্সিং সংস্থা (ডিভিএলএ)’ এ নিবন্ধনের জন্য লাইনে দাঁড়ালাম, তখন আমি আমার সামনে যাদেরকে দেখতে পেলাম, তারা প্রায় সবাই-ই চীনা নাগরিক।

জেজু দ্বীপের হুয়া সান সমুদ্র সৈকতের দৃশ্য; Image Source: 10mag.com

চীনের পর্যটকদের কাছে জেজু দ্বীপ জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমন- সৌন্দর্যে ভরপুর জেজুর বিভিন্ন সমুদ্র সৈকত, সুবিশাল পর্বতসমূহ, বিলাসবহুল শপিং সেন্টার ও বড় বড় জুয়ার আসর। কিন্তু আরও একটি কারণে জেজু দ্বীপ চীনা পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তা হলো ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির সুবিধা। 

অনেকে শুধুমাত্র জেজুর ড্রাইভিং লাইসেন্স কেন্দ্রের পরীক্ষাকে সামনে রেখে তাদের পুরো ছুটির শিডিউল ঠিক করেন। সেখানে গিয়ে তারা যথাক্রমে ফর্ম পূরণ, লাইনে দাঁড়ানো ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সারাদিন ব্যয় করেন। এদের মধ্যে যাদের ভাগ্য ভালো, তারা প্রথম চেষ্টাতেই লাইসেন্স পেয়ে যান। তারপর বাকি সময় সমুদ্র সৈকত ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করে কাটানোর সুযোগ পান।

জেজু দ্বীপের হাল্লা পর্বতের একটি দৃশ্য; Image Source: wikimedia.org

ফলে তাদের ছুটির দিনগুলো আর আগের মতো অপচয় হয় না। একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে তারা তাদের পরিকল্পনাগুলো নির্ধারণ করেন। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে দেখা যাচ্ছে, কসমেটিকস সার্জারি, প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির চিকিৎসা, প্রফেশনাল ট্রেনিং অথবা শুধুমাত্র একটি ফুটবল ম্যাচ দেখার উদ্দেশ্যেও তারা নিয়মিত দেশের বাইরে গমন করছেন। এদের গন্তব্যস্থল হিসেবে কিছু কিছু জায়গা নির্দিষ্ট সেবার জন্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। যেমন- আমেরিকার লস এঞ্জেলস, মেক্সিকোর মোলার সিটি ও যুক্তরাজ্য দাঁতের চিকিৎসা জন্য এবং ভিয়েতনামের হই অ্যান শহর সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। 

ড্রাইভিং লাইসেন্সকে কেন্দ্র করে জেজু দ্বীপের এই পর্যটন শিল্পের বিকাশ মূলত সাম্প্রতিক ঘটনা। কিন্তু খুব দ্রুতই তা প্রসারিত হচ্ছে। স্থানীয় ড্রাইভারস লাইসেন্স এক্সামিনেশন সেন্টারের পরিসংখ্যান অনুসারে, এ বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত মোট ২,১৭২ জন চীনা নাগরিক ড্রাইভিং লাইসেন্স অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। যা গড় করলে দেখা যায়, প্রতি সপ্তাহে ৬২ জন চীনা নাগরিক লাইসেন্স পাচ্ছেন। অথচ ২০১০ সালের সারা বছরে মাত্র ৬৮ জন চীনা নাগরিক লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়েছিলেন।

জেজু দ্বীপের একটি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র; Image Source: jejuweekly.com/ kim gyong ho

গুণগত মান ও কম খরচের বিবেচনায় বাস্তববাদী পর্যটকরা এমন বিকল্প পথে হাঁটছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাছাড়া চীনের বড় বড় শহরগুলোতে যেসব ড্রাইভিং স্কুল আছে সেগুলোর তুলনায় জেজু দ্বীপের ড্রাইভিং স্কুলের প্রশিক্ষণ ফি অনেক কম। অন্যদিকে চীনা ড্রাইভারদের উচ্চাভিলাষের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় ড্রাইভাররা চীন ও কোরিয়া উভয় দেশ থেকে ভালোভাবে আয় করছেন।  

চীনা ভ্রমণ বিষয়ক কোম্পানিগুলো জেজু দ্বীপে ভ্রমণের জন্য ‘সাউথ কোরিয়া’স হাওয়াই’ নামে ৫ দিন ব্যাপী একটি প্যাকেজ প্রদান করে। এই প্যাকেজটি এমনভাবে সাজানো হয় যেন পর্যটকরা ভ্রমণের পাশাপাশি জেজু দ্বীপ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স অর্জন করতে পারেন। প্যাকেজগুলোর মূল্য ৮,৮০০ ইয়ান (১,২৮০ ডলার) থেকে শুরু হয়। গুরুত্বপূর্ণ কিছু জায়গা ভ্রমণের পাশাপাশি প্যাকেজে হোটেল ভাড়া, ড্রাইভিং এর নির্দেশনা, পরিবহন ব্যবস্থাপনা ও পরীক্ষার ফি অন্তর্ভুক্ত থাকে।

তবে খাবার ও বিমান ভাড়া এর অন্তর্ভুক্ত নয়। দেখে হয়তো আপনাদের কাছে ব্যয়বহুল মনে হতে পারে. কিন্তু বেইজিংইয়ের বিলাসবহুল ড্রাইভিং স্কুলগুলোর খবর কি আপনি জানেন? সেখানে প্যাকেজ শুরু হয় ১৫,০০০ ইয়ান (২,১৮৮ ডলার) থেকে এবং প্যাকেজ প্রসেসিং করতে সময় লাগে প্রায় ১ মাস। 

জেজু দ্বীপের চেয়ে চীনের ড্রাইভিং স্কুলগুলোর প্রশিক্ষণ ফি অনেক বেশি, যা পর্যটকদের জেজু দ্বীপে আগমনের অন্যতম কারণ; Image Source: bbc.com/ Getty Images

আরও অনেক দেশের মতো চীনেও অন্য দেশের বৈধ লাইসেন্স দিয়ে ড্রাইভিং করা যায়। তবে সেজন্য মূল লাইসেন্স দেখিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতিপত্র গ্রহণ করতে হয়। ফলে যারা জেজু দ্বীপ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করেন, তাদের জন্য চীনের লাইসেন্স পাওয়া খুব সহজ ব্যাপার হয়ে যায়। চীনের স্থানীয়রা খুব সহজ একটি লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তাদের দক্ষিণ কোরীয় লাইসেন্স চীনা লাইসেন্সে রূপান্তরিত করে নিতে পারেন।

আরেকটি কারণে চীনের পর্যটকরা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করা উত্তম ও সহজ মনে করেন। তা হলো জেজুর ড্রাইভিং স্কুলগুলো যে রাস্তায় ড্রাইভিং এর ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলো গ্রহণ করে তা তুলনামূলক উন্নত ও ঝুঁকিমুক্ত। মিংকুই লিউ নামের একজন স্থানীয় ছাত্র, যিনি চীনের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন তার বন্ধুকে ড্রাইভিং শেখার ব্যাপারে সহায়তা করছেন, তিনি এককথায় বিষয়টি তুলে ধরেন এভাবে- 

চীনের ড্রাইভিং টেস্টে অংশগ্রহণ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ আর কোরিয়ান ড্রাইভিং টেস্ট খুবই সহজ।    

ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য উভয় দেশের প্রসেসিং পদ্ধতি একই। এর মধ্যে রয়েছে মেডিকেল চেক আপ, লিখিত পরীক্ষা, ক্লোজ-কোর্স ড্রাইভিং পরীক্ষা ও রাস্তায় ব্যবহারিক পরীক্ষা প্রভৃতি। দক্ষিণ কোরীয় ভার্সনের প্রসেসিং পদ্ধতিও এতকাল তেমন একটা সহজ ছিল না। জটিলতার কারণে একপর্যায়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নতুন মানবন্টনসহ তুলনামূলক শিক্ষার্থীবান্ধব একটি পরীক্ষা পদ্ধতি ঘোষণা করে দেশটি। আরিরাং নিউজের ভাষ্যমতে, 

নতুন এই পদ্ধতি চালু করার পর শুধুমাত্র পরীক্ষার ‘ক্লোজ-কোর্স ড্রাইভিং’ ধাপেই পাশের হার ৬০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।

একটি প্যাকেজ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ছক, যেখানে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি প্রক্রিয়ার সূচী তুলে ধরা হয়েছে। বাস্তবে তারা আরও কম সময়ে লাইসেন্স পেতে সাহায্য করে; Image Source: jejuweekly.com

কিন্তু চীনা ভার্সনের প্রসেসিং পদ্ধতি এখনো সনাতন ও কিছু ক্ষেত্রে খুবই জটিল। উদাহরণস্বরূপ, লিখিত পরীক্ষার কথা বলা যাক। যেখানে দক্ষিণ কোরীয় ভার্সনে মাত্র ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়, সেখানে চীনা ভার্সনে ১০০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। পাশ মার্কেও রয়েছে বৈষম্য। দক্ষিণ কোরীয় ভার্সনে যেখানে ৬০ শতাংশ মার্ক পেলেই পাশ করানো হয়, সেখানে চীনা ভার্সনে পাশ করতে হলে ৯০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। (যুক্তরাজ্যে পাশ করার জন্য ৭০ শতাংশ মার্ক পেতে হয়)। 

শিডিউল নিয়ে ঝামেলা তো আছেই। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে চীনে পরীক্ষার প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করতে প্রায় সপ্তাহখানেক সময় লাগে। যদি কোনো ধাপে কেউ ফেল করে, তবে তাকে আবার প্রথম থেকে পরীক্ষা দিতে হয়। অথচ জেজু দ্বীপে এক দুপুরের মধ্যেই পরীক্ষার কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে ফেলা সম্ভব হয়। 

ইংকিন সিউ, জেজু দ্বীপের একটি প্যাকেজ-ট্যুর প্রদানকারী কোম্পানির মালিক। প্যাকেজ তৈরির জন্য তিনি একটি স্থানীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাথে চুক্তি করেছেন। চুক্তি অনুসারে, একজন নতুন শিক্ষার্থীকে এখানে ১৩ ঘন্টা ব্যাপী নির্দেশনামূলক ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬ ঘন্টা রাস্তায় গাড়ি পরিচালনা প্রশিক্ষণ এবং ৪ ঘন্টা অনুশীলনের সময় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে সিউ বলেন, 

এই সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর প্রায় শিক্ষার্থীই লাইসেন্স পান। না পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০ জনে ১ জন হতে পারে। 

জেজু দ্বীপে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন একজন পর্যটক; Image Source: chinadaily.com.cn/ Agencies

জেজু ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা কেন্দ্রের একজন কর্মচারী বলছিলেন,

এটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে, চীন থেকে আগত পর্যটকদের সাফল্যের হার অনেক বেশি। তাদের কর্ম প্রক্রিয়াও অনেক গতিশীল। সবকিছু মিলিয়ে তাদের গড়ে ১ সপ্তাহ সময় লাগে। মাঝে মাঝে কিছু পর্যটকের আরও দুদিন বেশি সময় লাগে।

দক্ষিণ কোরিয়ার ড্রাইভিং লাইসেন্সগুলো শুধু যে দ্রুত সময়ের মধ্যে পাওয়া যায় তা নয়, এর কার্যকারিতাও অনেক বেশি। যেমন- ১৯৪০ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ধারাবাহিকভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিট (আইডিপি)’ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে গ্রাহকদের জন্য বিদেশি গাড়ি ও ড্রাইভার ভাড়া নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়। কিন্তু চীন সেই সম্মেলনে অংশগ্রহণই করেনি। ফলে আইডিপি সম্মেলনে চীনের ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু সেখানে দক্ষিণ কোরিয়া অংশগ্রহণ করে এবং তারা পর্যটকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়। 

সিউ জানান, 

আমাদের গ্রাহকদের অধিকাংশই চীনের নাগরিক এবং তারা বাইরের দেশে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও ইতালিতে বসবাসের প্রবণতা বেশি। এজন্য তারা আইডিপি লাইসেন্স নিয়ে থাকেন। এর দ্বারা তারা তাদের বসবাসরত শহরে কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই গাড়ি চালাতে পারেন। পাশাপাশি বিশ্বের আরও প্রায় ১৫০টি দেশে তারা গাড়ি চালানোর বৈধতা লাভ করেন।

চীনের একজন পর্যটক জেজু দ্বীপে এসে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদনপত্র পূরণ করছেন; Image Source: chinadaily.com.cn/ Agencies

তিনি আরো বলেন, 

এখানে ভাষাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাজ্যের কথা বলা যায়, সেখানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শুধুমাত্র ইংরেজি অথবা ওয়েলস ভাষায় পরীক্ষা দেয়া যায়। কিন্তু জেজুতে লাইসেন্সের জন্য আবেদন থেকে শুরু করে লিখিত পরীক্ষা পর্যন্ত সবকিছু চীনা ভাষাতেই দেয়া যায় এবং জেজুর পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্রের অধিকাংশ কর্মচারীও কম-বেশি চীনা ভাষা জানেন।  

জেজুর একটি ড্রাইভিং স্কুলে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন কয়েকজন চীনা নাগরিক; Image Source: chinadaily.com.cn/ Agencies

তার মানে বিষয়টি এমন নয় যে, জেজুতে ইংরেজি ভাষায় ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য লিখিত পরীক্ষা দেয়া যায় না। সেখানে ইংরেজি ভাষাতেও সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়। যখন কেউ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে চান, তখন তার সামনে অসংখ্য ভাষায় আবেদন করার সুযোগ থাকে।

এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যান্য স্থানের চেয়ে জেজু দ্বীপের বিশেষত্ব কী? আর সেটা হলো জেজু দ্বীপে আগমনের জন্য চীনা পর্যটকদের কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না। 

জেজু দ্বীপের একটি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাঠ; Image Source: chinadaily.com.cn/ Agencies

ফলে জেজু দ্বীপের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা কেন্দ্রের লাইন প্রতিনিয়ত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। সত্য বলতে, এত পর্যটক সামলাতে দ্বীপটিকে মাঝেমধ্যেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেক সময় অবৈধ লাইসেন্স নিয়েও পর্যটকদের দেশ ত্যাগের মতো ঘটনা ঘটছে, যা কর্তৃপক্ষকে মাঝে মাঝে বিব্রতও করেছে। তবুও জেজুর সমুদ্র সৈকত ও বারবিকিউ পার্টি আপনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। 

ফিচার ইমেজ- bbc.com/ Getty Images

Related Articles