- স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এমন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন, যা কোনো টিউমারে প্রবেশ করালে টিউমারসহ দেহে থাকা অন্যান্য ক্যান্সার সদৃশ বস্তুও ধ্বংস করে দেবে।
- ইঁদুরের দেহে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
- মানবদেহে শীঘ্রই এটি প্রয়োগের পরীক্ষা চালানো হবে।
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উদ্দীপিত করে এমন দুটি পদার্থের সমন্বয়ে তৈরি এই ভ্যাকসিনটি ইঁদুরের দেহে প্রয়োগ করা হয়েছিল। এটি ইনজেকশনের জায়গা থেকে কাছে এবং দূরে অবস্থিত ক্যান্সার কোষগুলো ধ্বংস করতে ব্যাপক বিক্রিয়া করেছে। ইঁদুরের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করার পর শীঘ্রই তা মানবদেহে প্রয়োগের পরীক্ষা চালানো হবে।
প্রাথমিকভাবে ১৫ জন লিম্ফোমায় আক্রান্ত ব্যক্তির উপর এটি প্রয়োগের পরীক্ষা চালানো হবে। ‘সায়েন্স ট্রান্সলেশন মেডিসিন’ এ এই আবিষ্কার বিশদভাবে তুলে ধরা বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে, এর ফল অন্য প্রাণীর মতোই আগ্রহোদ্দীপক হবে।
লিম্ফোমায় আক্রান্ত ৯০টি ইঁদুরের মাঝে ৮৭টি ইঁদুরই প্রথমবার এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরেই ক্যান্সারমুক্ত হয়ে যায়। বাকি ৩টি ইঁদুরকে দ্বিতীয় ইনজেকশন দেওয়ার পরে সেগুলোও ক্যান্সার থেকে মুক্তি লাভ করে।
যখন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তখন রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলো বুঝতে পারে এবং টিউমারে অবস্থিত বিশেষ প্রোটিনগুলোকে আক্রমণ করে। কিন্তু ক্যান্সার বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।
বিস্ময়করভাবে কার্যকরী এই চিকিৎসা রোগীর নিজস্ব রোগ প্রতিরোধকারী কোষ দিয়েই সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্যান্সারের ফলে অকেজো হয়ে যাওয়া রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোকে এ ওষুধটি পুনরায় সচল করতে পারে। এরপর এটি কোষগুলোর ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দেয় যেন সেগুলো ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করতে পারে।
কয়েক বছর ধরে রোগ প্রতিরোধকারী থেরাপি ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। রেডিয়েশন থেরাপির চেয়ে এটিকে আরও কার্যকর ও কম ক্ষতিকর বলে বিবেচনা করা হয়।
ইঁদুরের ক্ষেত্রে কার্যকরী হলেও বিজ্ঞানীরা জানেন যে, মানবদেহে প্রবেশ করানোর পরে এর ফল ভিন্নরকম হতে পারে। অন্যান্য প্রাণীর উপর চালানো পরীক্ষা সবসময় নির্ভরযোগ্য নির্দেশক নয়, যা থেকে নিশ্চিতভাবে জানা যাবে সেগুলো মানবদেহে কীভাবে কাজ করবে। যদি মানবদেহে চালানো পরীক্ষাও একই ধরনের ফল দেখায়, তাহলে ক্যান্সারের চিকিৎসায় সার্জারির পরিবর্তে কিছু নতুন থেরাপির সূচনা করতে পারে। এমনকি এটি টিউমারের পুনরাবৃত্তিও প্রতিরোধ করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ফিচার ইমেজ: Futurism India