Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বাস্তু শাস্ত্র: হারিয়ে যাওয়া এক স্থাপত্যবিদ্যা

পৃথিবীতে অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে মানুষের দাপট যেন সবচেয়ে বেশি। বলা যায় মানুষ তার বুদ্ধিমত্তা তথা মস্তিষ্ক দিয়ে এই বিশেষত্ব অর্জন করেছে। বর্তমান পৃথিবীর বেশিরভাগ জীবজন্তুর মঙ্গল-অমঙ্গল অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হয় মানুষের দ্বারা। অনেক সময় নির্ধারিতও হয়। কিন্তু এতকিছুর পরও এই মানুষ প্রকৃতির কাছে অসহায়! শুধু মানুষ বললে ভুল হবে, সকল জীবজন্তু, গাছপালা, কীট-পতঙ্গ, জলচর প্রাণী কেউই প্রাকৃতিক নিয়মের ঊর্ধ্বে নয়। এমনকি অণুজীবও নয়।

যেখানে অন্যান্য প্রাণী প্রাকৃতিক নিয়মের বশবর্তী হয়ে যুগ যুগ ধরে প্রায় একইভাবে চলে আসছে, সেখানে মানুষ কিন্তু প্রকৃতির নিয়মের বিপরীতে না গিয়েও জগত জয় করে চলেছে। গড়ে তুলেছে সভ্যতা। এমনকি মনুষ এখন মহাবিশ্বের অজানা রহস্য উদঘাটনের জন্য রকেটে করে পাড়ি জমিয়েছে মহাকাশেও।

অশ্চর্যের ব্যাপার হলো, মানুষ এতকিছু করেছে সেই প্রকৃতির নিয়ম মেনেই। কারণ প্রকৃতির স্বাভাবিক রীতিনীতির পরিবর্তন কোনো সহজ কাজ নয়। অনেক ক্ষেত্রে সে পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে ভয়ানক বিপর্যয়। 

দিন দিন মানুষ এত উন্নত হচ্ছে, কিন্তু তারপরেও এখনো তারা প্রকৃতির শক্তির কাছে অসহায়। তবে সব মানিয়ে নিয়ে আবার নিজের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সমন্বয়ের মাধ্যমে এগোচ্ছে মানুষ। সভ্যতা গড়ার লক্ষ্যই হলো ভবিষ্যতে জীবনকে আরও সহজ ও সুন্দর করা। ঠিক এজন্য চাই তার উপযু্ক্ত বাসস্থান। সেটা হোক শহরে, কী গ্রামে; এবং এই বাসস্থান বা বাস্তু এমনভাবে এবং এমন ভূমিতে করতে হবে যেন তা বিপদ-আপদ থেকে, প্রকৃতির রোষ থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে। কোন দিকে ঘরবাড়ির সম্মুখভাগ হবে, কোনদিকে দরজা-জানালা থাকবে, কোন দিকে রান্নাঘর থাকবে ইত্যাদি নিয়ে প্রাচীনকালে ভারতীয় উপমহাদেশে একটি স্থাপত্যশাস্ত্র প্রচলিত ছিল। যাকে বলা হতো ‘বাস্তু শাস্ত্র’।

বাস্তুশাস্ত্র কী?

বাস্তু কথাটা এসেছে সংস্কৃত শব্দ বস্তু থেকে। যেকোনো সৃষ্টিই হলো বাস্তু। আবার বস্তু হলো ‘ভূ’ অর্থাৎ পৃথিবী। সে অর্থে এই পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি হওয়া সমস্ত কিছুই বাস্তু। বৃহৎ অর্থে, সকল নশ্বর এবং অবিনশ্বরের আবাসস্থলই বাস্তুর অন্তর্ভুক্ত। বাস্তু শাস্ত্রকে বলা যেতে পারে প্রাচীন ভারতীয় স্থাপত্য বিজ্ঞান। তবে বাস্তুবিদ্যা কেবল স্থাপত্যবিদ্যাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রাচীন এই শাস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল নগর পরিকল্পনা, চিত্রকলা ও প্রকৌশলবিদ্যা।

পঞ্চভূতাত্মক
Image: vaastu-shastra.com

হিন্দু শাস্ত্র মতে, এই পৃথিবী পঞ্চভূতাত্মক। এতে পাঁচটি তত্ত্বের সমাবেশ ঘটেছে। পাঁচটি তত্ত্ব হলো ক্ষিতি (মাটি), অপু (পানি), তেজ (অগ্নি), মরুৎ (বায়ু) ও ব্যোম (আকাশ)। শাস্ত্র মতে, মানুষের শরীরেও এই পাঁচটি তত্ত্বের সংমিশ্রণ ঘটেছে। তাই পৃথিবীর বুকে সৃষ্ট যেকোনো অবকাঠামো বা ইমারত যেন প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে না যায় এবং মানুষের চারপাশের প্রকৃতি যেন তার সুস্থ, সুখী, সুন্দর বসবাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, সেজন্য বাস্তু শাস্ত্রের পুরো স্থাপত্যবিদ্যাটিই এই পাঁচটি তত্ত্বের উপর গড়ে উঠেছিল। সুতরাং স্থূল কিংবা সূক্ষ্ম উভয়ার্থেই বাস্তু শাস্ত্র সমান কার্যকরী ছিল। 

বাস্তু পুরুষ মণ্ডল

বাস্তু পুরুষ মন্ডল
Image: vastushastraguru.com

হিন্দু শাস্ত্রের মৎস পুরাণ অনুসারে ব্রহ্মা একবার এক দানবকে এই বর দেন যে, পৃথিবীতে মানুষ যখন কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করবে তখন মানুষকে সেই দানবের পূজা করতে হবে, যার নাম বাস্তু পুরুষ, যাকে বাস্তু দেবও বলা হয়ে থাকে। এই বাস্তু দেবকে যখন পৃথিবীর বুকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল তখন তার মাথা ছিল উত্তর-পূর্ব দিক বা ঈশানে। আর পা ছিল দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বা নৈঋৎ কোণে। তাই বাস্তু শাস্ত্র অনুযায়ী কোনো ইমারত এমনভাবে তৈরি করার কথা বলা হয়েছে যাতে বাস্তু দেব অসন্তুষ্ট না হন।

এই শাস্ত্র মতে কোনো ইমারত নির্মাণের আগে অবশ্যই সেই ভূমি ও ইমারত বাস্তু দেবের অবস্থান অনুযায়ী সাজাতে হবে। প্রচলিত এই অবকাঠামোকেই ‘বাস্তু পুরুষ মণ্ডল’ নামে আখ্যায়িত করা হতো। বস্তুতপক্ষে বাস্তু পুরুষ মণ্ডল একধরনের আধ্যাত্মিক বর্গক্ষেত্র। বাস্তুশাস্ত্র মতে, এই আধ্যাত্মিক বর্গক্ষেত্র পঁয়তাল্লিশটি শক্তির এক আঁধার। তাই প্রাচীনকালে কোনো অবকাঠামো নির্মাণে এসব শক্তির কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন অবকাঠামোর পরিকল্পনা করা হতো।

ব্রহ্মস্থান ও বর্গ মাট্রিক্স

Image: Monochrome

‘বাস্তু পুরুষ মণ্ডল’ কোনো অবকাঠামোর এমন একটি জ্যামিতিক পরিকল্পনা যেখানে পুরো বর্গাকৃতির কোনো ভূমিকে অবকাঠামো নির্মাণের আদর্শ স্থান ধরে নিয়ে পুরো ক্ষেত্রটিকে কতগুলো ছোট ছোট বর্গক্ষেত্রে ভাগ করে নেওয়া যায়। অর্থাৎ যদি একটি ভূমিকে নয়টি ছোট ছোট বর্গক্ষেত্রে ভাগ করা হয় তবে সেটাকে আমরা ৩×৩ এর একটি ম্যাট্রিক্স আকারে সাজাতে পারি। অর্থাৎ তার তিনটি আনুভূমিকভাবে সমান্তরাল সারি ও তিনটি আনুভূমিকভাবে লম্ব কলাম থাকবে। বাস্তু পুরুষ মণ্ডলে ভূমির সমান্তরাল (সারি) এসব রেখা যা ‘পূর্ব-পশ্চিম’ বরাবর বিস্তৃত থাকে সেগুলোকে ‘বংশ’ বলা হয়। আর খাড়া রেখা যেগুলো ‘উত্তর-দক্ষিণ’ দিকে বিস্তৃত থাকে সেগুলোকে নাড়ি বলা হয়।

একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন, এই ৩×৩ ম্যাট্রিক্সের সমতুল্য কোনো মণ্ডলে ঠিক মাঝে একটি বর্গক্ষেত্র অবস্থান করে। আবার যদি এই পুরো বর্গক্ষেত্রের দুটি কর্ণ পরস্পর যুক্তও করা হয়, তখন তাদের ছেদবিন্দুটিও মধ্যস্থ বর্গটির একদম মাঝেই অবস্থান করে। বাস্তু শাস্ত্র মতে এই ছেদবিন্দুটি একটি ভূমির নাভি বা ফোকাস, যেখানে ব্রহ্মা অবস্থান করেন এবং মধ্যস্থ এই বর্গক্ষত্রটিকে বহ্মস্থান বলে। কোনো অবকাঠামো নির্মাণে এই ফোকাস বিন্দুটিই এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এই স্থানের যথেষ্ট সুরক্ষা নির্ধারণ করতে হয়।

প্রাচীন ভারতে যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণে বাস্তু শাস্ত্রে, কোনো ভূমির এই বর্গ ম্যাট্রিক্স আকারে বিন্যাসের ক্ষেত্রে মধ্য অবস্থানটি বা মধ্যস্থ বর্গ ক্ষেত্রটিকে নির্ধারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার কোনো অবকাঠামো পরিকল্পনায় বাস্তু পুরুষ মন্ডলকে যে কেবল ৩×৩ এর নয়টি বর্গেই ভাগ করতে হবে, তা কিন্তু নয়। তবে বাস্তু পুরুষ মন্ডলের জন্য ন্যূনতম নয়টি বর্গের একটি ৩×৩ এর ম্যাট্রিক্স লাগবেই। আর অন্য সব ক্ষেত্রে যে ম্যাট্রিক্সই নেওয়া হোক না কেন তাকে অবশ্যই বর্গ ম্যাট্রিক্স হতে হবে।

যেমন- ৩×৪ এমন একটি ম্যাট্রিক্স যার তিনটি সারি ও চারটি কলাম আছে। পাশাপাশি বারোটি ছোট ছোট বর্গক্ষেত্র আছে। কিন্তু এই ম্যাট্রিক্স দিয়ে কোনো বাস্তু পুরুষ মন্ডলের পরিকল্পনা করা যাবে না। কারণ সেক্ষেত্রে কোনো মধ্য অবস্থানই নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। সুতরাং ৪×৪ ম্যাট্রিক্সের ষোলোটি ছোট ছোট বর্গ নিয়ে যেমন একটি মন্ডলের পরিকল্পনা করা সম্ভব। তেমনি ৫×৫ কিংবা ৯×৯ বর্গ ম্যাট্রিক্স দিয়েও পঁচিশ ও একাশিটি ছোট ছোট বর্গক্ষেত্র দ্বারা একটি বস্তু পুরুষ মন্ডলের পরিকল্পনা করা সম্ভব।

৯×৯ এর বাস্তু পুরুষ মন্ডল
৯×৯ বর্গ ম্যাট্রিক্স

বসতবাড়ি নির্মাণে দিকদর্শন

দিনের বেলায় আমাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজ করতে হয়। বাস্তুশাস্ত্র আমাদের এই দিনরাতের পুরো সময় ২৪ ঘন্টাকে আটটি দিকের উপর ভিত্তি করে আট ভাগে ভাগ করেছে। এই শাস্ত্রে সূর্যের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে বসতবাড়ি বা অবকাঠামো এমনভাবে নির্মাণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে করে একজন মানুষ দিনের বিভিন্ন সময় সূর্য হতে শুধু উপকারী রশ্মিই যেন পায়।

সংক্ষেপে বাস্তুশাস্ত্রের দিকদর্শন নিয়ে আলোচনা করা যাক-

উত্তর-পূর্ব দিকঃ মধ্যরাত ৩টা থেকে ভোর ৬টা, এই সময়ের মধ্যেই সূর্য উদিত হয়। তখন চারপাশের পরিবেশ এতটাই শান্ত থাকে যে শরীর চর্চার পাশাপাশি, ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি প্রদর্শণের জন্য এটিই উপযুক্ত সময়। তাই বসতবাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকে মন্দির তথা ঈশ্বরের জন্য নির্ধারনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

পূর্ব দিকঃ সকাল ৬টা থেকে ৯টা এই সময় সূর্য বসতবাড়ির পূর্বাংশে হেলে থাকে। এই সময়টা গোসল ও একটি দিনের প্রস্তুতির জন্য উপযোগী।তাই পূর্বদিকে গোলসখানা নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব দিকঃ সময় ৯টা থেকে ১২টা, এ সময় সূর্য আমাদের বসত বাড়ির এই অংশে থাকে যখন দুপুরের খাবার প্রস্তুত করা হয়ে তাকে। তাই এই অংশে রান্নাঘর রাখার কথা বলা হয়েছে।

দক্ষিণ দিকঃ দুপুরের খাবার পর সূর্য তখন বসত বাড়ির এই অংশে হেলে থাকে। তাই বিশ্রামের জন্য এই অংশে শোয়ার ঘর রাখার কথা বলা হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিম দিকঃ দুপুরের বিশ্রামের পর ৩টা থেকে ৬টা। এই সময়টা সাধারণত লেখাপড়া ও কাজের। তাই বসত বাড়ির এই অংশে লাইব্রেরি বা পড়ার ঘর রাখার নির্দেশণা দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিম দিকঃ ৬টা থেকে ৯টা, এই সময়টা সাধারণত খাওয়া, বিশ্রাম ও পড়াশুনার জন্য। এই সময় সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে তাই বসত বাড়ির এই দিকটিতে ডাইনিং রুম কিংবা ড্রয়িং রুম রাখার কথা উল্লেখ আছে।

উত্তর-পশ্চিম দিকঃ ৯টা থেকে মধ্যরাত এখন সূর্য অদৃশ্য থাকে। এই সময়টা শুধুই ঘুমানোর জন্য। তাই এই অংশেও শোয়ারঘর রাখার নির্দেশনা রয়েছে। 

উত্তর দিকঃ মধ্যরাত থেকে রাত ৩টা, যখন সূর্য উত্তর ভাগে অবস্থান করে। এই সময়টা অন্ধকারাচ্ছন্ন ও গোপনীয়৷ তাই বসতবাড়ির উত্তর দিকটাতে মূল্যবান জিনিসপত্র রাখার নির্দেশণা উল্লেখ করা হয়েছে।

বর্তমান পৃথিবীতে বাস্তুশাস্ত্রের কিছু নিদর্শন

বাস্তুশাস্ত্র যেহেতু প্রাচীন ভারতীয় এক শাস্ত্র, তাই এর প্রয়োগ কিংবা অস্তিত্ব কেবল প্রাচীন ভারতেই পাওয়া যায়। যেমন ভারতের রাজস্থান রাজ্যে অবস্থিত পিঙ্ক সিটি (pink city) নামে খ্যাত জয়পুরকে রাজপুত্র জয় সিং ১৭২৭ খ্রীস্টাব্দে বাস্তু শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করেই পুরো শহরের পরিকল্পনা করেছিলেন। পৃথিবীর সব থেকে বড় ধর্মীয় স্থাপনা বলা হয় অ্যাংকর ওয়াটকে। যেটি কম্বোডিয়ায় অবস্থিত, হিন্দুদের একটি মন্দির। এটি নির্মাণের ক্ষেত্রেও বাস্তুশাস্ত্রের উপস্থিতি বেশ লক্ষ্য করা যায়।

অ্যাংকর ওয়াট
অ্যাংকর ওয়াট; Image: News Gram

এগুলো ছাড়াও প্রাচীন ভারতের প্রায় অধিকাংশ ধর্মীয় স্থাপনা সেটা হোক হিন্দু কিংবা বৌদ্ধ স্থাপনা, সব ক্ষেত্রে বাস্তুশাস্ত্র মেনেই এসব সম্প্রদায়ের লোক সে সময় বিভিন্নরকম অবকাঠামো নির্মাণ করতেন। যদিও বর্তমান সময়ে স্থাপত্যশিল্পে এই শাস্ত্রের প্রয়োগ একদম নেই বলেই চলে, তবে সম্প্রতিক সময়ে এর কিছু প্রয়োগ দেখা যায়। যেমন ভারতের আহমেদাবাদে প্রতিষ্ঠিত মহত্মা গান্ধীর স্মৃতি রক্ষার্থে জাদুঘর ও জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘গান্ধী স্মারক সংগ্রহালয়’, ভূপালে অবস্থিত ‘বিদ্বান ভবন’ এগুলো নির্মাণের ক্ষেত্রে বাস্ত্রশাস্ত্রের বিদ্যাকে কাজে লাগানো হয়েছে। এমনকি ভারতের একাধারে পাঞ্জাব ও হারিয়ানা দুটি রাজ্যের রাজধানী চণ্ডিগড়ের পরিকল্পনাতেও আধুনিক স্থাপত্যবিদ্যা ও নগর পরিকল্পনার পাশাপাশি বাস্তুশাস্ত্র বিদ্যারও উল্লেখযোগ্য প্রয়োগ করা হয়েছে।

তবে বর্তমানে অনেক স্থপতি প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের এই বাস্তুশাস্ত্রের বিদ্যাকে অবৈজ্ঞানিক ও আধ্যাত্মিক বলে আখ্যা দিয়েছেন। আবার অনেকেই আছেন যারা বাস্তু শাস্ত্রকে শুধু হিন্দুয়ানী শাস্ত্র কিংবা বিদ্যা হিসেবে গণ্য করে দুরে ঠেলে দেন কিংবা ঘৃণা করেন। অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে, বাস্তুশাস্ত্র আমাদের ঐতিহ্যের একটি বড় ধারক ও বাহক। কারণ প্রাচীনকালে এই শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করেই নির্মিত হয়েছে একের পর এক দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা, যেগুলোর কিছু কিছু নিদর্শণ এখনো টিক আছে স্ব-গৌরবে। যেই স্থাপনাগুলো আমাদের অতীতকে ধারণ করে আছে এবং আমাদের প্রতিনিয়ত পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে আমাদের পূর্বপুরুষদের সাথে। পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে তাদের দর্শন এবং তাদের দৈনন্দিন জীবন-যাপন ও কাজকর্মের সাথে।

Related Articles