- পাকিস্তানের ৬ বছর বয়সী শিশু জাইনাব আনসারির হত্যার দায়ে ইমরান আলিকে (২৪) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত।
- শনিবার তাকে গুম, ধর্ষণ, হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৭ নং ধারায় এ রায় দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও তাকে ‘অস্বাভাবিক’ কর্মের কারণে দশ লক্ষ রুপি জরিমানা, ময়লার স্তুপে মৃতদেহ লুকানোর জন্য ৭ বছরের জেল ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং ভুক্তভোগীর পরিবারকে পরিশোধের জন্য এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
জাইনাবের মা নুসরাত বিবি দাবি জানান অপরাধীকে যেন জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “আমি চাই তাকে সেই জায়গাতেই ফাঁসি দেওয়া হোক যেখানে সে জাইনাবকে নিয়ে গিয়েছিল।”
জাইনাব ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও ৭টি শিশুকে আক্রমণ করার অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এত শিশু নির্যাতনের কারণে ধারণা করা হচ্ছে, এতদিন একজন ক্রমিক খুনী অবাধে বিচরণ করছিল। জাইনাবের মৃত্যুসহ ইমরান আলি আটটি আক্রমণের কথা স্বীকার করেছে।
প্রসিকিউটর জেনারেল এহতেসাম কাদির জানান, অভিযুক্তকে তার আত্মপক্ষ সমর্থন করার যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি যেসব তথ্য জানাবেন সেগুলো তার বিপক্ষে ব্যবহৃত হতে পারে এ কথা পরিষ্কারভাবে জানানোর পরেও তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন।
তিনি বলেন, “যখন তাকে অভিযোগগুলো পড়ে শোনানো হয় তখন আমরা আদালতকে অনুরোধ করি ৪০ মিনিটের জন্য ইমরান আলিকে বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখার সময় দিতে। অভিযুক্তকে তখন বলা হয় তিনি যা বলবেন আদালতে তা তার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হবে। এরপরেই তিনি দোষ স্বীকার করেন।” ইমরান আলি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ১৫ দিন সময় পাবেন।
জাইনাবের বাবা আমিন আনসারি জানান, “আমি প্রধান বিচারকের প্রতি খুব কৃতজ্ঞ, তিনি জাইনাবের প্রতি নিজের মেয়ের মতোই আচরণ করেছেন।”
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুর জেলায় কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পরে জাইনাব আনসারীর মৃতদেহ গত জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখে একটি আবর্জনার স্তুপে পাওয়া যায়। এর দুই সপ্তাহ পরে ইমরান আলিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জাইনাবের হত্যা ও ধর্ষণ গত মাসে দেশটিতে ক্ষোভ আর আন্দোলনের ঝড় তোলে। গত ১২ মাসের মধ্যে সেই এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে এটি এ ধরনের ১২ তম ঘটনা ছিলো।
ফিচার ইমেজ: Newsweek