Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আফ্রিকাতে রাশিয়ান ওয়াগনার গ্রুপ: সম্পদ, সংঘাত আর যুদ্ধ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পৃথিবী দ্বিমেরুতে বিভক্ত হয়েছিল, পরাশক্তি হওয়ার লড়াইয়ে মেতে ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন। স্নায়ুযুদ্ধের লড়াই সরাসরি যুদ্ধের মাধ্যমে হয়নি, হয়েছে প্রক্সি যুদ্ধ আর গোয়েন্দাদের জগতে লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে। স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে পৃথিবীর সব প্রান্তেই ছড়িয়েছিল এই উত্তাপ, পরাশক্তির লড়াইয়ে সব দেশই যুক্ত ছিল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে। আফ্রিকাও এমনই এক যুদ্ধক্ষেত্র ছিল পরাশক্তিগুলোর। স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির পর রাশিয়া আফ্রিকা থেকে নিজেদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির প্রাধান্যেও ছিল না আফ্রিকা মহাদেশ। গণতন্ত্রায়ন আর মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই আফ্রিকাতে কার্যক্রম পরিচালনা করতো যুক্তরাষ্ট্র, সামরিক বাহিনী আফ্রিকান কমান্ডও যুক্ত ছিল সেসব কার্যক্রমের সাথে।

আফ্রিকাতে ওয়াগনার গ্রুপ; Image Source: ISS Africa

সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে আফ্রিকার কৌশলগত গুরুত্ব, বেড়েছে আফ্রিকাতে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতাও। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির প্রাধান্যে ফিরে এসেছে আফ্রিকা, রাশিয়াও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজের প্রভাব বিস্তারের অংশ হিসেবে আফ্রিকাতে নিজের কার্যক্রম বাড়াচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার মধ্যে এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই যুক্ত হয়েছে চীন, ফ্রান্স, তুরস্ক আর ভারতের মতো দেশ, যারা স্নায়ুযুদ্ধের পরে আফ্রিকাতে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার অনুপস্থিতি পূরণের চেষ্টা করেছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ওয়াগনার গ্রুপ

ওয়াগনার গ্রুপ তৈরি হয়েছে ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের হাত ধরে, যিনি ক্রেমলিনে ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ওয়াগনার গ্রুপের সদস্য হিসেবে যুক্ত আছে সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার সৈনিকেরা, জেলফেরত অপরাধী আর স্থানীয় গ্যাংগুলোতে কাজ করা লোকেরা। ওয়াগনার গ্রুপ ইতোমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সংঘাতে ভাড়াটে বাহিনী হিসেবে যুদ্ধ করছে, মার্সেনারি এই বাহিনীটি বিভিন্ন জায়গাতে বদলে দিচ্ছে সংঘাতের গতিপ্রকৃতি। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার আল আসাদের পক্ষে যুদ্ধ করেছে ওয়াগনার গ্রুপ, ২০১৫ সাল থেকেই সিরিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার প্রতিহত করতে কাজ করছে এই মার্সেনারি গ্রুপ। সিরিয়াতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে গ্রুপটির বিরুদ্ধে, অভিযোগ আছে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার।

সিরিয়াতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে গ্রুপটির বিরুদ্ধে; Image Source: centra;-asia.news.com

ওয়াগনার গ্রুপ সর্বোচ্চ গোপনীয়তার সাথে কাজ করে, কাজ করে রাশিয়ার অফিসিয়াল সমর্থন ছাড়াই। কিন্তু, এটি কাজ করে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষা করতেই, রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্যগুলো অর্জনকে সহজ করতেই। ওয়াগনার গ্রুপকে তাই দেখা হয় ক্রেমলিনের একটি প্রজেক্ট হিসেবেই। মানবাধিকার লঙ্ঘন আর বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার অভিযোগে ইতোমধ্যেই পাশ্চাত্যের অনেকগুলো দেশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াগনার গ্রুপের উপর, নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির উপরও।

আফ্রিকাতে রাশিয়ার হয়ে ওয়াগনার গ্রুপ

সাম্প্রতিক সময়ে আফ্রিকাতে ওয়াগনার গ্রুপের উপস্থিতি আলোচনায় এসেছে সুদান সংঘাতের মাধ্যমে, সেখানে সরাসরি লড়াইয়ে না থাকলেও সংঘাতের ঘটনাপ্রবাহে জড়িয়ে যায় ওয়াগনার গ্রুপ। সংঘাতে জেনারেল দাগালোর নেতৃত্বাধীন র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফকে অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে ওয়াগনার গ্রুপের বিরুদ্ধে, ভাড়াটে বাহিনীটি সংঘাত ব্যবহার করে রাশিয়ার রাজনৈতিক স্বার্থ অর্জনের পথকে সহজ করছে। ভূমধ্যসাগরে কেবল একটিই নৌঘাঁটি রয়েছে রাশিয়ার, যেটি পুতিন আদায় করেছেন সিরিয়ানদের কাছ থেকে। কিন্তু, এ অঞ্চলে রাশিয়ার উপস্থিতি আর স্বার্থ ধরে রাখতে হলে, এমন আরো নৌঘাঁটি প্রয়োজন রাশিয়ার। ওমর আল-বশির রেড সির তীরে রাশিয়াতে একটি নৌঘাঁটি করার অনুমতি দিয়েছিলেন, যেটি বাস্তবায়নে এখন সুদানে রাশিয়ার পছন্দের সরকার প্রয়োজন। আবার, সুদানের স্বর্ণ আর তেলের খনিগুলোতেও ওয়াগনার গ্রুপের মাধ্যমে প্রবেশ করছে রাশিয়া। এর আগে, ওমর আল-বশিরের পক্ষেও কাজ করেছে ওয়াগনার, ২০১৯ সালে বশিরের বিরুদ্ধে হওয়া জনআন্দোলন থামাতে অর্ধসহস্র যোদ্ধাকে নিয়োজিত করেছিল ওয়াগনার গ্রুপ।

সুদানে ওয়াগনার গ্রুপ; Image Source: DW.

ওয়াগনার গ্রুপটি জড়িয়েছে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধেও, যুদ্ধক্ষেত্রে এসে যুদ্ধ করছে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির পক্ষে। ওয়াগনার গ্রুপ লিবিয়াতে জেনারেল হাফতারকে টিকিয়ে রাখছে লড়ছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সুযোগ করে দিচ্ছে লিবিয়াতে রাশিয়ান পররাষ্ট্রনীতির বাস্তবায়নের। যোদ্ধা সরবরাহের পাশাপাশি জেনারেল হাফতারের বাহিনীকে অস্ত্র, পরামর্শ আর প্রশিক্ষণও সরবারহ করছে ওয়াগনার গ্রুপ। লিবিয়ার ভৌগলিক অবস্থান ভূমধ্যসাগরের পাশে, লিবিয়ার ভৌগলিক অবস্থানকে ব্যবহার করে পুতিন চাচ্ছেন ন্যাটোর স্ট্যান্ডিং ন্যাভাল ফোর্স মেডিয়াটেরান আর যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ষষ্ঠ ফ্লিটকে মোকাবেলা করতে। পুতিন যখন ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়েছেন, তখনও যুদ্ধক্ষেত্রে এসেছে ওয়াগনার গ্রুপের বিপুলসংখ্যক যোদ্ধা, ডনবাস অঞ্চলে তারা ভূমিকা রাখছে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে।   

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শক্ত উপস্থিতি রয়েছে ওয়াগনার গ্রুপের, সুদানে ওয়াগনার গ্রুপ অস্ত্রের সরবারহও দিচ্ছে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে থাকা মজুত থেকেই। ভঙ্গুর সরকারব্যবস্থা আর বিশৃঙ্খলার দেশে ২০১৮ সালে আনা হয় ওয়াগনার গ্রুপকে, উদ্দেশ্য ছিল নিরাপত্তা প্রদান আর সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান। দ্রুতই মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের ক্ষমতাবলয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে ওয়াগনার গ্রুপ, ক্ষমতাসীন সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ওয়াগনার গ্রুপ শুরু করে বিরোধীদের উপর নিপীড়ন। পরবর্তীতে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম আর খুনের সাথে সম্পর্ক পাওয়া যায় গ্রুপটির। ওয়াগনার গ্রুপ সেখানে সাংবাদিক, শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য আর সংখ্যালঘুদেরও লক্ষ্যে পরিণত করেছে। রাজধানীর বাইরে নিয়ন্ত্রণ নেই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের, সেই জনভিত্তি। একইসাথে ওয়াগনার গ্রুপ দেশটির স্বর্ণ আর ডায়মন্ডের খনিতে প্রবেশাধিকার পায়, শুরু হয় তাদের নিজস্ব মাইনিং। এভাবেই মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছে ওয়াগনার গ্রুপ।

২০২০ সালে আফ্রিকার আরেকটি দেশে প্রবেশাধিকার পায় ওয়াগনার গ্রুপ। ২০১২ সাল থেকেই মালিতে সংঘাত চলছে, দুর্বল আর অজনপ্রিয় সরকারব্যবস্থায় উত্থান ঘটেছে বিভিন্ন ইসলামি মিলিট্যান্ট গ্রুপ। এরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অপারেট করে, এদের দাবির মধ্যে আছে প্রাকৃতিক সম্পদের হিস্যা আর স্বায়ত্তশাসনের মতো ইস্যুগুলো। ২০২০ সালের আগস্টে যখন নতুন সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন ইসলামিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূলের জন্য ১০০০ সদস্যের এক ওয়াগনার গ্রুপের বাহিনী পাঠানোর অনুরোধ করে রাশিয়ার কাছে। বিনিময়ে মালির সোনা, ডায়মন্ড আর ইউরেনিয়ামের খনির দরজা খুলে যায় রাশিয়ার জন্য।

ওয়াগনার গ্রুপের উপস্থিতি বদলেছে মালিতে সংঘাতের গতিপ্রকৃতি; Image Source: Modern War Institute.

মালির উত্তরাঞ্চলের সোনার খনিতে নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্বও দেওয়া হয় ওয়াগনার গ্রুপকে, শুরু হয় মালিতে ওয়াগনার গ্রুপের কার্যক্রম। পরবর্তীতে অবশ্য ওয়াগনার গ্রুপ আর মালির সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকেনি। মালিতে ওয়াগনার গ্রুপ আইনের বাইরে কাজ করছে, কাজ করছে মালির সরকারের নির্দেশনার বাইরেও। বিভিন্ন সময়ে মালিতে গ্রুপটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে, মালিতে ২০১২ সাল থেকে চলা সংঘাতের সমাধানকে জটিল করেছে। ২০২০ সালে গ্রুপটি মালিতে নিজেদের কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলার কথা বললেও, এই দাবির স্বপক্ষে তারা প্রমাণ দেয়নি।

২০১৯ সালের বসন্তে ওয়াগনার গ্রুপ প্রবেশ করে আফ্রিকার আরেক দেশ মোজাম্বিকে। ২০১৭ সালে মোজাম্বিকে শুরু হয় আল-সাদাবের বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম, দেশের উত্তর প্রান্তে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের সহিংস ঘটনা। আল-সাদাবের কার্যক্রম থামাতে ব্যর্থ হয়ে মোজাম্বিকের সরকার নিয়ে আসে ওয়াগনার গ্রুপকে, ওয়াগনার গ্রুপকে দায়িত্ব দেওয়া হয় মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও। যদিও, মোজাম্বিকে ওয়াগনার গ্রুপ খুব একটা সফল হয়নি। স্থানীয় সংঘাতের গতিপ্রকৃতি অনুধাবনে ব্যর্থ হয় ওয়াগনার গ্রুপ, স্থানীয় সামরিক বাহিনীও ওয়াগনার গ্রুপের উপস্থিতিতে ইতিবাচকভাবে নেয়নি।

কেন আফ্রিকাতে ওয়াগনার গ্রুপ

স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির পরে তুলনামূলকভাবে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে আফ্রিকা, সরে যায় আন্তর্জাতিক রাজনীতির মনোযোগের কেন্দ্র থেকে। বর্তমানে রাশিয়া তার রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক স্বার্থ অর্জন করতে চাইছে ওয়াগনার গ্রুপের মাধ্যমে।

Image Source: BBC

প্রথমত, আফ্রিকার ভৌগলিক অবস্থান ইউরোপ, এশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে। এই কৌশলগত অবস্থান থেকে সংযুক্ত অঞ্চলগুলোতে সামরিক, অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব।

দ্বিতীয়ত, আফ্রিকাতে প্রাকৃতিক সম্পদের উপস্থিতি রয়েছে, প্রাকৃতিক সম্পদই আফ্রিকাকে একজন সুন্দরী নারীতে পরিণত করেছে, যার জন্য অনেক পুরুষ ঘোরাঘুরি করছে। তেল, গ্যাস, ডায়মন্ড, ইউরেনিয়াম আর সোনার খনি রয়েছে আফ্রিকাতে, রয়েছে বিশাল আবাদী জমি। এসব উপাদান শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয়।

তৃতীয়ত, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া আর মালির মতো আফ্রিকার দেশগুলো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য হটস্পট, আফ্রিকা থেকেই এখন অনেকগুলো সন্ত্রাসী সংগঠন অপারেট করে। এসব সন্ত্রাসী সংগঠন রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে বিভিন্ন সময়ে ভূমিকা নেয়। 

চতুর্থত, ভূরাজনৈতিক কারণেও আফ্রিকা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আফ্রিকাতে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার মধ্যে প্রাধান্য বিস্তারের যে প্রতিযোগিতা চলছে, সেটির ফলাফল আফ্রিকার দেশগুলোর সাথে মিত্রতা তৈরি এবং সম্পদের প্রবাহ নির্ধারণ করবে।

আফ্রিকাতে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার প্রতিযোগিতা

আফ্রিকাতে প্রাধান্য বিস্তারের জন্য রাশিয়া প্রধানত দুটি অস্ত্র ব্যবহার করছে। প্রথমত, ওয়াগনার গ্রুপ, যে ভাড়াটে বাহিনীর মাধ্যমে রাশিয়া বিভিন্ন দেশে শারীরিক উপস্থিতির সুযোগ পাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেট রিসার্চ এজেন্সি, যার মাধ্যমে রাশিয়া বিভিন্ন ধরনের ট্রল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দেয়। আফ্রিকাতে যুক্তরাষ্ট্রের পলিসিকে মোকাবেলা করতে চাচ্ছেন পুতিন, চাচ্ছেন রাশিয়ার অস্ত্রের উপর আফ্রিকার দেশগুলোর নির্ভরশীলতা তৈরি করতে। আবার, দুর্বল আর অস্থিতিশীল সরকারব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আফ্রিকার প্রাকৃতিক সম্পদের উপর রাশিয়ার কর্তৃত্বমূলক নিয়ন্ত্রণও চান পুতিন। ওয়াগনার গ্রুপকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণকে দুর্বল করছে রাশিয়া, আর ইন্টারনেট রিসার্চ এজেন্সি নামক ট্রল ফার্মকে ব্যবহার করে ফ্রান্সকে আফ্রিকাতে অপ্রাসঙ্গিক এক নিপীড়কের ছবিতে চিত্রায়িত করছে রাশিয়া।

Image Source: ABC News

আফ্রিকাতে যুক্তরাষ্ট্রের বহুবিধ চ্যালেঞ্জ আছে। পরাশক্তি হিসেবে টিকে থাকতে হলে আফ্রিকার দেশগুলোতে নিজের প্রভাব ধরে রাখতে হবে, রাশিয়াকে মোকাবেলা করে আফ্রিকার দেশগুলোতে উপস্থিতি বাড়াতে হবে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সাফল্য পায়নি। আফ্রিকাতে ওয়াগনার গ্রুপের প্রভাব আটকাতে কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যেটি কার্যকারিতা একেবারে সীমাবদ্ধই থেকেছে। আফ্রিকাতে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রাসঙ্গিক থাকতে হলে বিকল্প হাজির করতে হবে, নিজেকে আবির্ভূত করতে হবে এক বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে।

This article is written in Bangla about the activities of Wagner group in the Africa.
References: Hyperlinked inside
Feature inside: Daily Sabah

Related Articles