Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

অন্তর্মুখীরাই কেন নেতা হিসেবে সফল?

বর্তমান সময়ে ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী বহুল ব্যবহৃত একটি বিশেষণ। ১৯২০-এর দশকে কার্ল জাং প্রথম ব্যবহার করেছিলেন বিশেষণটি। অন্তর্মুখী বলে মূলত সংজ্ঞায়িত করা হয় তাদেরকে, যারা সামাজিকতা রক্ষার পরিবর্তে একাকী সময় কাটাতে পছন্দ করে, এবং সেখান থেকেই শক্তি সঞ্চার করে থাকে।

আমাদের সমাজে এমন স্বভাবের মানুষের প্রতি অন্যরা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই পোষণ করে থাকে, কেননা এখানে মানুষের সাথে মিথস্ক্রিয়া ও সামাজিকতা রক্ষার প্রতি বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়ে থাকে। ভাবা হয়, একজন ব্যক্তি যত মেধাবীই হোক না কেন, নিজেকে মানুষের সামনে মেলে না ধরলে তার পক্ষে জীবনে সফল হওয়া সম্ভব না। আর যেহেতু মানুষের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে গেলে সবার সাথে মিশতে হবে এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে, অর্থাৎ এক্সট্রোভার্ট বা বহির্মুখী হতে হবে, তাই বহির্মুখী ব্যক্তিদেরকেই সমাজ অপেক্ষাকৃত বেশি ভালোবেসে থাকে।

কিন্তু অন্তর্মুখী ব্যক্তিদের পক্ষে জীবনে বড় কিছু হওয়া সম্ভব নয়, এমন ধারণা কি আদৌ সত্য? মোটেই না। বরং অন্তর্মুখী হওয়া একটি ইতিবাচক বিষয়ও হতে পারে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন বহু খ্যাতিমান ব্যক্তির দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা অন্তর্মুখী হওয়া সত্ত্বেও নিজ যোগ্যতায় সাফল্যের শীর্ষে আরোহণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

আবার অন্তর্মুখী ব্যক্তিরা শুধু অনুসারীই হবে, তাদের পক্ষে কখনো নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্যতা অর্জন সম্ভব হবে না বলে যে ধারণা প্রচলিত রয়েছে, সেটিও সর্বৈব ভুল। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। সেখানে বলা হচ্ছে, জটিল ও অননুমেয় পরিস্থিতিতে বহির্মুখী নয়, অন্তর্মুখী ব্যক্তিরাই হয়ে উঠতে পারে সফল নেতা।

অন্তর্মুখী ব্যক্তিরাই অনেক সময় হয় সফল নেতা; Image Source: iStock

কেন অন্তর্মুখী ব্যক্তিরা নেতা হিসেবে সফল হয়? চলুন জেনে নেয়া যাক এর পেছনে প্রধান কিছু কারণ।

নীরবতাই সাফল্যের চাবিকাঠি

অন্তর্মুখীরা কোনো কাজ শুরু করে মাঝপথেই বাগাড়ম্বর শুরু করে দেয় না। তারা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। ফলে একটি কাজে হাত দেয়ার পর নিজেদের সম্পূর্ণ মনোযোগ তারা ওই কাজেই ঢেলে দেয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে, তারা কাজ করা অব্যহত রাখে। কখনো প্রয়োজন মনে করলে তারা দলের বাকিদের ওপর অর্পিত দায়িত্বও নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়, এবং নিজেদের মতো করে কাজটি শেষ করে। অনেক সময় তারা দলের থেকে সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েও একাকী কাজটি করতে থাকে। কেননা বাচাল ও বিশৃঙ্খল মানুষের সান্নিধ্যে তাদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাদের চিন্তা করার প্রক্রিয়াও ব্যাহত হতে পারে। তাই তারা নিজেরা কোনো কথা না বলে, এবং অন্যের কথায় মনোযোগ না হারিয়ে, নির্জনে গিয়ে কাজটি শেষ করে আসে।

আগে চিন্তা, পরে কথা

প্রয়োজন ছাড়া অন্তর্মুখী নেতারা খুব কমই কথা বলে। এবং যখন তারা মুখ খোলে, তখনো তারা অনেক ভেবেচিন্তে নেয়। কোন কথাটি শোভন আর কোনটি শোভন নয়, কোন কথাটি বলা প্রয়োজন আর কোনটি প্রয়োজন নয়, এসব বিষয়ে তারা আগে থেকেই চিন্তাভাবনা করে নেয়। তাই হুট করে বেফাঁস কথা বলে তারা দলের বিপদ ডেকে আনে না। আবার একই কারণে তারা নিজের দলের আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। যখন দলের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়, তারা ঝোঁকের মাথায় কোনো ভুল কথা বলে অন্তর্কোন্দলকে আরো উস্কে দেয় না, বরং নিজেদের ধীর-স্থির, চিন্তাশীল শব্দচয়নের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিজের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসে।

সুপরিকল্পনা

অগোছালো ও অনির্দিষ্ট আলাপচারিতার মাধ্যমে কখনো কোনো কাজের সুষ্ঠু পরিকল্পনা করা সম্ভব হয় না, বরং সংশ্লিষ্ট সকলে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই অন্তর্মুখী নেতারা কোনো কথা স্রেফ বলার জন্য বলে না। তারা আগে চিন্তা করে, এবং চিন্তা শেষে সামান্য যে কয়টি কথা বলে, দলের বাকিরা সেই কথার ওজন উপলব্ধি করতে পারে, তা মেনে চলার চেষ্টা করে। আবার কোনো সমস্যায়ও অন্তর্মুখী নেতারা আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছে যায় না। তখনো তারা ঠাণ্ডা মাথায় বিপদ থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা বের করে।

অসীম ধৈর্যশক্তি

অন্তর্মুখী নেতাদের অন্যতম বড় গুণ হলো তাদের অসাধারণ ধৈর্য। খুব সহজে তারা ধৈর্য হারায় না। যেকোনো বিপদে তারা ধৈর্য ধরে থাকে, এবং দলের বাকিদেরও স্বাভাবিক রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। বিপদের মাঝে ধৈর্য ধরে কাজ চালিয়ে যাওয়ার এই কৌশলই তাদের সাফল্যকে ত্বরান্বিত করে।

অন্তর্মুখীরা যখন ক্ষমতায়; Image Source: YouTube

কার্যকর যোগাযোগ

অন্তর্মুখী নেতারা নিজ দলের বাইরে অন্যদের সাথে যোগাযোগ খুব কমই করে থাকে। কিন্তু যখন তারা বাইরের কারো সাথে যোগাযোগ করে, সেই যোগাযোগটি হয় খুবই অর্থবহ ও গভীর। বহির্মুখী নেতারা দশবার যোগাযোগ করেও যে লক্ষ্য পূরণে হিমশিম খায়, অন্তর্মুখী নেতারা স্রেফ একবারেই তা অর্জন করে ফেলে। কম কথা বলা সত্ত্বেও তাদের মাঝে কথার মাধ্যমেই অন্যকে পরাভূত করার যে বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, সেটি এখানে খুব বড় ভূমিকা পালন করে।

সফলতার দৃষ্টান্ত

এতক্ষণ তো কেবল তাত্ত্বিক আলোচনা হলো। কিন্তু যা যা বলা হয়েছে, সেগুলো আসলেই কতটুকু যুক্তিসঙ্গত? সেটি প্রমাণের জন্য এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরব কয়েকজন অন্তর্মুখী অথচ সফল ও বিশ্বখ্যাত নেতার বৃত্তান্ত।

মার্ক জাকারবার্গ

মার্ক জাকারবার্গ; Image Source: Justin Sullivan / Getty

বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তিনি। তাই অনেকে মনে করতেই পারেন, তিনি নিজেও হয়তো খুবই বহির্মুখী, এবং সকলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পছন্দ করেন। কিন্তু আসলে তিনি তা নন। বরং তিনি বেশ লাজুক স্বভাবের। অপরিচিত মানুষের সাথে নিজে থেকে ভাব জমানো বা তাদের সাথে সহজ আলাপচারিতা চালিয়ে যেতে পারেন না তিনি। এ ধরনের মানুষের সাথে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলতেই স্বস্তি পান তিনি। কিন্তু তারপরও তিনি আজ এতটা সফল। কারণ, যাদেরকে তিনি চেনেন, তাদের সাথে আবার তার ব্যবহার একদমই ভিন্ন। পরিচিত মানুষদের সাথে খুবই উষ্ণ ও আন্তরিক ব্যবহার করেন তিনি, যার মাধ্যমে অতি সহজেই তাদের মন জয় করে নিতে পারেন।

বিল গেটস

বিল গেটস; Image Source: Jack Taylor/Getty Images

এই মুহূর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি তিনি। অথচ নিজেই স্বীকার করেন, ব্যক্তিজীবনে তিনি খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের। বহির্মুখী-অধ্যুষিত এই পৃথিবীতে অন্তর্মুখী হয়েও কীভাবে টিকে রয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, একটু চালাক হলে অন্তর্মুখী হওয়া সত্ত্বেও সফলতা লাভ সম্ভব। কোনো পরিস্থিতিতে হুট করে সিদ্ধান্ত নেন না তিনি। বরং কিছুদিন একদমই চুপ মেরে যান। সমস্যাটি নিয়ে ভাবতে থাকেন, সম্ভাব্য সবকিছু পড়ে ফেলেন, এবং নিজের চিন্তাশক্তির পুরোটা খরচ করে তবেই একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছান। অর্থাৎ তিনি অন্তর্মুখী এ কারণে যে তিনি কথা বলতে বা সামাজিকতা রক্ষার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেন চিন্তা করতে, যেকোনো বিষয়ে নিজের হোমওয়ার্ক করতে। আর এভাবেই তিনি ধীরস্থির ও অবিচল থেকে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যান।

মেরিসা মায়ার

মেরিসা মায়ার; Image Source: Brian Ach/Getty Images

তিনি ছিলেন ইয়াহু’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও। তিনিও প্রচণ্ড রকমের অন্তর্মুখী। মানুষের সাথে মেশার জন্য নিজের সাথেই নিজের কঠিন লড়াই চলত তার। ব্যবসায়িক স্বার্থে নিজেই হয়তো কোনো পার্টি দিতেন, কিন্তু তারপর এতটাই অস্বস্তি বোধ করতেন যে বারবার ঘড়ির দিকে তাকাতেন আর নিজেকে বলতেন, “অমুক সময়ের আগে তোমার পার্টি ত্যাগ করা চলবে না। যদি তখনো দেখো জঘন্য লাগছে, তাহলে তুমি যেতে পারো।” এ ধরনের মানসিকতার কারণে সামাজিক অঙ্গনে খুব বেশি লোকপ্রিয়তা পাননি তিনি, কিন্তু বোর্ডরুমে তিনি ঠিকই ছিলেন দারুণ সফল। এর কারণ, সেখানে তিনি নিজে কথা বলার চেয়ে অন্যদের কথা শোনাকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। সকলের কথা মন দিয়ে শুনতেন, আর সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা ভাবতেন।

স্টিভ ওজনিয়াক

স্টিভ ওজনিয়াক; Image Source: Mark Wilson/Getty Images

অ্যাপল আজ যে অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে, এর জন্য বেশিরভাগ মানুষ পুরো কৃতিত্বই দিয়ে থাকে স্টিভ জবসকে। কিন্তু সহ-প্রতিষ্ঠাতা ওজনিয়াকের অবদানও কিন্তু কম নয়। গোটা প্রকল্পের নেপথ্যের মূল মস্তিষ্ক ছিলেন তিনিই। তারপরও তিনি যে কম পরিচিত, এর একটি কারণ অবশ্যই তার অন্তর্মুখী স্বভাব। এবং অন্তর্মুখী স্বভাবকেই তিনি সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসেবে মানেন। তিনি বিশ্বাস করেন, অনেক মানুষের মিলিত প্রচেষ্টায় কোনো বৈপ্লবিক সাফল্য লাভ সম্ভব নয়, বরং তার জন্য প্রয়োজন একা একা কাজ করা।

বারাক ওবামা

বারাক ওবামা; Image Source: Ron Sachs-Pool/Getty Images

একজন সফল নেতা ও বক্তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এই সাবেক প্রেসিডেন্টের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। তাই তাকে অন্তর্মুখী হিসেবে মানাটা অনেকের জন্যই কঠিন হতে পারে। কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, বেশিরভাগ স্মরণীয় বক্তৃতাই তিনি দিয়েছেন ক্যামেরার দিকে মুখ করে, কিংবা বিশাল কোনো জনসভায়, যেখানে আলাদা করে কারো সাথে তাকে কথা বলতে হয়নি। আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগে তিনি কখনোই এতটা পটু ছিলেন না। এ ধরনের আলাপচারিতায় গাম্ভীর্য বজায় রাখাকেই তিনি শ্রেয় মনে করতেন। তারপরও তিনি সফল ছিলেন, কারণ নিজের পদমর্যাদা সম্পর্কে তিনি খুব ভালোভাবেই সচেতন ছিলেন, এবং মুখ খোলার আগে সবসময় গোটা ব্যাপারটি মাথার মধ্যে সাজিয়ে নিতেন।

স্টিভেন স্পিলবার্গ

Image Source: DAVID BUCHAN/SHUTTERSTOCK

হলিউডের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই নির্মাতা ক্যামেরার পেছনে যতটা প্রাণোচ্ছল, ক্যামেরার সামনে ঠিক ততটাই নির্জীব। অতিমাত্রায় আত্মসচেতন মানুষটির কাছে নির্জনতাই পরম আরাধ্য। যেকোনো ধরনের পার্টিকে অপছন্দ করেন তিনি। অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে তার জিভ আড়ষ্ট হয়ে যায়। তাই যখন তিনি শুটিং নিয়ে বা প্রোডাকশনের কাজে ব্যস্ত নন, তখন নিজের সাথে সময় কাটানোতেই ভালোবাসেন। হারিয়ে যান চলচ্চিত্রের জগতে, কিংবা ডুব দেন নীরবতায়। এমন নির্জনতা-নিঃসঙ্গতাকেই তার অফুরন্ত সৃজনশীলতার নেপথ্য রহস্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকে অনেকে।

ল্যারি পেইজ

ল্যারি পেইজ; Image Source: Justin Sullivan/Getty Images

তিনি গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অ্যালফাবেটের সিইও। চরম মাত্রার লাজুক ও অন্তর্মুখী হিসেবে পরিচিত তিনি। কথা বলেন খুবই অল্প, তা-ও মোলায়েম কণ্ঠে। যদিও এর পেছনে একটি কারণ তার ভোকাল কর্ডের প্যারালাইসিস, কিন্তু তিনি যে পাদপ্রদীপের আলোর বাইরে থাকতেই পছন্দ করেন, সে কথাও অনস্বীকার্য। সাম্প্রতিক সময়ে তার অন্তর্মুখী স্বভাব আগের চেয়ে বেড়েছে। লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেছেন তিনি, ভালোবাসেন নিজের ব্যক্তিগত ক্যারিবিয়ান দ্বীপে সময় কাটাতে। মজার ব্যাপার হলো, সবসময় এমন ছিলেন না তিনি। শুরুতে তিনি বেশ জেদি ও আগ্রাসী মেজাজেরই ছিলেন। কিন্তু গুগলের সাফল্যের সময়টিতেই তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেন, যা অনেকের কাছেই পরম বিস্ময়কর একটি ব্যাপার।

আব্রাহাম লিঙ্কন

আব্রাহাম লিঙ্কন; Image Source: US Army Signal Corps / Time Life Pictures / Getty

একজন অন্তর্মুখী ব্যক্তির সকল বৈশিষ্ট্যই বর্তমান ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ প্রেসিডেন্টের মাঝে। মৃদুভাষী ছিলেন তিনি। কথা বলতেন মেপে মেপে, পরিমিত পরিমাণে। তবে তিনি শ্রোতা হিসেবে ছিলেন অসাধারণ। শুধু মনোযোগ দিয়ে অন্যের কথা শুনতেনই না, সেসব কথাকে বিভিন্ন আঙ্গিক ও দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ ও উপলব্ধির এক বিরল ক্ষমতাও ছিল তার মাঝে। আবার নিজের ব্যক্তিত্বের ঘাটতিগুলোর ব্যাপারেও অবগত ছিলেন তিনি। চেষ্টা করতেন সেগুলো কাটিয়ে উঠে আরো ব্যক্তিত্বময় চরিত্রের অধিকারী হয়ে উঠতে। সংকটাপন্ন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের নিমিত্তে মানসিক শৈথিল্যেও বিশ্বাসী ছিলেন তিনি।

শেষ কথা

বুঝতেই পারছেন, সফল হতে গেলে বহির্মুখী হওয়া কখনোই আবশ্যক নয়। নিজের মধ্যে সেই যোগ্যতা যদি থাকে, তাহলে অন্তর্মুখী স্বভাব সত্ত্বেও ব্যক্তিজীবনে সফল হওয়া তো সম্ভবই, এমনকি নেতা হিসেবে কোনো দল, গোষ্ঠী, সংগঠন কিংবা দেশকে সফলতার সাথে পরিচালিত করাও খুবই সম্ভব। তাই এখন থেকে স্রেফ অন্তর্মুখী না বহির্মুখী, তা দেখে কারো সম্ভাবনা বিচার করবেন না। যাচাই করে দেখুন তার অন্তর্নিহিত মেধা ও যোগ্যতা ঠিক কতটা। দিনশেষে সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বিশ্বের চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কেঃ roar.media/contribute/

This article is in Bengali language. It is about why introvert people often make successful leaders. Necessary references have been hyperlinked inside.

Featured Image © Getty Image

Related Articles