উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলের সিয়েরা রাজ্যের ফোর্টালেজা শহরের একটি নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর বেপরোয়া গুলিবর্ষণে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে। শনিবারে এ ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। নিহতদের মধ্যে ৪ মহিলা ও ২ শিশুও আছে।
সিয়েরা রাজ্যের নিরাপত্তা সচিব আন্দ্রে কোস্টা এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ফোরো দো গাগো’ ক্লাবের হতাহতের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন,”ভয় ও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পৃথিবীতে এমন ঘটনা ঘটে থাকে যেখানে ৫০-৬০ মারা যায়, এটি সেই ঘটনাগুলোর একটি।” তিনি আরও বলেন, এটি বন্ধে পুলিশের কিছু করার থাকে না।
দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর মতে, এ ঘটনায় আরও অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে যাদের মধ্যে কয়েকটি শিশু রয়েছে। পুলিশের ধারণা, মাদক সংক্রান্ত দলগুলোর মাঝে দ্বন্দ্বের কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে নিহতের সকলেই নির্দোষ এবং সংঘবদ্ধ অপরাধের তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
শনিবার রাত ১.৩০ এ তিনটি অস্ত্রবোঝাই গাড়িতে করে ১৫ জন বন্দুকধারী আসে এবং ‘ফোরো দো গাগো’ নাইটক্লাবে ঢুকে গুলি বর্ষণ করে। প্রায় আধা ঘন্টা ধরে গুলিবর্ষণ চলতে থাকে। এ সময় মানুষজন ক্লাব থেকে পালিয়ে আশেপাশের বাড়িতে আশ্রয় নিতে থাকে।
পরবর্তীতে ফুটেজে ক্লাবটির সামনের মেঝেতে রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায়। সংবাদপত্র জানিয়েছে, এটিই এই শহরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা।ঘটনাস্থলেই ১২ জন নিহত হয় এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।আহতদের মাঝে একজন ১২ বছর বয়সী ছেলে ও ১৬ বছর বয়সী মেয়েও রয়েছে।
বন্দুকধারীদের ধরার জন্য পুলিশ হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে। কিন্ত এ পর্যন্ত গ্রেফতারের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের উপর সম্ভাব্য প্রতিশোধের ভয়ে কর্তৃপক্ষকে তথ্য দিতে ভয় পাচ্ছে বলে জানা যায়।
ব্রাজিলের রাজ্যগুলোর মধ্যে সহিংসতায় সিয়েরার অবস্থান দ্বিতীয়। এখানে রক্তপাতের জন্য মূলত মাদক ব্যবসায়ীদের দায়ী করা হয়। এর আগে ২০১৫ সালে সিয়েরা রাজ্যের আরেকটি নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর গুলিতে ১১ জন নিহত হওয়ার ঘটনাই সেখানকার সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ছিল। গত বছর সিয়েরাতে ৫,১১৪টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা ২০১৬ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি।
ফিচার ইমেজ: Daily Star