- দ্রুতগতিসম্পন্ন ফ্লাইটের ক্ষেত্রে অগ্রগামী থাকার প্রচেষ্টায় চীন ‘আই প্লেন‘ নামে হাইপারসনিক বিমানের পরীক্ষা চালাচ্ছে।
- এই বিমানটি স্বল্প প্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন এবং খুব উঁচুতে উড়তে সক্ষম।
- এটি মাত্র ২ ঘন্টায় বেইজিং থেকে নিউ ইয়র্কে পৌঁছাতে পারে।
বিশ্বের পরাশক্তিগুলো বিমানের গতি বাড়িয়ে তুলছে। জাপান আকাশযানের সাথে সুপারসনিক গতির পুনঃসংযোগ ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীন হাইপারসনিক গতিসম্পন্ন আকাশযান তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু কোম্পানির সাথে যোগদান করেছে। কিন্তু সেগুলো এখনও অনেক দূরের ব্যাপার।
বেইজিংয়ের চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস এর গবেষকগণ সফলভাবে তাদের ‘আই প্লেন’ এর পরীক্ষা চালিয়েছেন। তারা একটি বায়ু টানেলে ঘন্টায় ৩,৮০০ মাইল থেকে ৫,৩৭০ মাইল বেগে এই পরীক্ষা চালান। বিমানটিকে সামনে থেকে ইংরেজি বর্ণ ‘আই’ এর মতো দেখায় বলে এর নাম ‘আই প্লেন’ রাখা হয়েছে।
সায়েন্স চায়না ফিজিক্স, মেকানিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনমি নামে তাদের এক জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় তারা জানান, এ বিমানটি মাত্র দুই ঘন্টায় বেইজিং থেকে নিউ ইয়র্কে যেতে পারবে। একটি বাণিজ্যিক এয়ারলাইনের বিমানে সেখানে ১৪ ঘন্টা সময়ের প্রয়োজন পড়বে।
স্বল্প প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও উঁচুতে উড্ডয়নের ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত পরীক্ষা সফল হয়েছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এর তথ্যমতে, আই প্লেনের পরিবহনের ক্ষমতা বোয়িং ৭৩৭ এর প্রায় ২৫ শতাংশ। বোয়িং ৭৩৭ যেখানে ২০ টন অথবা ২০০ যাত্রী বহন করতে সক্ষম, সেখানে আই প্লেন ৫ টন অথবা ৫০ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।
গবেষণাটির সাথে সম্পৃক্ত একজন বিজ্ঞানী জানান, আই প্লেন বোমা বহনেও ব্যবহৃত হতে পারে। চীন সম্প্রতি হাইপারসনিক মিসাইলও তৈরি করেছে। পপুলার সায়েন্স জানিয়েছে, আই প্লেন তৈরির মাধ্যমে বোঝা যায় চীন হাইপারসনিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব অর্জন করতে চায়। চীনের পরবর্তী হাইপারসনিক প্রকল্প হচ্ছে একটি বায়ু টানেল।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস ফেব্রুয়ারি মাসে কংগ্রেসকে চীনের হাইপাসনিক প্রযুক্তির ব্যাপারে সতর্ক করে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র নিজেও এ ধরনের প্রযুক্তিতে কাজ করছে। নাসার গবেষকগণ আবিষ্কার করেছেন যে, বোরন নাইট্রাইড ন্যানোটিউব হাইপারসনিক আকাশভ্রমণকে আরও সাধ্যের মধ্যে এনে দিতে সক্ষম। এর ফলে নাসার বিমান এক ঘন্টার মাঝেই দেশ অতিক্রম করতে পারবে।
হাইপারসনিক বিমান বাণিজ্যিকভাবে চালু হতে কিছু সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু হাইপারসনিক এর মধ্যেই নিজ সুবিধার্থে ব্যবহারের ধারণায় চলে এসেছে। এ পর্যায়ে এটিই দেখার বিষয় কে প্রথমে এটি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে পারে।
ফিচার ইমেজ: Yahoo