Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বিশ্বরেকর্ড গড়ে অস্ট্রেলিয়ার টানা চতুর্থ জয়

অকল্যান্ডের ইডেন পার্কের বাউন্ডারিটা তুলনামূলক ছোট, সবারই জানা। যার ফলে ব্যাটসম্যানরা একটু বেশি সুবিধা পান। কিন্তু টি-টুয়েন্টিতে প্রতিপক্ষকে ২৪৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার পর যেকোনো দল জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী থাকতেই পারে। অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৪৩ রানের সংগ্রহকে মামুলী বানিয়ে তাই খুব সহজেই টপকে যায় অস্ট্রেলিয়া।

ত্রিদেশীয় সিরিজের টানা তিন ম্যাচে জয় পেয়ে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে ডেভিড ওয়ার্নারের অস্ট্রেলিয়া। টস ভাগ্যে জয় পেয়ে কেন উইলিয়ামসন প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। তার সিদ্ধান্তকে যথাযথ প্রমাণ করে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের তুলোধোনা করে উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ১০.৪ ওভারে ১৩২ রান যোগ করেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল এবং কলিন মুনরো। কলিন মুনরো আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক হাঁকানোর পথেই ছিলেন। শেষপর্যন্ত ৩৩ বলে ছয়টি চার এবং ছয়টি ছয়ের মারে ৭৬ রান করার পর অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

মার্টিন গাপটিলের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক বিফলে যায়; Image Source – AFP

মুনরো ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক হাঁকাতে না পারলেও মার্টিন গাপটিল ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি শতক হাঁকান। ৪৯ বলে সেঞ্চুরির পর ৫৪ বলে চারটি চার এবং নয়টি ছয়ের সাহায্যে ১০৫ রান করে টাইয়ের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ২৪৩ রান করার পরেও ২০-২৫ রান কম হয়েছে বলে আফসোস করতে পারে।

মার্টিন গাপটিল যখন আউট হন, তখন নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ১৬.৪ ওভারে তিন উইকেটে ২১২ রান। তারা শেষ ২০ বলে তারা মাত্র ৩১ রান সংগ্রহ করে, যার মধ্যে রস টেইলরের ছয় বলে অপরাজিত ১৭ রানের ইনিংসও ছিল। নিউ জিল্যান্ডের দেওয়া ২৪৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল বেশ কয়েকজন হার্ড-হিটার ব্যাটসম্যান দিয়ে একাদশ সাজানো অস্ট্রেলিয়া। পাওয়ার-প্লের ছয় ওভারে অস্ট্রেলিয়া কোনো উইকেট না হারিয়ে ৯১ রান সংগ্রহ করে।

টি-টুয়েন্টিতে পাওয়ার-প্লেতে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের দিক দিয়ে যৌথভাবে শীর্ষস্থানে জায়গা করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হাতে খুব একটা ভালো সময় কাটছিলো না অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের। অকল্যান্ডের রান বন্যার দিনে তিনিও জ্বলে উঠলেন। ইশ সৌদির বলে বোল্ড হওয়ার আগে মাত্র ২৪ বলে চারটি চার এবং পাঁচটি ছয়ের মারে ৫৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ডি’আর্চি শর্টের সাথে মাত্র ৪৭ বলে ১২১ রানের জুটি গড়েন। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একই ম্যাচের দুই দলের ওপেনাররা উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে শতাধিক রান যোগ করেছেন।

ম্যাচ সেরা ডি’আর্চি শর্ট ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন; Image Source – AFP

ডেভিড ওয়ার্নার ফিরে গেলেও রানের গতি থেমে থাকেনি। শর্ট, ম্যাক্সওয়েল, ক্রিস লিন এবং অ্যারন ফিঞ্চ বাকি কাজটুকু সেরে ফেলেন। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ম্যাক্সওয়েল ১৪ বলে তিনটি চার এবং দুটি ছয়ের মারে ৩১ রান করেন। ডি’আর্চি শর্টের কাছে নিজের ওপেনিং পজিশন ছেড়ে দেওয়া ফিঞ্চ করেন ১৪ বলে অপরাজিত ৩৬ রান। তার ইনিংসে ছিলো তিনটি চার এবং তিনটি ছয়ের মার। ম্যাচ সেরা ডি’আর্চি শর্ট ৪৪ বলে আটটি চার এবং তিনটি ছয়ের সাহায্যে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন। যার সুবাদে সাত বল ও ছয় উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।

অকল্যান্ডের ইডেন পার্ক নানা বিশ্বরেকর্ডের সাক্ষী হয়ে গেলো। আজকের ম্যাচের মধ্যে দিয়ে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়লো অস্ট্রেলিয়া। এর আগের রেকর্ডটি ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের দখলে। তারা ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ২৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ে পেয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে দুই দল মোট ৪৮৮ রান সংগ্রহ করে।

আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রানের তালিকায় এটি দ্বিতীয় স্থানে আছে। সবচেয়ে বেশি ৪৮৯ রান করেছিলো ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ওভার প্রতি রানের দিক দিয়ে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে আছে। তারা ৩৮.৫ ওভারে গড়ে ১২.৫৬ রান করেছে।

অকল্যান্ডে দুই দলের ব্যাটসম্যানরা আজ যেন ছয়ের বৃষ্টি নামিয়েছেন। ম্যাচে মোট ৩২টি ছয় হাঁকিয়েছে দুই দল। এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছয় মারার তালিকায় এটি যৌথভাবে শীর্ষস্থানে আছে।

ব্যাটসম্যানদের রাজত্বের দিনে দিনটি ভুলে যেতে চাইবেন স্যান্টনারের ইনজুরিতে সুযোগ পাওয়া বেন ওয়েলার এবং অজি পেসার অ্যান্ড্রু টাই। বেন ওয়েলার যখন নিজের চতুর্থ ওভার করার জন্য আসেন তখন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিলো ২৪ বলে ৪২ রান। ওয়েলার নিজের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে কোমরের উপরে হাই ফুলটস দিয়ে নো বল করার পাশাপাশি ছয় রান দেন।

পরের বল লিগ্যাল হলেও ফিঞ্চ ঐ বল থেকে চার আদায় করে নেন। পরের বলে আবারও নো এবং ওয়েলারকে এই ম্যাচে বোলিং করা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। মাত্র এক বলে ১৩ রান দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জন্য জয়ের সমীকরণ সহজ করে দেন তিনি। বেন ওয়েলার মাত্র ৩.১ ওভারে ২০.২১ ইকোনমি রেটে ৬৪ রান খরচ করেন। বোলিং কোটার চার ওভার পুরো করতে পারলে হয়তো সবচেয়ে বেশি রান খরচ করা বোলার হিসাবে নিজের নাম লেখাতেন। কমপক্ষে দুই ওভার বল করা বোলারদের মধ্যে তার ইকোনমি রেট সবচেয়ে বেশি। অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু টাইও এদিন ৬৪ রান খরচ করেন। তিনি চার ওভারে ৬৪ রান খরচায় দুই উইকেট শিকার করেন। টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সবচেয়ে খরুচে বোলিং ফিগার এটি।

ফিচার ইমেজ – Getty Images

Related Articles