মিরপুরে দুই ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২২ বল হাতে রেখে বাংলাদেশকে ছয় উইকেটে পরাজিত করে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের দেওয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করে শ্রীলঙ্কার ওপেনাররা। গুনাথিলাকা এবং কুশাল মেন্ডিস উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ২৯ বলে ৫৩ রান যোগ করেন। গুনাথিলাকা ১৫ বলে ৩০ রান করে অভিষিক্ত নাজমুল ইসলাম অপুর প্রথম শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেও কুশাল মেন্ডিস বাংলাদেশি বোলারদের দাপটের সাথে মোকাবেলা করেন। কুশাল পেরেরা ইনজুরিতে না পড়লে এই ম্যাচ খেলা হতো না কুশাল মেন্ডিসের। সুযোগ পেয়ে টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পাশাপাশি ম্যাচ সেরার পুরস্কার ও জেতেন তিনি। আফিফ হোসাইনের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে মাত্র ২৭ বলে আটটি চার এবং দুটি ছয়ের মারে ৫৩ রান করেন তিনি। কুশাল মেন্ডিস আউট হওয়ার পরের ওভারে থারাঙ্গাও সাজঘরের পথ ধরলে ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশকে সেই সুযোগ দেননি ধানুস্কা শানাকা এবং থিসারা পেরেরা। এই দুজন পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাত্র ৩০ বলে ৬৫ রান যোগ করেন। শানাকা ২৪ বলে তিনটি চার এবং সমান সংখ্যক ছয়ের মারে ৪২* রান এবং থিসারা পেরেরা ১৮ বলে চারটি চার এবং তিনটি ছয়ের মারে ৩৯* রানের ইনিংস খেললে বাংলাদেশের দেওয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্য সহজেই অতিক্রম করে শ্রীলঙ্কা। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে শ্রীলঙ্কার এটি সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭৪ রান তাড়া করে দুই উইকেটের জয় পেয়েছিলো শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের সামনে অভিষিক্ত নাজমুল।ইসলাম অপু ছাড়া আর কোনো বোলার প্রতিরোধ গড়তে পারেননি।
অপু চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে দুই উইকেট শিকার করেন। এর আগে মিরপুরে শেষ বিকালে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। সিনিয়র ক্রিকেটারদের ইনজুরির দরুন বাংলাদেশ দলে চারজনের অভিষেক ঘটে । জাকির হাসান, আফিফ, আরিফুল ও নাজমুল ইসলাম অপু বিপিএলে নজর কাড়া পারফরমেন্সের ফলাফল স্বরূপ আজকের একাদশে জায়গা পান। অভিষিক্ত জাকির হাসানকে সাথে নিয়ে মাত্র চার ওভারে ৪৯ রান যোগ করেন সৌম্য সরকার।
সৌম্য সরকার ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক হাঁকিয়ে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে কাটা পড়েন। সৌম্য ৩২ বলে ছয়টি চার এবং দুটি ছয়ের মারে ৫১ রান করেন। সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৪৪ বলে সাতটি চার ও একটি ছয়ের মারে অপরাজিত ৬৬* রান করেন। মুশফিকের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩১ বলে দুটি চার এবং দুটি ছয়ের মারে ৪৩ রান করলে বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৯৩ রান সংগ্রহ করেন। টি-টুয়েন্টিতে এটি বাংলাদেশ সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০১২ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ উইকেটে ১৯০ রান সংগ্রহ করেছিলো বাংলাদেশ। নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ দাঁড় করিয়েও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ১৮ই ফেব্রুয়ারি সিলেটে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
ফিচার ইমেজ- Associated Press