Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

টানটান উত্তেজনা, অবিস্মরণীয় জয়! ফাইনালে বাংলাদেশ!

  • রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয়ের হাসি হাসল টাইগাররা।
  • অলিখিত এই ‘সেমিফাইনালে’ জয়ের দেখা পেয়ে ত্রিদেশীয় নিদাহাস টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠে গেল বাংলাদেশ।
  • শ্রীলঙ্কার ৭ উইকেটে ১৫৯ রানের জবাবে এক বল হাতে রেখেই ২ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় টাইগার বাহিনী।
  • মাত্র ১৮ বলে ৪৩ রানের ফিনিশিং টাচে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ ঘোষিত হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

অবিশ্বাস্য, দুর্দান্ত, অতুলনীয়! কোনো বিশেষণেই বাঁধা যাবে না এই ম্যাচটিকে। গোটা ম্যাচজুড়ে ভাগ্য ঝুলেছে পেন্ডুলামের মতো, একবার শ্রীলঙ্কার হাতে তো আরেকবার বাংলাদেশের। কিন্তু শেষ হাসিটা ফুটল সাকিবদের মুখেই, সাহসীরাই যে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়!

ম্যাচটি দুই দলের জন্যই ছিল দারুণ গুরুত্বপূর্ণ, যে দল জিতবে তারাই যাবে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে। বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কোচ কোর্টনি ওয়ালশ যেমন এক কদম বাড়িয়ে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, এটাই সেমিফাইনাল। হঠাৎ করেই দেশ থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ইনজুরি থেকে পুনর্বাসনরত সাকিব আল হাসানকে, নিয়মিত অধিনায়ক পদটিও ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

বোঝাই যাচ্ছিল, জয়ের জন্য তেড়েফুঁড়েই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কাই বা কেন পিছিয়ে থাকবে? ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো সূচাগ্র মেদিনী’, নিজেদের দেশে হওয়া টুর্নামেন্টে ফাইনালে উঠতে যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত থাকাটাই ছিল তাদের জন্য স্বাভাবিক।

ফিরলেন সাকিব, ফিরল বাংলাদেশের তেজস্বী মনোভাবটাও; Source : NewsFolo

শুরুটা হলো বাংলাদেশের মনের মতোই, টসে জিতে বোলিং করতে নেমে মাত্র ৪১ রানেই শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার মুড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। তবে গলার কাঁটা হয়ে বিঁধে ছিলেন কুশল পেরেরা, সাথে যোগ্য সঙ্গত দিলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক থিসারা পেরেরাও। দুজন মিলে গড়লেন ৯৮ রানের জুটি, হাতের মুঠোয় থাকা জয়ের আভাস তখন মিলিয়ে গেছে অনেকটাই।

‘বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সামনে বাঁহাতি স্পিনার নয়’ এমন অদ্ভুতুড়ে দর্শনের কারণে সাকিব নিজে বোলিংয়ে না এসে ঊনিশতম ওভারে পাঠালেন সৌম্য সরকারকে। উদ্ভট এই সিদ্ধান্তে তখন সকলের চক্ষু চড়কগাছ। তবে ভরসার যোগ্য প্রতিদানটুকু দিলেন সৌম্য, ফিরিয়ে দিলেন কুশল পেরেরাকে। এরপর আর খুব বেশি এগোতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। শেষপর্যন্ত বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০ ওভারে ১৬০ রান।

শুরুতেই লিটন দাসের উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর সাব্বিরের ব্যাট কিছুটা স্বপ্ন দেখালেও খুব দ্রুতই ফিরে যান তিনিও, বাংলাদেশ তখন ৩৩ রানে ২ উইকেট।

এরপর জুটি গড়েন অভিজ্ঞ দুই সেনানী তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম। কিন্তু দলীয় ৯৭ রানে মুশফিকও ফিরে গেলে আবারও পথ হারায় বাংলাদেশ। স্বল্প রানের ব্যবধানে ফিরে যান তামিম এবং সৌম্য সরকারও।

বাংলাদেশের সামনে তখন বিপদসংকুল পথ, বিন্দুমাত্র পা হড়কালেই মৃত্যু অনিবার্য! হাল ধরতে চেষ্টা করলেন দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা সাকিব এবং রিয়াদ। তবে প্রতিপক্ষ অধিনায়কের দারুণ কৌশলে সাকিবও ফিরে গেলেন দলীয় ১৩৭ রানে। বাংলাদেশ পড়ে গেল আরেকটু বিপদে, মিরাজের পর আর যে স্বীকৃত ব্যাটসম্যান নেই কেউ! মিরাজের রানআউট আরেকটু অস্থিতিশীল করে দিল পরিবেশ, রিয়াদ তো ক্ষেপেই গেলেন রীতিমতো।

আরেকবার মাহমুদউল্লাহ অবতীর্ণ হলেন ত্রাতা হিসেবে; Source: Cricbuzz

পরের ওভারে মুস্তাফিজ স্ট্রাইক পেলেন, প্রথম বলে ডটের পর দ্বিতীয় বলে রানআউট। এরপরই শুরু নাটকীয়তার, হঠাৎ সকলে আবিষ্কার করল, আম্পায়ারদের সঙ্গে বচসারত রিয়াদ, অন্যদিকে মাঠে ঢুকে পড়ার মতো অবস্থানে দাঁড়িয়ে সমানে রাগ ঝাড়ছেন সাকিব। ঠাণ্ডা করতে চাইলেন আরেক আম্পায়ার, কিছু একটা বাক্যবিনিময় হলো তাদের মধ্যে।

সবাই অবাক হয়ে লক্ষ্য করল, সাকিব ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যানকে বেরিয়ে আসতে বলছেন! তবে ওয়ালশ-সুজন মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বললেন দলকে, বুঝিয়ে-শুনিয়ে ব্যাটসম্যানদেরকে ক্রিজে পাঠালেন।

সেসময় স্ট্রাইকে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে স্থিতধী মস্তিষ্কের ব্যাটসম্যানটি রয়েছেন, মাহমুদউল্লাহ। তিনি আবারও বুঝিয়ে দিলেন, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে তাকে আটকে রাখা পৃথিবীর কঠিনতম কাজের একটি। শেষ চার বলে রান প্রয়োজন ছিল ১২। রিয়াদ নিলেন যথাক্রমে ৪, ২ ও ৬!

এরপর শুভ সমাপ্তি! এক বল হাতে রেখে এক অবিস্মরণীয় জয় পেল বাংলাদেশ, উঠে গেল নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে!

দুর্দান্ত খেলায় ম্যাচ বাংলাদেশের! Source: hindustantimes.com

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

শ্রীলঙ্কা- ১৫৯/৭ (কুশল ৬১, থিসারা ৫৮, মুস্তাফিজুর ২/৩৯)

বাংলাদেশ- ১৬০/৮ (তামিম ৫০, মাহমুদউল্লাহ ৪৩*, ধনঞ্জয় ২/৩৭)

ফিচার ইমেজ: Cricinfo

Related Articles