ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলমান – এই তিন একেশ্বরবাদী সম্প্রদায়ের চোখেই পবিত্র এক নগরী জেরুজালেম। এর ওল্ড সিটিতে সহাবস্থান করছে ওয়েস্টার্ন ওয়াল, দি চার্চ অফ দি সেপুলচার, আর আল আকসা মসজিদ। লেখক সাইমন সেবাগ মন্টেফিওরির ভাষায়, “জেরুজালেম এক ঈশ্বরের ঘর, দুই জাতির রাজধানী, তিন ধর্মের মন্দির, আর একমাত্র শহর যা অস্তিত্বশীল ছিল দুইবার – একবার স্বর্গে আর একবার মর্ত্যে।”
ইতিহাসে জেরুজালেম নিয়ে বহু সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। প্রথম সহস্রাব্দের শুরুর দিককার রোমক-ইহুদি যুদ্ধগুলোর রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে ৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমক জেনারেল টাইটাস জেরুজালেমকে ধবংস করে দিয়েছিলেন। জেরুজালেমকে কেন্দ্র করেই সংঘটিত হয়েছিল তৃতীয় ক্রুসেড (১১৮৯-৯২), যার শেষটা হয়েছিল সুলতান সালাহ আদ-দ্বীন আইয়ুবী ও কিং রিচার্ডের চুক্তিতে, যে চুক্তিবলে পবিত্রভূমির ওপর মুসলিম রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলেও একইসাথে খ্রিস্টান তীর্থযাত্রী ও বণিকদের পবিত্রভূমিতে আগমনের অধিকার স্বীকার করে নেয়া হয়।
কিন্তু এই সবকিছুকেই ছাপিয়ে গেছে সেই ঘটনা, যা আরবদের স্মৃতিতে নাকসা নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতায় জায়নবাদীরা ১৯৪৮ সালে ইজরায়েল রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা করার সময় ৭৫০,০০০ ফিলিস্তিনিকে তাদের ভিটেমাটি থেকে তাড়িয়ে দেয়। প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলো এগিয়ে আসে ফিলিস্তিনের সমর্থনে। যুদ্ধ শেষে ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের প্রায় ৭৮ শতাংশ চলে যায় ইজরায়েলের দখলে, বাকি ২২ শতাংশ মিশর আর জর্দানের নিয়ন্ত্রণে।
১৯৬৭ সালের জুন যুদ্ধের সময়, যেটি আরবদের স্মৃতিতে নাকসা, ইজরায়েল এই বাকি অংশটুকুও সামরিক বলপ্রয়োগের জোরে দখল করে নেয়। সিরিয়ার গোলান মালভূমি আর মিশরের সিনাই উপত্যকাও এই সময় ইজরায়েলের দখলে চলে যায়। আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে এটাই ছিল আরবদের সবচে বড় সামরিক পরাজয়, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছে পুরো অঞ্চলটির ওপর।
জুন যুদ্ধের আগ পর্যন্ত ইজরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো একটা ভারসাম্য রক্ষার নীতি অনুসরণ করত।
কারণ মূলত দুটি।
এক, ইজরায়েলকে আইনী স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন হওয়ায় (১৭ মে ১৯৪৮), নবগঠিত রাষ্ট্রটি তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক ব্লকের অংশ হয়ে উঠবে, পশ্চিমের পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর এমন আশঙ্কা ছিল।
দুই, বিশ্বযুদ্ধোত্তর দুনিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায় কমিউনিজমের বিস্তার ঠেকানো, যে কাজে পশ্চিম জার্মানিকে পাশে পাওয়া প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে।
কিন্তু জুন যুদ্ধ পশ্চিমা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর ভেতরে, বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে, ইজরায়েলের প্রতি ব্যাপক সমীহ তৈরি করে। নরম্যান ফিঙ্কেলস্টেইনের ভাষায়, “ইজরায়েলের হতবিহ্বল করা সামরিক শক্তির প্রদর্শনে অভিভূত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে একটি স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসেট বলে বিবেচনা করা শুরু করল। […] মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ক্ষমতার প্রক্সি হয়ে ওঠায় ইজরায়েলে অঢেল পরিমাণে আসতে লাগল সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা।”
এই যুদ্ধেই জেরুজালেম ইজরায়েলের দখলে চলে যায়।
সেই থেকে ইজরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে জেরুজালেম একটি কেন্দ্রীয় ইস্যু হয়ে ওঠে, দুই পক্ষই জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী গণ্য করে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে দ্বন্দ্বটা তীব্রতর হয়ে ওঠে, বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু সিদ্ধান্তটিকে স্বাগত জানান, প্রত্যাখ্যান করেন মাহমুদ আব্বাস।
সম্প্রতি সেই জেরুজালেম আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এবছর রমজানের শুরুতে এই সংঘাতের সূচনা ঘটে, এপ্রিলের ১৩ তারিখে। ফিলিস্তিনিদের দাবি, দামিশক গেটের বাইরে ফি বছর রমজানের বিকেলে তারা যে জড়ো হন, ইজরায়েল পুলিশ তাদেরকে এবছর তাতে বাধা দিয়েছিল। জেরুজালেমের বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু আল-হোমুসের মতে, “আল-আকসায় নামাজ পড়া শেষে ফিলিস্তিনিরা এই এলাকাটায় ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসে। কিন্তু অকুপেশন (ইজরায়েল) ব্যাপারটা পছন্দ করে না। এটা সার্বভৌমত্বের মামলা।” পুলিশের ভাষ্য, মুসলমানরা যাতে নিরাপদে তাদের প্রার্থনালয়ে যেতে পারেন, তার অংশ হিসেবে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।
২২ এপ্রিলে, ওল্ড সিটির প্রবেশপথগুলোর একটির বাইরে উগ্র ডানপন্থী ইজরায়েলিরা একটি পদযাত্রা করে। এই পদযাত্রার আয়োজক উগ্র ডানপন্থী সংগঠন লেহাভা। পদযাত্রায় ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশ্যে ঘৃণাবাদী শ্লোগান দেয়া হয়।
পদযাত্রার ঠিক আগে, উগ্র ডানপন্থী অ্যাকটিভিস্টরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সহিংসতার আহবান জানায় এবং একে অপরকে সশস্ত্র হতে বলে। এরকম কয়েকটির মেসেজ গ্রুপের এডমিনদের মধ্যে ছিলেন ইজরায়েলের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ওজমা ইয়েহুদিতের আইনপ্রণেতা ইতামার বেন-ভির। একটি গ্রুপে এক সদস্য লেখেন, “আজ রাতে আমরা আরবদেরকে পুড়িয়ে মারতে যাচ্ছি, ইতোমধ্যেই মলোটোভ ককটেল ট্রাঙ্কে রাখা হয়েছে।”
এই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে ইজরায়েল পুলিশের সাথে প্রতিবাদী ফিলিস্তিনিদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। রাতভর জেরুজালেমের বিভিন্ন লোকেশন থেকে ইজরায়েল পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রতিবাদী ফিলিস্তিনিরা পাথর ছোঁড়ে। ইজরায়েল পুলিশ উগ্র ডানপন্থী ইজরায়েলি ও প্রতিবাদী ফিলিস্তিনি দুই পক্ষকেই ছত্রভঙ্গ করে দিতে স্কুঙ্ক ওয়াটার ব্যবহার করে।
এই সংঘাতে দুই দিকেই মানুষ আহত হয়েছে, তবে ক্ষমতার ব্যাপক অসমতার কারণে, ক্ষতির পাল্লাটা ফিলিস্তিনিদের দিকেই ভারী। প্যালেস্টাইনিয়ান রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তারা ১০৫ জন ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জনকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। অন্যদিকে ইজরায়েল পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ২০ জন অফিসার আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার, ২৩ এপ্রিলে, জেরুজালেমের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ মোহাম্মদ হুসেইন তার জুমার খুতবায় ফিলিস্তিনিদের ওপর “(ইজরায়েল) পুলিশ ও সেটেলারদের” আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তবে তিনি উপস্থিত মুসল্লিদের শান্ত থাকতে বলেছেন, যাতে তারা কোনো উসিলায়, আল-আকসার মসজিদ প্রাঙ্গনে ঢুকতে না পারে। নামাজ শেষে মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণভাবে ঘরে ফিরে গেছেন।
এখানে বলে রাখা দরকার, এই মসজিদ প্রাঙ্গনটি ২০০০ সালে ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদার – গণঅভ্যুত্থানের – প্রাণকেন্দ্র ছিল।
জেরুজালেমের এই সংঘাতের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস টুইট করেছেন,
“জেরুজালেমে সহিংসতা ছড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ঘৃণাপূর্ণ ও সহিংস শ্লোগান দেয়া উগ্রপন্থী প্রতিবাদীদের রেটোরিককে অবশ্যই দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমরা শান্ত থাকার ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিচ্ছি; আর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি, তারা যেন জেরুসালেমের সব বাসিন্দার নিরাপদে থাকা, নিরাপত্তা, ও অধিকার নিশ্চিত করেন।”
এর আগে, শুক্রবারে, জেরুজালেমস্থ ইউএস অ্যাম্বাসির টুইটেও একই ধরনের বক্তব্য প্রদান করা হয়।
এই টুইটগুলো থেকে ধারণা হতে পারে যে, ইজরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে পূর্ববর্তী ট্রাম্প প্রশাসনের যে প্রকাশ্য ইজরায়েলপন্থী অবস্থান ছিল, বাইডেন প্রশাসন তা থেকে সরে এসে একটা নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছে।
কিন্তু ফ্যাক্ট জানাচ্ছে যে, বাস্তবতা তা নয়।
গত সোমবার, ১৯ এপ্রিলে, জে স্ট্রিটের জাতীয় কনফারেন্সে সাবেক ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্সিয়াল পদপ্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স ও এলিজাবেথ ওয়ারেন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা ইঙ্গিত প্রদান করেন যে, মার্কিন কংগ্রেস ইজরায়েলকে যে-অর্থসহায়তা দেয় তারা তাতে শর্ত আরোপ করতে চান। কিন্তু কনফারেন্সে উপস্থিত জিউইশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের সিইও হেইলি সোইফেরের মতে, স্যান্ডার্স আর ওয়ারেন ডেমোক্রেটিক পার্টির সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি।
তিনি এই তথ্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যে, ২০২০ সালে যে-ডেমোক্রেটিক পার্টি প্ল্যাটফর্ম সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা নেয়া হয়েছিল, তাতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছিল ডেমোক্রেটরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইজরায়েলের মধ্যে সাক্ষরিত ১০-বছর মেয়াদী ৩৮ বিলিয়ন ডলারের মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। ২০১৬ সালে এটি চূড়ান্ত করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোইফের দাবি করেন, এটি শুধু তার সংগঠনের অবস্থানই নয়, বর্তমান বাইডেন-নেতৃত্বাধীন হোয়াইট হাউজেরও অবস্থান।
তিনি যুক্ত করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইজরায়েলের মধ্যকার লৌহদৃঢ় সম্পর্কের পক্ষে সিনেট হাউজ মেজরিটি চাক শুমের এবং হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিও সমর্থন প্রদান করেছেন, সোইফেরের মতে যা মার্কিন-ইজরায়েল সম্পর্কের ব্যাপারে ডেমোক্রেটদের দৃষ্টিভঙ্গিরই বহিঃপ্রকাশ।
২২ এপ্রিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর ৭৫ শতাংশ সদস্য ইজরায়েলকে দেয়া মার্কিন অর্থসহায়তায় শর্ত আরোপ করার বিরুদ্ধে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে ইজরায়েলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইপার্টিজান সমর্থনের বাস্তবতাই প্রতিফলিত হয়েছে।
এদিকে জেরুজালেমের সংঘাত অন্যান্য এলাকায়ও ছড়িয়ে গেছে।
জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের নিকটবর্তী সামরিক চেকপয়েন্টগুলোতে ইজরায়েলি সৈনিকদের সাথে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়েছে। গাজায় সারা রাত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগ্রামপন্থীরা ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে ৩৬টি রকেট নিঃক্ষেপ করেছে। হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের আহবান জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দেয়ার পর ঘটল এই ঘটনা।
এই রকেট হামলায় হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি। কয়েকটি রকেট ইজরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করার আগেই বিস্ফোরিত হয়ে গেছে, আর অন্যগুলোকে ইন্টারসেপ্ট করেছে ইজরায়েলের এয়ার ডিফেন্স। এপির সংবাদ অনুসারে, ফিলিস্তিনের বামপন্থী রাজনৈতিক দল পপুলার ফ্রন্ট ফর দা লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) সাথে সম্পৃক্ত একটি ছোট সশস্ত্র গোষ্ঠী জানিয়েছে কয়েকটি রকেট তাদের নিঃক্ষেপ করা।
টাইমস অফ ইজরায়েলের ভাষ্যমতে, ইজরায়েল সেনাবাহিনী এই রকেট হামলার প্রতিক্রিয়ায় ২৪ এপ্রিল সকালে গাজায় হামাসের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এই হামলাগুলোতেও কোন হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে এর লক্ষ্যবস্তুগুলোর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
ইজরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যের সকল দ্বন্দ্বসংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু। লেবাননের গৃহযুদ্ধের পেছনে এই ইস্যুর ভূমিকা ছিল, বিশ শতকের অন্যতম বৃহৎ শরণার্থী সংকটের পেছনেও ভূমিকা রেখেছে এই দ্বন্দ্ব। আপাতদৃষ্টিতে এই সংকটের কোন সহজ সমাধান নেই।
ইজরায়েল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমর্থন লাভ করে। ফিলিস্তিনিদের অবিচল লড়াইসংগ্রামের কারণে তাদের প্রতি সারা দুনিয়ার মানুষের একপ্রকার সাধারণ সহমর্মিতার বোধ থাকলেও, তা রাজনৈতিক সমর্থনে খুব সামান্যই অনুদিত হয়েছে। এককালে প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক এজেন্ডার অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল ফিলিস্তিন, একুশ শতকে এসে আর সেই বাস্তবতা নেই।
এই পরিস্থিতিতে জেরুজালেমে যে-সংঘাত দেখা দিল, তা ইজরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে একটা নতুন মোড় নিয়ে আসবে কিনা, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারে।