পৃথিবীর জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গবেষকদের অনুমান, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ১ হাজার কোটিতে উন্নীত হবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়তে থাকবে মানুষের খাদ্যের চাহিদা। কিন্তু বাসস্থানের জন্য নতুন নতুন ফসলি ভূমি দখল হয়ে যাওয়ায় কমতে থাকবে কৃষি উপযোগী জমির পরিমাণ।
এমন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবো? উত্তর একটাই- বেশি বেশি খাদ্য পণ্য উৎপাদন করতে হবে। অর্থাৎ, আমাদের রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে হবে। যদিও কৃষি ক্ষেত্রই খাদ্য উৎপাদনের একমাত্র মাধ্যম নয়, কিন্তু অন্যতম প্রধান মাধ্যম নিঃসন্দেহে।
এই চ্যালেঞ্জটি অতিক্রম করা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। কেননা আমাদের হাতে সময় আছে আর মাত্র ৩০টি মৌসুম। এর মধ্যেই বিশ্বের জনসংখ্যা ১ হাজার কোটির মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবে। তার মানে আমাদের এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যার ফলে অতি অল্প সময়ে আমরা ফসল উৎপাদনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারি। আর সেই ‘পদক্ষেপসমূহ’ জানার নেশায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি ওয়ার্ড নিউজ টিভি’র ধারাবাহিক অনুষ্ঠান ‘ফলো দ্য ফুড’ এর উপস্থাপক গ্রেগ ফট।
এ সময় তিনি দীর্ঘ ছয় মাস যাবত বিভিন্ন কৃষক, কৃষিবিদ, বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষি সংশ্লিষ্ট এনজিও ও প্রতিষ্ঠানের সাথে কৃষি বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন। তাদের থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে তিনি আসন্ন নজিরবিহীন খাদ্য সংকট মোকাবেলায় পাঁচটি করণীয় পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন। যা অনুসরণ করলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমরা আসন্ন ১ হাজার কোটি মানুষের খাদ্যসংস্থান নিশ্চিত করতে পারবো বলে তার বিশ্বাস।
সেসব পদক্ষেপ আমাদের সমগ্র কৃষি-ধারণাকে বদলে দিতে পারে। শুধুমাত্র কৃষিখাত নয়- এগুলো আমাদের পুরো খাদ্য চক্রকেই পরিবর্তন করে দিতে পারে! এর ফলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা যেতে পারে; কিন্তু আমাদের হাতে বিকল্প উপায় খুব কম। যদিও এই প্রক্রিয়ার কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, অর্থাৎ আমাদের খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া ও কৃষিখাত একটি পরিবর্তনশীল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চলুন এবার গ্রেগ ফটের দেয়া সেই পাঁচটি পদক্ষেপের কথা জেনে নেয়া যাক।
রোবটিক কৃষক তৈরি
আধুনিক প্রযুক্তির ক্রমাগত উৎকর্ষের ফলে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে আমাদের পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয়। কল-কারখানার অনেক কাজ এখন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বা রোবটের সাহায্যে সম্পাদিত হয়ে থাকে। এর ফলে শ্রমিকরা সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কারখানার উৎপাদন আগের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনুরূপভাবে ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে কৃষিখাতে ‘রোবটিক কৃষক’ নিযুক্ত করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
উন্নত বিশ্বের কৃষকরা নিজেরাই এই দাবি তুলছেন। তারা বলছেন, এতদিন ‘রোবটিক কৃষকের আগমন’ তাদের চাকরিহারা করে ফেলবে বলে যে ভয় তাদের দেখানো হতো, এখন তারা সেসব কথা আর শুনতে চান না। অনেক কৃষক বলেছেন,
জমি চাষের জন্য ট্র্যাক্টরের পেছনে আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়। এর মানে এই নয় যে, ট্র্যাক্টর চালানো আমাদের জন্য বিরক্তিকর বা অনুপযোগী কাজ; কিন্তু এটি আমাদের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে ফেলে। এই সময় যদি আমরা কৃষি পণ্য সংশ্লিষ্ট অন্য কাজে ব্যবহার করি, তাহলে আমাদের ব্যবসা দ্রুত বিস্তৃতি ও প্রসার লাভ করবে।
কৃষি যন্ত্র ও রোবট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘দ্য স্মল রোবট কোম্পানি’ ইতিমধ্যেই তিনটি আধুনিক কৃষক রোবট উদ্ভাবন করেছে। রোবটগুলোর নাম যথাক্রমে- টম, ডিক ও হ্যারি।
টম জিওট্যাগ পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট ভূমির ছবি বা ভিডিও ধারণ করে তা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে গবেষণার মাধ্যমে জানতে পারে, উক্ত জমিতে কতটুকু পানি, বীজ, সার ও অন্যান্য জিনিসপত্র দরকার। টম তার গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যাবলি অনুসারে দ্বিতীয় রোবট ডিককে নির্দেশনা প্রদান করে।
ডিক সে অনুসারে জমিতে সেচ প্রদান, আগাছা দমন ও ফসলের জন্য অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকর দ্রব্যাদি মাটি থেকে অপসারণ করে। ডিক জমি পুরোপুরি প্রস্তুত করলে তৃতীয় রোবট হ্যারির কাজ শুরু হয়।
প্রস্তুতকৃত জমিতে হ্যারি প্রথমে বীজ রোপণ করে। এরপর সেই ফসল বৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করে। এভাবে পুরো রোবটিক পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে নির্দিষ্ট জমিতে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায়।
রোবট মানুষের তুলনায় অনেক বেশি পরিশ্রম করতে পারে এবং মানুষের তুলনায় তার ফসল নষ্ট করার হারও অনেক কম। অর্থাৎ কৃষিখাত যদি রোবটদের দখলে চলে যায়, তাহলে বিশ্বের ফসল উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রচলিত প্রযুক্তির পরিবর্তন
এটি খুব সাধারণ একটি বিষয়- আমাদের ক্রমশ উন্নত প্রযুক্তির দিকে ধাবিত হতে হবে। যেমন গবেষকগণ প্রচলিত ট্র্যাক্টরের পরিবর্তে অত্যাধুনিক কিন্তু আয়তনে ছোট একটি রোবট ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। এই রোবটটি খুব সহজে বহন করা যায়, যা ভূমিতে ট্র্যাক্টরের তুলনায় অধিক কার্যক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে।
প্রচলিত ট্র্যাক্টর দিয়ে জমি চাষের সময় কিছু কিছু জায়গা বাদ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আবার কিছু কিছু জায়গায় একাধিকবার শ্রম প্রয়োগের সম্ভাবনা থাকে; যা সময় ও জ্বালানি উভয়ের অপচয় করে।
কিন্তু সর্বাধুনিক এই রোবটটি সকল জমিতে সমানভাবে, কোনোপ্রকার পুনরাবৃত্তি ছাড়াই চাষ দিতে পারে। এছাড়া এটি মাটিকে অধিক মিহি করতে পারে। যার ফলে মাটিতে অধিক পানি ও বাতাস প্রবেশ করতে পারে এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করতে পারে।
এই ধরনের প্রযুক্তি আমাদের একই সাথে দুটি সুবিধা প্রদান করবে। প্রথমত, এটি অধিক ফসলের নিশ্চয়তা দিচ্ছে; দ্বিতীয়ত, এটি সংরক্ষণের জন্য কম জায়গার প্রয়োজন হচ্ছে। আর হ্যাঁ, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, আগামী দিনে কিন্তু আমাদের আবাদি ভূমির পরিমাণ অনেক কমে যাবে, তখন প্রতি ফুট জমি অত্যন্ত মূল্যবান হয়ে উঠবে। অর্থাৎ মূল কথা হলো আমাদের পুরাতন প্রযুক্তিকে পেছনে ফেলে ক্রমশ আধুনিক প্রযুক্তির দিকে ধাবিত হতে হবে।
খাদ্যশস্যের অপচয় রোধ
এটি একটি দুঃখজনক ব্যাপার যে, যখন আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্যশস্যের তীব্র অভাব দেখা দিচ্ছে, তখন কতিপয় উন্নত অঞ্চলে নিয়মিত খাদ্যশস্য অপচয় বা নষ্ট হচ্ছে। জাতিসংঘ এমন পরিস্থিতির একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়ে বলেছে-
বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ খাদ্যশস্য ভোক্তা কিংবা খুচরা বিক্রেতাদের হাতে পৌঁছার আগেই নষ্ট কিংবা অপচয় হয়ে যাচ্ছে। কৃষিখাতের সামগ্রিক অ-ব্যবস্থাপনা ও দুর্বল পরিবহণ ব্যবস্থার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাদ্যশস্য নষ্ট হচ্ছে নেদারল্যান্ডসে। ইউরোপের এই দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী দেশ। প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ডাচ সরকার ইতোমধ্যেই একটি সুপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পরিকল্পনানুসারে দেশটি তাদের উৎপাদিত অতিরিক্ত কৃষিজাত দ্রব্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত অন্য দেশসমূহের মধ্যে বণ্টন করে দেবে। ২০৩০ সালের মধ্যে তারা এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে বলে অঙ্গীকার করেছে।
নেদারল্যান্ডসের এই উদ্যোগ সবার কাছে হয়েছে প্রশংসিত। তবে শুধুমাত্র একটি দেশের উত্তম পরিকল্পনার মাধ্যমে এই সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হবে না। এজন্য ব্রিটিশ সাংবাদিক গ্রেগ ফট “ঠু গুড টু গো” এর মতো কৃষি পণ্যের জন্য একটি অ্যাপস সেবা চালুর পরামর্শ দিয়েছেন। উল্লিখিত অ্যাপটি সুস্বাদু খাদ্য সরবরাহের পাশাপাশি, খাদ্য অপচয় রোধে জনসচেতনতা তৈরির জন্য কাজ করছে। সর্বোপরি খাদ্যশস্য অপচয় রোধে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে।
ফসল পাকানো নিয়ে বিকল্প চিন্তা
আমরা হয়তো ঘড়ির কাঁটা অতীতের দিকে নিয়ে যেতে পারবো না, তবে অতীতের কিছু ভালো দিক নিশ্চয়ই আমরা কাজে লাগাতে পারবো। কলার কথাই ধরা যাক। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে কলা আসে ইকুয়েডোর, ডোমিনিকান রিপাবলিক, কোস্টারিকা প্রভৃতি অঞ্চল থেকে। এসব দেশ থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে নৌপথের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে কলা পৌঁছাতে সময় লাগে যায় প্রায় ৪০ দিন। এরপর আবার সেই কলা খুচরা বাজারে আসতে আরও কিছু দিন লেগে যায়।
খেয়াল করুন, ৪০-৪৫ দিন আগে যখন কলাগুলো তোলা হয়, তখন এর গায়ের রঙ থাকে সবুজ। কিন্তু যখন ভোক্তাদের সামনে এগুলো পরিবেশন করা হয়, তখন এর রঙ হয়ে যায় মসৃণ ও চকচকে হলুদ। কলার গায়ে একটি কালো কিংবা ধূসর দাগ অবধি খুঁজে পাওয়া যায় না। এ বিষয়টি কি কিছুটা অবিশ্বাস্য নয়?
হ্যাঁ, এখানে দুটি বিষয় ভাবনার। প্রথমত, কলাগুলো যখন সরবরাহ করা হয় তখন সেগুলোর উপযুক্ত বয়স হয় না, এর ফলে ভোক্তারা কলার যথার্থ পুষ্টিগুণ ও স্বাদ থেকে বঞ্চিত হন। কলাগুলো সবুজ অবস্থায় সরবরাহের কারণ হচ্ছে- কলার গায়ের রঙ হলুদ হতে শুরু করলে তার দেহ থেকে ইথিলিন গ্যাস নির্গত হয়, এই ইথিলিন গ্যাস যখন অন্য কলাকে স্পর্শ করে তখন সেগুলোও দ্রুত পেকে যায়। যদি উপযুক্ত বয়সের কলা কিংবা পাকা কলা নৌযানে তোলা হয়, তবে তা ইংল্যান্ডে পৌঁছানোর বহু আগেই তা পেকে নষ্ট হয়ে যাবে।
অন্যদিকে কলাগুলো যখন একসাথে পাকানোর দরকার পড়ে তখন তাতে অতিরিক্ত ইথিলিন গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে কলাগুলো মসৃণ ও চকচকে হলুদও হয়ে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই পদ্ধতি কলা পাকালে মাত্র ১৫ শতাংশ কলার গায়ে কালো দাগ লাগে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় কলা পাকালে তা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সবচেয়ে উত্তম পদক্ষেপ হতে পারে নিজস্ব অঞ্চলে কলা উৎপাদন করে, উপযুক্ত বয়সে প্রাকৃতিক উপায়ে পাকলে তা ভক্ষণ করা। যদিও উন্মুক্ত বাজার বাস্তবতায় তা অনেকটাই কঠিন।
এদিকে আমাদের দেশের অবস্থা ইউরোপের তুলনায় অত্যন্ত ভয়ানক। আমাদের দেশে সরাসরি ক্যালসিয়াম কার্বাইড জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করে কলা পাকানো হয়, যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত বিপদজ্জনক। যদিও সেই দিকে আজকে আমরা যেতে চাই না।
ফলে এখানে আমরা যে সমস্যাটি পেলাম তা হলো, যথা সময়ে গাছ থেকে কলা সরবরাহ না করা; এর কারণ পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য নরওয়ে ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন বিজ্ঞানী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা কলার জেনম এডিট করার চেষ্টা করছেন- বিশেষত কলার ডিএনএ-এর নির্দিষ্ট কিছু লেটার পরিবর্তনের মাধ্যমে পাকা কলায় ইথিলিন উৎপাদনের পরিমাণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।
এই গবেষণা সফল হলে উপযুক্ত বয়সে কলা সরবরাহ ও বিতরণ সম্ভব হবে। এতে কলায় অপচয় কমে আসবে। এছাড়া বিশ্বের যে প্রান্তেই কলা উৎপাদন হোক না কেন, তা যে অঞ্চলে চাহিদা সৃষ্টি হবে সে অঞ্চলে সরবরাহ করা যাবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহে জেনোম এডিট করা ফসল সহজে অনুমোদন দেয়া হয় না, এটি একটি ভাবনার বিষয় বটে। কিন্তু প্রয়োজন-সাপেক্ষে এভাবে বিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারলে আসন্ন খাদ্য সঙ্কট অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে বলে সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস।
উত্তম সিদ্ধান্ত গ্রহণ
পরিশেষে খাদ্য উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে যোগাযোগের একটি চক্রাকার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। কৃষক, খাদ্য উৎপাদনকারী, খুচরা বিক্রেতা ও ভোক্তাদের মাঝে পারস্পারিক বোঝাপড়া থাকতে হবে। এর ফলে অপ্রয়োজনীয় খাদ্য যেমন উৎপাদন হবে না, তেমনি এর অপচয়ও রোধ করা সম্ভব হবে।
একই ভাবে কৃষিখাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে একটি চক্রাকার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এর সাথে জড়িত কৃষক, বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার, খুচরা বিক্রেতা, ব্যবসায়িক নেতা ও সরকারের মাঝে বোঝাপড়া থাকতে হবে। এর ফলে কৃষিখাতের অগ্রগতির জন্য কখন কার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, সে সম্পর্কে তারা আগেই অবগত হতে পারবেন।
সর্বোপরি আসন্ন খাদ্য সংকট মোকাবিলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং যার যার জায়গা থেকে সেরা সিদ্ধান্তটাই নিতে হবে। তবেই আমাদের বিশ্বাস, ২০৫০ সাল খাদ্য-সংকট তৈরির নয়, বরং বিশ্ব থেকে খাদ্য সংকট পুরোপুরি দূর হওয়ার বর্ষ হবে।