Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ইসরায়েলে হামাসের হামলা যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দিয়েছে

৭ অক্টোবর, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী ‘হামাস’ একটি অভিযান শুরু করে যা ইসরায়েলকে অবাক করে দেয়। দখল করে নেয় ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনা এবং বসতি, যার ফলে নিহত হয় প্রায় ১,৪০০ ইজরায়েলি। প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গাজায় আরেকটি যুদ্ধ শুরু করে ইজরায়েল, আরোপ করে সম্পূর্ণ অবরোধ; নিরলস বোমাবর্ষণ করে বেসামরিক ভবন ও অবকাঠামোতে।

হামাসের এই হামলা শুধু ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘর্ষের পথই বদলে দেয়নি, বরং বদলে দিয়েছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণও। এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্ট্র্যাটেজি ডি-এস্কেলেশনকে (আঞ্চলিক উত্তেজনা হ্রাস) নড়বড়ে করে দিয়েছে, কঠিন অবস্থানে ফেলেছে আরব অঞ্চলের সরকারসমূহ ও ইরানকে, এবং খুলে দিয়েছে চীনা ও রাশিয়ান সম্পৃক্ততার বৃহত্তর দরজা।

এ বছর G-20 সামিটে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ ইকোনমিক করিডোর গঠন নিয়ে আলোচিত হয়;
Image source: Arab Centre for Washington DC

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্ট্র্যাটেজি চুরমার

গত তিন বছর ধরে বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা সীমিত করার চেষ্টা করে চলছে, এবং তার ‘পিভট টু এশিয়া’ নীতির অংশ হিসেবে চীনের দিকে বেশি মনোনিবেশ করছে।

এটা করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ (নরমালাইজেশন) এবং ইরানের সাথে উত্তেজনা কমিয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ‘শীতল’ করার চেষ্টা করছিল। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে চীনা প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করার এবং ভারত, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপকে সংযুক্ত করে একটি ‘অর্থনৈতিক করিডোর’ নির্মাণের মাধ্যমে ভারতের শক্তি বৃদ্ধিরও প্রত্যাশা করছিল।

প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডোরের দুটি অংশ- একটি পূর্ব করিডোর, যা ভারতকে আরব উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সাথে সংযুক্ত করবে, এবং একটি উত্তর করিডোর, যা জর্ডান এবং ইসরায়েল হয়ে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোকে ইউরোপের সাথে সংযুক্ত করবে; যা মূলত চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ এর বিপরীতে মার্কিন প্রতিক্রিয়া বলে মনে করা হচ্ছে। হামাসের হামলা এই পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে।

প্রথমত, এটি কার্যকরভাবে ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে স্বাভাবিককরণ প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করেছে, বাধাগ্রস্ত করেছে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার ধারণাকেও।

দ্বিতীয়ত, এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতি হ্রাস করার নীতি থেকে সরে আসতে এবং আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতির আদেশ দিতে বাধ্য করেছে। পেন্টাগন পূর্ব ভূমধ্যসাগরে একটি বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করেছে, আরেকটি মোতায়েন করেছে আরব উপসাগরে। একসাথে এই দুই রণতরী ১০০টিরও বেশি আক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন বিমানের পাশাপাশি ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত ক্রুজার, ডেস্ট্রয়ার এবং সাবমেরিন বহন করছে। ওয়াশিংটন বলেছে, কোনো তৃতীয় পক্ষকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরেকটি ফ্রন্ট (রণাঙ্গন) খুলতে বাধা দেওয়ার জন্য এই সামরিক উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আবারও বাড়াতে হচ্ছে সামরিক উপস্থিতি, করতে হচ্ছে স্ট্রাটেজি পরিবর্তন;
Image source: Arab News

তৃতীয়ত, ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাও শেষ হয়ে গেছে। মাত্র এক মাস আগে, দুই দেশ বন্দী বিনিময় এবং ৬ বিলিয়ন ডলারের হিমায়িত ইরানি সম্পদের (মুদ্রা) মুক্তির বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল। আশা করা হয়েছিল যে, এই চুক্তি ইরানকে সিরিয়া ও ইরাকে তার মিলিশিয়াদের মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আরও হামলা চালানো থেকে বিরত রাখতে উত্সাহিত করবে। হামাসের হামলার পর তা-ও ভেস্তে গেল। গত সপ্তাহের ঘটনাগুলো থেকে দেখা যায় যে এই চুক্তিপত্র আর সম্পন্ন হয়নি। সিরিয়া ও ইরাকে ইরানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে, এতে অনেক মার্কিন কর্মী আহত হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা আরও দাবি করেছেন যে উত্তর লোহিত সাগরে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে হুথিদের ছোড়া ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করেছে।

এসবের অর্থ হলো মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরব রাষ্ট্রসমূহ ও ইরানের উভয়সঙ্কট

হামাসের হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধও আঞ্চলিক সরকারগুলোকে কঠিন অবস্থানে ফেলেছে। একদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার আরব মিত্রদের চাপ দিচ্ছে, যাদের মধ্যে অনেকেই ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে, হামাসকে নিন্দা করতে। শুধুমাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন এ ধরনের বিবৃতি দিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের নির্বিচারে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের হত্যা আরব জনগণকে করেছে ক্ষুব্ধ এবং ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে চাপ সৃষ্টি করেছে আরব সরকারগুলোর উপর। ইতোমধ্যেই লক্ষ্যণীয় যে, জনমতের চাপ আরব নেতাদের মার্কিন ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে বাধ্য করছে।

১৭ অক্টোবর আল-আহলি ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে গণহত্যার জন্য আরব রাষ্ট্রগুলো, যেমন- সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন, তীব্র নিন্দার জানিয়েছে। ২১শে অক্টোবর কায়রো শান্তি সম্মেলনে, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, যার দেশ ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সাথে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, ইসরায়েলি নীতির নিন্দা জানিয়ে এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে শক্তিশালী বক্তৃতা দিয়েছেন।

২৪ অক্টোবর গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য UNSC অধিবেশন চলাকালীন মিশর, জর্ডান এবং সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা, যারা সবাই কিনা ঘনিষ্ঠ মার্কিন মিত্র, ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা করেছেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তার একদিন পরে চীন এবং রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত মার্কিন প্রস্তাবে ভেটো দেয় যেখানে (প্রস্তাবে) যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়নি।

ব্যর্থ অর্থনৈতিক পলিসির পর এবার ফিলিস্তিন ইস্যু আরব রাষ্ট্রে বাড়াচ্ছে বিক্ষোভ, সরকারের প্রতি অনাস্থা; Image source: Arab Centre for Washington DC

আপাতত, মার্কিনপন্থী আরব সরকার জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত করার জন্য জোরালো বক্তব্যের আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েল যদি গাজায় তার গুরুতর আক্রমণ চালিয়ে যায়, তবে শব্দই যথেষ্ট হবে না- তাদের ইসরায়েলের সাথে স্বাভাবিককরণের বিপরীতে গিয়ে ভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে, যা মার্কিন ক্ষোভ সৃষ্টি করতে পারে।

ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় আরব নেতাদের যথাযথ পদক্ষেপের অভাব আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। ব্যর্থ অর্থনৈতিক নীতির কারণে আরব জনগণ তাদের সরকারের উপর ইতিমধ্যেই ক্ষুব্ধ এবং ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা তাদেরকে আরও ক্ষুব্ধ করতে পারে। আরো একবার, গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতায় মার্কিন সমর্থন মার্কিন সমর্থিত আরব সরকারগুলোকে দুর্বল প্রমাণ করছে।

বিভিন্ন কারণে ইরানও কঠিন অবস্থানে রয়েছে। ইরানের নেতৃবৃন্দ হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলায় কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে সেটির প্রশংসা করেছেন। তেহরান সতর্কতার সাথে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে যাতে ইসরায়েল বা তার মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি কোনো সংঘর্ষে না জড়ায়, একইসাথে সমর্থন করেছে হামাসকে।

ইসরায়েল ঘোষণা করেছে যে, গাজার বিরুদ্ধে তার যুদ্ধের লক্ষ্য হলো ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীকে ভেঙে দেওয়া– অর্থাৎ, গাজা স্ট্রিপে শাসন পরিবর্তন করা। এর মানে ইসরায়েল সফল হলে তেহরান এই অঞ্চলে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হারাতে পারে। এভাবে, নিষ্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এবং ইসরায়েল দ্বারা হামাসকে দুর্বল বা নির্মূল করা দেখার বা তার লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহকে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করানো এবং ইসরায়েলের উত্তরাংশে চাপ দেওয়ার জন্য উত্সাহিত করার মধ্যে একটি কঠিন বাছাই পরিক্ষার মুখোমুখি হচ্ছে ইরান, যা তার মিত্রদের জন্য মারাত্মক পরিণতির কারণ হতে পারে।

ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল যে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে আক্রমণ করলে ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন পাওয়ার পর, ইসরায়েল এই সুযোগটি ব্যবহার করে লেবানিজ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে আক্রমণ করতে পারে। এটি অবশ্যই লেবাননকে অস্থিতিশীল করবে, যা ইরানের স্বার্থবিরোধী।

কৌশলে হাঁটছে ইরান, একটু ভুল পদক্ষেপ তার মিত্রদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসতে পারে; Image source: DW

চীন রাশিয়ার হিসেব-নিকেশ

মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে যাওয়া এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে তার মৈত্রী বন্ধন দুর্বল হয়ে যাওয়া চীন ও রাশিয়ার জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি করবে।

গত দুই দশকে বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অযাচিত হস্তক্ষেপে উভয় দেশই উপকৃত হয়েছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অবস্থানকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ, অপরদিকে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া এবং চীন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণাকে করেছে উত্সাহিত। এই যুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যস্ত রাখে, দুটি বৃহৎ শক্তিকে তাদের আশেপাশের অঞ্চলে প্রভাব শক্ত করার জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয়।

রাশিয়া এবং চীন চাপ অনুভব করতে শুরু করে যখন বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন স্ট্রাটেজি পরিবর্তন করে একে ‘পিভট টু এশিয়া’তে স্থানান্তরিত করা এবং তার ন্যাটো জোটে আরও মনোযোগ দেয়া হয়। এই কৌশল এখন আবারও পরিবর্তিত হতে পারে, যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আবার টেনে আনা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে, যেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র পরিত্রাণ পেতে চাইছিল।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনী গড়ে তোলা, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য আরও সাহায্য এবং ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য একটি মার্কিন কূটনৈতিক কর্পস- এসবের অর্থ হচ্ছে ইউক্রেনের যুদ্ধে ইউক্রেনকে ও এশিয়ার চীনা চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মার্কিন মিত্রদের সমর্থনে সহায়তা করার জন্য কম সামরিক, আর্থিক এবং কূটনৈতিক সাহায্য প্রেরণ।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধে জড়ানো চীন-রাশয়ার জন্য বৃহত্তর সুযোগ তৈরি করবে; Image source: AP News

উপরন্তু, গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ইসরায়েলের গণহত্যার জন্য নিঃশর্ত মার্কিন সমর্থন ইসলামিক বিশ্বে তার অবস্থানকে আরও ক্ষুণ্ণ করছে, যা রাশিয়া এবং চীনকে জায়গা পেতে সুযোগ দেয়। পাশাপাশি এই দুই দেশ গাজা যুদ্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে, এবং ‘ধ্বংসাত্মক’ সংঘাতের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে। দেখা যাচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে চীন এবং রাশিয়াকে মোকাবিলা করার পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজের পায়ে গুলি চালাচ্ছে, যার ফলে চীন-রাশিয়ার অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে এবং ‘ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ’ অর্থনৈতিক করিডোর সহ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন পরিকল্পনাগুলোকে ব্যর্থ করতে সহায়তা করছে।

প্রকৃতপক্ষে, ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এই পরিবর্তনের মাত্রা নির্ধারিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা এবং ইচ্ছার দ্বারা। গাজা যুদ্ধ বন্ধ করতে, অবরোধ তুলে নেওয়া এবং ফিলিস্তিনিদের সাথে আলোচনা শুরু করার জন্য মার্কিন সরকার ইসরায়েলি সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি না করলে, পুরো অঞ্চল সেই আগুনে পুড়তে পারে।

এই সংঘাত লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং ইরাকে বিস্তৃত হওয়ার এবং আরব বিশ্বের বাকি অংশে গণ-অভ্যুত্থান ঘটার মতো বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে, যা কেবল মার্কিন আঞ্চলিক জোটকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না বরং এই অঞ্চলে রাশিয়া ও চীনের প্রভাব বৃদ্ধির দরজাও খুলে দেবে।

আল-জাজিরা থেকে অনূদিত

মূল লেখক: মারওয়ান কাবালান। তিনি আরব সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি স্টাডিজের ‘পলিসি অ্যানালাইসিস’ এর পরিচালক।

This is a Bangla translation of the article "Hamas’s attack on Israel has changed the Middle East" published in Al-Jazeera by Marwan Kabalan.
Feature image: Al-Jazeera

Related Articles